bn_ulb/14-2CH.usfm

1333 lines
327 KiB
Plaintext
Raw Permalink Blame History

This file contains ambiguous Unicode characters

This file contains Unicode characters that might be confused with other characters. If you think that this is intentional, you can safely ignore this warning. Use the Escape button to reveal them.

\id 2CH
\ide UTF-8
\sts - 2 Chronicles
\h বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড৷
\toc1 বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড৷
\toc2 বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড৷
\toc3 2ch
\mt1 বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড৷
\s5
\c 1
\s শলোমনের প্রার্থনার উত্তর৷ তাঁর সম্মান বৃদ্ধি৷
\p
\v 1 আর দায়ূদের ছেলে শলোমন নিজের রাজ্যে নিজেকে শক্তিশালী করলেন এবং তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে থেকে তাঁকে খুব মহান করলেন৷
\s5
\v 2 পরে শলোমন সমস্ত ইস্রায়েলের অর্থাৎ সহস্রপতিদের, শতপতিদের, বিচারকর্তাদের ও সমস্ত ইস্রায়েলের যাবতীয় শাসনকর্তাদের বংশ প্রধানদের সঙ্গে কথা বললেন৷
\v 3 তাতে শলোমন ও তাঁর সঙ্গে সমস্ত সমাজ গিবিয়োনের উঁচু জায়গায় গেলেন; কারণ সদাপ্রভুর দাস মোশি মরুভূমিতে যা তৈরী করেছিলেন, ঈশ্বরের সেই সমাগম তাঁবু সেখানে ছিল৷
\v 4 কিন্তু ঈশ্বরের সিন্দুক দায়ূদ কিরিয়ৎ-যিয়ারীম থেকে, দায়ূদ তার জন্য যে জায়গা তৈরী করেছিলেন, সেখানে এনেছিলেন, কারণ তিনি তার জন্য যিরূশালেমে একটি তাঁবু স্থাপন করেছিলেন৷
\v 5 আর হূরের নাতি ঊরির ছেলে বৎসলেল যে পিতলের যজ্ঞবেদী তৈরী করেছিলেন, তা সদাপ্রভুর সমাগম তাঁবু সামনে ছিল; আর শলোমন ও সমাজ তার কাছে গেলেন৷
\s5
\v 6 তখন শলোমন সেখানে সমাগম তাঁবুর কাছে পিতলের বেদিতে সদাপ্রভুর সামনে যজ্ঞ করলেন, এক হাজার হোমবলি উত্সর্গ করলেন৷
\v 7 সেই রাতে ঈশ্বর শলোমনকে দর্শন দিয়ে বললেন, “চাও, আমি তোমাকে কি দেব?”
\s5
\v 8 তখন শলোমন ঈশ্বরকে বললেন, “তুমি আমার পিতা দায়ূদের প্রতি অনেক দয়া দেখিয়েছ, আর তাঁর পদে আমাকে রাজা করেছ৷
\v 9 এখন, হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, তুমি আমার পিতা দায়ূদের কাছে যে কথা বলেছ, তাই স্থায়ী হোক; কারণ তুমিই পৃথিবীর ধূলোর মত বহুসংখ্যক এক জাতির উপরে আমাকে রাজা করেছ৷
\v 10 আমি যেন এই লোকেদের সামনেই বাইরে যেতে ও ভেতরে আসতে পারি, সেই জন্য এখন আমাকে বুদ্ধি ও জ্ঞান দাও; কারণ তোমার এমন বিশাল প্রজাদের বিচার করার ক্ষমতা কার আছে?”
\v 11 তখন ঈশ্বর শলোমনকে বললেন, “এটাই তোমার মনে হয়েছে; তুমি ঐশ্বর্য্য, সম্পত্তি, গৌরব কিংবা শত্রুদের প্রাণ চাও নি, লম্বা আয়ুও চাও নি; কিন্তু আমি আমার যে প্রজাদের উপরে তোমাকে রাজা করেছি, তুমি তাদের বিচার করার জন্য নিজের জন্য বুদ্ধি ও জ্ঞান চেয়েছ৷
\s5
\v 12 বুদ্ধি ও জ্ঞান তোমাকে দেওয়া হল; এমনকি তোমার আগে কোনো রাজার ছিল না এবং তোমার পরেও কোনো রাজার হবে না, তত ঐশ্বর্য্য, সম্পত্তি ও গৌরব আমি তোমাকে দেব৷”
\v 13 পরে শলোমন গিবিয়োনের উঁচু জায়গা থেকে, সমাগম তাঁবুর সামনে থেকে, যিরূশালেমে এলেন, আর ইস্রায়েলের উপরে রাজত্ব করতে থাকলেন৷
\s5
\v 14 আর শলোমন অনেক রথ ও ঘোড়াচালক সংগ্রহ করলেন; তাঁর এক হাজার চারশো রথ ও বারো হাজার ঘোড়াচালক ছিল; আর সেই সব তিনি রথ নগরে এবং যিরূশালেমে রাজার কাছে রাখতেন৷
\v 15 রাজা যিরূশালেমে রুপো ও সোনাকে পাথরের মত এবং এরস কাঠকে উপত্যকার ডুমুর গাছের মত প্রচুর করলেন৷
\v 16 আর শলোমনের ঘোড়াগুলি মিসর থেকে আনা হত, রাজার বণিকেরা দল হিসাবে দাম দিয়ে পালে পালে ঘোড়া পেত৷
\v 17 আর মিসর থেকে কেনা ও আনা এক একটি রথের দাম ছশো শেকল রুপো ও এক একটি ঘোড়ার দাম একশো পঞ্চাশ শেকল ছিল৷ এই ভাবে তাদের মাধ্যমে সমস্ত হিত্তীয় রাজার ও অরামীয় রাজার জন্যও ঘোড়া আনা হত৷
\s5
\c 2
\s মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য আয়োজন৷
\p
\v 1 পরে শলোমন সদাপ্রভুর নামে একটি বাড়ি ও নিজের রাজ্যের জন্য একটি বাড়ি তৈরী করার কথা ঠিক করলেন;
\v 2 আর শলোমন ভার বইবার জন্য সত্তর হাজার লোক, পর্বতে কাঠ কাটার জন্য আশী হাজার লোক ও তাদের পরিচালনার জন্য তিন হাজার ছশো প্রধান কর্মচারীদের নিযুক্ত করলেন৷
\v 3 আর শলোমন সোরের হূরম রাজার কাছে লোক পাঠিয়ে বললেন, “আপনি আমার বাবা দায়ূদের সাথে যেরকম ব্যবহার করেছিলেন ও তাঁর বসবাসের জন্য বাড়ি তৈরীর জন্য তাঁর কাছে যেরকম এরস কাঠ পাঠিয়েছিলেন, সেই রকম আমার জন্যও করুন৷
\s5
\v 4 দেখুন, আমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশ্যে একটি বাড়ি তৈরী করার পরিকল্পনা নিয়েছি; তাঁর সামনে সুগন্ধি জিনিস জ্বালানোর জন্য, প্রত্যেক দিনের দর্শন-রুটির জন্য এবং প্রতি সকালে ও সন্ধ্যাবেলায়, বিশ্রামবারে, অমাবস্যায় ও আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সকল পর্বের হোম করার জন্য সেটা পবিত্র করব৷ এগুলি ইস্রায়েলের প্রতিদিনের কাজ৷
\v 5 আর আমি যে বাড়ি তৈরী করব, সেটা খুব বড় হবে, কারণ আমাদের ঈশ্বর সকল দেবতার থেকে মহান৷
\s5
\v 6 কিন্তু তাঁর জন্য বাড়ি তৈরী করার ক্ষমতা কার আছে? কারণ স্বর্গ এবং স্বর্গের স্বর্গও তাঁকে ধারণ করতে পারে না; তবে আমি কে যে, তাঁর উদ্দেশ্যে গৃহ তৈরী করি? শুধুমাত্র তাঁর সামনে ধূপদান করার জায়গা তৈরী করতে পারি৷
\v 7 অতএব আমার বাবা দায়ূদের মাধ্যমে নিযুক্ত যে জ্ঞানী লোকেরা যিহূদায় ও যিরূশালেমে আমার কাছে আছে, তাদের সঙ্গে সোনা, রুপো, পিতল, লোহা এবং বেগুনী, গাড়ো লাল ও নীল রঙের সুতোর কাজ করার জন্য ও সব রকমের ক্ষোদিত কাজে পারদর্শী একজন লোককে পাঠাবেন৷
\s5
\v 8 আর লিবানোন থেকে এরস কাঠ, দেবদারু কাঠ ও আলগুম কাঠ আমার এখানে পাঠাবেন; কারণ আমি জানি, আপনার দাসেরা লিবানোনে খুব ভালো কাঠ কাটতে পারে; আর দেখুন, আমার দাসেরাও আপনার দাসের সঙ্গে থাকবে৷
\v 9 আমার জন্য অনেক কাঠ তৈরী করতে হবে, কারণ আমি যে গৃহ তৈরী করব, সেটা বড় মহৎ ও আশ্চর্য্যজনক হবে৷
\v 10 আর দেখুন, আমি আপনার দাসদেরকে, যে কাঠুরিয়ারা গাছ কাটবে, তাদেরকে কুড়ি হাজার কোর্ পরিমাপের পেষাই করা গম, কুড়ি হাজার কোর্ পরিমাপের যব, কুড়ি হাজার বাৎ আঙ্গুর রস ও কুড়ি হাজার বাৎ তেল দেব৷”
\s5
\v 11 পরে সোরের রাজা হূরম শলোমনের কাছে এই উত্তর লিখে পাঠালেন, “সদাপ্রভু তাঁর প্রজাদেরকে ভালবাসেন, তাই তাদের উপরে আপনাকে রাজা করেছেন৷”
\v 12 হূরম আরও বললেন, “ধন্য সদাপ্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, স্বর্গ মর্ত্যের সৃষ্টিকর্তা, যিনি দায়ূদ রাজাকে দূরদর্শী ও বুদ্ধিমান এক জ্ঞানবান ছেলে দিয়েছেন, সেই ছেলে সদাপ্রভুর জন্য এক গৃহ ও নিজের রাজ্যের এক বাড়ি তৈরী করবেন৷
\s5
\v 13 এখন আমি হূরম-আবি নামে একজন জ্ঞানবান ও বুদ্ধিমান লোককে পাঠালাম৷
\v 14 সে দান বংশের এক স্ত্রীর ছেলে, তার বাবা সোরের লোক; সে সোনা, রুপো, পিতল, লোহা, পাথর ও কাঠ এবং বেগুনী, নীল, মসীনা সুতোর ও গাড় লাল রঙের সুতোর কাজ খুব ভালো করতে পারে৷ আর সে সব রকমের খোদিত কাজ করতে ও সব রকমের নকশার কাজ খুব ভালো তৈরী করতে পারে৷ তাকে আপনার পারদর্শী লোকেদের সঙ্গে এবং আপনার বাবা আমার প্রভু দায়ূদের পারদর্শী লোকেদের সঙ্গে জায়গা দেওয়া হোক৷
\s5
\v 15 অতএব আমার প্রভু যে গম, যব, তেল ও আঙ্গুর রসের কথা বলেছেন, তা নিজের দাসদের কাছে পাঠিয়ে দিন৷
\v 16 আর আপনার যত কাঠের প্রয়োজন হবে, আমরা লিবানোনে তত কাঠ কাটব এবং ভেলায় করে বেঁধে সমুদ্রপথে যাফোতে আপনার জন্য পৌঁছে দেব; পরে আপনি তা যিরূশালেমে তুলে নিয়ে যাবেন৷”
\v 17 আর শলোমন তাঁর বাবা দায়ূদের গণনার পরে ইস্রায়েল দেশে বসবাসকারী সমস্ত লোক গণনা করালেন, তাতে এক লক্ষ তিপ্পান্ন হাজার ছশো লোক পাওয়া গেল৷
\v 18 তাদের মধ্যে তিনি ভার বইবার জন্য সত্তর হাজার লোক, পর্বতে কাঠ কাটতে আশী হাজার লোক ও লোকদেরকে কাজ করাবার জন্য তিন হাজার ছশো প্রধান কর্মচারীদের নিযুক্ত করলেন৷
\s5
\c 3
\s মন্দির তৈরী৷
\p
\v 1 পরে শলোমন যিরূশালেমে মোরিয়া পর্বতে সদাপ্রভুর গৃহ তৈরী করতে শুরু করলেন; সদাপ্রভু সেখানে তাঁর বাবা দায়ূদকে দর্শন দিয়েছিলেন এবং দায়ূদ সেই জায়গা নির্বাচন করেছিলেন; তা যিবূষীয় অর্ণানের খামার৷
\v 2 তিনি তাঁর রাজত্বের চতুর্থ বছরের দ্বিতীয় মাসের দ্বিতীয় দিনে তৈরীর কাজ শুরু করলেন৷
\v 3 শলোমন ঈশ্বরের গৃহ তৈরী করতে যে মূল উপদেশ পেয়েছিলেন, সেই অনুসারে হাতের প্রাচীন পরিমাণে গৃহের দৈর্ঘ্য ষাট হাত ও প্রস্থ কুড়ি হাত করা হল৷
\s5
\v 4 আর গৃহের সামনের বারান্দা গৃহের প্রস্থ অনুসারে কুড়ি হাত লম্বা ও একশো কুড়ি হাত উঁচু হল; আর তিনি ভেতরে তা পরিস্কার সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন৷
\v 5 তিনি বড় গৃহের দেওয়াল ভালো সোনায় মোড়া দেবদারু কাঠে ঢেকে দিলেন ও তার উপরে খেজুর গাছ ও শিকলের ছবি খোদাই করলেন৷
\s5
\v 6 আর শোভার জন্য গৃহটি দামী পাথর দিয়ে সাজালেন; ঐ সোনা পর্বয়িম দেশের সোনা৷
\v 7 আর তিনি গৃহ, গৃহের কড়িকাঠ, গোবরাট, দেওয়াল ও দরজা সোনায় মুড়ে দিলেন এবং দেওয়ালের উপরে করূবের ছবি খোদাই করলেন৷
\s5
\v 8 আর তিনি অতি পবিত্র জায়গা নির্মাণ করলেন, তার দৈর্ঘ্য গৃহের প্রস্থের মত কুড়ি হাত ও প্রস্থ কুড়ি হাত এবং তিনি ছশো তালন্ত ভালো সোনা দিয়ে তা মুড়ে দিলেন৷
\v 9 প্রেকের পরিমান পঞ্চাশ শেকল সোনা৷ তিনি উপরের কুঠরীগুলিও সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন৷
\s5
\v 10 অতি পবিত্র গৃহের মধ্যে তিনি দুটি করূবের ছবি খোদাই করলেন; আর তা সোনা দিয়ে মোড়া হল৷
\v 11 এই করূব দুটির ডানা কুড়ি হাত লম্বা, একটির পাঁচ হাত লম্বা একটি ডানা গৃহের দেওয়াল স্পর্শ করল এবং পাঁচ লম্বা অন্য ডানা দ্বিতীয় করূবের ডানা স্পর্শ করল৷
\v 12 সেই করূবের পাঁচ হাত লম্বা প্রথম ডানাটি গৃহের দেওয়াল স্পর্শ করল এবং পাঁচ হাত লম্বা দ্বিতীয় ডানাটি ঐ করূবের ডানা স্পর্শ করল৷
\s5
\v 13 সেই করূব দুটির ডানা মোট কুড়ি হাত বিস্তারিত, তারা পায়ের কাছে দাড়িয়ে ছিল এবং তাদের মুখ গৃহের দিকে ছিল৷
\v 14 আর তিনি নীল, বেগুনী ও রক্তের রঙের এবং মসীনা সুতোর পর্দা তৈরী করলেন ও তাতে করূব তৈরী করলেন৷
\v 15 আর তিনি গৃহের সামনে পঁয়ত্রিশ হাত উঁচু দুটি স্তম্ভ তৈরী করলেন, এক একটি স্তম্ভের উপরে পাঁচ হাত হল৷
\v 16 আর তিনি গৃহের মধ্যে শেকল তৈরী করে সেই স্তম্ভের মাথায় দিলেন এবং একশো ডালিমের মত করে তৈরী করে ঐ শেকলের উপরে রাখলেন৷
\v 17 সেই দুটি স্তম্ভ তিনি মন্দিরের সামনে স্থাপন করলেন, একটা ডান দিকে ও অন্যটা বামে রাখলেন এবং যেটি ডান দিকে, সেটির নাম যাখীন যার অর্থ, তিনি স্থির করবেন ও যেটি বামে, সেটির নাম বোয়স যার অর্থ, এতেই বল, রাখলেন৷
\s5
\c 4
\p
\v 1 আর তিনি পিতলের এক যজ্ঞবেদি তৈরী করলেন, তার দৈর্ঘ্য কুড়ি হাত, প্রস্থ কুড়ি হাত ও উচ্চতা দশ হাত৷
\v 2 আর তিনি ছাঁচে ঢালা গোলাকার চৌবাচ্চা তৈরী করলেন; তা এক কাণা থেকে অন্য কাণা পর্য্যন্ত দশ হাত ও তার উচ্চতা পাঁচ হাত এবং তার পরিধি ত্রিশ হাত করলেন৷
\v 3 চৌবাচ্চার নীচের চারপাশ ঘিরে বলদের আকৃতি ছিল, প্রত্যেক আকৃতির পরিমাণ দশ হাত করে ছিল; যে ছাঁচের মধ্যে পাত্রটা তৈরী করা হয়েছিল সেই ছাঁচের মধ্যেই গরুগুলোর আকার ছিল বলে সবটা মিলে একটা জিনিসই হল৷
\s5
\v 4 ঐ চৌবাচ্চা বারটি বলদের উপরে স্থাপিত ছিল, তাদের তিনটির মুখ উত্তর দিকে, তিনটির মুখ পশ্চিম দিকে, তিনটির মুখ দক্ষিণ দিকে ও তিনটির মুখ পূর্বদিকে ছিল এবং চৌবাচ্চাটি তাদের উপরে ছিল; তাদের সকলের পিছনের ভাগ ভিতরে থাকল৷
\v 5 সেটা চার আঙ্গুল মোটা ও তার কাণা পানপাত্রের কাণার মতো, লিলি ফুলের মতো আকার ছিল, তাতে তিন হাজার বাত ধরত৷
\v 6 আর তিনি দশটি গামলা তৈরী করলেন এবং ধোবার জন্য পাঁচটা ডানে ও পাঁচটা বামে স্থাপন করলেন; তার মধ্যে তারা হোম বলিদানের জিনিসপত্র ধোয়াধুয়ি করত, কিন্তু চৌবাচ্চাটি যাজকদের নিজেদের ধোবার জন্য ছিল৷
\s5
\v 7 আর তিনি বিধি মতে সোনার দশটি বাতি দান তৈরী করে মন্দিরে স্থাপন করলেন, তার পাঁচটি ডান দিকে ও পাঁচটি বামে রাখলেন৷
\v 8 আর তিনি দশখানি টেবিলও তৈরী করলেন, তার পাঁচটি ডান দিকে ও পাঁচটি বামে মন্দিরের মধ্যে রাখলেন৷ আর তিনি একশোটি সোনার বাটিও তৈরী করলেন৷
\s5
\v 9 আর তিনি যাজকদের উঠান, বড় উঠান ও উঠানের দরজাগুলি তৈরী করলেন ও তার দরজাগুলি পিতলে মুড়ে দিলেন৷
\v 10 আর চৌবাচ্চা ডান পাশে পূর্বদিকে দক্ষিণদিকের সামনে স্থাপন করলেন৷
\s5
\v 11 আর হূরম পাত্র, হাতা ও বাটি সমস্ত কিছু তৈরী করল৷ এইভাবে হূরম শলোমন রাজার জন্য ঈশ্বরের গৃহের যে কাজ করছিল, তা শেষ করল;
\v 12 অর্থাৎ দুটি স্তম্ভ ও সেই দুটি স্তম্ভের উপরের গোলাকার ও মাথলা এবং সেই স্তম্ভের উপরের মাথলার দুটি গোলাকার আচ্ছাদনের দুটি জালির কাজ
\v 13 এবং দুই প্রস্ত জালির কাজের জন্য চারশো ডালিমের মত, অর্থাৎ স্তম্ভের উপরের মাথলার দুটি গোলাকার অংশ সাজানোর জন্য এক একটি জালির কাজের জন্য দুই সারি ডালিমের মত তৈরী করল৷
\s5
\v 14 আর সে ভিত তৈরী করল এবং সেই ভিতের উপরে গামলাগুলি রাখল;
\v 15 একটি চৌবাচ্চা ও তার নীচে বারটি বলদ
\v 16 এবং পাত্র, হাতা ও তিনটি কাঁটা যুক্ত চামচ এবং অন্য সমস্ত পাত্র হূরম-আবি শলোমন রাজার সদাপ্রভুর গৃহের জন্য পালিশ করা পিতলে তৈরী করল৷
\s5
\v 17 রাজা যর্দনের অঞ্চলে সুক্কোৎ ও সরেদার মাঝের কাদা মাটিতে সেটা ঢালালেন৷
\v 18 আর শলোমন এই যে সকল পাত্র তৈরী করলেন, তা অনেক, কারণ পিতলের পরিমাণ নির্ণয় করা গেল না৷
\s5
\v 19 শলোমন ঈশ্বরের গৃহের সমস্ত পাত্র এবং সোনার বেদি ও দর্শন-রুটি রাখবার টেবিল
\v 20 এবং ভিতরের গৃহের সামনে বিধিমতে জ্বালাবার জন্য বিশুদ্ধ সোনার বাতিদান সকল
\v 21 এবং ফুল, প্রদীপ ও চিমটি সকল সোনা দিয়ে তৈরী করলেন,
\v 22 সেই সোনা বিশুদ্ধ; আর কাঁচি, বাটি, চামচ ও ধুনুচি খাঁটি সোনায় এবং গৃহের দরজা, মহাপবিত্র জায়গায় ভিতরের দরজা ও গৃহের অর্থাৎ মন্দিরের দরজাগুলি সোনা দিয়ে তৈরী করলেন৷
\s5
\c 5
\p
\v 1 এইভাবে সদাপ্রভুর গৃহের জন্য শলোমনের করা সমস্ত কাজ সম্পন্ন হল৷ আর শলোমন তাঁর বাবা দায়ূদের উত্সর্গ করা জিনিসগুলি অর্থাৎ রুপো, সোনা ও সকল পাত্র এনে ঈশ্বরের গৃহের ভান্ডারে রাখলেন৷
\s মন্দির প্রতিষ্ঠা৷
\p
\s5
\v 2 পরে শলোমন দায়ূদ-নগর অর্থাৎ সিয়োন থেকে সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুক নিয়ে আসার জন্য ইস্রায়েলের প্রাচীনদেরকে ও বংশের প্রধানদের, অর্থাৎ ইস্রায়েল সন্তানদের বাবার বংশের শাসনকর্তাদেরকে, যিরূশালেমে জড়ো করলেন৷
\v 3 তার ফলে সপ্তম মাসে, উত্সবের সময়ে ইস্রায়েলের সব লোক রাজার কাছে এল৷
\s5
\v 4 পরে ইস্রায়েলের প্রত্যেক প্রাচীনেরা উপস্থিত হলে লেবীয়েরা সিন্দুকটি তুলল৷
\v 5 আর তারা সিন্দুক, সমাগম তাঁবু ও তাঁবুর মধ্যে থাকা সমস্ত পবিত্র পাত্র তুলে আনলো; লেবীয় যাজকরা এই সব কিছু তুলে আনলো৷
\v 6 আর শলোমন রাজা এবং তাঁর কাছে আসা সমস্ত ইস্রায়েলের মন্ডলী সিন্দুকের সামনে থেকে অনেক ভেড়া ও ষাঁড় বলি দিলেন, সে সমস্ত অসংখ্য ও অগণ্য ছিল৷
\s5
\v 7 পরে যাজকেরা সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুক নিয়ে গিয়ে নিজের জায়গায়, বাড়ির ভেতরের ঘরে, মহাপবিত্র জায়গায় দুটি করূবের ডানার নিচে স্থাপন করল৷
\v 8 করূব দুটি যেখানে সিন্দুক রাখা হল তার উপরে ডানা মেলে থাকলো, আর উপরে করূবেরা সিন্দুক ও সেটা বয়ে নিয়ে যাবার ডাণ্ডা দুটি ঢেকে দিল৷
\s5
\v 9 সিন্দুকের সেই ডাণ্ডা দুটি এত লম্বা ছিল যে, তার সামনের অংশ সিন্দুকের সামনে দখা যেত৷ তথাপি তা বাইরে দেখা যেত না৷ আজ পর্যন্ত তা সেই জায়গায় আছে৷
\v 10 সিন্দুকের মধ্যে আর কিছু ছিল না, শুধু সেই দুটি পাথরের ফলক ছিল, যা মোশি হোরেবে তার মধ্যে রেখেছিলেন; সেই সময়ে মিসর থেকে ইস্রায়েল সন্তানদের বেরিয়ে আসার পর, সদাপ্রভু তাদের সঙ্গে নিয়ম করেছিলেন৷
\s5
\v 11 বাস্তবিক যাজকেরা পবিত্র জায়গা থেকে বেরলো, সেখানে উপস্থিত যাজকেরা সকলেই নিজেদেরকে পবিত্র করেছিল, তাদেরকে নিজেদের পালা রক্ষা করতে হল না
\v 12 এবং গায়ক লেবীয়েরা সবাই, আসফ, হেমন, যিদূথূন ও তাঁদের ছেলেরা ও ভাইয়েরা, মসীনা পোশাক পরে এবং করতাল, নেবল ও বীণা সঙ্গে নিয়ে যজ্ঞবেদির পূর্ব দিকে দাড়িয়ে থাকল এবং তূরীবাদক একশো কুড়িজন যাজক তাদের সঙ্গে ছিল৷
\v 13 সেই তূরীবাদকেরা ও গায়কেরা সবাই একসাথে সদাপ্রভুর প্রশংসা ও স্তব করার জন্য একজন ব্যক্তির মত উপস্থিত ছিল এবং যখন তারা তূরী ও করতাল ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে মহাশব্দ করে ‘তিনি মঙ্গলময়, হ্যাঁ, তাঁর দয়া অনন্তকাল স্থায়ী, এই কথা বলে সদাপ্রভুর প্রশংসা করল, তখন বাড়ি, সদাপ্রভুর বাড়ি মেঘে এমন ভরে গেল যে,
\v 14 মেঘের জন্য যাজকেরা সেবা করার জন্য দাঁড়াতে পারল না; কারণ ঈশ্বরের বাড়ি সদাপ্রভুর প্রতাপে ভরে গিয়েছিল৷
\s5
\c 6
\p
\v 1 তখন শলোমন বললেন, “সদাপ্রভু বলেছেন যে, তিনি ঘন অন্ধকারে বাস করবেন৷
\v 2 কিন্তু আমি তোমার এক বসবাসের গৃহ নির্মাণ করলাম; এটা চিরকালের জন্য তোমার বসবাসের জায়গায়৷”
\v 3 পরে রাজা মুখ ফিরিয়ে সমস্ত ইস্রায়েল সমাজকে আশীর্বাদ করলেন; আর সমস্ত ইস্রায়েল সমাজ দাঁড়িয়ে থাকলো৷
\s5
\v 4 আর তিনি বললেন, “ধন্য সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর; তিনি আমার বাবা দায়ূদের কাছে নিজের মুখে এই কথা বলেছেন এবং নিজের হাতে করে এটা সফল করেছেন, যথা,
\v 5 যে দিন আমার প্রজাদেরকে মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছি, সেই দিন থেকে আমি নিজের নাম স্থাপনের জন্য গৃহ তৈরীর জন্য ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের মধ্যে কোনো নগর মনোনীত করিনি এবং নিজের প্রজা ইস্রায়েলের শাসনকর্তা হবার জন্য কোনো মানুষকে মনোনীত করিনি৷
\v 6 কিন্তু নিজের নাম স্থাপনের জন্য আমি যিরূশালেম মনোনীত করেছি ও আমার প্রজা ইস্রায়েলের শাসনকর্তা হবার জন্য দায়ূদকে মনোনীত করেছি৷
\s5
\v 7 আর ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশ্যে এক গৃহ তৈরী করতে আমার বাবা দায়ূদের ইচ্ছা ছিল৷
\v 8 কিন্তু সদাপ্রভু আমার বাবা দায়ূদকে বললেন, ‘আমার নামের উদ্দেশ্যে একটি গৃহ তৈরী করতে তোমার ইচ্ছা হয়েছে; তোমার এইরকম ইচ্ছা হওয়া অবশ্যই ভাল৷
\v 9 তবুও তুমি সেই গৃহ তৈরী করবে না, কিন্তু তোমার কটি থেকে উত্পন্ন ছেলেই আমার নামের উদ্দেশ্যে গৃহ তৈরী করবে৷’
\s5
\v 10 সদাপ্রভু এই যে কথা বলেছেন, তা সফল করলেন; সদাপ্রভু প্রতিজ্ঞা অনুসারে আমি আমার বাবা দায়ূদের পদে উত্পন্ন ও ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশ্যে এই গৃহ তৈরী করেছি৷
\v 11 আর সদাপ্রভু ইস্রায়েল সন্তানদের সঙ্গে যে নিয়ম করেছিলেন, তার আধার সিন্দুক এর মধ্যে রাখলাম৷”
\s5
\v 12 পরে তিনি সমস্ত ইস্রায়েল সমাজের উপস্থিতিতে সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির সামনে দাঁড়িয়ে অঞ্জলি করলেন;
\v 13 কারণ শলোমন পাঁচ হাত লম্বা, পাঁচ হাত প্রস্থ ও তিন হাত উঁচু পিতলের একটি মঞ্চ তৈরী করে উঠানের মাঝখানে রেখেছিলেন; তিনি তার উপর দাঁড়ালেন, পরে সমস্ত ইস্রায়েল সমাজের সামনে হাঁটু পেতে স্বর্গের দিকে অঞ্জলি বিস্তার করলেন;
\s5
\v 14 আর তিনি বললেন, “হে সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, স্বর্গে কি পৃথিবীতে তোমার মত ঈশ্বর নেই৷ যারা সমস্ত মনপ্রাণ দিয়ে তোমার সঙ্গে চলে, তোমার সেই দাসেদের পক্ষে তুমি নিয়ম ও দয়া পালন কর;
\v 15 তুমি তোমার দাস আমার বাবা দায়ূদের কাছে যা প্রতিজ্ঞা করেছিলে তা পালন করেছ, যা নিজের মুখে বলেছিলে, তা নিজের হাতে পূরণ করেছ, যেমন আজ দেখা যাচ্ছে৷
\s5
\v 16 এখন, হে সদাপ্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তুমি তোমার দাস আমার বাবা দায়ূদের কাছে যা প্রতিজ্ঞা করেছিলে, তা রক্ষা কর৷ তুমি বলেছিলে, আমার দৃষ্টিতে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসতে তোমার বংশে লোকের অভাব হবে না, কেবলমাত্র যদি আমার সামনে তুমি যেমন চলছো, তোমার সন্তানেরা আমার সামনে সেইভাবে চলার জন্য নিজেদের পথে সাবধান থাকে৷
\v 17 এখন, হে সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তোমার দাস দায়ূদের কাছে যে কথা তুমি বলেছিলে, তা সত্য হোক৷
\s5
\v 18 কিন্তু ঈশ্বর কি সত্যিই পৃথিবীতে মানুষের সঙ্গে বাস করবেন? দেখ, স্বর্গ ও স্বর্গের স্বর্গ তোমাকে ধরে রাখতে পারে না, তবে আমার তৈরী এই গৃহ কি পারবে?
\v 19 সুতরাং হে সদাপ্রভু, আমার ঈশ্বর, তুমি তোমার দাসের প্রার্থনাতে ও বিনতিতে মনোযোগ দাও, তোমার দাস তোমার কাছে যেভাবে কাঁদছে ও প্রার্থনা করছে, তা শোন৷
\v 20 যে জায়গার বিষয়ে তুমি বলেছ যে, তোমার নাম সেই জায়গার রাখবে, সেই জায়গায় অর্থাৎ এই গৃহের ওপর দিনরাত তোমার দৃষ্টি থাকুক এবং এই জায়গায় সামনে তোমার দাস যে প্রার্থনা করে, তা শোনো৷
\s5
\v 21 আর তোমার দাস ও তোমার লোক ইস্রায়েল যখন এই জায়গায় সামনে প্রার্থনা করবে, তখন তাদের সব অনুরোধে কান দিও; তোমার বাসজায়গা থেকে, স্বর্গ থেকে, তাহা শুনো এবং শুনে ক্ষমা কোরো৷
\s5
\v 22 কেউ নিজের প্রতিবাসীর বিরুদ্ধে পাপ করলে যদি তাকে শপথ করার জন্য কোনো শপথ সুনিশ্চিত হয়, আর সে এসে এই গৃহে তোমার যজ্ঞবেদির সামনে সেই শপথ করে,
\v 23 তবে তুমি স্বর্গ থেকে তা শুনো এবং সমাধান করে তোমার দাসদের বিচার কোরো; দোষীকে দোষী করে তার কাজের ফল তার মাথায় দিও এবং ধার্মিককে ধার্মিক করে তার ধার্মিকতা অনুযায়ী ফল দিও৷
\s5
\v 24 তোমার প্রজা ইস্রায়েল তোমার বিরুদ্ধে পাপ করার জন্য শত্রুর সামনে আহত হওয়ার পর যদি পুনরায় ফেরে এবং এই গৃহে তোমার নাম স্তব করে তোমার কাছে প্রার্থনা ও অনুরোধ করে;
\v 25 তবে তুমি স্বর্গ থেকে তা শুনো এবং তোমার প্রজা ইস্রায়েলের পাপ ক্ষমা কোরো, আর তাদেরকে ও তার পূর্বপুরুষদেরকে এই যে দেশ দিয়েছ, এখানে পুনরায় তাদেরকে এনো৷
\s5
\v 26 তোমার বিরুদ্ধে তাদের পাপের জন্য যদি আকাশ থেমে যায়, বৃষ্টি না হয়, আর লোকেরা যদি এই জায়গার সামনে প্রার্থনা করে, তোমার নামের স্তব করে এবং তোমার থেকে দুঃখ পাওয়ার পর নিজেদের পাপ থেকে ফেরে,
\v 27 তবে তুমি স্বর্গ থেকে তা শুনো এবং তোমার দাসের ও তোমার প্রজা ইস্রায়েলের পাপ ক্ষমা কোরো ও তাদের যাতায়াতের সত্পথ তাদেরকে দেখিও এবং তুমি তোমার প্রজাদেরকে যে দেশের অধিকার দিয়েছ, তোমার সেই দেশে বৃষ্টি পাঠিও৷
\s5
\v 28 দেশের মধ্যে যদি দুর্ভিক্ষ হয়, যদি মহামারী হয়, যদি শস্যের শেষ কি ধ্বংস হয় অথবা পঙ্গপাল কিম্বা কীট হয়, যদি তাদের শত্রুরা তাদের দেশে নগরে নগরে তাদেরকে আটকে রাখে, যদি কোনো মহামারী বা রোগ দেখা হয়;
\v 29 তাহলে কোনো ব্যক্তি বা তোমার সমস্ত প্রজা ইস্রায়েল, যারা প্রত্যেকে নিজেদের মনের যন্ত্রণা ও শোক জানে এবং এই গৃহের দিকে যদি অঞ্জলি দিয়ে কোনো প্রার্থনা কি অনুরোধ করে;
\v 30 তবে তুমি তোমার বসবাসের জায়গা স্বর্গ থেকে সেটা শুনো এবং ক্ষমা কোরো এবং প্রত্যেক জনকে নিজেদের সমস্ত পথ অনুযায়ী প্রতিফল দিও; তুমি তো তাদের হৃদয় জানো; কারণ একমাত্র তুমিই মানুষের হৃদয় সম্বন্ধে জানো;
\v 31 যেন আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে তুমি যে দেশ দিয়েছ, এই দেশে তারা যত দিন জীবিত থাকে, তোমার পথে চলার জন্য তোমাকে ভয় করে৷
\s5
\v 32 বিশেষত তোমার প্রজা ইস্রায়েল গোষ্ঠীর নয়, এমন কোনো বিদেশী যখন তোমার মহানাম, তোমার শক্তিশালী হাত ও তোমার প্রসারিত বাহুর উদ্দেশ্যে দূর দেশ থেকে আসবে, যখন তারা এসে এই গৃহের সামনে প্রার্থনা করবে,
\v 33 তখন তুমি স্বর্গ থেকে, তোমার বসবাসের জায়গা থেকে তা শুনো এবং সেই বিদেশী যে তোমার কাছে যা কিছু প্রার্থনা করবে, সেই অনুসারে কোরো; যেন তোমার প্রজা ইস্রায়েলের মত পৃথিবীর সমস্ত জাতি তোমার নাম জানে ও তোমাকে ভয় করে এবং তারা যেন জানতে পায় যে, আমার তৈরী করা এই গৃহের উপরে তোমারই নাম মহিমান্বিত৷
\s5
\v 34 তুমি তোমার প্রজাদেরকে কোন পথে চালালে, যদি তারা তাদের শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বের হয় এবং তোমার মনোনীত এই নগরের সামনে ও তোমার নামের জন্য আমার তৈরী করা গৃহের সামনে তোমার কাছে প্রার্থনা করে;
\v 35 তবে তুমি স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনা ও অনুরোধ শুনো এবং তাদের বিচার পরিপূর্ণ কোরো৷
\s5
\v 36 তারা যদি তোমার বিরুদ্ধে পাপ করে, কারণ পাপ করে না, এমন কোনো মানুষ নেই এবং তুমি যদি তাদের প্রতি প্রচন্ড রেগে গিয়ে শত্রুর হাতে তাদেরকে সমর্পণ করো ও শত্রুরা তাদেরকে বন্দী করে দূরের কিংবা কাছের কোনো দেশে নিয়ে যাবে;
\v 37 তবুও যে দেশে তারা বন্দী হিসাবে নীত হয়েছে, সেই দেশে যদি মনে মনে বিবেচনা করে ও ফেরে, নিজেদের বন্দিত্বের দেশে তোমার কাছে অনুরোধ করে যদি বলে, আমরা পাপ করেছি; অপরাধ করেছি ও দুষ্টুমি করেছি
\v 38 এবং যে দেশে বন্দী হিসাবে নীত হয়েছি, সেই বন্দিত্বের দেশে যদি সমস্ত হৃদয় দিয়ে ও সমস্ত প্রাণের সঙ্গে তোমার কাছে ফিরে আসে এবং তুমি তাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে দেশ দিয়েছ, আপনাদের সেই দেশের সামনে, তোমার মনোনীত নগরের সামনে ও তোমার নামের জন্য আমার তৈরী করা গৃহের সামনে যদি প্রার্থনা করে;
\v 39 তবে তুমি স্বর্গ থেকে, তোমার বাসজায়গা থেকে তাদের প্রার্থনা ও অনুরোধ শুনো এবং তাদের বিচার সম্পূর্ণ কোরো; আর তোমার যে প্রজারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছে, তাদের ক্ষমা কোরো৷
\v 40 এখন, হে আমার ঈশ্বর, অনুরোধ করি, এই জায়গায় যে প্রার্থনা হবে, তার প্রতি যেন তোমার দৃষ্টি ও কান খোলা থাকে৷
\v 41 হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, এখন তুমি উঠে তোমার বিশ্রামের জায়গায় যাও; তুমি ও তোমার শক্তির সিন্দুক৷ হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, তোমার যাজকরা পরিত্রানের পোশাক পড়ুক ও তোমার সাধুরা মঙ্গলের জন্য আনন্দ করুক৷
\v 42 হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, তুমি তোমার অভিষিক্তের মুখ ফিরিয়ে দিও না, তোমার দাস দায়ূদের প্রতি করা সমস্ত দয়া স্মরণ কর৷”
\s5
\c 7
\p
\v 1 শলোমন প্রার্থনা শেষ করার পর আকাশ থেকে আগুন নেমে সব হোম ও বলি গ্রাস করল এবং সদাপ্রভুর মহিমায় গৃহ পূর্ণ হল৷
\v 2 আর যাজকরা সদাপ্রভুর গৃহে ঢুকতে পারল না, কারণ সদাপ্রভুর মহিমায় সদাপ্রভুর গৃহ পরিপূর্ণ হয়েছিল৷
\v 3 যখন আগুন নামল এবং সদাপ্রভুর মহিমা গৃহের উপরে বিরাজ করল, তখন ইস্রায়েলের সন্তানরা সবাই তা দেখতে পেল, আর তারা নত হয়ে পাথর বাঁধা মাটিতে উপুড় হয়ে প্রণাম করল এবং সদাপ্রভুর স্তব করে বলল, “তিনি মঙ্গলময়, হ্যাঁ, তাঁর দয়া অনন্তকাল স্থায়ী৷”
\s5
\v 4 পরে রাজা ও সমস্ত লোক সদাপ্রভুর সামনে যজ্ঞ করলেন৷
\v 5 শলোমন রাজা বাইশ হাজার গরু ও এক লক্ষ কুড়ি হাজার মেষ বলিদান করলেন৷ এইভাবে রাজা ও সমস্ত লোক ঈশ্বরের গৃহ প্রতিষ্ঠা করলেন৷
\v 6 আর যাজকরা নিজেদের পদ অনুসারে দাঁড়িয়ে ছিল এবং লেবীয়েরাও সদাপ্রভুর সঙ্গীতের জন্য বাদ্যযন্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল; যখন দায়ূদ তাদের মাধ্যমে প্রশংসা করেন, তখন সদাপ্রভুর দয়া অনন্তকাল স্থায়ী বলে যেন তাঁর স্তব করা হয়, এই জন্য দায়ূদ রাজা সব যন্ত্র তৈরী করেছিলেন; আর তাদের সামনে যাজকরা তূরী বাজাচ্ছিল এবং সমস্ত ইস্রায়েল দাড়িয়ে ছিল৷
\s5
\v 7 আর শলোমন সদাপ্রভুর গৃহের সামনে উঠানের মাঝের জায়গাটি পবিত্র করলেন, কারণ তিনি সেখানে সমস্ত হোমবলি এবং মঙ্গলার্থক বলির মেদ উত্সর্গ করলেন, কারণ হোমবলি, ভক্ষ্য-নৈবেদ্য এবং সেই মেদ গ্রহণের জন্য শলোমনের তৈরী পিতলের যজ্ঞবেদি ছোট ছিল৷
\s5
\v 8 এইভাবে সেই সময়ে শলোমন ও তাঁর সঙ্গে সমস্ত ইস্রায়েল, হমাতের প্রবেশ-জায়গা থেকে মিসরের স্রোত পর্যন্ত একটি বিরাট জনতা, সাত দিন উত্সব করলেন৷
\v 9 পরে তাঁরা অষ্টম দিনে উত্সব-সভা করলেন, তার ফলে তাঁরা সাত দিন যজ্ঞবেদির প্রতিষ্ঠা ও সাত দিন উত্সব পালন করলেন৷
\v 10 শলোমন সপ্তম মাসের তেইশতম দিনে লোকদেরকে নিজেদের তাঁবুতে বিদায় করলেন৷ সদাপ্রভু দায়ূদের, শলোমনের ও তাঁর প্রজা ইস্রায়েলের যা কিছু মঙ্গল করেছিলেন, তার জন্য তারা আনন্দিত ও উল্লাসিত হয়েছিল৷
\s5
\v 11 এইভাবে শলোমন সদাপ্রভুর গৃহ ও রাজবাড়ি তৈরীর কাজ শেষ করলেন; সদাপ্রভুর গৃহে ও নিজের বাড়িতে যা যা করতে শলোমনের ইচ্ছা হয়েছিল, সে সমস্ত তিনি ভালোভাবে সম্পূর্ণ করলেন৷
\s শলোমনের প্রার্থনা ও ঈশ্বরের উত্তর৷
\p
\v 12 পরে সদাপ্রভু রাতের বেলায় শলোমনকে দর্শন দিয়ে বললেন, “আমি তোমার প্রার্থনা শুনেছি ও যজ্ঞ-গৃহ হিসাবে এই জায়গা আমার জন্য মনোনীত করেছি৷
\s5
\v 13 আমি যদি আকাশকে থামিয়ে দিই, আর বৃষ্টি না হয়, কিংবা দেশ ধ্বংস করতে পঙ্গপালদেরকে আদেশ করি, অথবা আমার প্রজাদের মধ্যে মহামারী পাঠাই,
\v 14 আমার প্রজারা, যাদেরকে আমার নামে ডাকা হয়েছে, তারা যদি নম্র হয়ে প্রার্থনা করে ও আমার মুখ খোঁজে এবং নিজেদের খারাপ পথ থেকে ফেরে, তবে আমি স্বর্গ থেকে তা শুনব, তাদের পাপ ক্ষমা করব ও তাদের দেশকে রোগ মুক্ত করব৷
\v 15 এখানে যে প্রার্থনা হবে, তার প্রতি আমার দৃষ্টি থাকবে ও কান খোলা থাকবে৷
\s5
\v 16 কারণ এই গৃহে যেন আমার নাম চিরকালের জন্য থাকে, তাই আমি এখন এটা মনোনীত ও পবিত্র করলাম এবং এখানে সর্বদা আমার দৃষ্টি ও মন থাকবে৷
\v 17 আর তোমার বাবা দায়ূদ যেমন চলত, তেমনি তুমিও যদি আমার সঙ্গে চল, আমি তোমাকে যে সব আদেশ দিয়েছি, যদি সেই অনুসারে কাজ কর এবং আমার বিধি ও শাসনগুলি মেনে চল;
\v 18 তবে ‘ইস্রায়েলের উপরে কর্তৃত্ব করতে তোমার বংশে লোকের অভাব হবে না, এই বলে আমি তোমার বাবা দায়ূদের সঙ্গে যে নিয়ম করেছিলাম, সেই অনুসারে তোমার রাজসিংহাসন স্থির করব৷
\s5
\v 19 কিন্তু যদি তোমরা আমার থেকে ফেরো ও তোমাদের সামনে স্থাপিত আমার বিধি ও আদেশগুলি পরিত্যাগ কর, আর গিয়ে অন্য দেবতাদের সেবা কর ও তাদের প্রণাম কর,
\v 20 তবে আমি ইস্রায়েলীয়দেরকে আমার যে দেশ দিয়েছি, সেখান থেকে তাদেরকে বংশ সমেত উচ্ছেদ করব এবং আমার নামের জন্য এই যে গৃহ পবিত্র করলাম, এটা আমার চোখের সামনে থেকে দূর করব এবং সমস্ত জাতির মধ্যে তা প্রবাদের ও উপহাসের পাত্র করব৷
\v 21 আর এই গৃহ উঁচু হলেও যে কেউ এর কাছ দিয়ে যাবে, সে চমকে উঠবে ও জিজ্ঞাসা করবে, ‘এই দেশের ও এই গৃহের প্রতি সদাপ্রভু কেন এরকম করেছেন?
\v 22 আর লোকে বলবে, ‘এর কারণ হল, যিনি এদের পূর্বপুরুষদেরকে মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছিলেন, ওরা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ত্যাগ করেছে এবং অন্য দেবতাদের কাছে মাথা নিচু করেছে ও তাদের সেবা করেছে, সেই জন্য তিনি তাদের উপর এইসব অমঙ্গল আনলেন৷
\s5
\c 8
\s শলোমনের ধনসম্পত্তি।
\p
\v 1 সদাপ্রভুর মন্দির ও তাঁর নিজের বাড়ী তৈরী করতে শলোমনের কুড়ি বছর লাগল।
\v 2 তারপর, হূরম শলোমনকে যে সব নগর দিয়েছিলেন, শলোমন সেগুলি পুনরায় তৈরী করে সেখানে ইস্রায়েল সন্তানদের বাস করতে দিলেন।
\s5
\v 3 তারপর শলোমন হমাৎ-সোবাতে গিয়ে সেটা দখল করলেন।
\v 4 তিনি মরুভূমিতে তদ্‌মোর নগর এবং তৈরী করলেন হমাতে সমস্ত ভাণ্ডার-নগর তৈরী করলেন।
\s5
\v 5 তাই তিনি উপরের বৈৎ-হোরোণ ও নীচের বৈৎ-হোরোণ এই দুটি প্রাচীরে ঘেরা নগর প্রাচীর, দরজা ও অর্গলের মাধ্যমে শক্তিশালী করলেন।
\v 6 আর বালৎ এবং শলোমনের সব ভাণ্ডার-নগর এবং তাঁর রথের ও ঘোড়াচালকদের নগরগুলি, আর যিরূশালেমে, লিবানোনে ও তাঁর অধিকার দেশের সব জায়গায় যা যা তৈরী করতে শলোমনের ইচ্ছা ছিল, তিনি সবই তৈরী করলেন।
\s5
\v 7 হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয় যে সব লোক অবশিষ্ট ছিল, যারা ইস্রায়েলীয় নয়, যাদেরকে ইস্রায়েল সন্তানরা সম্পূর্ণ ভাবে ধ্বংস করেনি,
\v 8 দেশে অবশিষ্ট সেই লোকদের সন্তানদেরকে শলোমন নিজের দাস হিসাবে সংগ্রহ করলেন; তারা আজ পর্যন্ত সেই কাজ করছে।
\s5
\v 9 কিন্তু শলোমন তাঁর কাজ করবার জন্য ইস্রায়েল সন্তানদের মধ্যে কাউকে দাস বানান নি; তারা যোদ্ধা, তাঁর প্রধান সেনাপতি এবং তাঁর রথের ও ঘোড়াচালকদের সেনাপতি হল।
\v 10 আর তাদের মধ্যে শলোমন রাজার নিযুক্ত দুশো পঞ্চাশ জন প্রধান শাসনকর্তা প্রজাদের উপরে কর্তৃত্ব করত।
\s5
\v 11 পরে শলোমন ফরৌণের মেয়ের জন্য যে বাড়ী তৈরী করেছিলেন, সেই বাড়িতে দায়ূদ-নগর থেকে তাঁকে নিয়ে এলেন; কারণ তিনি বললেন, “আমার স্ত্রী ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদের বাড়ীতে থাকবেন না, কারণ যে সব জায়গায় সদাপ্রভুর সিন্দুক আনা হয়েছে সেই জায়গাগুলি পবিত্র।”
\s5
\v 12 আর শলোমন বারান্দার সামনে সদাপ্রভুর যে যজ্ঞবেদি তৈরী করেছিলেন, তার উপরে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোম করতে লাগলেন।
\v 13 তিনি মোশির আদেশ মতে বিশ্রামবারে, অমাবস্যায় ও বছরের মধ্যে নির্ধারিত তিনটি উত্সবে, অর্থাৎ তাড়ীশূন্য রুটির উত্সবে, সপ্তাহের উত্সবে ও কুঁঠীর উত্সবে প্রতিদিনের নিয়ম অনুসারে বলি উৎসর্গ করতেন।
\s5
\v 14 আর তিনি তাঁর বাবা দায়ূদের নির্ধারিত যাজকদের সেবা কাজের জন্য তাদের সময়সূচি নির্দিষ্ট করে দিলেন এবং প্রতিদিনের নিয়ম অনুসারে প্রশংসা ও যাজকদের সামনে পরিচর্যা করতে লেবীয়দেরকে নিজেদের কাজে নিযুক্ত করলেন। আর তিনি পালা অনুসারে প্রত্যেকটি দরজা দারোয়ানদের নিযুক্ত করলেন, কারণ ঈশ্বরের লোক দায়ূদ সেই রকম আদেশ দিয়েছিলেন।
\v 15 আর রাজা যাজকদেরকে ও লেবীয়দেরকে ভাণ্ডার প্রভৃতি যে কোনো বিষয়ে যে আদেশ দিতেন, তার অমান্য তারা করত না।
\s5
\v 16 সদাপ্রভুর গৃহের ভিত গাঁথা থেকে শুরু করে তা শেষ করবার দিন পর্যন্ত শলোমনের সমস্ত কাজ নিয়ম করে চলল-সদাপ্রভুর গৃহের কাজ শেষ হল।
\v 17 তারপর শলোমন ইদোম দেশের সমুদ্র পারের ইৎসিয়োন-গেবরে ও এলতে গেলেন।
\v 18 আর হূরম তাঁর দাসেদের দিয়ে তাঁর কাছে কয়েকটি জাহাজ ও সামুদ্রিক কাজে দক্ষ দাসদেরকে পাঠালেন; তারা শলোমনের দাসেদের সঙ্গে ওফীরে গিয়ে সেখান থেকে চারশো পঞ্চাশ তালন্ত সোনা নিয়ে শলোমন রাজার কাছে আনলো।
\s5
\c 9
\s শিবাদেশের রানীর আগমন।
\p
\v 1 আর শিবার রাণী শলোমনের সুনাম শুনে কঠিন বাক্য দিয়ে শলোমনের পরীক্ষা করার জন্য প্রচুর পরিমাণে ঐশ্বর্য্য নিয়ে এবং প্রচুর সুগন্ধি মশলা, সোনা ও মণিবাহক উটদের সঙ্গে নিয়ে যিরূশালেমে আসলেন এবং শলোমনের কাছে এসে তাঁর মনে যা যা ছিল তা সবই তাঁকে বললেন।
\v 2 আর শলোমন তাঁর সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন; শলোমনের কাছে কোনো কিছুই না বোঝার মত ছিল না, তিনি তাঁকে সবই বললেন।
\s5
\v 3 এইভাবে শিবার রাণী শলোমনের জ্ঞান ও তাঁর তৈরী গৃহ
\v 4 এবং তাঁর টেবিলের খাবার ও তাঁর কর্মচারীদের থাকবার জায়গা ও দাঁড়িয়ে থাকা চাকরদের শ্রেণী ও তাদের পোশাক এবং তাঁর পানীয় পরিবেশকদের ও তাদের পোশাক এবং সদাপ্রভুর গৃহে উঠার জন্য তাঁর তৈরী সিঁড়ি, এই সব দেখে অবাক হয়ে গেলেন।
\s5
\v 5 আর তিনি রাজাকে বললেন, “আমি আমার দেশে থেকে আপনার বাক্য ও জ্ঞানের বিষয়ে যে কথা শুনেছিলাম, তা সত্যি।
\v 6 কিন্তু আমি যতক্ষণ এসে নিজের চোখে না দেখলাম, ততক্ষণ লোকেদের সেই সব কথায় আমার বিশ্বাস হয় নি; আর দেখুন, আপনার জ্ঞানের অর্ধেকও আমাকে বলা হয় নি; আমি যে সুনাম শুনেছিলাম, তার থেকে আপনার গুণ অনেক বেশী।
\s5
\v 7 ধন্য আপনার লোকেরা এবং ধন্য আপনার এই দাসেরা, যারা সব সময় আপনার সামনে দাঁড়িয়ে থেকে আপনার জ্ঞানের কথা শোনে।
\v 8 ধন্য আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য রাজা করে তাঁর সিংহাসনে আপনাকে বসবার জন্য আপনার উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন। ইস্রায়েলের লোকদেরকে চিরস্থায়ী করার জন্য আপনার ঈশ্বর তাদেরকে ভালবাসেন, এই জন্য সুবিচার ও ন্যায় রক্ষার জন্য আপনাকে রাজা করেছেন।”
\s5
\v 9 পরে তিনি রাজাকে সাড়ে একশো কুড়ি তালন্ত সোনা, অনেক সুগন্ধি মশলা ও মণি উপহার দিলেন। শিবার রাণী রাজা শলোমনকে যে রকম সুগন্ধি মশলা দিলেন, সেই রকম সুগন্ধি মশলা আর হয় নি।
\s5
\v 10 আর হূরমের ও শলোমনের যে দাসরা ওফীর থেকে সোনা নিয়ে আসত, তারা চন্দন কাঠ আর মণিও আনত।
\v 11 সেই সব চন্দন কাঠ দিয়ে সদাপ্রভুর রাজা গৃহের ও রাজবাড়ীর জন্য সিঁড়ি, গায়কদের জন্য বীণা ও নেবল তৈরী করালেন। এর আগে যিহূদা দেশে কেউ কখনও সেইরকম দেখে নি।
\v 12 আর শলোমন রাজা শিবার রাণীর ইচ্ছা অনুসারে চাওয়া সবই তাঁকে দিলেন, রাণী তাঁর জন্য যা এনেছিলেন তার চেয়ে অনেক বেশী উপহার তিনি তাঁকে দিলেন; পরে রাণী ও তাঁর দাসেরা নিজের দেশে ফিরে গেলেন।
\s শলোমনের ঐশ্বর্য্য ও মৃত্যু।
\p
\s5
\v 13 এক বছরের মধ্যে শলোমনের কাছে ছশো ছেষট্টি তালন্ত পরিমাপের সোনা আসত।
\v 14 এছাড়া বণিক ও ব্যবসায়ীরা সোনা নিয়ে আসত এবং আরবের সমস্ত রাজারা ও দেশের শাসনকর্তারা শলোমনের কাছে সোনা ও রূপা নিয়ে আসতেন।
\s5
\v 15 তাতে শলোমন রাজা পেটানো সোনা দিয়ে দু’শো বড় ঢাল তৈরী করলেন। প্রত্যেকটা ঢালে ছশো শেকল পরিমাপের পেটানো সোনা ছিল।
\v 16 আর তিনি পেটানো সোনা দিয়ে তিনশো ছোট ঢাল তৈরী করলেন; তার প্রত্যেক ঢালে তিনশো শেকল পরিমাপের সোনা ছিল। পরে রাজা লিবানোন অরণ্যের বাড়িতে সেগুলি রাখলেন।
\s5
\v 17 আর রাজা হাতির দাঁতের একটা বড় সিংহাসন তৈরী করিয়ে খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়লেন।
\v 18 ঐ সিংহাসনের সিঁড়ির ছয়টা ধাপ, আর একটি সোনার পা রাখবার আসন সিংহাসনের সঙ্গে লাগানো ছিল এবং আসনের দু’দিকে হাতল ছিল এবং সেই হাতলের পাশে দুটি সিংহমূর্তি দাঁড়ানো ছিল,
\s5
\v 19 আর সেই ছয়টা ধাপের উপরে দুপাশে বারোটি সিংহমূর্তি দাঁড়িয়ে ছিল; এই রকম সিংহাসন অন্য কোনো রাজ্যে তৈরী হয় নি।
\v 20 শলোমন রাজার সমস্ত পানীয়ের পাত্রগুলো সোনার ছিল ও লিবানোন অরণ্যের বাড়ির সমস্ত পাত্র ছিল খাঁটি সোনার তৈরী; শলোমনের সময়ে রুপো কোনো কিছুর মধ্যে গণনা করা হত না।
\v 21 কারণ হূরমের দাসেদের সঙ্গে রাজার কতগুটি জাহাজ তর্শীশে যেত; সেই তর্শীশের জাহাজগুলি তিন বছরে একবার সোনা, রুপো, হাতির দাঁত, বানর ও ময়ূর নিয়ে আসত।
\s5
\v 22 এইভাবে ঐশ্বর্য্য ও জ্ঞানে শলোমন রাজা পৃথিবীর সব রাজার মধ্যে প্রধান হলেন।
\v 23 আর ঈশ্বর শলোমনের হৃদয়ে যে জ্ঞান দিয়েছিলেন, তাঁর সেই জ্ঞানের কথাবার্তা শুনবার জন্য পৃথিবীর সব রাজা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেষ্টা করতেন।
\v 24 আর সবাই উপহার, সোনা-রুপোর পাত্র, পোশাক, অস্ত্র ও সুগন্ধি মশলা, ঘোড়া আর খচ্চর আনতেন; প্রতি বছর এই রকম হত।
\s5
\v 25 আর ঘোড়া ও রথের জন্য শলোমনের চার হাজার ঘর ছিল ও বারো হাজার ঘোড়াচালক ছিল; তিনি তাদের রথ রাখবার নগরগুলিতে এবং যিরূশালেমে রাজার কাছে রাখতেন।
\v 26 আর তিনি ফরাৎ নদী থেকে পলেষ্টীয়দের দেশ ও মিসরের সীমানা পর্যন্ত সমস্ত রাজাদের উপরে রাজত্ব করতেন।
\s5
\v 27 রাজা যিরূশালেমে রুপোকে পাথরের মত এবং এরস কাঠকে উপত্যকার ডুমুর গাছের মত অনেক করলেন।
\v 28 আর লোকেরা মিসর ও সব দেশ থেকে শলোমনের জন্য ঘোড়া আনত।
\v 29 শলোমনের সমস্ত কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত নাথন ভাববাদীর বইয়ে ও শীলোনীয় অহীয়ের ভাববাণীতে এবং নবাটের ছেলে যারবিয়ামের বিষয়ে ‘ইদ্দো দর্শকের দর্শন’ নামক বইতে কি লেখা নেই?
\v 30 পরে শলোমন যিরূশালেমে চল্লিশ বছর ধরে সমস্ত ইস্রায়েলের উপরে রাজত্ব করলেন।
\v 31 তারপরে শলোমন তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন ও তাঁর বাবা দায়ূদের শহরে কবর দেওয়া হল এবং তাঁর ছেলে রহবিয়াম তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 10
\s রহবিরাম রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 রহবিয়াম শিখিমে গেলেন, কারণ তাঁকে রাজা করবার জন্য ইস্রায়েলীয়েরা সকলে শিখিমে উপস্থিত হয়েছিল।
\v 2 আর যখন নবাটের ছেলে যারবিয়াম এই কথা শুনলেন, কারণ তিনি মিশরে ছিলেন, শলোমন রাজার সামনে থেকে সেখানে পালিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু যারবিয়াম মিসর থেকে ফিরে আসলেন।
\s5
\v 3 লোকেরা দূত পাঠিয়ে তাঁকে ডেকে আনল; আর যারবিয়াম ও ইস্রায়লীয়েরা সবাই রহবিয়ামের কাছে গিয়ে বললেন,
\v 4 “আপনার বাবা আমাদের উপর কঠিন জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছেন; তাই আপনার বাবা আমাদের উপরে যে কঠিন দাসত্ব ও ভারী জোয়াল চাপিয়েছেন, আপনি তা হালকা করুন, তাহলে আমরা আপনার সেবা করব।”
\v 5 তিনি তাদের বললেন, “তিন দিন পর আবার আমার কাছে এসো;” তাতে লোকেরা চলে গেল।
\s5
\v 6 পরে রহবিয়াম রাজা, তাঁর বাবা শলোমনের জীবনকালে যে সব বৃদ্ধ নেতারা তাঁর সামনে থাকতেন, তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করে বললেন, “আমি এই লোকদের কি উত্তর দেব? তোমরা কি পরামর্শ দাও?”
\v 7 তাঁরা তাঁকে বললেন, “যদি আপনি এই সব লোকদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করে তাদের সন্তুষ্ট করেন এবং তাদের ভালো কথা বলেন, তবে তারা সব সময় আপনার সেবা করবে।”
\s5
\v 8 কিন্তু তিনি ঐ বৃদ্ধ নেতাদের উপদেশ অগ্রাহ্য করে সমবয়সী যুবকেরা যারা তাঁর সামনে দাঁড়াতো, তাদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন।
\v 9 তিনি তাদের বললেন, “ঐ লোকেরা বলছে, ‘আপনার বাবা যে ভারী জোয়াল আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন তা হালকা করুন; এখন আমরা তাদের কি উত্তর দেব? তোমরা কি পরামর্শ দাও?”
\s5
\v 10 তাঁর সমবয়সী যুবকেরা বলল, “যে লোকেরা আপনাকে বলছে, ‘আপনার বাবা যে ভারী জোয়াল আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন তা হালকা করুন, তাদের এই কথা বলুন, ‘আমার কড়ে আঙুলটা আমার বাবার কোমরের চেয়েও মোটা;
\v 11 এখন আমার বাবা তোমাদের উপর যে ভারী জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু আমি তোমাদের জোয়াল আরও ভারী করব; আমার বাবা তোমাদের চাবুক মেরে শাস্তি দিতেন, কিন্তু আমি কাঁকড়া-বিছা দিয়ে দেব।”
\s5
\v 12 পরে “তিন দিন পর আবার আমার কাছে এসো,” রাজার এই কথা অনুসারে যারবিয়াম ও সমস্ত লোকেরা তিন দিন পর রহবিয়ামের কাছে এল।
\v 13 আর রাজা তাদের খুব কড়া উত্তর দিলেন; ফলে রহবিরাম রাজা বৃদ্ধ নেতাদের উপদেশ ত্যাগ করলেন
\v 14 এবং সেই যুবকদের পরামর্শ মত তাদের তিনি বললেন, “আমার বাবা তোমাদের জোয়াল ভারী করেছিলেন, কিন্তু আমি তা আরও ভারী করব; আমার বাবা তোমাদের চাবুক দিয়ে শাস্তি দিতেন, কিন্তু আমি তোমাদের কাঁকড়া-বিছা দিয়ে দেব।”
\s5
\v 15 এইভাবে রাজা লোকদের কথায় কান দিলেন না, কারণ শীলোনীয় অহিয়ের মাধ্যমে সদাপ্রভু নবাটের ছেলে যারবিয়ামকে যে কথা বলেছিলেন, তা পূর্ণ করবার জন্য ঈশ্বর থেকেই এই ঘটনা ঘটল।
\s5
\v 16 যখন সমস্ত ইস্রায়েল দেখল, রাজা তাদের কথা শুনলেন না, তখন লোকেরা রাজাকে উত্তরে বলল, “দায়ূদের সঙ্গে আমাদের কি সম্পর্ক? যিশয়ের ছেলের উপর আমাদের কোনো অধিকার নেই; হে ইস্রায়েল, সবাই নিজেদের তাঁবুতে যাও; দায়ূদ! এখন তোমার নিজের বংশ তুমি নিজেই দেখ।” তারপরে সমস্ত ইস্রায়েল নিজেদের তাঁবুতে চলে গেল।
\v 17 তবে যে সব ইস্রায়েলীয়রা যিহূদার নগরগুলিতে বাস করত, রহবিয়াম তাদের উপরে রাজত্ব করলেন।
\v 18 পরে রহবিয়াম রাজা তাঁর কাজে নিযুক্ত দাসেদের শাসনকর্তা হদোরামকে পাঠালেন; কিন্তু ইস্রায়েলীয় সন্তানরা তাকে পাথর মারলো, তাতে সে মারা গেল। আর রাজা রহবিয়াম তাড়াতাড়ি তাঁর রথে উঠে যিরূশালেমে পালিয়ে গেলেন।
\v 19 এইভাবে ইস্রায়েলীয়েরা দায়ূদের বংশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল; আজ পর্যন্ত সেইভাবেই রয়েছে।
\s5
\c 11
\p
\v 1 যিরূশালেমে পৌঁছে রহবিয়াম যিহূদা ও বিন্যামীন বংশ অর্থাৎ এক লক্ষ আশি হাজার মনোনীত সৈন্যকে ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য, রাজ্যটি রহবিয়ামের বশবর্তী করার জন্য জড়ো করলেন।
\s5
\v 2 কিন্তু ঈশ্বরের লোক শময়িয়ের কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য পৌঁছালো,
\v 3 “তুমি শলোমনের ছেলে যিহূদার রাজা রহবিয়ামকে এবং যিহূদা ও বিন্যামীনে বসবাসকারী সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের বল,
\v 4 সদাপ্রভু বলেন, ‘তোমরা তোমাদের ভাইদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যেও না; প্রত্যেক জন নিজেদের গৃহে ফিরে যাও, কারণ এই ঘটনা আমার থেকে হল।’ ” তাই তারা সদাপ্রভুর কথা মেনে নিয়ে যারবিয়ামের বিরুদ্ধে না গিয়ে ফিরে গেল।
\s5
\v 5 পরে রহবিয়াম যিরূশালেমে বাস করে দেশ রক্ষা করবার জন্য যিহূদা দেশের নগরগুলি গাঁথলেন।
\v 6 তার ফলে বৈৎলেহম, ঐটম, তকোয়,
\v 7 বৈৎ-সুর, সেখো, অদুল্লম,
\v 8 গাৎ, মারেশা, সীফ,
\v 9 অদোরয়িম, লাখীশ, অসেকা,
\v 10 সরা, অয়ালোন ও হিব্রোণ, এই যে সব প্রাচীরে ঘেরা নগর যিহূদা ও বিন্যামীন দেশে আছে, তিনি সেগুলি গাঁথলেন।
\s5
\v 11 আর তিনি দুর্গগুলি শক্তিশালী করে সেখানে সেনাপতিদের রাখলেন এবং খাবার-দাবার, তেল ও আঙ্গুর রসের ভাণ্ডার করলেন।
\v 12 আর সমস্ত নগরে ঢাল ও বর্শা রাখলেন ও নগরগুলি খুব শক্তিশালী করলেন। আর যিহূদা ও বিন্যামীন তাঁর অধীনে ছিল।
\s5
\v 13 আর সমস্ত ইস্রায়েলের মধ্যে যে যাজক ও লেবীয়েরা ছিল, তারা নিজের নিজের সব এলাকা থেকে তাঁর কাছে এল।
\v 14 ফলে লেবীয়েরা তাদের পশু চরাবার মাঠ ও সম্পত্তি ত্যাগ করে যিহূদায় ও যিরূশালেমে এল, কারণ যারবিয়াম আর তাঁর ছেলেরা সদাপ্রভুর যাজকের কাজ করতে না দিয়ে তাদের অমান্য করেছিলেন।
\v 15 আর তিনি উঁচু জায়গা গুলির, ছাগদের ও তাঁর তৈরী বাছুর দুটির জন্য নিজে যাজকদের নিযুক্ত করেছিলেন।
\s5
\v 16 ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের মধ্যে যারা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর খোঁজে আগ্রহী ছিল, তারা লেবীয়দের সঙ্গে তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করতে যিরূশালেমে আসল।
\v 17 তারা তিন বছর পর্যন্ত যিহূদার রাজ্য শক্তিশালী করল ও শলোমনের ছেলে রহবিয়ামকে বলবান করল; কারণ তিন বছর পর্যন্ত তারা দায়ূদ ও শলোমনের পথে চলল।
\s5
\v 18 আর রহবিয়াম দায়ূদের ছেলে যিরীমোতের মেয়ে মহলৎকে বিয়ে করলেন; তাঁর মা অবীহয়িল যিশয়ের ছেলে, ইলীয়াবের মেয়ে।
\v 19 সেই স্ত্রী তাঁর জন্য যিয়ূশ, শমরিয় ও সহম নামে তিনটি ছেলের জন্ম দিলেন।
\s5
\v 20 তারপর তিনি অবশালোমের মেয়ে মাখাকে বিয়ে করলেন; এই স্ত্রী তাঁর জন্য অবিয়, অত্তয়, সীষ ও শলোমীতের জন্ম দিলেন।
\v 21 রহবিয়াম তাঁর সব স্ত্রী ও উপপত্নীদের মধ্যে অবশালোমের মেয়ে মাখাকে বেশী ভালবাসতেন; তাঁর মোট আঠারো জন স্ত্রী ও ষাটজন উপপত্নী ছিল এবং আটাশ জন ছেলে ও ষাটজন মেয়ের জন্ম দিলেন।
\s5
\v 22 পরে রহবিয়াম মাখার ছেলে অবিয়কে প্রধান, ভাইদের মধ্যে নায়ক করলেন, কারণ তাঁকেই রাজা করার তাঁর ইচ্ছা ছিল।
\v 23 আর তিনি সতর্ক হয়ে চললেন, সম্পূর্ণ যিহূদা ও বিন্যামীন দেশের প্রাচীরে ঘেরা প্রত্যেকটি নগরে তাঁর ছেলেদেরকে নিযুক্ত করলেন এবং তাদেকে প্রচুর খাবার-দাবার দিলেন এবং তাঁদের জন্য অনেক স্ত্রীর ব্যবস্থা করলেন।
\s5
\c 12
\s রহবিয়ামের অপরাধের জন্য শাস্তি।
\p
\v 1 পরে যখন রহবিয়ামের রাজ্য শক্তিশালী হল এবং তিনি শক্তিমান হয়ে উঠলেন, তখন তিনি ও তাঁর সঙ্গে সমস্ত ইস্রায়েল সদাপ্রভুর ব্যবস্থা ত্যাগ করলেন।
\s5
\v 2 আর রহবিরাম রাজার পঞ্চম বছরে মিসরের রাজা শীশক যিরূশালেম আক্রমণ করলেন, কারণ লোকেরা সদাপ্রভুকে অমান্য করেছিল।
\v 3 সেই রাজার সঙ্গে বারোশো রথ ও ষাট হাজার ঘোড়াচালক ছিল এবং মিসর থেকে তাঁর সঙ্গে অসংখ্য লূবীয়, সুক্কীয় ও কূশীয় সৈন্য এসেছিল।
\v 4 আর তিনি যিহূদার প্রাচীরে ঘেরা নগরগুলি অধিকার করে নিয়ে যিরূশালেম পর্যন্ত আসলেন।
\s5
\v 5 তখন শময়িয় ভাববাদী রহবিয়ামের কাছে এবং যিহূদার যে শাসনকর্তারা শীশকের ভয়ে যিরূশালেমে এসে জড়ো হয়েছিলেন, তাঁদের কাছে এসে বললেন, “সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘তোমরা আমাকে ত্যাগ করেছ, সেইজন্য আমিও তোমাদেরকে শীশকের হাতে ছেড়ে দিলাম।’”
\v 6 তাতে ইস্রায়েলের শাসনকর্তা ও রাজা নিজেদের নত করে বললেন, “সদাপ্রভু ন্যায় পরায়ণ।”
\s5
\v 7 যখন সদাপ্রভু দেখলেন যে, তারা নিজেদের নত করেছে, তখন শময়িয়ের কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য আসলো, “তারা নিজেদের নত করেছে, আমি তাদের ধ্বংস করব না; কিছু সময়ের মধ্যেই তাদের উদ্ধার করব। শীশকের মধ্য দিয়ে যিরূশালেমের উপর আমার ক্রোধ ঢেলে দেব না।
\v 8 কিন্তু তারা তার দাস হবে, এতে তারা আমার দাস হওয়া কি এবং অন্য দেশীয় রাজ্যের দাস হওয়া কি, এটা তারা বুঝতে পারবে।”
\s5
\v 9 মিসরের রাজা শীশক যিরূশালেম আক্রমণ করে সদাপ্রভুর গৃহের ও রাজবাড়ীর সমস্ত ধন সম্পদ নিয়ে গেলেন; তিনি সব কিছুই নিয়ে গেলেন; শলোমনের তৈরী সোনার ঢালগুলিও নিয়ে গেলেন।
\v 10 পরে রাজা রহবিয়াম সেগুলির বদলে পিতলের ঢাল তৈরী করে রাজবাড়ীর দারোয়ানের শাসনকর্তাদের হাতে সেগুলির ভার দিলেন।
\s5
\v 11 রাজা যখন সদাপ্রভুর গৃহে যেতেন, তখন ঐ দারোয়ানরা সেই ঢালগুলি ধরত, পরে দারোয়ানদের ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যেত।
\v 12 রহবিয়াম নিজেকে নত করার ফলে সদাপ্রভুর ক্রোধ তার থেমে গেল, তাঁর সর্বনাশ হল না। আর যিহূদার মধ্যেও কিছু কিছু ভাল লোক ছিল।
\s5
\v 13 রাজা রহবিয়াম যিরূশালেমে নিজেকে বলবান করে রাজত্ব করলেন; তার ফলে রহবিয়াম একচল্লিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করলেন এবং সদাপ্রভু নিজের নাম স্থাপনের জন্য ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের মধ্যে থেকে যে নগর মনোনীত করেছিলেন, সেই যিরূশালেমে তিনি সতেরো বছর রাজত্ব করেছিলেন। রহবিয়ামের মায়ের নাম নয়মা, তিনি অম্মোনীয়া।
\v 14 রহবিয়াম সদাপ্রভুর ইচ্ছামত চলবার জন্য মন স্থির করেন নি বলে যা খারাপ তাই করতেন।
\v 15 রহবিয়ামের কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত শময়িয় ভাববাদীর ও ইদ্দো দর্শকের বংশবলির বইয়ে কি লেখা নেই? রহবিয়ামের ও যারবিয়ামের মধ্যে সব সময় যুদ্ধ হত।
\v 16 পরে রহবিয়াম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন এবং দায়ূদ নগরে তাঁকে কবর দেওয়া হল, আর তাঁর ছেলে অবিয় তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 13
\s অবিয় রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 যারবিয়াম রাজার আঠারো বছরে অবিয় যিহূদার উপরে রাজত্ব করতে শুরু করলেন।
\v 2 তিনি তিন বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করলেন; তাঁর মায়ের নাম ছিল মীখায়া, তিনি গিবিয়ার অধিবাসী ঊরীয়েলের মেয়ে। অবিয় আর যারবিয়ামের মধ্যে যুদ্ধ হত।
\v 3 অবিয় চার লক্ষ মনোনীত বীর যোদ্ধার সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেলেন এবং যারবিয়াম আট লক্ষ মনোনীত বলবান বীরের সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সৈন্য সাজালেন।
\s5
\v 4 আর অবিয় পর্বতময় ইফ্রয়িম এলাকার সমারয়িম পর্বতের উপরে দাঁড়িয়ে বললেন, “হে যারবিয়াম, তুমি ও সমস্ত ইস্রায়েলের লোকেরা, আমার কথা শোন।
\v 5 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু ইস্রায়েলের রাজপদ চিরকালের জন্য দায়ূদকে দিয়েছেন; তাঁকে ও তাঁর সন্তানদেরকে লবণ নিয়মের মাধ্যমে দিয়েছেন, এটা জানার কি তোমাদের প্রয়োজন নেই?
\s5
\v 6 তবুও দায়ূদের ছেলে শলোমনের দাস যে নবাটের ছেলে যারবিয়াম, সেই লোক তাঁর মনিবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল।
\v 7 আর নিষ্ঠুর বিবেকবিহীন লোকেরা তার সঙ্গে জড়ো হয়ে শলোমনের ছেলে রহবিয়ামের বিরুদ্ধে নিজেদের শক্তিশালী করল। সেই সময় রহবিয়াম যুবক ও নরম হৃদয়ের ছিলেন, তাদের সামনে নিজেকে বলবান করতে পারলেন না।
\s5
\v 8 আর এখন তোমরাও দায়ূদের সন্তানদের হাতে সদাপ্রভুর যে রাজ্য, তার বিরুদ্ধে নিজেদেরকে বলবান করতে চাইছেন; তোমরা বিশাল জনতা এবং সেই দুটি সোনার বাছুর তোমাদের সঙ্গে আছে, যা যারবিয়াম তোমাদের জন্য দেবতা হিসাবে তৈরী করেছেন।
\v 9 তোমরা কি সদাপ্রভুর যাজকদেরকে, হারোণের সন্তানদেরকে ও লেবীয়দেরকে তাড়িয়ে দাও নি? আর অন্য দেশের জাতিদের মত নিজেদের জন্য যাজকদের নিযুক্ত করনি? একটি বাছুর ও সাতটা ভেড়া সঙ্গে নিয়ে যে কেউ নিজেকে পবিত্র করবার জন্য উপস্থিত হয়, সে ওদের যাজক হতে পারে, যারা ঈশ্বর নয়।
\s5
\v 10 কিন্তু আমরা সেই রকম নই, সদাপ্রভুই আমাদের ঈশ্বর; আমরা তাঁকে ত্যাগ করি নি এবং যাজকরা, হারোণের বংশধরেরা সদাপ্রভুর সেবা করছে এবং আর লেবীয়েরাও তাদের কাজে নিযুক্ত আছে।
\v 11 আর তারা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় হোমবলি পোড়ায় ও সুগন্ধি ধূপ জ্বালায়, আর শুচি টেবিলের উপরে দর্শন রুটি সাজিয়ে রাখে এবং প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায় জ্বালাবার জন্য বাতিগুলির সঙ্গে সোনার বাতিদান তৈরী করে; বাস্তবিক আমরা আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ রক্ষা করি; কিন্তু তোমরা তাঁকে ত্যাগ করেছ।
\s5
\v 12 আর দেখ, ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন, তিনি আমাদের সামনে যাচ্ছেন এবং তাঁর যাজকেরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দেবার জন্য তূরী নিয়ে আমাদের সঙ্গে আছেন। হে ইস্রায়েলের সন্তানরা, তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ কোরো না, করলে সফল হবে না।”
\s5
\v 13 পরে যারবিয়াম পিছনের দিকে তাদের আক্রমনের জন্য গোপনে একদল সৈন্য পাঠিয়ে দিলেন; তাতে তাঁর লোকেরা যিহূদার সামনে ও সেই লুকানো দল পিছনে ছিল।
\v 14 পরে যিহূদার লোকেরা মুখ ফিরিয়ে দেখতে পেল যে, তাদের সামনে ও পিছনে দুদিকে সৈন্য; তখন তারা সদাপ্রভুর কাছে কান্নাকাটি করল এবং যাজকরা তূরী বাজাল।
\v 15 পরে যিহূদার লোকেরা যুদ্ধের ডাক দিল; তাতে যিহূদার লোকেদের যুদ্ধের ডাক দেবার সময়ে ঈশ্বর অবিয়ের ও যিহূদার সামনে থেকে যারবিয়াম ও সমস্ত ইস্রায়েলকে আঘাত করলেন।
\s5
\v 16 তখন ইস্রায়েলেরয় লোকেরা যিহূদার সামনে থেকে পালাল এবং ঈশ্বর তাদেরকে যিহূদার হাতে সমর্পণ করলেন।
\v 17 আর অবিয় ও তাঁর সৈন্যরা অনেক লোককে মেরে ফেলল; ফলে ইস্রায়েলের পাঁচ লক্ষ মনোনীত লোক মারা পড়ল।
\v 18 এইভাবে সেই সময়ে ইস্রায়েল সন্তানরা নত হল ও যিহূদা সন্তানরা বলবান হল, কারণ তারা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপর নির্ভর করল।
\v 19 পরে অবিয় যারবিয়ামের পিছনে তাড়া করতে গিয়ে তাঁর হাত থেকে বৈথেল ও তার উপনগরগুলি, যিশানা ও তার উপনগরগুলি এবং ইফ্রোণ ও তার উপনগরগুলি দখল করে নিলেন।
\v 20 অবিয়ের সময়ে যারবিয়াম আর বলবান হতে পারেন নি; পরে সদাপ্রভু তাঁকে আঘাত করলে তিনি মারা গেলেন।
\v 21 কিন্তু অবিয় বলবান হয়ে উঠলেন, আর তাঁর চৌদ্দজন স্ত্রী ছিল এবং তিনি বাইশজন ছেলে ও ষোলজন মেয়ে জন্ম দিলেন।
\v 22 অবিয়ের অবশিষ্ট কাজের কথা, তার আচার ব্যবহার এবং তাঁর কথা বলেছিলেন ইদ্দো ভাববাদীর ব্যাখামূলক বইয়ে লেখা আছে।
\s5
\c 14
\s আসা রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 পরে অবিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে ঘুমিয়ে পড়লেন এবং তাঁকে দায়ূদ নগরে কবর দেওয়া হল। আর তাঁর ছেলে আসা তাঁর জায়গায় রাজা হলেন; তাঁর সময়ে দশ বছর দেশে শান্তি ছিল।
\v 2 আসা তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল ও সঠিক, তাই করতেন;
\v 3 তিনি পরজাতিদের যজ্ঞবেদি ও উঁচু জায়গা গুলি ধ্বংস করলেন, থামগুলি ভেঙ্গে চুরমার করলেন ও আশেরা-মূর্তিগুলি কেটে ফেললেন;
\v 4 আর তিনি যিহূদার লোকেদেরকে তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ইচ্ছামত চলতে এবং তাঁর ব্যবস্থা ও আদেশ পালন করতে বললেন।
\s5
\v 5 আর তিনি যিহূদার সব নগরের মধ্যে থেকে উঁচু জায়গা গুলি ও সূর্য্য প্রতিমাগুলি ধ্বংস করলেন; আর তাঁর অধীনে রাজ্যে শান্তি ছিল।
\v 6 আর তিনি যিহূদা দেশে প্রাচীরে ঘেরা কয়েকটি নগর গাঁথলেন, কারণ দেশে শান্তি ছিল এবং কয়েক বছর পর্যন্ত কেউ তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করল না, কারণ ঈশ্বর তাঁকে বিশ্রাম দিয়েছিলেন।
\s5
\v 7 অতএব তিনি যিহূদাকে বললেন, “এস, আমরা এই নগরগুলি গাঁথি এবং তার চারপাশে প্রাচীর, দুর্গ, দরজা ও অর্গল তৈরী করি; দেশ তো এখনও আমাদের হাতে আছে, কারণ আমরা আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ইচ্ছামত চলেছি, আমরা তাঁর ইচ্ছামত চলেছি, আর তিনি সব দিক থেকেই আমাদের বিশ্রাম দিয়েছেন।” এইভাবে তারা নগরগুলি গাঁথার কাজ ভালো ভাবে শেষ করল।
\v 8 আসার ঢাল ও বর্শাধারী অনেক সৈন্য ছিল, যিহূদার তিন লক্ষ ও বিন্যামীনের ঢাল ও ধনুকধারী দুই লক্ষ আশি হাজার; এরা সবাই বলবান বীর ছিল।
\s5
\v 9 পরে কূশ দেশের সেরহ দশ লক্ষ সৈন্য ও তিনশো রথ সঙ্গে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বের হয়ে মারেশা পর্যন্ত এলেন।
\v 10 তাতে আসা তাঁর বিরুদ্ধে বের হলেন। তারা মারেশার কাছে সফাথা উপত্যকায় সৈন্য সাজালেন।
\v 11 তখন আসা তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ডেকে বললেন, “হে সদাপ্রভু, তুমি ছাড়া এমন আর কেউ নেই, যে বলবানের ও বলহীনের মধ্যে সাহায্য করে; হে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, আমাদের সাহায্য কর; কারণ আমরা তোমার উপরেই নির্ভর করি এবং তোমারই নামে এই বিশাল সৈন্যদলের বিরুদ্ধে এসেছি। হে সদাপ্রভু, তুমি আমাদের ঈশ্বর, তোমার বিরুদ্ধে মানুষকে জয়লাভ করতে দিয়ো না।”
\s5
\v 12 তখন সদাপ্রভু আসার ও যিহূদার সামনে কূশীয়দেরকে আঘাত করলেন, আর কূশীয়েরা পালিয়ে গেল।
\v 13 আর আসা ও তাঁর সঙ্গীরা গরার পর্যন্ত তাদের তাড়া করে নিয়ে গেলেন, তাতে এত কূশীয় মারা পড়ল যে, তারা আর শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারল না; কারণ সদাপ্রভুর ও তাঁর সৈন্যদলের সামনে তারা শেষ হয়ে গেল এবং লোকেরা প্রচুর লুটের জিনিস নিয়ে আসল।
\v 14 আর তারা গরারের চারপাশের সমস্ত নগরকে আঘাত করল, কারণ সদাপ্রভুকে তারা ভীষণ ভয় করেছিল; আরও তারা এই সব নগর লুট করল, কারণ সেখানে লুট করবার মত অনেক জিনিস ছিল।
\v 15 আর তারা পশুপালকদের তাঁবুগুলিও আঘাত করল এবং প্রচুর পরিমাণে ভেড়া, ছাগল ও উট নিয়ে যিরূশালেমে ফিরে এল।
\s5
\c 15
\p
\v 1 পরে ঈশ্বরের আত্মা ওদেদের ছেলে অসরিয়ের উপরে আসলেন,
\v 2 তখন তিনি আসার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাকে বললেন, “হে আসা এবং যিহূদা ও বিন্যামীনের লোক সকল, তোমরা আমার কথা শোনো; তোমরা যতদিন সদাপ্রভুর সঙ্গে থাকবে ততদিন তিনিও তোমাদের সঙ্গে আছেন; আর যদি তোমরা তাঁর খোঁজ কর, তবে তিনি তোমাদেরকে তাঁর উদ্দেশ্য জানাবেন; কিন্তু তাঁকে যদি ত্যাগ কর, তবে তিনি তোমাদেরকে ত্যাগ করবেন।
\s5
\v 3 ইস্রায়েলীয়েরা অনেক দিন ধরে সত্য ঈশ্বর ছাড়া, শিক্ষা দেবার জন্য যাজক ছাড়া এবং ব্যবস্থা ছাড়াই চলছিল;
\v 4 কিন্তু সংকটের সময়ে তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিকে ফিরে তাঁর খোঁজ করল, তখন তিনি তাদেরকে তাঁর উদ্দেশ্য জানালেন।
\v 5 সেই সময়ে কোথাও যাওয়া-আসা করা নিরাপদ ছিল না, কারণ সমস্ত জায়গার লোকেরা তখন খুব অসুবিধার মধ্যে ছিল।
\s5
\v 6 তারা চূর্ণ-বিচূর্ণ হত, এক জাতি অন্য জাতিকে ও এক নগর অন্য নগরকে আঘাত করত, কারণ সব রকমের সংকট দিয়ে ঈশ্বর তাদের কষ্ট দিচ্ছিলেন।
\v 7 কিন্তু তোমরা বলবান হও, তোমাদের হাত দুর্বল না হোক, কারণ তোমাদের কাজের জন্য পুরস্কার পাবে।”
\s5
\v 8 যখন আসা এই সব কথা, অর্থাৎ ওদেদের ছেলে ভাববাদী অসরিয়ের ভাববাণী শুনে সাহস পেয়ে যিহূদার ও বিন্যামীনের সমস্ত দেশ থেকে এবং তিনি পর্বতে ঘেরা ইফ্রয়িম দেশে যে সব নগর দখল করেছিলেন, সেখান থেকে জঘন্য জিনিসগুলি ধ্বংস করলেন এবং সদাপ্রভুর বারান্দার সামনের সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদি মেরামত করলেন।
\v 9 পরে তিনি সমস্ত যিহূদা ও বিন্যামীনকে এবং তাদের মধ্যে বসবাসকারী ইফ্রয়িম, মনঃশি ও শিমিয়োন থেকে আসা লোকেদেরকে জড়ো করলেন; কারণ তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে আছেন দেখে, ইস্রায়েলের অনেক লোক তাঁর পক্ষে এসেছিল।
\s5
\v 10 আসার রাজত্বের পনেরো বছরের তৃতীয় মাসে লোকেরা যিরূশালেমে জড়ো হয়েছিল।
\v 11 আর সেই দিনে তারা লুট করে আনা দ্রব্য থেকে সাতশো গরু ও সাত হাজার ভেড়া সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করল।
\s5
\v 12 আর তারা এই প্রতিজ্ঞা করল যে, তারা সমস্ত মন-প্রাণ দিয়ে তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর খোঁজ করবে;
\v 13 ছোট-বড়, স্ত্রী-পুরুষ, যে কেউ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর খোঁজ না করবে তাদের মেরে ফেলা হবে।
\s5
\v 14 তারা চিৎকার করে জয়ধ্বনির সঙ্গে তূরী ও শিংগা বাজিয়ে সদাপ্রভুর কাছে শপথ করল।
\v 15 এই শপথে সমস্ত যিহূদা আনন্দ করল, কারণ তারা তাদের সমস্ত হৃদয় দিয়ে শপথ করেছিল এবং সমস্ত ইচ্ছার সঙ্গে সদাপ্রভুর খোঁজ করায় তিনি তাদেরকে তাঁর উদ্দেশ্য জানালেন; আর তিনি চারিদিকে তাদের বিশ্রাম দিলেন।
\s5
\v 16 আর রাজা আসার মা মাখা একটা জঘন্য আশেরার প্রতিমা তৈরী করেছিলেন বলে আসা তাঁকে রাজমাতার পদ থেকে সরিয়ে দিলেন এবং আসা তাঁর সেই জঘন্য প্রতিমা ভেঙ্গে ফেললেন ও কিদ্রোণ স্রোতের ধারে সেটা পুড়িয়ে দিলেন।
\v 17 কিন্তু ইস্রায়েলের মধ্যে সব উঁচু জায়গা গুলি ধ্বংস হয়নি; তবুও সাসার হৃদয় সারাজীবন একরকম ছিল।
\v 18 আর তিনি তাঁর বাবার পবিত্র করা ও তাঁর পবিত্র করা রুপো, সোনা ও পাত্রগুলি ঈশ্বরের গৃহে নিয়ে এলেন।
\v 19 আসার রাজত্বের পঁয়ত্রিশ বছর পর্যন্ত আর কোনো যুদ্ধ হয় নি।
\s5
\c 16
\p
\v 1 আসার রাজত্বের ছত্রিশ বছরে ইস্রায়েলের রাজা বাশা যিহূদার বিরুদ্ধে গেলেন এবং তিনি যিহূদার রাজা আসার কাছে কাউকে যাওয়া-আসা করতে না দেবার জন্য রামা গাঁথলেন।
\s5
\v 2 তখন আসা সদাপ্রভুর গৃহের ও রাজবাড়ীর ভাণ্ডার থেকে সোনা ও রুপো বের করে নিয়ে দম্মেশকের অধিবাসী অরামের রাজা বিন্‌হদদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, তাঁকে বলে পাঠালেন,
\v 3 “আমার ও আপনার মধ্যে চুক্তি করা আছে, যেমন আমার বাবা ও আপনার বাবার মধ্যে ছিল; দেখুন, আমি আপনাকে সোনা ও রুপো উপহার পাঠালাম। আপনি গিয়ে ইস্রায়েলের রাজা বাশার সঙ্গে আপনার যে চুক্তি আছে, তা ভেঙ্গে ফেলুন; তাতে সে আমার কাছ থেকে চলে যাবে।”
\s5
\v 4 তখন বিন্‌হদদ রাজা আসার কথায় রাজী হয়ে ইস্রায়েলের নগরগুলির বিরুদ্ধে তাঁর সেনাপতিদের পাঠালেন এবং তারা ইয়োন, দান, আবেল-ময়িম ও নপ্তালির সমস্ত ভাণ্ডার-নগরগুলিকে আঘাত করল।
\v 5 তখন বাশা এই খবর পেয়ে রামা তৈরীর কাজ বন্ধ করে দিলেন, তাঁর কাজ থেমে গেল।
\v 6 পরে রাজা আসা সমস্ত যিহূদাকে সঙ্গে নিয়ে এসে রামায় বাশা যে সব পাথর ও কাঠ দিয়ে গেঁথেছিলেন, তারা সেই সব নিয়ে গেল। পরে আসা সেগুলি দিয়ে গেবা ও মিসপা নগর গাঁথলেন।
\s5
\v 7 সেই সময় দর্শক হনানি যিহূদার রাজা আসার কাছে এসে বললেন, “আপনি আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপর নির্ভর না করে অরামের রাজার উপর নির্ভর করলেন, তাই অরাম রাজার সৈন্যদল আপনার হাতছাড়া হয়ে গেল।
\v 8 কূশীয় ও লূবীয়দের কি অনেক সৈন্য এবং রথ ও ঘোড়াচালক ছিল না? কিন্তু আপনি সদাপ্রভুর উপর নির্ভর করেছিলেন বলে তিনি আপনার হাতে তাদের তুলে দিয়েছিলেন।
\s5
\v 9 কারণ সদাপ্রভুর প্রতি যাদের হৃদয় এক থাকে, তাদের জন্য নিজেকে বলবান দেখাবার জন্য তাঁর চোখ পৃথিবীর সব জায়গায় থাকে। এ বিষয়ে আপনি বোকামির কাজ করেছেন, কারণ এর পরে পুনরায় আপনি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বেন।”
\v 10 তখন আসা ঐ দর্শকের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে জেলখানায় পাঠিয়ে দিলেন; কারণ ঐ কথার জন্য তিনি তাঁর উপরে ভীষণ রেগে গিয়েছিলেন। আর একই সময়ে আসা প্রজাদের মধ্যে কতগুলি লোকের উপর অত্যাচার করলেন।
\s5
\v 11 আর দেখ, আসার সমস্ত কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত “যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।
\v 12 আসার রাজত্বের ঊনচল্লিশ বছরে তাঁর পায়ে রোগ হল; তাঁর এই রোগ ভীষণ হলেও তিনি সদাপ্রভুর সাহায্য না চেয়ে কেবল ডাক্তারদের খোঁজ করলেন।
\s5
\v 13 পরে আসা তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন, তাঁর রাজত্বের একচল্লিশ বছরে তিনি মারা গেলেন।
\v 14 আর তিনি দায়ূদ-নগরে নিজের জন্য যে কবর খুঁড়ে রেখেছিলেন, তার মধ্যে লোকেরা তাঁকে কবর দিল এবং নানা রকম মশলা ও মেশানো সুগন্ধি জিনিষে পরিপূর্ণ খাটে তাঁকে শোয়ালো, আর তাঁর জন্য বিরাট দাহ কাজ হল।
\s5
\c 17
\s যিহোশাফট রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 পরে তাঁর ছেলে যিহোশাফট তাঁর জায়গায় রাজা হলেন এবং ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে নিজেকে শক্তিশালী করে তুললেন।
\v 2 তিনি যিহূদার সমস্ত প্রাচীরে ঘেরা নগরগুলিতে সৈন্যদল রাখলেন এবং যিহূদা দেশ ও তাঁর বাবা আসার দখল করা ইফ্রয়িম এলাকার নগরগুলিতেও সৈন্য রাখলেন।
\s5
\v 3 আর সদাপ্রভু যিহোশাফটের সঙ্গে ছিলেন, কারণ তিনি তার পূর্বপুরুষ দায়ূদ প্রথমে যেভাবে চলতেন, বাল দেবতাদের খোঁজ করেন নি; তিনিও সেইভাবে চলতেন।
\v 4 কিন্তু তাঁর পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের উপাসনা করতেন ও তাঁর আদেশ মত চলতেন, ইস্রায়েলের মত কাজ করতেন না।
\s5
\v 5 সেইজন্য সদাপ্রভু তাঁর অধীনে রাজ্য মজবুত করলেন; আর সমস্ত যিহূদা যিহোশাফদের কাছে উপহার আনলো এবং তাঁর ধন সম্পদ ও সম্মান অনেক বেড়ে গেল।
\v 6 আর সদাপ্রভুর পথে তাঁর হৃদয় উন্নত হল; আবার তিনি যিহূদার মধ্যে থেকে উঁচু জায়গা গুলি ও আশেরা-মূর্তিগুলি ধ্বংস করলেন।
\s5
\v 7 পরে তিনি তাঁর রাজত্বের তৃতীয় বছরে যিহূদার সমস্ত নগরে শিক্ষা দেবার জন্য তাঁর কয়েকজন প্রধান কর্মচারী অর্থাৎ বিন্‌-হয়িল, ওবদিয়, সখরিয়, নথনেল ও মীখায়কে পাঠালেন।
\v 8 আর তাঁদের সঙ্গে কয়েকজন লেবীয়কে অর্থাৎ শময়িয়, নথনিয়, সবদিয়, অসাহেল, শমীরামোৎ, যিহোনাথন, অদোনিয়, টোবিয় ও টোব্‌-অদোনীয় নামে এইসব লেবীয়কে এবং তাদের সঙ্গে ইলীশামা ও যিহোরাম নামে দুজন যাজককে পাঠালেন।
\v 9 তাঁরা সদাপ্রভুর ব্যবস্থার বই সঙ্গে নিয়ে যিহূদা দেশে শিক্ষা দিতে লাগলেন। তারা যিহূদার সব নগরে গিয়ে লোক দেরকে শিক্ষা দিলেন।
\s5
\v 10 আর যিহূদা চারদিকের দেশের সব রাজ্যের উপর সদাপ্রভুর কাছ থেকে এমন ভয় নেমে আসল যে, তারা যিহোশাফটের সঙ্গে যুদ্ধ করল না।
\v 11 আর পলেষ্টীয়দের কেউ কেউ যিহোশাফটের কাছে কর হিসাবে উপহার ও রুপো নিয়ে এল এবং আরবীয়েরা তাঁর কাছে পশুপাল, সাত হাজার সাতশো ভেড়া আর সাত হাজার সাতশো ছাগল নিয়ে এল।
\s5
\v 12 এইভাবে যিহোশাফট খুব মহান হয়ে উঠলেন এবং যিহূদা দেশে অনেক দুর্গ ও ভাণ্ডার-নগর গাঁথলেন।
\v 13 আর যিহূদার নগরগুলির মধ্যে তাঁর অনেক কাজ ছিল এবং যিরূশালেমে তাঁর দক্ষ যোদ্ধারা থাকত।
\s5
\v 14 তাদের বংশ অনুসারে তাদের সংখ্যা এই; যিহূদার সহস্রপতিদের মধ্যে অদ্‌ন সেনাপতি ছিলেন, তাঁর সঙ্গে তিন লক্ষ বলবান বীর ছিল।
\v 15 তাঁর পরে সেনাপতি যিহোহানন, তাঁর সঙ্গে দু লক্ষ আশি হাজার লোক ছিল।
\v 16 তাঁর পরে সিখির ছেলে অমসিয়; সেই ব্যক্তি নিজেকে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছিলেন; তাঁর সঙ্গে দু লক্ষ বলবান বীর ছিল।
\v 17 আর বিন্যামীনের মধ্যে বলবান বীর ইলিয়াদা, তাঁর সঙ্গে দুই লক্ষ ধনুক ও ঢালধারী ছিল।
\v 18 তাঁর পরে যিহোষাবদ; তাঁর সঙ্গে যুদ্ধের জন্য তৈরী এক লক্ষ আশি হাজার লোক ছিল। এরা রাজার পরিচর্য্যা করতেন।
\v 19 এঁনাদের ছাড়াও রাজা যিহূদার সব জায়গায় পাঁচিলে ঘেরা নগরগুলিতে কর্মচারী রাখতেন।
\s5
\c 18
\p
\v 1 যিহোশাফট প্রচুর ধনী ও সম্মানীয় হলেন, আর তিনি আহাবের সঙ্গে কুটুম্বিতা করলেন।
\v 2 কয়েক বছর পরে তিনি শমরিয়াতে আহাবের কাছে গেলেন; আর আহাব তাঁর জন্য ও তাঁর সঙ্গী লোকদের জন্য অনেক ভেড়া ও বলদ মারলেন এবং রামোৎ-গিলিয়দে যেতে তাঁকে প্ররোচনা করলেন।
\v 3 আর ইস্রায়েলের রাজা আহাব যিহূদার রাজা যিহোশাফটকে বললেন, “আপনি কি রামোৎ-গিলিয়দে আমার সঙ্গে যাবেন?” তিনি উত্তরে বললেন, “আমি ও আপনি এবং আমার লোক ও আপনার লোক, সবাই এক, আমরা আপনার সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দেব।”
\s5
\v 4 পরে যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজাকে বললেন, “অনুরোধ করি, আজ সদাপ্রভুর বাক্যের খোঁজ করুন।”
\v 5 তাতে ইস্রায়েলের রাজা ভাববাদীদেরকে, চারশো জনকে, এক সাথে জড়ো করে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমরা রামোৎ-গিলিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব, না আমি থেমে যাব?” তখন তারা বলল, “যান, ঈশ্বর ওটা মহারাজের হাতেই তুলে দেবেন।”
\s5
\v 6 কিন্তু যিহোশাফট বললেন, “এদের ছাড়া সদাপ্রভুর এমন কোনো ভাববাদী কি এখানে নেই যে, আমরা তার কাছেই খোঁজ করতে পারি?”
\v 7 ইস্রায়েলের রাজা যিহোশাফটকে বললেন, “আমরা যার মধ্য দিয়ে সদাপ্রভুর খোঁজ করতে পারি, এমন আর একজন লোক আছে, কিন্তু আমি তাকে ঘৃণা করি, কারণ সে আমার সম্বন্ধে কখনও মঙ্গলের নয়, সব সময় অমঙ্গলের কথাই বলে; সে ব্যক্তি যিম্লের ছেলে মীখায়।” যিহোশাফট বললেন, “মহারাজ, এমন কথা বলবেন না।”
\v 8 তখন ইস্রায়েলের রাজা একজন কর্মচারীকে ডেকে আদেশ দিয়ে বললেন, “যিম্লের ছেলে মীখায়কে তাড়াতাড়ি নিয়ে এস।”
\s5
\v 9 সেই সময় ইস্রায়েলের রাজা ও যিহূদার রাজা যিহোশাফট নিজের নিজের রাজপোশাক পরে শমরিয়া শহরের দরজার কাছে খোলা জায়গায় তাঁদের সিংহাসনের উপরে বসে ছিলেন এবং তাঁদের সামনে ভাববাদীরা সবাই ভাববাণী করছিলেন।
\v 10 আর কনানার ছেলে সিদিকিয় লোহার শিং তৈরী করে বলল, “সদাপ্রভু এইকথা বলছেন যে, ‘এটা দিয়েই আপনি অরামের ধ্বংসের সময় পর্যন্ত গুঁতাতে থাকবেন।’ ”
\v 11 আর ভাববাদীরা সবাই একই রকম ভাববাণী করে বলল, “আপনি রামোৎ-গিলিয়দ আক্রমণ করুন, তা জয় করে নিন, কারণ সদাপ্রভু সেটা মহারাজের হাতে তুলে দেবেন।”
\s5
\v 12 আর যে দূত মীখায়কে ডাকতে গিয়েছিল সে তাঁকে বলল, “দেখুন, সব ভাববাদীই একবাক্যে রাজার সফলতার কথা বলছে; তাই অনুরোধ করি, আপনার কথাও যেন তাঁদের কথার মতই হয়, আপনি মঙ্গলের কথা বলুন।”
\v 13 মীখায় বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, আমার ঈশ্বর যা বলেন, আমিও তাই বলব।”
\v 14 পরে তিনি রাজার কাছে এলে রাজা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “মীখায়, আমরা কি রামোৎ-গিলিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব, নাকি থেমে যাব?” তিনি বললেন, “আপনারা যান, জয়লাভ করুন, সেখানকার লোকদের আপনাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”
\s5
\v 15 রাজা তাঁকে বললেন, “তুমি সদাপ্রভুর নামে সত্যি কথা ছাড়া আর কিছু বলবে না, কতবার আমি তোমাকে এই শপথ করাবো?”
\v 16 তখন তিনি উত্তরে বললেন, “আমি সমস্ত ইস্রায়েলকে রাখালহীন ভেড়ার মত পাহাড়ের উপরে ছড়িয়ে পড়তে দেখলাম এবং সদাপ্রভু বললেন, ‘এদের কোনো মনিব নেই; তারা সবাই শান্তিতে নিজের বাড়ীতে ফিরে যাক।’ ”
\s5
\v 17 তখন ইস্রায়েলের রাজা যিহোশাফট বললেন, “আমি কি আপনাকে আগেই বলি নি যে, এই ব্যক্তি আমার সম্বন্ধে অমঙ্গল ছাড়া মঙ্গলের কথা বলে না?”
\v 18 আর মীখায় বললেন, “তাই আপনারা সদাপ্রভুর কথা শুনুন; আমি দেখলাম, সদাপ্রভু তাঁর সিংহাসনে বসে আছেন, আর তাঁর ডান ও বাঁ দিকে সমস্ত বাহিনী দাঁড়িয়ে আছে।
\s5
\v 19 তখন সদাপ্রভু বললেন, ‘ইস্রায়েলের রাজা আহাব যেন রামোৎ-গিলিয়দ আক্রমণ করে সেখানে মারা যায়, এই জন্য কে তাকে মুগ্ধ করবে? তখন এক একজন এক এক রকম কথা বলল।
\s5
\v 20 শেষে একটি আত্মা গিয়ে সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে বলল, ‘আমি তাকে মুগ্ধ করব।’
\v 21 সদাপ্রভু জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কেমন করে করবে? সে বলল, ‘আমি গিয়ে তার সব ভাববাদীদের মুখে মিথ্যা বলবার আত্মা হব।’ সদাপ্রভু বললেন, ‘তুমিই তাকে মুগ্ধ করতে সফল হবে; তুমি গিয়ে তাই কর।’
\s5
\v 22 এইজন্যই সদাপ্রভু এখন তাঁর এই ভাববাদীদের মুখে মিথ্যা বলবার আত্মা দিয়েছেন; আর সদাপ্রভু আপনার অমঙ্গলের কথা বলেছেন।”
\s5
\v 23 তখন কনানার ছেলে সিদিকিয়র কাছে গিয়ে মীখায়ের গালে চড় মেরে বলল, “সদাপ্রভুর আত্মা তোর সঙ্গে কথা বলবার জন্য আমার কাছ থেকে কোনো পথে গিয়েছিলেন?”
\v 24 মীখায় বললেন, “দেখ, যেদিন তুমি নিজেকে লুকাবার জন্য একটি ভিতরের কুঠুরীতে যাবে, সেদিন তা জানবে।”
\s5
\v 25 পরে ইস্রায়েলের রাজা বললেন, “মীখায়কে ধরে পুনরায় নগরের শাসনকর্তা আমোন ও রাজপুত্র যোয়াশের কাছে নিয়ে যাও।
\v 26 আর বল, রাজা বলেছেন, ‘একে জেলে আটকে রাখ এবং যতক্ষণ আমি নিরাপদে ফিরে না আসি, ততক্ষণ একে খাওয়ার জন্য অল্প জল ও অল্প খাবার দিও।”
\v 27 মীখায় বললেন, “যদি আপনি কোনো ভাবে নিরাপদে ফিরে আসেন, তবে জানবেন সদাপ্রভু আমার মধ্য দিয়ে কথা বলেন নি।” তারপর তিনি আবার বললেন, “লোকেরা, তোমরা সবাই আমার কথাটা শুনে রাখ।”
\s5
\v 28 পরে ইস্রায়েলের রাজা ও যিহূদার রাজা যিহোশাফট রামোৎ-গিলিয়দ আক্রমণ করতে গেলেন।
\v 29 আর ইস্রায়েলের রাজা যিহোশাফটকে বললেন, “আমি ছদ্দবেশে যুদ্ধে যোগ দেব, আপনি আপনার রাজপোশাকই পরুন।” পরে ইস্রায়েলের রাজা ছদ্মবেশে যুদ্ধ করতে গেলেন।
\v 30 অরামের রাজা তাঁর রথগুলির সেনাপতিদের এই আদেশ দিয়েছিলেন, “তোমরা একমাত্র ইস্রায়েলের রাজা ছাড়া ছোট কি বড় আর কারও সঙ্গে যুদ্ধ করবে না।”
\s5
\v 31 পরে রথের সেনাপতিরা যিহোশাফটকে দেখে তিনি নিশ্চয়ই ইস্রায়েলের রাজা, এই বলে তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ঘুরে এলেন; তখন যিহোশাফট চেঁচিয়ে উঠলেন, আর সদাপ্রভু তাঁকে সাহায্য করলেন এবং ঈশ্বর তার কাছ থেকে চলে গেল।
\v 32 ফলে সেনাপতিরা যখন দেখলেন, তিনি ইস্রায়েলের রাজা নন, তখন তাঁরা আর তাঁর পিছনে তাড়া না করে ফিরে আসলেন।
\s5
\v 33 কিন্তু একজন লোক লক্ষ্য স্থির না করেই তার ধনুকে টান দিয়ে ইস্রায়েলের রাজার বুক ও পেটের বর্মের মাঝামাঝি জায়গায় আঘাত করল; তাতে তিনি তাঁর রথচালককে বললেন, “রথ ঘুরিয়ে সৈন্যদলের মধ্যে থেকে আমাকে নিয়ে যাও, আমি খুব আঘাত পেয়েছি।”
\v 34 সেইদিন ভীষণ যুদ্ধ হল; আর ইস্রায়েলের রাজা অরামীয়দের মুখোমুখি সন্ধ্যা পর্যন্ত রথের মধ্যে বসে থাকলেন, কিন্তু সূর্য ডুবে যাবার সময় তিনি মারা গেলেন।
\s5
\c 19
\p
\v 1 পরে যিহূদার রাজা যিহোশাফট ভালোভাবে যিরূশালেমে তাঁর বাড়ীতে ফিরে আসলেন।
\v 2 আর হনানির ছেলে দর্শক যেহূ তাঁর সঙ্গে দেখা করে যিহোশাফট রাজাকে বললেন, “দুষ্টদের সাহায্য করা এবং যারা সদাপ্রভুকে ঘৃণা করে তাদের ভালবাসা কি আপনার উচিত? এইজন্য সদাপ্রভুর ক্রোধ আপনার উপর নেমে এল।
\v 3 তবে আপনার মধ্যে কিছু ভালও আছে; কারণ আপনি দেশ থেকে আশেরা-মূর্তিগুলি ধ্বংস করেছেন এবং ঈশ্বরের খোঁজ করার জন্য আপনার হৃদয় স্থির করেছেন।”
\s5
\v 4 আর যিহোশাফট যিরূশালেমে বাস করলেন; পরে আবার বের্‌-শেবা থেকে পাহাড়ে ঘেরা ইফ্রয়িম দেশ পর্যন্ত লোকদের কাছে গিয়ে তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিকে তাদের ফিরিয়ে আনলেন।
\v 5 আর দেশের মধ্যে অর্থাৎ যিহূদার প্রাচীরে ঘেরা নগরগুলির মধ্যে বিচারকদের নিযুক্ত করলেন।
\s5
\v 6 তিনি বিচারকদের বললেন, “তোমরা সাবধান হয়ে সব কাজ করবে, কারণ তোমরা মানুষের জন্য নয়, কিন্তু সদাপ্রভুর জন্যই বিচার করবে এবং বিচারের সময়ে তিনি তোমাদের সঙ্গে থাকবেন।
\v 7 অতএব সদাপ্রভুর প্রতি তোমাদের মধ্যে ভয় থাকুক; তোমরা সাবধানে কাজ করবে, কারণ অন্যায়, পক্ষপতিত্ব কিম্বা ঘুষ খাওয়ার সঙ্গে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু রাজি নন।”
\s5
\v 8 আর যিহোশাফট যিরূশালেমেও সদাপ্রভুর হয়ে বিচারের জন্য এবং ঝগড়া-বিবাদের মীমাংসার জন্য কয়েকজন লেবীয়দের, যাজকদের এবং ইস্রায়েলীয় বংশের প্রধানদের নিযুক্ত করলেন। আর তাঁরা যিরূশালেমে ফিরে এলেন।
\v 9 তিনি তাঁদের এই আদেশ দিলেন, “তোমরা সদাপ্রভুকে ভয় করে বিশ্বস্তভাবে সমস্ত হৃদয় দিয়ে কাজ করবে।
\s5
\v 10 রক্তপাতের বিষয়ে, ব্যবস্থা ও আদেশ এবং নিয়ম ও শাসনের বিষয়ে যে কোনো বিচার তোমাদের নগরে বসবাসকারী ভাইয়েদের থেকে তোমাদের কাছে আসবে, সেই বিষয়ে তাদেরকে উপদেশ দেবে, নাহলে যদি তারা সদাপ্রভুর চোখে দোষী হয়, তাহলে তোমাদের ও তোমাদের ভাইদের ওপরে ক্রোধ পড়বে; এইভাবে কাজ কোরো, তাহলে তোমরা দোষী হবে না।
\s5
\v 11 আর দেখ, সদাপ্রভুর সব বিচারে প্রধান যাজক অমরিয় এবং রাজার সমস্ত বিচারে যিহূদা বংশের শাসনকর্তা ইশ্মায়েলের ছেলে সবদিয় তোমাদের উপরে নিযুক্ত আছেন; কর্মচারী লেবীয়েরা তোমাদের সামনে আছে। তোমরা সাহসের সঙ্গে কাজ কর, যাঁরা সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করবেন সদাপ্রভু তাঁদের সঙ্গে থাকবেন।”
\s5
\c 20
\s শত্রুদের হাত থেকে ইস্রায়েলীয়দের রক্ষা।
\p
\v 1 পরে মোয়াব সন্তানরা ও অম্মোন সন্তানরা এবং তাদের সঙ্গে কতগুলি মায়োনীয়দের লোক যিহোশাফটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসল।
\v 2 তখন কয়েকজন লোক এসে যিহোশাফটকে বলল, “সাগরের ওপারের অরাম দেশ থেকে এক বিরাট সৈন্যদল আপনার বিরুদ্ধে আসছে; দেখুন, তারা হৎসসোন-তামরে, অর্থাৎ ঐন্‌-গদীতে আছে।”
\s5
\v 3 তাতে যিহোশাফট ভয় পেয়ে সদাপ্রভুর খোঁজ করতে চাইলেন এবং যিহূদার সব জায়গায় উপবাস ঘোষণা করলেন।
\v 4 আর যিহূদার লোকেরা সদাপ্রভুর কাছে সাহায্য চাইবার জন্য জড়ো হল; যিহূদার সমস্ত নগর থেকেও লোকেরা সদাপ্রভুর খোঁজ করতে আসল।
\s5
\v 5 পরে যিহোশাফট সদাপ্রভুর গৃহে নতুন উঠানের সামনে যিহূদা ও যিরূশালেমের সমস্ত লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন,
\v 6 “হে আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তুমি কি স্বর্গের ঈশ্বর নও? তুমি কি জাতির সমস্ত রাজ্যের কর্তা নও? আর শক্তি ও ক্ষমতা তোমারই হাতে, তোমার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে কারও সাধ্য নেই।
\v 7 হে আমাদের ঈশ্বর, তুমিই কি তোমার প্রজা ইস্রায়েলের সামনে থেকে এই দেশের বাসিন্দাদের তাড়িয়ে দাও নি? এবং তোমার বন্ধু অব্রাহামের বংশকে চিরকালের জন্য এই দেশ দাও নি?
\s5
\v 8 আর তারা এই দেশে বাস করেছে এবং এই দেশে তোমার নামের জন্য একটি ধর্মধাম তৈরী করে বলেছে,
\v 9 ‘তরোয়াল, বিচার, মহামারী, দুর্ভিক্ষ যখন আমাদের সঙ্গে ঘটবে, তখন আমরা এই ঘরের সামনে, তোমার সামনে দাঁড়াব, কারণ এই ঘরে তোমার নাম আছে এবং আমাদের কষ্টের সময় আমরা তোমার কাছে কাঁদব, তাতে তুমি তা শুনে আমাদের উদ্ধার করবে।’
\s5
\v 10 “আর এখন দেখ, অম্মোনের ও মোয়াবের সন্তানরা এবং সেয়ীর পর্বতের অধিবাসীরা, যাদের দেশে তুমি ইস্রায়েলকে মিসর দেশে আসবার সময়ে ঢুকতে দাও নি, কিন্তু এরা তাদের কাছ থেকে অন্য পথে চলে গিয়েছিল, তাদের ধ্বংস করে নি;
\v 11 দেখ, তারা আমাদের কিভাবে ক্ষতি করছে; তুমি অধিকার হিসাবে যে সম্পত্তি আমাদের দিয়েছ, তোমার সেই অধিকার থেকে আমাদের তাড়িয়ে দিতে আসছে।
\s5
\v 12 হে আমাদের ঈশ্বর, তুমি কি তাদের বিচার করবে না? আমাদের বিরুদ্ধে ঐ যে বিরাট সৈন্যদল আসছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের তো নিজের কোনো শক্তি নেই; কি করতে হবে, তাও আমরা জানি না; আমরা কেবল তোমার দিকে চেয়ে আছি।”
\v 13 এইভাবে শিশু, স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের সঙ্গে সমস্ত যিহূদা সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে থাকলো।
\s5
\v 14 আর সমাজের মধ্যে যহসীয়েল নামে একজন লেবীয়ের উপর সদাপ্রভুর আত্মা আসলেন। তিনি অসফের বংশের মত্তনিয়ের সন্তান যিয়েলের সন্তান বনায়ের সন্তান সখরিয়ের ছেলে।
\v 15 তখন তিনি বললেন, “হে সমস্ত যিহূদা, হে যিরূশালেমের লোক সকল, আর হে মহারাজ যিহোশাফট, শোনো; সদাপ্রভু তোমাদের এই কথা বলেন, ‘এই বিরাট সৈন্যদল দেখে তোমরা ভয় পেয়ো না বা নিরাশ হোয়ো না, কারণ এই যুদ্ধ তোমাদের নয়, কিন্তু ঈশ্বরের।
\s5
\v 16 তোমরা আগামী কাল তাদের বিরুদ্ধে যাও; দেখ, তারা সীস নামে আরোহন-জায়গা দিয়ে আসছে; তোমরা যিরূয়েল মরুভূমির সামনে উপত্যকার শেষের দিকে তাদের পাবে।
\v 17 এবার তোমাদেরকে যুদ্ধ করতে হবে না; হে যিহূদা ও যিরূশালেম, তোমরা সারি বেঁধে দাঁড়াও, আর সদাপ্রভু তোমাদের সঙ্গে আছেন, তিনি কিভাবে উদ্ধার করেন তা দেখো; ভয় কোরো না, নিরাশ হয়ো না; কালকে গিয়ে তাদের মুখোমুখি হবে আর সদাপ্রভু তোমাদের সঙ্গে থাকবেন।’”
\s5
\v 18 তখন যিহোশাফট মাটিতে উবুড় হয়ে প্রণাম করলেন এবং সমস্ত যিহূদা ও যিরূশালেমের অধিবাসীরা প্রণাম করার জন্য সদাপ্রভুর সামনে মাটিতে উপুড় হল।
\v 19 তারপর কহাৎ ও কোরহ বংশের লেবীয়েরা উঠে দাঁড়িয়ে চিত্কার করে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রশংসা করতে লাগল।
\s5
\v 20 পরে তারা খুব সকালে উঠে তকোয় মরুভূমির দিকে রওনা হল; তাদের রওনা হবার সময়ে যিহোশাফট দাঁড়িয়ে বললেন, “হে যিহূদা, হে যিরূশালেমের অধিবাসীরা, আমার কথা শোনো; তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপর বিশ্বাস কর, তাহলে স্থির থাকবে; তাঁর ভাববাদীদের বিশ্বাস কর, তাতে সফল হবে।”
\v 21 আর তিনি লোকদের সঙ্গে পরামর্শ করে লোকদের নিযুক্ত করলেন, যেন তারা সৈন্যদলের আগে আগে গিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে গান ও মহিমাপূর্ণ পবিত্রতার প্রশংসা করে এবং এই কথা বলে, “সদাপ্রভুর ধন্যবাদ দাও, কারণ তাঁর দয়া চিরকাল স্থায়ী”।
\s5
\v 22 যখন তারা আনন্দের গান ও প্রশংসা করতে শুরু করল, তখন সদাপ্রভু যিহূদার বিরুদ্ধে আসা অম্মোনের ও মোয়াবের সন্তানদের এবং সেয়ীর পর্বতের লোকদের বিরুদ্ধে গুপ্ত সৈন্য নিযুক্ত করলেন; তাতে তারা পরাজিত হল।
\v 23 অম্মোনের ও মোয়াবের সন্তানরা সেয়ীর পর্বতের অধিবাসীদের বিরুদ্ধে উঠল তাদের সম্পূর্ণভাবে হত্যা ও ধ্বংস করার জন্য; আর সেয়ীরের অধিবাসীদের মেরে ফেলবার পর তারা একে অন্যের ধ্বংসে সাহায্য করল।
\s5
\v 24 তখন যিহূদার লোকেরা মরুভূমির প্রহরী দুর্গে এসে সেই বিরাট সৈন্যদলের দিকে তাকিয়ে দেখল যে, মাটিতে কেবল মৃত দেহগুলি পড়ে রয়েছে, কেউই পালিয়ে বাঁচতে পারে নি।
\s5
\v 25 তখন যিহোশাফট ও তাঁর লোকেরা তাদের লুটের জিনিস আনতে গিয়ে সেই মৃত দেহগুলির সঙ্গে অনেক সম্পত্তি ও দামী ধন-রত্ন দেখতে পেলেন; তারা নিজেদের জন্য এত ধন-রত্ন সংগ্রহ করল যে, সেগুলি সব বয়ে নিয়ে যেতে পারল না; সেই লুটের জিনিস বেশী হওয়াতে তা নিয়ে যেতে তাদের তিন দিন লাগল।
\v 26 আর চতুর্থ দিনে তাঁরা বরাখা উপত্যকায় জড়ো হলেন; কারণ সেখানে তারা সদাপ্রভুর ধন্যবাদ করল, এইজন্য আজ পর্যন্ত সেই জায়গা বরাখা উপত্যকা (ধন্যবাদ) নামে পরিচিত।
\s5
\v 27 তারপর যিহূদা ও যিরূশালেমের সমস্ত লোক এবং তাদের আগে আগে যিহোশাফট আনন্দ করতে করতে যিরূশালেমে ফিরে গেলেন, কারণ সদাপ্রভু তাদের শত্রুদের উপরে সদাপ্রভু তাদের আনন্দিত করেছিলেন।
\v 28 আর তাঁরা নেবল, বীণা ও তূরী বাজাতে বাজাতে যিরূশালেমে ফিরে এসে সদাপ্রভুর গৃহে গেলেন।
\s5
\v 29 আর ইস্রায়েলের শত্রুদের বিরুদ্ধে সদাপ্রভু যুদ্ধ করেছেন, সেই কথা শুনে অন্যান্য দেশের সমস্ত লোকদের উপর সদাপ্রভু সম্বন্ধে একটা ভয় নেমে আসল।
\v 30 এইভাবে যিহোশাফটের রাজ্য স্থির হল, তাঁর ঈশ্বর চারিদিকে তাঁকে বিশ্রাম দিলেন।
\s5
\v 31 যিহোশাফট যিহূদার উপর রাজত্বকরলেন; যিহোশাফট পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে যিহূদার রাজা হয়েছিলেন এবং পঁচিশ বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল অসূবা, তিনি ছিলেন শিল্‌হির মেয়ে।
\v 32 যিহোশাফট তাঁর বাবা আসার পথে চলতেন, কখনও সেই পথ ছেড়ে যান নি, সদাপ্রভুর চোখে যা ঠিক তিনি তাই করতেন।
\v 33 কিন্তু উঁচু জায়গা গুলির ধ্বংস করা হয় নি এবং তখনও লোকেরা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের প্রতি তাদের হৃদয় স্থির করবে না।
\s5
\v 34 যিহোশাফটের বাকি কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত দেখো “ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে হনানির ছেলে যেহূর লেখা বইতে পাওয়া যায়।
\s5
\v 35 পরে যিহূদার রাজা যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজা অহসিয়ের সঙ্গে যোগ দিলেন, সে খারাপ লোক;
\v 36 তিনি তর্শীশে যাবার জন্য জাহাজ তৈরীর কাজে তাঁর সঙ্গে যোগ দিলেন, আর তাঁরা ইৎসিয়োন-গেবরে সেই জাহাজগুলি তৈরী করলেন।
\v 37 তখন মারেশার অধিবাসী দোদাবাহূর ছেলে ইলীয়েষর যিহোশাফটের বিরুদ্ধে এই ভবিষ্যদ্বাণী করলেন, “আপনি অহসিয়ের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন, এই জন্য না আপনি যা তৈরী করেছেন তা সদাপ্রভু ভেঙ্গে ফেললেন।” আর ঐ সকল জাহাজগুলি ভেঙ্গে গেল, তর্শীশে যেতে পারল না।
\s5
\c 21
\s যিহোরাম রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 পরে যিহোশাফট তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন এবং দায়ূদ-নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁকে কবর দেওয়া হল। আর তাঁর ছেলে যিহোরাম তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\v 2 যিহোশাফটের ছেলে যিহোরামের মধ্যে তাঁর ভাইদের নাম ছিল অসরিয়, যিহীয়েল, সখরিয়, অসরিয়, মীখায়েল ও শফটিয়, এরা সবাই ছিল ইস্রায়েলের রাজা যিহোশাফটের ছেলে।
\v 3 আর তাদের বাবা তাদেরকে অনেক সম্পত্তি, অর্থাৎ রুপো, সোনা ও অনেক দামী জিনিস এবং যিহূদা দেশে প্রাচীরে ঘেরা গ্রাম নগরগুলি দান করেছিলেন, কিন্তু যিহোরাম বড় ছেলে বলে তাঁকে রাজ্য দিয়েছিলেন।
\s5
\v 4 যিহোরাম তাঁর বাবার রাজ্য অধীনে এনে নিজেকে শক্তিশালী করলেন; আর নিজের সমস্ত ভাইদের এবং ইস্রায়েলের কয়েকজন শাসনকর্তাকেও তরোয়াল দিয়ে হত্যা করলেন।
\v 5 যিহোরাম বত্রিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করে যিরূশালেমে আট বছর রাজত্ব করেন।
\s5
\v 6 আহাবের বংশের লোকদের মতই তিনি ইস্রায়েলের রাজাদের পথে চলতেন; কারণ তিনি আহাবের মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। ফলে সদাপ্রভুর চোখে যা খারাপ তিনি তাই করতেন।
\v 7 তবুও সদাপ্রভু দায়ূদের সঙ্গে তাঁর করা নিয়মের জন্য এবং তাঁকে ও তাঁর সন্তানদেরকে চিরকাল একটা প্রদীপ দেবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেইজন্য তিনি দায়ূদের বংশকে ধ্বংস করতে চাইলেন না।
\s5
\v 8 তাঁর সময়ে ইদোম যিহূদার কর্তৃত্ব না মেনে নিজেদের জন্য একজন রাজা ঠিক করল।
\v 9 কাজেই যিহোরাম তাঁর সেনাপতিদের ও সব রথ নিয়ে সেখানে গেলেন; আর রাতের বেলায় তিনি উঠে, যারা তাঁকে ঘেরাও করেছিল, সেই ইদোমীয়দের ও তাদের রথের সেনাপতিদের আঘাত করলেন।
\v 10 এইভাবে ইদোম আজও যিহূদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে আছে; আর ঐ সময়ে লিব্‌নাও তাঁর কর্তৃত্ব অস্বীকার করল, কারণ তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ত্যাগ করেছিলেন।
\s5
\v 11 আরও তিনি যিহূদার অনেক পর্বতে উঁচু জায়গা তৈরী করলেন এবং যিরূশালেমের অধিবাসীদের ব্যভিচার করালেন ও যিহূদাকে বিপথে চালালেন।
\s5
\v 12 পরে তাঁর কাছে এলিয় ভাববাদীর কাছ থেকে একটা লিপি আসল; “তোমার বাবা দায়ূদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘তুমি তোমার নিজের বাবা যিহোশাফটের পথে ও যিহূদার রাজা আসার পথে চল নি;
\v 13 কিন্তু ইস্রায়েলের রাজাদের পথে চলেছ এবং আহাবের বংশের কাজ অনুসারে যিহূদাকে ও যিরূশালেমের লোকেদেরকে ব্যভিচার করিয়েছ; আরও তোমার চেয়ে ভাল বাবার বংশের ভাইদের মেরে ফেলেছ;
\v 14 তাই দেখ, সদাপ্রভু তোমার প্রজাদেরকে, তোমার সন্তানদের, তোমার স্ত্রীদেরকে ও তোমার সমস্ত সম্পত্তির উপর ভয়ংকর আঘাতে আহত করবেন।
\v 15 আর তুমি অন্ত্রের অসুখে ভুগতে থাকবে আর সেই অসুখে তোমার অন্ত্র বের হয়ে আসবে।’”
\s5
\v 16 পরে সদাপ্রভু যিহোরামের বিরুদ্ধে পলেষ্টীয়দের মন ও কূশীয়দের কাছে আরবীয়দের মন উত্তেজিত করে তুললেন
\v 17 এবং তারা যিহূদার বিরুদ্ধে এসে প্রাচীর ভেঙ্গে রাজবাড়ীতে পাওয়া সব সম্পত্তি এবং তাঁর ছেলেদের ও তাঁর স্ত্রীদের নিয়ে গেল; ছোট ছেলে যিহোয়াহস ছাড়া তাঁর আর কোনো ছেলে বাকি থাকল না।
\s5
\v 18 এই সমস্ত ঘটনার পরে সদাপ্রভু তাঁকে দারুন অন্ত্রের অসুখ দিলেন যা ভাল হবার না।
\v 19 তাতে দ্বিতীয় বছরের শেষে সেই রোগের দরুন তাঁর অন্ত্র বের হয়ে আসল এবং তিনি খুব যন্ত্রণা পেয়ে মারা গেলেন। আর তাঁর প্রজারা তাঁর জন্য তাঁর পূর্বপুরুষদের নিয়ম অনুযায়ী আগুন জ্বালাল না।
\v 20 তিনি বত্রিশ বছর বয়সে রাজত্ব করা শুরু করেন এবং আট বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেন; তাঁর মৃত্যুতে কেউ দুঃখ প্রকাশ করে নি। আর লোকেরা দায়ূদ নগরে তাঁকে কবর দিল, কিন্তু রাজাদের কবরের জায়গা ছিল না।
\s5
\c 22
\s অহসিয় ও অথলিয়ার বর্ণনা।
\p
\v 1 পরে যিরূশালেমের অধিবাসীরা তাঁর ছোট ছেলে অহসিয়কে তাঁর জায়গায় রাজা করল, কারণ আরবীয়দের সঙ্গে শিবিরে যে দল এসেছিল, তারা তাঁর সব বড় ছেলেদের মেরে ফেলেছিল। কাজেই যিহূদার রাজা যিহোরামের ছেলে অহসিয় রাজত্ব করতে শুরু করেন।
\v 2 অহসিয় বিয়াল্লিশ বছর বয়সে রাজত্ব শুরু করেছিলেন এবং এক বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন; তাঁর মা অথলিয়া ছিলেন অম্রির নাতনী।
\v 3 অহসিয়ের মা তাঁকে খারাপ কাজ করবার জন্য পরামর্শ দিতেন, তাই তিনিও আহাবের বংশের পথে চলতেন।
\s5
\v 4 আহাবের বংশের লোকেরা যেমন করত, তেমনি সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ, তিনি তাই করতেন; কারণ বাবার মৃত্যুর পরে তারাই তাঁর ধ্বংসকারী মন্ত্রী হল।
\v 5 তাদের পরামর্শ অনুসারে তিনি চলতেন, আর তিনি ইস্রায়েলের রাজা আহাবের ছেলে যিহোরামের সঙ্গে রামোৎ-গিলিয়দে অরামের রাজা হসায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন। তাতে অরামীয়েরা যোরামকে আঘাত করল।
\s5
\v 6 অতএব অরামের রাজা হসায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময়ে যিহোরাম রামাতে যে সব আঘাত পান, তা থেকে সুস্থ হবার জন্য যিষ্রিয়েলে ফিরে গেলেন এবং আহাবের ছেলে যিহোরাম আঘাত পেয়েছিলেন বলে যিহূদার রাজা যিহোরামের ছেলে অহসিয় তাঁকে দেখবার জন্য যিষ্রিয়েলে নেমে গেলেন।
\s5
\v 7 কিন্তু যোরামের কাছে আসার জন্য ঈশ্বরের থেকে অহসিয়ের পতন ঘটল; কারণ তিনি যখন আসলেন, তখন যিহোরামের সঙ্গে নিমশির ছেলে সেই যেহূর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন, যাঁকে ঈশ্বর আহাবের বংশকে ধ্বংস করবার জন্য অভিষেক করেছিলেন।
\v 8 পরে যেহূ যখন আহাবের বংশের লোকদের শাস্তি দিচ্ছিলেন, তখন তিনি যিহূদার শাসনকর্তাদের ও অহসিয়ের সাহায্যকারী তাঁর সব ভাইয়ের ছেলেদেরকে পেয়ে মেরে ফেললেন।
\s5
\v 9 তারপর তিনি অহসিয়ের খোঁজ করলেন; সেই সময়ে অহসিয় শমরিয়াতে লুকিয়ে ছিলেন; আর লোকেরা তাঁকে ধরে যেহূর কাছে নিয়ে গিয়ে তাঁকে মেরে ফেলল এবং তারা তাঁকে কবর দিল, কারণ তারা বলল, “যে যিহোশাফটের নাতি যিনি সমস্ত হৃদয় দিয়ে সদাপ্রভুর খোঁজ করতেন এ তারই সন্তান।” আর অহসিয়ের বংশের মধ্যে রাজত্ব গ্রহণ করতে ক্ষমতা কারও ছিল না।
\s5
\v 10 ইতিমধ্যে অহসিয়ের মা অথলিয়া যখন দেখল যে, তার ছেলে মারা গেছে, তখন সে উঠে যিহূদার বংশের সমস্ত রাজার ছেলেদের হত্যা করল।
\v 11 কিন্তু রাজকন্যা যিহোশাবৎ অহসিয়ের ছেলে যোয়াশকে মারা যাওয়া রাজপুত্রদের মধ্য থেকে চুরি করে, তাঁর ধাইমার সঙ্গে একটা শোবার ঘরে রাখলেন; এইভাবে যিহোয়াদা যাজকের স্ত্রী, রাজা যিহোরামের মেয়ে এবং অহসিয়ের বোন অথলিয়ার কাছ থেকে তাকে লুকিয়ে রাখলেন, তাই সে তাঁকে হত্যা করতে পারল না।
\v 12 আর যোয়াশ তাঁদের সঙ্গে ঈশ্বরের গৃহে ছয় বছর লুকিয়ে থাকলেন; তখন অথলিয়া দেশের উপর রাজত্ব করছিল।
\s5
\c 23
\s যোয়াশ রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 পরে সপ্তম বছরে যিহোয়াদা নিজেকে শক্তিশালী করে শতপতিদের যিহোরামের ছেলে অসরিয়কে, যিহোহাননের ছেলে ইশ্মায়েলকে, ওবেদের ছেলে অসরিয়, অদায়ার ছেলে মাসেয় ও সিখ্রির ছেলে ইলীশাফটকে নিয়ে একটা চুক্তি করলেন।
\v 2 পরে তাঁরা যিহূদা দেশে ঘুরে যিহূদার সমস্ত নগর থেকে লেবীয়দেরকে এবং ইস্রায়েলের পিতার বংশের নেতাদের জড়ো করলে তারাও যিরূশালেমে এল।
\v 3 পরে সব সমাজ মিলে ঈশ্বরের গৃহে রাজার সঙ্গে একটি চুক্তি করল। আর যিহোয়াদা তাদের বললেন, “দেখ, দায়ূদের সন্তানদের বিষয়ে সদাপ্রভু যে কথা বলেছেন, সেই অনুসারে রাজপুত্রই রাজত্ব করবেন।
\s5
\v 4 তোমারা এই কাজ করবে: তোমাদের অর্থাৎ যাজকদের ও লেবীয়দের যে তিন ভাগের এক ভাগ যারা বিশ্রামবারে কাজ করবে, তারা দারোয়ান হবে।
\v 5 অন্য এক ভাগ রাজবাড়ীতে থাকবে, আর এক ভাগ ভিত্তি-দরজাে থাকবে এবং সবাই থাকবে সদাপ্রভুর গৃহের উঠানে।
\s5
\v 6 কিন্তু যাজকরা ও সেবা-কাজে থাকা লেবীয়েরা ছাড়া আর কেউকে সদাপ্রভুর ঘরে ঢুকতে দিও না; এরা ঢুকবে, কারণ এরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে পবিত্র; কিন্তু অন্য সব লোক সদাপ্রভুর আদেশ রক্ষা করবে।
\v 7 আর লেবীয়েরা প্রত্যেকে নিজের নিজের অস্ত্র হাতে নিয়ে রাজার চারপাশ ঘিরে থাকবে, আর যে কেউ গৃহে ঢুকবে, তাকে মেরে ফেলা হবে এবং রাজা যখন ভিতরে যাওয়া-আসা করেন, তখন তোমরা তাঁর সঙ্গে থাকবে।”
\s5
\v 8 পরে যিহোয়াদা যাজক যে আদেশ দিলেন, লেবীয়েরা ও যিহূদার সবাই তাই করল; ফলে তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের লোকদের, অর্থাৎ যারা বিশ্রামবারে বাইরে যাওয়া-আসা করে, তাদেরকে নিল, কারণ যিহোয়াদা যাজক এদের কোনো দলকেই ছুটি দেন নি।
\v 9 আর রাজা দায়ূদের যে সব বর্শা, ঢাল ও ঈশ্বরের গৃহে ছিল, যিহোয়াদা যাজক সেগুলি নিয়ে শতপতিদের দিলেন।
\s5
\v 10 আর তিনি সমস্ত লোককে স্থাপন করলেন, প্রত্যেক জন নিজের নিজের হাতে অস্ত্র নিয়ে দক্ষিণ দিক থেকে উত্তর দিক পর্যন্ত যজ্ঞবেদির ও গৃহের কাছে রাজার চারদিকে দাঁড়ালেন।
\v 11 তারপর তাঁরা রাজপুত্রকে বের করে এনে তাঁর মাথায় মুকুট পরিয়ে দিলেন ও তাঁকে ব্যবস্থার বই দিলেন এবং তারা তাঁকে রাজা করলেন এবং যিহোয়াদা ও তাঁর ছেলেরা তাঁকে রাজা হিসাবে অভিষেক করলেন; পরে তাঁরা বলল, “রাজা চিরজীবী হোন।”
\s5
\v 12 আর লোকেরা দৌড়াদৌড়ি করে রাজার প্রশংসা করলে অমলিয়া সেই আওয়াজ শুনে অথলিয়া সদাপ্রভুর গৃহে তাদের কাছে গেল;
\v 13 আর দেখল, গৃহে ঢুকবার পথে রাজা তাঁর মঞ্চের উপরে দাঁড়িয়ে আছেন এবং সেনাপতিরা ও তূরী বাদকেরা রাজার পাশে আছে এবং দেশের সব লোক আনন্দ করছে ও তূরী বাজাচ্ছে আর গায়কেরা বাজনা বাজিয়ে প্রশংসা গান করছে; তখন অথলিয়া তার পোশাক ছিঁড়ে বলল, “এ তো বিশ্বাসঘাতকতা! বিশ্বাসঘাতকতা!”
\s5
\v 14 কিন্তু যিহোয়াদা যাজক সৈন্যদলের উপরে নিযুক্ত শতপতিদের বাইরে এনে বললেন, “ওকে বের করে দুই সারির মাঝখান দিয়ে নিয়ে যাও; আর যে তার পিছনে আসবে তাকে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করবে;” কারণ যাজক আদেশ দিয়েছিলেন যে, সদাপ্রভুর গৃহের মধ্যে ওকে হত্যা কোরো না।
\v 15 কাজেই লোকেরা তাঁর জন্য দুই সারি হয়ে রাস্তা ছেড়ে দিলে সে রাজবাড়ীর অশ্বদ্বারে ঢুকবার পথে গেল; সেখানে তারা তাকে হত্যা করল।
\s5
\v 16 তারপর যিহোয়াদা তাঁর, সব লোকের ও রাজার মধ্যে এক চুক্তি করলেন, যেন তারা সদাপ্রভুর প্রজা হয়।
\v 17 পরে সব লোক বাল দেবতার মন্দিরে গিয়ে সেটা ভেঙ্গে ফেলল, তার যজ্ঞবেদি ও মূর্তিগুলি চুরমার করে দিল এবং বেদিগুলির সামনে বাল দেবতার যাজক মত্তনকে মেরে ফেলল।
\s5
\v 18 তারপর দায়ূদের আদেশ মতে আনন্দের সঙ্গে গান করে মোশির ব্যবস্থা অনুসারে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোম করতে দায়ূদ যে লেবীয় যাজকদের সদাপ্রভুর গৃহের জন্য নির্ধারণ করেছিলেন, তাদের হাতে যিহোয়াদা সদাপ্রভুর গৃহের দেখাশোনার ভার দিলেন।
\v 19 আর কোনো রকম অশুচি লোক যাতে ঢুকতে না পারে সেইজন্য তিনি সদাপ্রভুর গৃহের দরজাগুলিতে দারোয়ান রাখলেন।
\s5
\v 20 পরে তিনি শতপতিদের, কুলীনদের, লোকেদের শাসনকর্তাদের ও দেশের সব লোকদের সঙ্গে নিলেন, তারা সদাপ্রভুর গৃহ থেকে রাজাকে বের করে আনলেন; তারপর তাঁরা উঁচু দরজা দিয়ে রাজবাড়ীতে গিয়ে রাজাকে রাজ সিংহাসনে বসালেন।
\v 21 তখন দেশের সব লোক আনন্দ করল এবং নগরটি শান্ত হল; আর অথলিয়াকে তারা তরোয়াল দিয়ে হত্যা করেছিল।
\s5
\c 24
\p
\v 1 সাত বছর বয়সে যোয়াশ রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং যিরূশালেমে চল্লিশ বছর রাজত্ব করেন; তাঁর মায়ের নাম সিবিয়া, তিনি বের্‌-শেবা নগরের মেয়ে।
\v 2 যিহোয়াদা যাজকের সমস্ত জীবনকালে যোয়াশ সদাপ্রভুর চোখে যা ঠিক, তাই করতেন।
\v 3 আর যিহোয়াদা তাঁর দুটি বিয়ে দিলেন; তারপর তাঁর ছেলেমেয়ে হল।
\s5
\v 4 পরে যোয়াশ সদাপ্রভুর গৃহ মেরামত করবার জন্য স্থির করলেন।
\v 5 তাতে তিনি যাজকদের ও লেবীয়দের ডেকে জড়ো করে বললেন, “তোমরা যিহূদার নগরে নগরে যাও এবং প্রতি বছর তোমাদের ঈশ্বরের গৃহ মেরামত করবার জন্য সমস্ত ইস্রায়েলের কাছ থেকে রুপো আদায় কর; এই কাজটি তাড়াতাড়ি কর।” কিন্তু লেবীয়েরা সেই কাজ তাড়াতাড়ি করল না।
\s5
\v 6 পরে রাজা প্রধান যাজক যিহোয়াদাকে ডেকে বললেন, “সাক্ষ্য তাঁবুর জন্য ঈশ্বরের দাস মোশি ও ইস্রায়েল সমাজের মাধ্যমে যে কর নির্ধারিত হয়েছে, তা যিহূদা ও যিরূশালেম থেকে আদায় করতে আপনি লেবীয়দের বলে দেন নি কেন?”
\v 7 কারণ সেই দুষ্টা স্ত্রীলোক অথলিয়ার ছেলেরা ঈশ্বরের গৃহ ভেঙ্গে ফেলেছিল এবং সদাপ্রভুর গৃহের সমস্ত পবিত্র জিনিসগুলি নিয়ে বাল দেবতার জন্য ব্যবহার করেছিল।
\s5
\v 8 পরে রাজা আদেশ দিলে তারা একটি সিন্দুক তৈরী করে সদাপ্রভুর গৃহের দরজাের ঠিক বাইরে স্থাপন করল।
\v 9 আর ঈশ্বরের দাস মোশি যে কর মরুভূমিতে দিতে হবে বলে ঠিক করেছিল, সদাপ্রভুর কাছে নিয়ে আসার কথা তারা যিহূদা ও যিরূশালেমে ঘোষণা করল।
\v 10 তাতে সমস্ত শাসনকর্তা ও সমস্ত প্রজা আনন্দ করে তা আনতে লাগল এবং যতক্ষণ না কাজ শেষ হল, ততক্ষণ সিন্দুকে তা রাখত।
\s5
\v 11 আর যে সময়ে লেবীয়দের হাতে করে সেই সিন্দুক রাজার কর্মচারীদের কাছে নিয়ে আসত, তখন তার তার মধ্যে অনেক রুপো দেখা গেলে রাজার লেখক ও প্রধান যাজকের কর্মচারী এসে সিন্দুকটি খালি করত, পরে আবার সেটা তুলে তার জায়গায় রাখত; দিন দিন এইভাবে অনেক রুপো জমা করলো।
\v 12 পরে রাজা ও যিহোয়াদা সদাপ্রভুর গৃহে যাদের উপর দায়িত্ব ছিল সেগুলি তাদের হাতে দিতেন; তারা সদাপ্রভুর গৃহ মেরামত করবার জন্য রাজমিস্ত্রি ও ছুতোরকে মজুরি দিত এবং সদাপ্রভুর গৃহ মেরামত করার জন্য লোহা ও পিতলের কারিগরদেরকেও দিত।
\s5
\v 13 এইভাবে যারা সারাইয়ের কাজ করছিল তারা খুব পরিশ্রম করলে তাদের মাধ্যমে কাজ এগিয়ে চলল; আর তারা ঈশ্বরের গৃহটি মেরামত করে আগের মত মজবুত করল।
\v 14 কাজ শেষ করে তারা বাকী রুপো রাজা ও যিহোয়াদার কাছে নিয়ে আসত এবং তার ফলে সদাপ্রভুর গৃহের জন্য নানা পাত্র, অর্থাৎ সেবার জন্য ও হোমের পাত্র এবং চামচ, সোনা ও রুপোর পাত্র তৈরী হল। আর তারা যিহোয়াদা যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন সদাপ্রভুর গৃহে নিয়মিত হোম করত।
\s5
\v 15 পরে যিহোয়াদা বুড়ো হয়ে আয়ু পূর্ণ হলে মারা গেলেন; সেই সময়ে তাঁর একশো ত্রিশ বছর বয়স হয়েছিল।
\v 16 লোকেরা দায়ূদ নগরে রাজাদের সঙ্গে তাঁর কবর দিল, কারণ তিনি ইস্রায়েলের মধ্যে এবং ঈশ্বর ও তাঁর গৃহের জন্য ভাল কাজ করেছিলেন।
\s5
\v 17 যিহোয়াদার মৃত্যুর পরে যিহূদার শাসনকর্তারা এসে রাজাকে প্রণাম করল; তখন রাজা তাদের কথাই শুনলেন।
\v 18 পরে তারা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৃহ ত্যাগ করে আশেরা-মূর্তির ও নানা প্রতিমার পূজা করতে লাগল; আর তাদের এই পাপের জন্য যিহূদা ও যিরূশালেমের উপর ক্রোধ নেমে এল।
\v 19 যদিও সদাপ্রভুর দিকে তাদের ফিরিয়ে আনবার জন্য তিনি তাদের কাছে ভাববাদীদেরকে পাঠালেন, আর তাঁরা তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন; কিন্তু লোকরা সেই কথা শুনতে চাইল না।
\s5
\v 20 পরে ঈশ্বরের আত্মা যিহোয়াদা যাজকের ছেলে সখরিয়ের উপর এলে, তিনি লোকদের থেকে উঁচু জায়গায় দাঁড়িয়ে তাদের বললেন, “ঈশ্বর এই কথা বলছেন, ‘তোমরা কেন সদাপ্রভুর আদেশ অমান্য করছ? এতে সফল হবে না। তোমরা সদাপ্রভুকে ত্যাগ করেছ, তিনিও তোমাদের ত্যাগ করলেন।’ ”
\v 21 তাতে লোকেরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে রাজার আদেশে সদাপ্রভুর গৃহের উঠানে তাঁকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলল।
\v 22 তাঁর বাবা যিহোয়াদা রাজার প্রতি যে দয়া দেখিয়েছিলেন, তা মনে না রেখে যোয়াশ রাজা তাঁর ছেলেকে মেরে ফেললেন; তিনি মারা যাবার সময় বললেন, “সদাপ্রভু এই কাজ দেখে আপনাকে শাস্তি দেবেন।”
\s5
\v 23 পরের বছর অরামের সৈন্যেরা যোয়াশের বিরুদ্ধে আসল। তারা যিহূদা ও যিরূশালেম আক্রমণ করে সব শাসনকর্তাদের মেরে ফেলল এবং তাদের সমস্ত জিনিস লুট করে দম্মেশকে রাজার কাছে পাঠিয়ে দিল।
\v 24 বাস্তবিক অরামীয় সৈন্যদলে কম লোক আসলো, আর সদাপ্রভু তাদের হাতে অনেক বড় সৈন্যদলকে তুলে দিলেন, কারণ লোকেরা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ত্যাগ করেছিল । এইভাবে অরামীয়দের মাধ্যমে যোয়াশকে শাস্তি দেওয়া হল।
\s5
\v 25 তারা তাঁকে খুব আহত অবস্থায় ফেলে রেখে চলে গেলে তাঁর দাসেরা যিহোয়াদা যাজকের ছেলেদের রক্তপাতের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাঁর বিছানার উপরেই তাঁকে মেরে ফেলল এবং তিনি মারা যাওয়ার পর তাঁকে দায়ূদ নগরে তাঁর কবর দিল ঠিকই, কিন্তু রাজাদের কবরের জায়গায় কবর দিল না।
\v 26 অম্মোনীয় শিমিয়তের ছেলে সাবদ ও মোয়াবীয়া শিম্রীতের ছেলে যিহোষাবদ, এই দুজন তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল।
\s5
\v 27 তাঁর ছেলেদের কথা, তাঁর বিষয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভাববানীর কথা ও ঈশ্বরের গৃহ মেরামতের বর্ণনা দেখো, এইসব বিষয় “রাজাদের ইতিহাস” নামক বইতে ব্যাখ্যান গ্রন্থে লেখা আছে; পরে তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে অমৎসিয় রাজা হলেন।
\s5
\c 25
\s অমৎসিয় রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 অমৎসিয় পঁচিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং ঊনত্রিশ বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেন; তাঁর মায়ের নাম ছিল যিহোয়দ্দন, তিনি ছিলেন যিরূশালেমের মেয়ে।
\v 2 সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল অমৎসিয় তাই করতেন ঠিকই, তবে সমস্ত মন দিয়ে করতেন না।
\s5
\v 3 পরে রাজ্যটি শক্তভাবে তাঁর অধীনে আনবার পর যে দাসেরা রাজাকে, অর্থাৎ তাঁর বাবাকে মেরে ফেলেছিল তাদের তিনি হত্যা করলেন।
\v 4 কিন্তু তিনি তাদের সন্তানদের হত্যা করলেন না, ব্যবস্থার গ্রন্থে, মোশির বইয়ে সদাপ্রভুর যে আদেশ লেখা আছে, সেইমতই কাজ করলেন, যেমন, “সন্তানদের জন্য বাবা, কিম্বা বাবার জন্য সন্তান মারা যাবে না, কিন্তু প্রত্যেকেই তার নিজের পাপে মরবে।”
\s5
\v 5 পরে অমৎসিয় যিহূদাকে জড়ো করেস সমস্ত, যিহূদা ও সমস্ত বিন্যামীনের পূর্বপুরুষদের বংশ অনুসারে সহস্রপতি ও শতপতিদের অধীনে লোকদের দাঁড় করালেন এবং কুড়ি বছর ও তার থেকে বেশী বয়সের লোকদের গণনা করে দেখলেন, যুদ্ধে যাবার জন্য তিন লক্ষ উপযুক্ত লোক রয়েছে, যারা বর্শা ও ঢাল ব্যবহার করতে সক্ষম।
\v 6 আর তিনি একশো তালন্ত রুপো মজুরি দিয়ে ইস্রায়েল থেকে এক লক্ষ বলবান বীর নিলেন।
\s5
\v 7 কিন্তু ঈশ্বরের একজন লোক এসে তাঁকে বললেন, “হে রাজা, ইস্রায়েলের সৈন্যদল তোমার সঙ্গে যেন না যায়; কারণ ইস্রায়েলের সঙ্গে, অর্থাৎ সমস্ত ইফ্রয়িম সন্তানদের সঙ্গে সদাপ্রভু থাকেন না।
\v 8 তুমি গিয়ে যুদ্ধ কর এবং যুদ্ধে জয়ী হও; শত্রুর কাছে ঈশ্বর তোমাকে পরাজিত করবেন, কারণ সাহায্য করবার অথবা পরাজিত করবার ক্ষমতা ঈশ্বরের আছে।”
\s5
\v 9 তখন অমৎসিয় ঈশ্বরের লোককে বললেন, “ভাল, কিন্তু সেই ইস্রায়েলীয় সৈন্যদলকে যে একশো তালন্ত রুপো দিয়েছি, তার জন্য কি করা যায়?” ঈশ্বরের লোক বললেন, “সদাপ্রভু তোমাকে এর থেকে আরও অনেক বেশী দিতে পারেন।”
\v 10 তাতে অমৎসিয় তাদের অর্থাৎ ইফ্রয়িম থেকে তাঁর কাছে আসা সেই সৈন্যদলকে বাড়ী পাঠাবার জন্য আলাদা করলেন; কাজেই যিহূদার বিরুদ্ধে তাদের ক্রোধ জ্বলে উঠল, তারা রেগে আগুন হয়ে নিজের জায়গায় ফিরে গেল।
\s5
\v 11 পরে অমৎসিয় নিজেকে শক্তিশালী করলেন এবং তাঁর লোকেদের বের করে লবণ উপত্যকায় গিয়ে সেয়ীর সন্তানদের দশ হাজার লোককে হত্যা করলেন।
\v 12 আর যিহূদার সন্তানরা তাদের দশ হাজার জীবিত লোককে বন্দি করে পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে নীচে ফেলে দিল, এতে তারা সবাই একেবারে থেঁৎলে গেল।
\s5
\v 13 কিন্তু অমৎসিয় তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করতে না দিয়ে ফেএ সন্তানদের রৎ পাঠিয়েছিলেন, তারা শমরিয়া থেকে বৈৎ-হোরণ পর্যন্ত যিহূদার নগর আক্রমণ করে তাদের তিন হাজার লোককে আঘাত করল এবং অনেক জিনিস লুঠ করে নিয়ে গেল।
\s5
\v 14 ইদোমীয়দের হত্যা করে ফিরে আসবার পর অমৎসিয় সেয়ীর সন্তানদের প্রতিমাগুলি সঙ্গে করে নিয়ে আসলেন, নিজের দেবতা হিসাবে তাদের স্থাপন করলেন এবং তাদেরকে প্রণাম করতে ও তাদের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালাতে লাগলেন।
\v 15 এতে অমৎসিয়ের উপর সদাপ্রভুর ক্রোধ জ্বলে উঠল, তিনি একজন ভাববাদীকে তাঁর কাছে পাঠালেন; ভাববাদী তাঁকে বললেন, “ঐ লোকদের যে দেবতারা নিজের হাত থেকে তাদের প্রজাদেরকে উদ্ধার করে নি, আপনি তাদের কেন খোঁজ করেছন?”
\s5
\v 16 তাঁর এই কথার উত্তরে রাজা তাকে বললেন, “আমরা কি তোমাকে রাজার মন্ত্রীর পদে নিযুক্ত করেছি? তুমি থামবে নাকি মার খাবে?” তখন সেই ভাববাদী থামলেন, তবুও বললেন, “আমি জানি, ঈশ্বর আপনাকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছেন, কারণ আপনি এই কাজ করেছেন, আর আমার পরামর্শ শোনেন নি।”
\s5
\v 17 পরে যিহূদার রাজা অমৎসিয় পরামর্শ করে যেহূর নাতি যিহোয়াহসের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা যোয়াশের কাছে বলে পাঠালেন, “আসুন, আমরা মুখোমুখি হই।”
\s5
\v 18 তখন ইস্রায়েলের রাজা যোয়াশ যিহূদার রাজা অমৎসিয়ের বলে পাঠালেন, “লিবানোনের শিয়ালকাঁটা লিবানোনেরই এরস গাছের কাছে বলে পাঠাবলে পাঠালেন, কাছে লোক দিয়ে ল, ‘আমার ছেলের সঙ্গে তোমার মেয়ের বিয়ে দাও; তারপর লিবানোনের একটি বুনো জন্তু এসে সেই শিয়ালকাঁটাকে পায়ে মাড়িয়ে দিল।
\v 19 তুমি বলছ, ‘দেখ, আমি ইদোমকে আঘাত করেছি; মনে মনে এই কথা ভেবে আপনি গর্ব করছ; এখন তুমি ঘরে বসে থাক, অমঙ্গলের সঙ্গে বিরোধ করতে কেন এগিয়ে যাবে এবং তুমি ও যিহূদা, উভয়ে কেন ধ্বংস হবে?”
\s5
\v 20 কিন্তু অমৎসিয় সেই কথা শুনলেন না, কারণ লোকেরা ইদোমের দেবতাদের খোঁজ করেছিল বলে তারা যেন শত্রুদের হাতে ধরা পড়ে, তাই এটা ঈশ্বর থেকে হল।
\v 21 পরে ইস্রায়েলের রাজা যোয়াশ যুদ্ধে গেলেন এবং যিহূদার দখলে থাকা বৈৎ-শেমশে তিনি ও যিহূদার রাজা অমৎসিয় একে অন্যের মুখোমুখি হলেন।
\v 22 তখন ইস্রায়েলের কাছে যিহূদা সম্পূর্ণভাবে হেরে গেল, প্রত্যেকে নিজের নিজের তাঁবুতে পালিয়ে গেল।
\s5
\v 23 আর ইস্রায়েলের রাজা যোয়াশ বৈৎ-শেমশে যিহোয়াহসের নাতি, যোয়াশের ছেলে, যিহূদার রাজা অমৎসিয়কে বন্দী করে যিরূশালেমে আনলেন এবং ইফ্রয়িমের দরজা থেকে কোণের দরজা পর্যন্ত যিরূশালেমের চারশো হাত লম্বা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেললেন।
\v 24 আর ঈশ্বরের গৃহে ওবেদ-ইদোমের দখলে যত সোনা, রুপো ও পাত্র পাওয়া গিয়েছিল, সে সমস্ত এবং রাজবাড়ীর ধন-সম্পদ ও জামিন হিসাবে কতগুলি মানুষকে নিয়ে শমরিয়াতে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 25 ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াহসের ছেলে যোয়াশের মৃত্যুর পরে যিহূদার রাজা যোয়াশের ছেলে অমৎসিয় আরও পনেরো বছর বেঁচে ছিলেন।
\v 26 অমৎসিয়ের বাকি কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত “যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\s5
\v 27 অমৎসিয় সদাপ্রভুর পথে চলা থেকে সরে যাওয়ার পর লোকেরা যিরূশালেমে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করল, এতে তিনি লাখীশে পালিয়ে গেলেন, কিন্তু তারা তাঁর পিছনে পিছনে লাখীশে লোক পাঠিয়ে সেখানে তাঁকে হত্যা করল।
\v 28 পরে ঘোড়ার পিঠে করে তাঁকে এনে যিহূদার নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁর কবর দিল।
\s5
\c 26
\s উষয় রাজার বিবরণ।
\p
\v 1 আর যিহূদার সমস্ত লোক ষোল বছরের উষিয়কে নিয়ে তাঁর বাবা অমৎসিয়ের জায়গায় রাজা করল।
\v 2 দ্বিতীয়বার রাজা অমৎসিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লে উষিয় এলৎ নগরটি আবার তৈরী করলেন এবং যিহূদার অধীনে আনলেন।
\v 3 উষিয় ষোল বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং যিরূশালেমে বাহান্ন বছর রাজত্ব করেন; তাঁর মায়ের নাম যিখলিয়া, তিনি যিরূশালেমের মেয়ে।
\s5
\v 4 উষিয় তাঁর বাবা অমৎসিয়ের সমস্ত কাজ অনুসারে সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তাই করতেন।
\v 5 আর ঈশ্বরের দর্শক, বুদ্ধিমান যে সখরিয়ের জীবনকালে তিনি ঈশ্বরের খোঁজ করতেন; আর যতদিন তিনি সদাপ্রভুর খোঁজ করলেন, ততদিন ঈশ্বরও তাঁকে সফলতা দান করলেন।
\s5
\v 6 তিনি পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন এবং গাৎ, যব্‌নির ও অসদোদ প্রাচীর ভেঙ্গে ফেললেন এবং অসদোদ এলাকায় এবং পলেষ্টীয়দের মধ্যে কতগুলি নগর তৈরী করলেন।
\v 7 আর ঈশ্বর পলেষ্টীয়দের, গূরবালে বাসকারী আরবীয়দের ও মিয়ূনীয়দের বিরুদ্ধে তাঁকে সাহায্য করলেন।
\v 8 অম্মোনীয়েরা উষিয়কে উপহার দিল এবং তাঁর সুনাম মিসরের সীমানা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ল; কারণ তিনি খুব শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন।
\s5
\v 9 উষিয় যিরূশালেমের কোণের দরজায়, উপত্যকার দরজায় এবং প্রাচীরের কোণে উঁচু ঘর তৈরী করে সেগুলি শক্তিশালী করলেন।
\v 10 আর তিনি মরুভূমিতে উঁচু ঘর তৈরী করলেন ও অনেক কূপ খুঁড়লেন, কারণ তাঁর অনেক পশুপাল ছিল, উপত্যকা ও সমভূমিতেও তাই করলেন এবং পর্বতে ও উর্বর ক্ষেতে তাঁর চাষীরা ও আঙ্গুর ক্ষেতের চাষীরা ছিল; কারণ তিনি কৃষিকাজ ভালবাসতেন।
\s5
\v 11 আবার উষিয়ের দক্ষ সৈন্যদল ছিল; রাজার হনানীয় নামে একজন সেনাপতির পরিচালনার অধীনে লেখক যিয়ূয়েল ও শাসনকর্তা মাসেয় হাতে লেখা সংখ্যা অনুসারে তারা দলে দলে যুদ্ধে করতে যেত।
\v 12 পূর্বপুরুষের নেতা, শক্তিশালী যোদ্ধা সবমিলিয়ে তারা মোট দুহাজার ছশো জন ছিল।
\v 13 আর তাদের পরিচালনার অধীনে শক্তিশালী সৈন্যদল, শত্রুদের বিরুদ্ধে রাজাকে সাহায্য করবার জন্য দক্ষ যোদ্ধা ছিল তিন লক্ষ সাত হাজার পাঁচশো লোক ছিল।
\s5
\v 14 উষিয় সমস্ত সৈন্যদলের জন্য ঢাল, বর্শা, শিরস্ত্রাণ, বর্ম, ধনুক ও ফিংগার পাথর তৈরী করলেন।
\v 15 আর যিরূশালেমে তিনি দক্ষতাপূর্ণ শিল্পীদের দ্বারা স্বপ্নের যন্ত্রপাতি তৈরী করে সেটা দিয়ে তীর ও বড় বড় পাথর ছুঁড়ে মারার জন্য দুর্গের পিছনে ও প্রাচীরের চূড়াতে তা স্থাপন করলেন। তাঁর সুনাম দূর দেশে ছড়িয়ে পড়ল, কারণ তিনি সাহায্য পেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠলেন।
\s5
\v 16 কিন্তু শক্তিশালী হয়ে উঠার পর তাঁর মনে গর্ব আসল, তাতে তাঁর পতন হল, আর তিনি তাঁর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করলেন; কারণ তিনি ধূপবেদিতে ধূপ জ্বালাবার জন্য সদাপ্রভুর মন্দিরে ঢুকলেন।
\v 17 তাতে অসরিয় যাজক ও তাঁর সঙ্গে সদাপ্রভুর আশিজন সাহসী যাজক তাঁর পিছু পিছু ভিতরে গেলেন।
\v 18 তাঁরা উষিয় রাজার সামনে দাঁড়িয়ে তাঁকে বললেন, “হে উষিয়, সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালাবার অধিকার আপনার নেই, কিন্তু হারোণের সন্তানদের যে যাজকেরা ধূপ জ্বালাবার জন্য পবিত্র করা হয়েছে, তাদেরই অধিকার আছে; এই পবিত্র জায়গা থেকে আপনি বের হয়ে যান, কারণ আপনি পাপ করেছেন, এই বিষয়ে ঈশ্বর সদাপ্রভুর থেকে আপনার গৌরব হবে না।”
\s5
\v 19 তখন উষিয় রেগে আগুন হয়ে গেলেন, আর তাঁর হাতে ধূপ জ্বালাবার জন্য একটা ধূপদানি ছিল; কিন্তু তিনি যাজকদের উপর প্রচন্ড রাগ করেছিলেন বলে সদাপ্রভুর গৃহে যাজকদের সামনে ধূপবেদির কাছে তাঁর কপালে কুষ্ঠরোগ দেখা দিল।
\v 20 তখন প্রধান যাজক অসরিয় এবং অন্যান্য সব যাজকেরা তাঁর দিকে তাকিয়ে তাঁর কপালে সেই কুষ্ঠরোগ দেখতে পেলেন; কাজেই তাঁরা তাড়াতাড়ি তাঁকে বের করে দিলেন, এমন কি, তিনি নিজেও তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যেতে চাইলেন, কারণ সদাপ্রভু তাঁকে আঘাত করেছিলেন।
\s5
\v 21 আর মৃত্যু পর্যন্ত রাজা উষিয় কুষ্ঠরোগী ছিলেন; কুষ্ঠ হওয়ার জন্য তিনি একটা আলাদা ঘরে থাকতেন, কারণ সদাপ্রভুর গৃহে যাওয়া থেকে তিনি বাদ পড়েছিলেন; তাতে তাঁর ছেলে যোথম রাজবাড়ির কর্তা হয়ে দেশের লোকেদের শাসন করতে লাগলেন।
\s5
\v 22 উষিয়ের বাকি সমস্ত কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমোসের ছেলে ভাববাদী যিশাইয় লিখে রেখেছেন।
\v 23 পরে উষিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে ঘুমিয়ে পড়লে, লোকেরা তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে রাজাদের কবর দেওয়ার জায়গা তাঁর কবর দিল, কারণ তারা বলল, “তাঁর কুষ্ঠরোগ হয়েছিল।” তারপর তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে যোথম রাজা হলেন।
\s5
\c 27
\s যোথম রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 যোথম পঁচিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন এবং যিরূশালেমে ষোল বছর রাজত্ব করেন; তাঁর মায়ের নাম যিরূশা, তিনি সাদোকের মেয়ে।
\v 2 যোথম তাঁর বাবা উষিয়ের সমস্ত কাজ অনুসারে সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তাই করতেন, কিন্তু সদাপ্রভুর মন্দিরে যেতেন না এবং লোকেরা তখনও খারাপ কাজ করত।
\s5
\v 3 তিনি সদাপ্রভুর গৃহের উঁচু দরজা তৈরী করলেন এবং ওফল পাহাড়ের ওপরের অনেক জায়গা মজবুত করলেন;
\v 4 আর তিনি যিহূদার পর্বতে ঘেরা দেশে নানা জায়গায় নগর এবং বনে উঁচু পাহারা-ঘর ও দুর্গ তৈরী করলেন।
\s5
\v 5 আর তিনি অম্মোন সন্তানদের রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের পরাজিত করলেন; তাতে অম্মোন সন্তানরা সেই বছর তাঁকে একশো তালন্ত রুপো, দশ হাজার কোর্ গম ও দশ হাজার কোর্ যব দিল এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় বছরেও অম্মোন সন্তানরা তাঁকে একই পরিমাণে দিল।
\s5
\v 6 এইভাবে যোথম শক্তিশালী হয়ে উঠলেন, কারণ তিনি বিশ্বস্তভাবে তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর পথে চলতেন।
\v 7 যোথমের বাকি কাজের কথা, তাঁর সব যুদ্ধের কথা এবং চরিত্র, দেখো, “ইস্রায়েল ও যিহূদার রাজাদের ইতিহাস” বইটিতে লেখা আছে।
\s5
\v 8 তিনি পঁচিশ বছর বয়সে রাজত্ব শুরু করেন এবং যিরূশালেমে ষোল বছর রাজত্ব করেন।
\v 9 পরে যোথম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লে লোকেরা তাঁকে দায়ূদ নগরে কবর দিল এবং তাঁর ছেলে আহস তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 28
\s আহস রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 আহসের বয়স কুড়ি বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন এবং তিনি যিরূশালেমে ষোল বছর রাজত্ব করেছিলেন। তিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদ যেমন করেছিলেন তেমন সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তা তিনি করতেন না।
\v 2 তিনি ইস্রায়েলের রাজাদের মতই চলতেন এবং বাল দেবতার জন্য তিনি ছাঁচে ঢেলে মূর্তি তৈরী করিয়েছিলেন।
\s5
\v 3 তিনি বিন্‌-হিন্নোমের ছেলের উপত্যকাতে ধূপ জ্বালাতেন এবং সদাপ্রভু যে সব জাতিকে ইস্রায়েলীয়দের সামনে থেকে দূর করে দিয়েছিলেন তাদের জঘন্য কাজের মতই তিনিও তাঁর ছেলেদের আগুনে পুড়িয়ে হোম উৎসর্গ করলেন।
\v 4 তিনি উঁচু জায়গা গুলোতে, পাহাড়ের উপরে ও প্রত্যেকটি ডালপালা ছড়ানো সবুজ গাছের নীচে পশু উৎসর্গ করতেন ও ধূপ জ্বালাতেন।
\s5
\v 5 সেইজন্যই আহসের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁকে অরামের রাজার হাতে তুলে দিলেন। অরামীয়েরা তাঁকে হারিয়ে দিল এবং তাঁর অনেক লোককে বন্দী করে দামেশকে নিয়ে গেল। আবার তিনি ইস্রায়েলের রাজার হাতেও আহসকে তুলে দিল। ইস্রায়েলের রাজা তাঁর অনেক লোককে মেরে ফেললেন।
\v 6 কারণ রমলিয়ের ছেলে পেকহ একদিনের মধ্যে যিহূদায় এক লক্ষ কুড়ি হাজার সাহসী সৈন্যকে মেরে ফেললেন, কারণ যিহূদার লোকেরা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ত্যাগ করেছিল।
\s5
\v 7 আর সিখ্রি নামে একজন ইফ্রয়িমীয় শক্তিশালী যোদ্ধা রাজার ছেলে মাসেয়কে ও রাজবাড়ীর ভার পাওয়া কর্মচারী অস্রীকামকে এবং রাজার পরে দ্বিতীয় জায়গা যিনি ছিলেন সেই ইল্কানাকে মেরে ফেলল।
\v 8 ইস্রায়েলীয়েরা তাদের জাতি ভাইদের মধ্য থেকে স্ত্রীলোক ও ছেলেমেয়েদের বন্দী করে নিয়ে গেল। তাদের সংখ্যা ছিল দুই লক্ষ। তারা অনেক জিনিসও লুট করে শমরিয়াতে নিয়ে গেল।
\s5
\v 9 কিন্তু সেখানে ওদেদ নামে সদাপ্রভুর একজন ভাববাদী ছিলেন। সৈন্যদল যখন শমরিয়াতে ফিরে আসছিল তখন তিনি তাদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন এবং তাদের বললেন, “আপনাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যিহূদার উপর ভীষণ অসন্তুষ্ট হয়েছেন বলে তিনি তাদের আপনাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। কিন্তু রাগের চোটে আপনারা তাদের যেভাবে মেরে ফেলেছেন সেই কথা স্বর্গ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
\v 10 আর এখন আপনারা যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের আপনাদের দাস দাসী করে রাখতে চাইছেন। কিন্তু আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে কি আপনারাও দোষী নন?
\v 11 এখন আপনারা আমার কথা শুনুন। আপনাদের জাতি ও ভাইদের মধ্য থেকে যাদের আপনারা বন্দী করে নিয়ে এসেছেন তাদের আপনারা ফেরত পাঠিয়ে দিন, কারণ সদাপ্রভুর ভয়ংকর ক্রোধ আপনাদের উপরে রয়েছে।”
\s5
\v 12 তখন ইফ্রয়িমের কয়েকজন নেতা যেমন সেই নেতারা হলেন যিহোহাননের ছেলে অসরিয়, মশিল্লেমোতের ছেলে বেরিখিয়, শল্লুমের ছেলে যিহিষ্কিয় ও হদ্‌লয়ের ছেলে অমাসা এরা যুদ্ধ থেকে যারা ফিরে আসছিল তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন ।
\v 13 তাঁরা তাদের বললেন, “ঐ বন্দীদের তোমরা এখানে আনবে না কারণ আমাদের পাপ ও দশ সবার থেকে বেশি; আনলে আমরা সদাপ্রভুর কাছে দোষী হব। আমাদের পাপ ও দোষের সঙ্গে কি তোমরা আরও কিছু যোগ দিতে চাও? আমরা তো ভীষণভাবে দোষী হয়েই রয়েছি আর সদাপ্রভুর ভয়ংকর ক্রোধ ইস্রায়েলের উপর রয়েছে।”
\s5
\v 14 তখন সৈন্যেরা সেই নেতাদের ও সমস্ত লোকদের সামনে সেই বন্দীদের ও লুটের জিনিসগুলো রাখল।
\v 15 পরে সেই লোকেরা লুটের জিনিস থেকে কাপড় চোপড় নিয়ে বন্দীদের মধ্যে যারা উলঙ্গ ছিল তাদের সবাইকে কাপড় পরালেন। তাঁরা তাদের কাপড় চোপড়, জুতা ও খাবার দিলেন এবং তাদের আঘাতের উপর তেল ঢেলে দিলেন। এবং দুর্বলদের তাঁরা গাধার উপর চড়িয়ে যিরীহোতে, অর্থাৎ খেজুর শহরে তাদের নিজের লোকদের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন। পরে তাঁরা শমরিয়াতে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 16 সেই সময় রাজা আহস সাহায্য চাইবার জন্য অশুর রাজার কাছে লোক পাঠালেন।
\v 17 এর কারণ হল, ইদোমীয়েরা আবার এসে যিহূদা আক্রমণ করে লোকদের বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিল।
\v 18 এদিকে আবার পলেষ্টীয়েরা তখন নীচু পাহাড়ী এলাকার গ্রামগুলোতে এবং যিহূদার দক্ষিন অঞ্চলের নগরগুলি আক্রমন করে নেগেভে হানা দিয়েছিল বৈৎশেমশ, অয়ালোন, গদেরোৎ এবং আশেপাশের জায়গা সুদ্ধ সোখো, তিম্না ও গিম্‌সো অধিকার করে নিয়ে সেই সব জায়গায় বাস করছিল।
\s5
\v 19 কারণ রাজা আহসের জন্য সদাপ্রভু যিহূদাকে নীচু করেছিলেন, কারণ আহস যিহূদায় মন্দতা বৃদ্ধি পেতে দিয়েছিলেন এবং নিজে সদাপ্রভুর প্রতি খুব বেশী পাপ করেছিলেন।
\v 20 আরে অশুর রাজা তিগ্লৎ পিলনেষর তাঁর কাছে এসেছিলেন কিন্তু তিনি শক্তি বৃদ্ধির বদলে আহসকে কষ্টই দিলেন।
\v 21 তখন আহস সদাপ্রভুর ঘর থেকে এবং রাজবাড়ী থেকে এবং নেতাদের কাছ থেকে কিছু দামী জিনিসপত্র নিয়ে অশুর রাজাকে উপহার দিলেন, কিন্তু তাতে কিছু লাভ হল না।
\s5
\v 22 তাঁর এই কষ্টের সময়ে এই একই রাজা আহস সদাপ্রভুর প্রতি আরও বেশী পাপ করলেন।
\v 23 কারণ দম্মেশকের যে দেবতারা তাঁকে হারিয়ে দিয়েছিল, তিনি সেই দেবতাদের কাছে পশু বলিদান করলেন। তিনি বললেন, “অরামের রাজাদের দেবতারা তাঁদের সাহায্য করে, আর আমি সাহায্য পাবার জন্য সেই দেবতাদের কাছে পশু বলি দেব।” আর তারা আমাকেও সাহায্য করবেন কিন্তু সেই দেবতারাই হল তাঁর ও সমস্ত ইস্রায়েলের সর্বনাশের কারণ।
\s5
\v 24 পরে আহস ঈশ্বরের ঘরের জিনিসপত্রগুলি একত্রে জড়ো করে কেটে কেটে টুকরো করলেন। তিনি সদাপ্রভুর ঘরের দরজাগুলো বন্ধ করে দিলেন এবং যিরূশালেমের সমস্ত জায়গায় তিনি নিজের জন্য বেদী তৈরী করলেন।
\v 25 আর অন্য দেব দেবতাদের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালাবার জন্য তিনি যিহূদার প্রত্যেকটি শহর ও গ্রামে পূজার উঁচু বেদী তৈরী করলেন, এইভাবে তাঁর নিজের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করে তুললেন।
\s5
\v 26 দেখো, আহসের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা এবং প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তাঁর সমস্ত চাল চলনের কথা “যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামক বইটিতে লেখা আছে।
\v 27 পরে আহস তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন এবং তারা যিরূশালেম শহরে তাঁকে কবর দিল, কিন্তু তারা তাঁকে ইস্রায়েলের রাজাদের কবরের জায়গা নিয়ে যায় নি। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে হিষ্কিয় রাজা হলেন।
\s5
\c 29
\s হিষ্কিয় রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 হিষ্কিয় পঁচিশ বছর বয়সে রাজা হয়ে রজত্ব শুরু করেন এবং যিরূশালেমে ঊনত্রিশ বছর পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল অবিয়া; তিনি ছিলেন সখরিয়ের মেয়ে।
\v 2 হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মতই সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু ভাল তাই করতেন।
\s5
\v 3 তাঁর রাজত্বের প্রথম বছরের প্রথম মাসেই তিনি সদাপ্রভুর ঘরের দরজাগুলি খুলে দিলেন এবং সারাই করলেন।
\v 4 তিনি পূর্ব দিকের উঠানে যাজক ও লেবীয়দের একত্রে জড়ো করলেন।
\v 5 তিনি তাদের বললেন এখন “লেবীয়েরা, আমার কথা শোন; তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের নিজেদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘরটি শুচি কর। এই পবিত্র জায়গা থেকে সমস্ত অশুচি জিনিস দূর করে দাও।
\s5
\v 6 কারণ আমাদের পূর্বপুরুষেরা সত্যকে অস্বীকার করেছেন এবং আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাঁরা সেই সব কাজ করেছেন এবং তাঁকে ত্যাগ করেছেন। সদাপ্রভুর বাসজায়গা থেকে তাঁরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এবং তাঁর দিকে পিছন ফিরিয়েছেন।
\v 7 তাঁরা বারান্দার দরজাগুলোও বন্ধ করে দিয়েছেন এবং বাতিগুলো নিভিয়ে দিয়েছেন। এই পবিত্র জায়গায় তাঁরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালান নি কিম্বা কোনো হোম উৎসর্গের অনুষ্ঠান করেন নি।
\s5
\v 8 সেই জন্য যিহূদা ও যিরূশালেমের উপর সদাপ্রভুর ক্রোধ নেমে এসেছে। সেই জন্য তোমরা নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছ যে, তিনি তাদের ভীষণ ভয়ের ও ঘৃণার পাত্র করেছেন; তাদের দেখে লোকেরা বিস্মিত হচ্ছে।
\v 9 এইজন্য আমাদের পূর্বপুরুষেরা খড়গ দ্বারা মারা পড়েছেন এবং আমাদের স্ত্রী, ছেলেরা ও মেয়েরা বন্দী হয়ে আছে।
\s5
\v 10 এখন হৃদয় থেকে চাই ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সঙ্গে একটা চুক্তি করতে যাতে তাঁর ভয়ংকর ক্রোধ আমাদের উপর থেকে দুরে চলে যায়।
\v 11 হে আমার সন্তানেরা, তোমরা এখন আর অলস হয়ে থেকো না, কারণ সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়াতে এবং তাঁর পরিচারক হিসাবে তাঁর কাজ করতে ও ধূপ জ্বালাতে তিনি তোমাদেরই বেছে নিয়েছেন।”
\s5
\v 12 তখন সেই সব লেবীয়েরা উঠে কাজে লাগলেন: কহাতীয়দের মধ্য থেকে অমাসয়ের ছেলে মাহৎ ও অসরিয়ের ছেলে যোয়েল; মরারিরদের মধ্য থেকে অব্দির ছেলে কীশ এবং যিহলিলেলের ছেলে অসরিয়; গের্শোনীয়দের মধ্য থেকে সিম্মের ছেলে যোয়াহ ও যোয়াহের ছেলে এদন;
\v 13 ইলীষাফণের বংশধরদের মধ্য থেকে শিম্রি ও যিয়ূয়েল; আসফের বংশধরদের মধ্য থেকে সখরিয় ও মত্তনিয়;
\v 14 হেমনের বংশধরদের মধ্য থেকে যিহূয়েল ও শিমিয়ি এবং যিদূথূনের বংশধরদের মধ্য থেকে শময়িয় ও উষীয়েল।
\s5
\v 15 তাঁরা তাঁদের লেবীয় ভাইদের একত্রে জড়ো করলেন, সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিজেদের পবিত্র করলেন। তারপর সদাপ্রভুর কথামত রাজার আদেশ অনুযায়ী তাঁরা সদাপ্রভুর ঘর শুচি করবার জন্য ভিতরে গেলেন।
\v 16 যাজকেরা সেখানে যে সব অশুচি জিনিস সদাপ্রভুর গৃহে পেলেন সেগুলো সবই সদাপ্রভুর ঘরের উঠানে বের করে নিয়ে আসলেন। পরে লেবীয়রা সেগুলো বয়ে নিয়ে কিদ্রোণ উপত্যকায় গেল।
\v 17 আর তাঁরা প্রথম মাসের প্রথম দিনে সদাপ্রভুর ঘর শুচি করতে শুরু করলেন এবং মাসের আট দিনের দিন ঘরের বারান্দা পর্যন্ত আসলেন। আর আটদিনের মধ্যে তাঁরা সদাপ্রভুর ঘরটি শুচি করলেন এবং প্রথম মাসের ষোল দিনের দিন সেগুলি শেষ করলেন।
\s5
\v 18 তারপর তাঁরা রাজার বাড়িতে গিয়ে হিষ্কিয়ের কাছে বললেন, “আমরা সদাপ্রভুর সমস্ত ঘর হোম উৎসর্গের বেদী ও তার বাসন পত্র এবং দর্শন রুটি রাখবার টেবিল ও তার সব জিনিসপত্র সুদ্ধ সদাপ্রভুর ঘরটি শুচি করেছি।
\v 19 সদাপ্রভুর প্রতি অবিশ্বস্ত হয়ে রাজা আহস তাঁর রাজত্বের সময় যে সব জিনিস বাদ দিয়েছিলেন সেগুলো আমরা আবার ঠিক করে শুচি করে নিয়েছি। সেগুলি এখন সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদীর সামনে রয়েছে।”
\s5
\v 20 পরের দিন ভোরবেলায় রাজা হিষ্কিয় শহরের উঁচু পদের কর্মচারীদের জড়ো করলেন এবং তিনি সদাপ্রভুর গৃহে গেলেন।
\v 21 তাঁরা রাজ্যের জন্য, উপাসনা ঘরের জন্য ও যিহূদার লোকদের জন্য পাপের জন্য বলি উৎসর্গ হিসাবে সাতটা ষাঁড়, সাতটা ভেড়া, সাতটা ভেড়ার বাচ্চা ও সাতটা ছাগল নিয়ে আসলেন। আর পরে তিনি যাজকদের অর্থাৎ হারোণের বংশধরদের সদাপ্রভুর বেদীর উপর হোম উৎসর্গ করবার জন্য আদেশ দিলেন।
\s5
\v 22 সুতরাং যাজকেরা প্রথমে সেই ষাঁড়গুলো কেটে তাদের রক্ত নিয়ে বেদীর গায়ে ছিটিয়ে দিলেন; তারপর ভেড়াগুলো ও শেষে ভেড়ার বাচ্চাগুলো বলি দিয়ে সেগুলোর রক্তও বেদির উপর ছিটিয়ে দিলেন।
\v 23 তারপর যাজকেরা পাপের জন্য উৎসর্গের উদ্দেশ্যে ছাগলগুলো রাজা ও সব জনগনের সামনে আনলেন; তাঁরা সেগুলোর মাথার উপর হাত রাখলেন।
\v 24 এর পরে যাজক সেই ছাগলগুলো বলি দিলেন এবং সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের পাপ ঢাকা দেবার উদ্দেশ্যে বেদীর উপরে সেই রক্ত দিয়ে পাপের জন্য উৎসর্গের অনুষ্ঠান করলেন। সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের জন্য হোম উৎসর্গ ও পাপের জন্য উৎসর্গ করবার আদেশ রাজাই দিয়েছিলেন।
\s5
\v 25 আর তিনি রাজা দায়ূদ, তাঁর দর্শক গাদ এবং ভাববাদী নাথনের আদেশ অনুসারে রাজা হিষ্কিয় লেবীয়দের বললেন যেন তারা করতাল, বীণা ও নেবল নিয়ে সদাপ্রভুর ঘরে রাখলেন। কারণ সদাপ্রভু তাঁর ভাববাদীদের মধ্য দিয়ে এই আদেশই দিয়েছিলেন।
\v 26 সেইজন্য লেবীয়েরা দায়ূদের বাজনাগুলো নিয়ে আর যাজকেরা তাঁদের তূরী হাতে নিয়ে গিয়ে দাঁড়ালেন।
\s5
\v 27 তারপর হিষ্কিয় বেদীর উপরে হোম উৎসর্গের অনুষ্ঠানের আদেশ দিলেন। আর উৎসর্গের অনুষ্ঠান আরম্ভ হলে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে গানও আরম্ভ হল আর তার সঙ্গে ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদের বাজনা ও তূরী বাজানো হল।
\v 28 আর গায়কেরা গান করতে ও তূরী বাদকেরা তূরী বাজাতে থাকল এবং সব লোক মাটিতে উপুড় হয়ে সদাপ্রভুকে আরাধনা করলো। হোম উৎসর্গের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই সবই চলতে থাকল।
\s5
\v 29 পরে হোম উৎসর্গের অনুষ্ঠান শেষ হলে রাজা এবং তাঁর সাথীরা সকলে হাঁটু পেতে সদাপ্রভুকে প্রনাম করলেন।
\v 30 রাজা হিষ্কিয় ও তাঁর কর্মচারীরা দায়ূদের এবং দর্শক আসফের বাক্য দ্বারা গান দিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে প্রশংসা করবার জন্য লেবীয়দের আদেশ দিলেন। তখন তারা খুশী হয়ে প্রশংসা গান করল এবং তারা মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে সদাপ্রভুকে প্রণাম করলো।
\s5
\v 31 তার পর হিষ্কিয় উত্তর দিয়ে বললেন, “এখন আপনারা সদাপ্রভুর কাছে নিজেদের দিয়ে দিয়েছেন। এখানে আপনারা এসে সদাপ্রভুর ঘরে পশু বলি ও ধন্যবাদ উৎসর্গের অনুষ্ঠানের জিনিস আনুন।” তখন লোকেরা পশু বলি ও ধন্যবাদ উত্সর্গের এবং যাদের হৃদয় চাইল তারা হোম উৎসর্গের অনুষ্ঠানের জিনিসও আনল।
\s5
\v 32 লোকেরা হোম উৎসর্গের জন্য সত্তরটা ষাঁড়, একশোটা ভেড়া ও দু’শোটা ভেড়ার বাচ্চা নিয়ে আসল। এই সব ছিল সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোম উৎসর্গের অনুষ্ঠানের জন্য।
\v 33 উৎসর্গের জন্য যে সব পশু পবিত্র করা হলো সেগুলোর সংখ্যা হল ছ’শো ষাঁড় ও তিন হাজার ভেড়া।
\s5
\v 34 কিন্তু যাজকদের সংখ্যা কম হওয়ায় তাঁরা সব হোম উৎসর্গের পশুর চামড়া ছাড়াতে পারলেন না; ফলে কাজ শেষ না হওয়া অবধি এবং অন্য যাজকেরা শুচি না হওয়া অবধি তাঁদের লেবীয় ভাইয়েরা তাঁদের কাজে সাহায্য করল, কারণ নিজেদের শুচি করবার জন্য যাজকদের থেকেও লেবীয়েরা আরও বেশী যত্নবান ছিল।
\s5
\v 35 আর মঙ্গলের জন্য উৎসর্গের পশুর চর্বি পোড়ানো অনুষ্ঠান ও হোম উৎসর্গের অনুষ্ঠান এবং তার সঙ্গেকার নৈবেদ্য উৎসর্গের অনুষ্ঠান নিয়ে অনেকগুলো উৎসর্গের অনুষ্ঠান হল। এইভাবে সদাপ্রভুর ঘরের সেবার কাজ সুন্দর ভাবে করা হল।
\v 36 আর ঈশ্বর তাঁর লোকদের জন্য এই সব কাজ খুব তাড়াতাড়ি করেছিলেন বলে হিষ্কিয় ও তাঁর সবলোকেরা আনন্দ করলেন ।
\s5
\c 30
\p
\v 1 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিস্তারপর্ব পালন করবার জন্য লোকেরা যাতে যিরূশালেমে সদাপ্রভুর ঘরে আসে সেইজন্য হিষ্কিয় সমস্ত ইস্রায়েলে ও যিহূদায় খবর পাঠালেন এবং ইফ্রয়িম ও মনঃশি-গোষ্ঠীর লোকদের চিঠি লিখলেন।
\v 2 কারণ রাজা ও তাঁর কর্মচারীরা এবং যিরূশালেমের সমস্ত লোক ঠিক করল যে, দ্বিতীয় মাসে নিস্তারপর্ব পালন করা হবে।
\v 3 এর কারণ হল, অনেক যাজক নিজেদের শুচি করেন নি আর লোকেরাও এসে যিরূশালেমে জড়ো হয়নি বলে নিয়মিত সময়ে তারা এটা পালন করতে পারে নি।
\s5
\v 4 এই পরিকল্পনা রাজা ও সমস্ত জনতার কাছে উপযুক্ত বলে মনে হল।
\v 5 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিস্তারপর্ব পালন করবার জন্য যাতে সবাই যিরূশালেমে আসে সেইজন্য তারা বের্‌-শেবা থেকে দান পর্যন্ত ইস্রায়েলের সমস্ত জায়গায় লোক পাঠিয়ে ঘোষণা করল। অনেক বছর ধরে তারা নিয়ম অনুসারে অনেক লোক একত্র হয়ে এই পর্ব পালন করে নি।
\s5
\v 6 রাজার আদেশে রাজা ও তাঁর কর্মচারীদের কাছ থেকে চিঠি নিয়ে লোকেরা ইস্রায়েল ও যিহূদার সব জায়গায় গিয়ে এই কথা ঘোষণা করল, “হে ইস্রায়েলীয়েরা, আপনারা অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে ফিরে আসুন, তাতে যাঁরা আসিরিয়ার রাজার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন তাঁদের কাছে, অর্থাৎ তোমাদের কাছে তিনিও ফিরে আসবেন।
\s5
\v 7 তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষ ও ভাইদের মত হয়ো না। কারণ নিজের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েছিল বলে তিনি তাদের ভীষণ শাস্তি দিয়েছিলেন। তোমরা যেমন দেখতে পাচ্ছ।
\v 8 “তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের মত অবাধ্য হয়ো না কিন্তু সদাপ্রভুর হাতে নিজেদের দিয়ে দাও এবং তাঁর পবিত্র জায়গা এস, যে পবিত্র ঘরকে তিনি চিরকালের জন্য নিজের উদ্দেশ্যে আলাদা করেছেন এবং তোমাদের নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা কর যাতে তোমাদের উপর থেকে তাঁর সেই ভয়ংকর ক্রোধ চলে যায়।
\v 9 কারণ তোমরা যদি সদাপ্রভুর কাছে আবার ফিরে আস তবে তোমাদের ভাই ও ছেলেমেয়েদের যারা বন্দী করে রেখেছে তারা তাদের প্রতি দয়া দেখাবে। তখন তারা এই দেশে ফিরে আসতে পারবে, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু দয়াময় ও করুণাময়। তোমরা যদি তাঁর কাছে ফিরে আসো তাহলে তিনি তাঁর মুখ ফিরিয়ে রাখবেন না।”
\s5
\v 10 সংবাদ বহনকারীরা ইফ্রয়িম ও মনঃশির সমস্ত গ্রাম ও শহরে এবং সবূলূন পর্যন্ত গেল, কিন্তু সেখানকার লোকেরা তাদের প্রতি ঠাট্টা ও বিদ্রূপ করতে লাগল।
\v 11 তবুও আশের, মনঃশি ও সবূলূন গোষ্ঠীর কিছু লোক নিজেদের নম্র করে যিরূশালেমে এলো।
\v 12 ঈশ্বরের হাত যিহূদার লোকদের উপরে আসলো, তাই সদাপ্রভুর বাক্য অনুযায়ী রাজা ও তাঁর কর্মচারীদের আদেশ পালন করবার জন্য তিনি তাদের মন এক করলেন।
\s5
\v 13 দ্বিতীয় মাসে খামির বিহীন রুটির পর্ব পালন করবার জন্য অনেক লোক, এক মহাজনতা যিরূশালেমে জড়ো হল।
\v 14 আর পূজা করবার জন্য পশু উৎসর্গের যে সব বেদী এবং যে সব ধূপদানী যিরূশালেমে ছিল তারা সেগুলো নিয়ে কিদ্রোণ উপত্যকায় ফেলে দিল।
\v 15 তারা দ্বিতীয় মাসের চৌদ্দ দিনের দিন নিস্তারপর্বের ভেড়ার বাচ্চা বলি দিল। এতে যাজক ও লেবীয়েরা লজ্জা পেয়ে নিজেদের শুচি করলেন এবং সদাপ্রভুর ঘরে হোম বলির জিনিস নিয়ে আসলেন।
\s5
\v 16 তারপর ঈশ্বরের লোক মোশির ব্যবস্থা অনুযায়ী তাঁরা তাঁদের নির্দিষ্ট জায়গা গিয়ে দাঁড়ালেন। যাজকেরা লেবীয়দের হাত থেকে যে রক্ত পেয়েছিল তা নিয়ে ছিটিয়ে দিলেন।
\v 17 কারণ লোকদের মধ্যে অনেকে নিজেদের শুচি করেনি এমন লোক ছিল। সেইজন্য সব লোকদের হয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করবার জন্য নিস্তার পর্বের মেষের বাচ্চা লেবীয়দেরই বলি দিতে হয়েছিল।
\s5
\v 18 কারণ ইফ্রয়িম, মনঃশি, ইষাখর ও সবূলূন গোষ্ঠীর থেকে আসা অনেক লোক আবার নিজেদের শুচি করেনি, তবুও তারা নিয়মের বিরুদ্ধে নিস্তার পর্বের ভোজ খেয়েছিল। কিন্তু হিষ্কিয় তাদের জন্য প্রার্থনা করে বললেন, “মঙ্গলময় ঈশ্বর যেন সবাইকে ক্ষমা করেন
\v 19 যদিও উপাসনা ঘরের ব্যবস্থা অনুযায়ী তারা শুচি হয় নি তবুও যারা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ইচ্ছামত চলবার জন্য নিজেদের হৃদয় স্থির করেছে মঙ্গলময় ঈশ্বর সদাপ্রভু যেন তাদের ক্ষমা করেন।”
\v 20 সুতরাং সদাপ্রভু হিষ্কিয়ের প্রার্থনা শুনে লোকদের সুস্থ করলেন।
\s5
\v 21 এইভাবে যে সব ইস্রায়েলীয় যিরূশালেমে উপস্থিত হয়েছিল তারা খুব আনন্দের সঙ্গে সাত দিন ধরে খামির বিহীন রুটির পর্ব পালন করল; আর এদিকে লেবীয় ও যাজকেরা প্রতিদিন সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে বাজনা বাজিয়ে প্রশংসা গান করলেন।
\v 22 সদাপ্রভুর সেবাকাজে যে সব লেবীয়েরা দক্ষ ছিল হিষ্কিয় তাদের উৎসাহমূলক কথা বললেন। এইভাবে তারা মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গের অনুষ্ঠান করে সাত দিন ধরে খাওয়া দাওয়া করল এবং তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব করল।
\s5
\v 23 তারপর সভার সমস্ত লোক আরও সাত দিন সেই পর্ব পালন করবে বলে ঠিক করল; এবং আরও সাত দিন তারা আনন্দের সঙ্গে সেই পর্ব পালন করল।
\v 24 পরে যিহূদার রাজা হিষ্কিয় সভার সমস্ত লোকের উপহারের জন্য এক হাজার ষাঁড় ও সাত হাজার মেষ দিলেন আর উঁচু পদের কর্মচারীরা দিলেন এক হাজার ষাঁড় ও দশ হাজার ভেড়া । আর যাজকদের মধ্যে অনেকে নিজেদের শুচি করলেন।
\s5
\v 25 যিহূদার সব সমাজের লোকেরা, যাজকেরা, লেবীয়েরা, ইস্রায়েল থেকে আসা সব লোকেরা এবং ইস্রায়েল ও যিহূদায় বাসকারী যে বিদেশীরা এসেছিল তারা সবাই আনন্দ করল।
\v 26 এইভাবে যিরূশালেমে খুব আনন্দ হল; ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদের ছেলে শলোমনের পরে যিরূশালেমে আর এইভাবে পর্ব পালন করা হয় নি।
\v 27 পরে যে লেবীয়েরা যাজক ছিলেন তাঁরা দাঁড়িয়ে লোকদের আশীর্বাদ করলেন, আর তাঁদের প্রার্থনা শুনা গেল, কারণ তাঁদের প্রার্থনা স্বর্গে তাঁর পবিত্র জায়গা পৌঁছেছিল।
\s5
\c 31
\p
\v 1 পর্বের সব কিছু শেষ হবার পরে সেখানে উপস্থিত ইস্রায়েলীয়েরা বের হয়ে যিহূদার শহরগুলোতে গিয়ে পূজার পাথরগুলো, আশেরা মূর্তিগুলো, পূজার উঁচু জায়গা ও বেদীগুলো একেবারে ধ্বংস করে দিল। তারা যিহূদা, বিন্যামীন, ইফ্রয়িম ও মনঃশি-গোষ্ঠীর সমস্ত এলাকায় একই কাজ করল যতক্ষণ না তারা এই সব ধ্বংস করলো। পরে ইস্রায়েলীয়েরা গ্রামে ও শহরে নিজের নিজের জায়গায় ফিরে গেল।
\s5
\v 2 আর হিস্কীয় উপাসনার জন্য হোম উৎসর্গ ও মঙ্গলের জন্য উৎসর্গের অনুষ্ঠান করবার জন্য, সেবা কাজের জন্য এবং ঈশ্বরের ঘরে ধন্যবাদ ও প্রশংসা গান করবার জন্য হিষ্কিয় যাজক ও লেবীয়দের প্রত্যেকের কাজ অনুসারে তাদের বিভিন্ন দলকে নিযুক্ত করলেন।
\v 3 সদাপ্রভুর ব্যবস্থায় যেমন লেখা আছে সেইমত সকাল ও সন্ধ্যার হোম উৎসর্গের জন্য এবং বিশ্রামবার, অমাবস্যা এবং নির্দিষ্ট পর্বের সময়কার হোম উৎসর্গের জন্য রাজা তাঁর নিজের সম্পত্তি থেকে দান করলেন।
\s5
\v 4 যাজক ও লেবীয়েরা যাতে সদাপ্রভুর ব্যবস্থা পালন করবার ব্যাপারে নিজেদের সম্পূর্ণভাবে মনোযোগী হতে পারেন সেইজন্য তাঁদের পাওনা অংশ দিতে তিনি যিরূশালেমে বসবাসকারী লোকদের আদেশ দিলেন।
\v 5 এই আদেশ বের হবার সঙ্গে সঙ্গে ইস্রায়েলীয়েরা তাদের ফসল, নতুন আংগুর রস, তেল ও মধুর প্রথম অংশ এবং ক্ষেতে আর যা কিছু জন্মায় তারও প্রথম অংশ প্রচুর পরিমাণে দান করল। এছাড়া তারা সব কিছুর দশ ভাগের একভাগ আনল এবং তা পরিমাণে অনেক হল।
\s5
\v 6 ইস্রায়েল ও যিহূদার যে সব লোক যিহূদার গ্রাম ও শহরগুলোতে বাস করত তারাও তাদের গরু, মেষ ও ছাগলের দশ ভাগের এক ভাগ আনল এবং তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে আলাদা করে রাখা জিনিসের দশ ভাগের একভাগ এনে কতগুলো স্তূপ করল।
\v 7 তৃতীয় মাসে এই স্তূপ করতে শুরু করে তারা সপ্তম মাসে শেষ করল।
\v 8 হিষ্কিয় ও তাঁর নেতাবর্গ এসে সেই স্তূপগুলো দেখে সদাপ্রভুর গৌরব করলেন এবং তাঁর লোকেরা ইস্রায়েলীয়দের প্রশংসা করলেন।
\s5
\v 9 হিষ্কিয় সেই স্তূপগুলোর বিষয়ে যাজক এবং লেবীয়দের জিজ্ঞাসা করলেন।
\v 10 এতে সাদোকের বংশের অসরিয় নামে প্রধান যাজক উত্তর করে বললেন, “সদাপ্রভুর ঘরের জন্য লোকেরা যখন তাদের দান আনতে শুরু করল তখন থেকে আমরা যেমন যথেষ্ট খাবার খেয়েছি তেমনি বাড়তিও রয়েছে প্রচুর, কারণ সদাপ্রভু তাঁর লোকদের আশীর্বাদ করেছেন, তাই এই সমস্ত জিনিস প্রচুর বেঁচে গেছে।”
\v 11 পরে তখন হিষ্কিয় সদাপ্রভুর ঘরে কতগুলো ভাণ্ডার ঘর তৈরী করবার আদেশ দিলেন এবং সেগুলো তারা তৈরী করল।
\v 12 তারপর লোকেরা উপহার, সব জিনিসের দশ ভাগের এক ভাগ ও সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে আলাদা করে রাখা জিনিস বিশ্বস্তভাবে ভাণ্ডার ঘরে আনল। কনানিয় নামে একজন লেবীয় লোক তাদের উপরে ছিল এই সব জিনিসের দেখাশোনার ভার ও পরিচারক ছিল আর তাঁর ভাই শিমিয়ি তাঁর সাহায্যকারী পরিচারক ছিল।
\v 13 কনানিয় এবং তাঁর ভাই শিমিয়ির অধীনে রাজা হিষ্কিয় ও সদাপ্রভুর ঘরের প্রধান কর্মচারী অসরিয়ের আদেশে যিহীয়েল, অসসিয়, নহৎ, অসাহেল, যিরীমোৎ, যোষাবদ, ইলীয়েল, যিস্মখিয়, মাহৎ ও বনায় তদারক করবার ভার পেল।
\s5
\v 14 লোকদের নিজেদের ইচ্ছায় দেওয়া উৎসর্গের জিনিসের ভার ছিল পূর্ব দিকের দরজার রক্ষী লেবীয় যিম্নার ছেলে কোরির উপরে। সদাপ্রভুকে দেওয়া সব উপহার ও মহাপবিত্র জিনিস ভাগ বা বন্টন করে দেবার ভারও তাঁর উপর ছিল।
\v 15 যাজকদের শহর গুলোতে তাঁদের বিভিন্ন দল অনুসারে বয়সে ছোট বা বড় ভাই, দরকারী ও অদরকারী উভয়ই তাঁদের সংগী যাজকদের ঠিকভাবে ভাগ করে দেবার জন্য কোরির অধীনে এদন, বিন্যামীন, যেশূয়, শময়িয়, অমরিয় ও শখনিয় বিশ্বস্তভাবে কাজ করতেন।
\s5
\v 16 এছাড়া বিভিন্ন দল অনুসারে যে সব যাজকেরা নিজেদের প্রতিদিনের কর্তব্য পালন করবার জন্য সদাপ্রভুর ঘরে ঢুকতেন তাদের নিজেদের সেবা কাজের জন্য। এঁরা ছিলেন তিন বছর ও তার বেশী বয়সের পুরুষ যাঁদের নাম যাজকদের বংশ তালিকায় লেখা ছিল।
\s5
\v 17 বংশ তালিকায় যাজকদের নাম পিতৃপুরুষদের বংশ অনুসারে লেখা হয়েছিল এবং কুড়ি বছর ও তার বেশী বয়সের লেবীয়দের নাম দায়িত্ব ও বিভিন্ন দলের ভাগ অনুযায়ী লেখা হয়েছিল।
\v 18 এছাড়া তাঁদের স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েদের, অর্থাৎ গোটা সমাজের নাম বংশ তালিকা করা হয়েছিল, কারণ যাজক ও লেবীয়েরা বিশ্বস্তভাবে ঈশ্বরের কাজ অনুযায়ী পবিত্রতায় নিজেদের আলাদা করেছিলেন।
\v 19 কারণ যে যাজকেরা, অর্থাৎ হারোণের যে বংশধরেরা তাঁদের শহরের ও গ্রামের চারি পাশের ক্ষেতের জমিতে বাস করতেন তাঁদের খাবারের ভাগ দেবার জন্য প্রত্যেক শহরে কয়েকজন লোকের নাম উল্লেখ করে নিযুক্ত করা হয়েছিল। তাঁরা প্রত্যেক যাজককে এবং বংশ তালিকায় লেখা প্রত্যেক লেবীয়কে খাবারের ভাগ দিতেন।
\s5
\v 20 হিষ্কিয় যিহূদার সব জায়গায় এই কাজ করলেন। তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল, ন্যায্য এবং সত্য তিনি তাই সব করলেন।
\v 21 ঈশ্বরের ইচ্ছামত চলবার জন্য ঈশ্বরের ঘরের কাজে, ব্যবস্থায় এবং আদেশ পালন করবার ব্যাপারে তিনি যে কাজই শুরু করলেন তা সমস্ত হৃদয় দিয়ে করলেন, আর সেইজন্য তিনি সফল হলেন।
\s5
\c 32
\s অশুরীয়দের পরাজয়।
\p
\v 1 এই সব কাজ বিশ্বস্তভাবে করবার পরে অশুর রাজা সনহেরীব এসে যিহূদা দেশে প্রবেশ করলেন এবং তিনি আক্রমণ করলেন। তিনি দেয়াল দিয়ে ঘেরা শহর ও গ্রামগুলো ঘেরাও করলেন, ভাবলেন সেগুলো নিজের জন্য জয় করে নেবেন।
\s5
\v 2 যখন হিষ্কিয় দেখলেন সন্‌হেরীব এসে গেছেন এবং যিরূশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য তিনি মন স্থির করেছেন।
\v 3 তখন তিনি তাঁর সেনাপতিদের ও যোদ্ধাদের সঙ্গে পরামর্শ করে শহরের বাইরের ফোয়ারাগুলোর জল বন্ধ করে দেবেন বলে ঠিক করলেন। এটি করার জন্য তাঁরা তাঁকে সাহায্য করলেন।
\v 4 সুতরাং অনেক লোক জড়ো হয়ে সমস্ত ফোয়ারা ও দেশের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া জলের স্রোত বন্ধ করে দিল। তারা বলল, “অশুর রাজারা এসে কেন এত জল পাবে?”
\s5
\v 5 হিষ্কিয় দেয়ালের সব ভাঙ্গা অংশগুলো এবং পাহারা দেওয়ার ঘরগুলোর মত উঁচু করে সারাই করে নিজেকে শক্তিশালী করলেন। এছাড়া সেই দেয়ালের বাইরে তিনি আর একটা দেয়াল তৈরী করলেন এবং দায়ূদ শহরের মিল্লো আরও মজবুত করলেন এবং তিনি অনেক অস্ত্রশস্ত্র ও ঢাল তৈরী করলেন।
\s5
\v 6 তিনি লোকদের উপরে সেনাপতিদের নিযুক্ত করলেন এবং শহরের দরজার বড় জায়গায় তাদের জড়ো করে এই কথা বলে উৎসাহ দিলেন,
\v 7 “আপনারা শক্তিশালী হন এবং সাহস করুন। অশুর রাজা ও তাঁর বিরাট সৈন্যদল দেখে আপনারা ভয় পাবেন না অথবা হতাশ হবেন না, কারণ তাঁর সঙ্গে যারা আছে তাদের চেয়েও যিনি আমাদের সঙ্গে আছেন তিনি আরও মহান।
\v 8 তাঁর সঙ্গে রয়েছে কেবল মানুষের শক্তি, কিন্তু আমাদের সাহায্য করতে ও আমাদের পক্ষে যুদ্ধ করতে আমাদের সঙ্গে রয়েছেন আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু।” লোকেরা যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের কথা শুনে তাঁর কথার উপর নির্ভর করে নিজেরা সান্তনা পেল।
\s5
\v 9 পরে অশুর রাজা সনহেরীব তাঁর সমস্ত সৈন্যদলের সঙ্গে লাখীশ ঘেরাও করলেন এবং তাঁর কয়েকজন লোককে তিনি যিরূশালেমে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের কাছে এবং সেখানে উপস্থিত যিহূদার সমস্ত লোকদের কাছে এই কথা বলে পাঠালেন,
\v 10 অশুর রাজা সনহেরীব এই কথা বলছেন, ‘তোমরা কিসের উপর নির্ভর করে আছ যার দরুনযে কারণে তোমরা ঘেরাও হলেও যিরূশালেমেই থাকবে?
\s5
\v 11 খিদে ও পিপাসায় যাতে তোমরা মর তাই হিষ্কিয় এই কথা বলে কি তোমাদের ভুলাচ্ছে না?, তখন সে বলেন আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুই অশুর রাজার হাত থেকে আমাদের উদ্ধার করবেন।
\v 12 এই হিষ্কিয় নিজেই কি তার উঁচু জায়গা আর বেদীগুলো ধ্বংস করে দেয় নি? যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের কি সে আদেশ দেয়নি যে, মাত্র একটি বেদীর সামনেই তাদের উপাসনা করতে হবে এবং তার উপরই ধূপ জ্বালাতে হবে?
\s5
\v 13 “ ‘অন্যান্য দেশের সব জাতিদের প্রতি আমি ও আমার পূর্বপুরুষেরা যা করেছি তা কি তোমরা জান না? সেই দেশের সব জাতির দেবতারা কি আমার হাত থেকে তাদের দেশ উদ্ধার করতে পেরেছে?
\v 14 যে জাতিগুলোকে আমার পূর্বপুরুষেরা ধ্বংস করে ফেলেছেন তাদের দেবতাদের মধ্যে কে আমার হাত থেকে তার লোকদের উদ্ধার করতে পেরেছিল? তাহলে কি সম্ভব যে তোমাদের ঈশ্বর আমার হাত থেকে তোমাদের উদ্ধার করবে?
\v 15 এখন এইরূপে তোমরা হিষ্কিয়কে তোমাদের প্রতি ছলনা করতে ও ভুলিয়ে রাখতে দিয়ো না। তোমরা তাকে বিশ্বাস কোরো না, কারণ কোনো জাতির বা কোনো রাজ্যের দেবতা আমার কিম্বা আমার পূর্বপুরুষদের হাত থেকে তার লোকদের উদ্ধার করতে পারেনি। তাহলে কতটা নিশ্চিত যে, তোমাদের দেবতারা আমার হাত থেকে তোমাদের উদ্ধার করবে?।’ ”
\s5
\v 16 সনহেরীবের লোকেরা ঈশ্বর সদাপ্রভু ও তাঁর দাস হিষ্কিয়ের বিরুদ্ধে আরও অনেক কথা বলল।
\v 17 এছাড়া সন্‌হেরীব ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে অপমান করবার জন্য চিঠিতে তাঁর বিরুদ্ধে এই কথা লিখলেন, “অন্যান্য দেশের জাতিদের দেবতারা যেমন আমার হাত থেকে তাদের লোকদের উদ্ধার করে নি, ঠিক সেইভাবে হিষ্কিয়ের ঈশ্বরও আমার হাত থেকে তার লোকদের উদ্ধার করবে না।”
\s5
\v 18 তাঁরা ইব্রীয় ভাষায় চিৎকার করে ঐ কথা বলতে লাগল, যাতে যিরূশালেমের যে লোকেরা দেয়ালের উপরে ছিল তারা ভীষণ ভয় পায় আর যাতে তারা শহরটা দখল করে নিতে পারে।
\v 19 তারা মানুষের হাতে তৈরী পৃথিবীর সব জাতির দেবতাদের সম্বন্ধে যা বলেছিল যিরূশালেমের ঈশ্বরের বিষয়েও তাই বলল।
\s5
\v 20 সেইজন্য রাজা হিষ্কিয় ও আমোসের ছেলে ভাববাদী যিশাইয় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে স্বর্গের ঈশ্বরের কাছে কান্নাকাটি করলেন।
\v 21 এতে সদাপ্রভু একজন স্বর্গদূতকে পাঠিয়ে দিলেন তিনি অশুর রাজার শিবিরের মধ্যে সমস্ত যোদ্ধা, নেতা ও সেনাপতিদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে ফেললেন। এতে সন্‌হেরীব লজ্জা পেয়ে নিজের দেশে ফিরে গেলেন। পরে তিনি তাঁর দেবতার মন্দিরে গেলে, তাঁর কয়েকজন ছেলে তাঁকে তরোয়াল দিয়ে মেরে ফেলল।
\s5
\v 22 এইভাবে সদাপ্রভু আসিরিয়ার রাজা সন্‌হেরীবের এবং অন্যান্য সকলের হাত থেকে হিষ্কিয়কে ও যিরূশালেমের বসবাসকারী লোকদের রক্ষা করলেনএবং তিনি সব দিক দিয়েই তাদের নিরাপদে রাখলেন।
\v 23 এর জন্য অনেকেই যিরূশালেমে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উপহার নিয়ে আসল এবং যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের জন্য দামী উপহার আনল। তাতে সেই সময় থেকে সমস্ত জাতির লোক তাঁকে খুব সম্মান ও উচ্চকৃত করতে লাগল।
\s হিষ্কিয়ের গর্ব, সফলতা ও মৃত্যু
\p
\s5
\v 24 সেই সময় হিষ্কিয় খুব অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হলেন। হিষ্কিয় সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, আর সদাপ্রভু উত্তর দিলেন এবং তাঁকে একটা আশ্চর্য চিহ্ন দিলেন যে তিনি সুস্থ হবেন।
\v 25 কিন্তু হিষ্কিয়ের হৃদয়ে গর্ব দেখা দিল। তাঁর প্রতি যে রকম আশীর্বাদ করা হয়েছিল সেই অনুসারে তিনি কাজ করলেন না; এতে তাঁর উপর এবং যিহূদা ও যিরূশালেমের উপর সদাপ্রভুর ক্রোধ নেমে আসলো।
\v 26 তখন হিষ্কিয় তাঁর নিজের হৃদয়ের গর্বের জন্য নিজেকে নত করলেন এবং যিরূশালেমের বসবাসকারী লোকেরাও তাই করল। সেইজন্য হিষ্কিয়ের সময়ে সদাপ্রভুর ক্রোধ তাদের উপর নেমে আসল না।
\s5
\v 27 হিষ্কিয়ের অনেক ধন সম্পদ ও সম্মান ছিল। তাঁর নিজের জন্য সোনা রূপা, মণি মুক্তা, সুগন্ধি মশলা, ঢাল ও সমস্ত রকম দামী জিনিসপত্র রাখবার জন্য তিনি ধনভাণ্ডার তৈরী করালেন।
\v 28 এছাড়া তিনি শস্য, নতুন আঙুর রস ও তেল রাখবার জন্য ভাণ্ডার ঘর তৈরী করালেন এবং বিভিন্ন রকম পশু, ছাগল ও ভেড়ার থাকবার ঘরও তৈরী করালেন।
\v 29 তিনি নিজের জন্য অনেক গ্রাম ও শহর গড়ে তুললেন। তাঁর গরু, ছাগল ও ভেড়ার সংখ্যা অনেক হল, কারণ ঈশ্বর তাঁকে অনেক ধন সম্পদ দিয়েছিলেন।
\s5
\v 30 এই হিষ্কিয় গীহোন ফোয়ারার উপরের মুখ বন্ধ করে দায়ূদ শহরের পশ্চিম দিক দিয়ে জল নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি তাঁর সকল কাজেই সফল হয়েছিলেন।
\v 31 দেশে যে আশ্চর্য চিহ্ন দেখানো হয়েছিল সেই বিষয় জিজ্ঞাসা করবার জন্য যখন বাবিলের নেতারা দূত পাঠিয়েছিলেন তখন ঈশ্বর তাঁকে পরীক্ষা করবার জন্য তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, যাতে তাঁর মনে কি আছে তা প্রকাশ পায়।
\s5
\v 32 হিষ্কিয়ের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা এবং তাঁর ঈশ্বরভক্তির কাজ সম্বন্ধে আমোসের ছেলে ভাববাদী যিশাইয়ের দর্শনের বইতে এবং “যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।
\v 33 পরে হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন এবং দায়ূদের বংশধরদের কবরের জায়গার উপরের জায়গায় তাঁকে কবর দেওয়া হল। তিনি মারা যাবার সময় যিহূদার সকলে এবং যিরূশালেমের লোকেরা তাঁকে সম্মান করলো। তাঁর ছেলে মনঃশি তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 33
\s মনঃশি ও আমোন রাজার বিবরণ।
\p
\v 1 মনঃশির বয়স বারো বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেছিলেন এবং যিরূশালেমে পঞ্চান্ন বছর ধরে রাজত্ব করেছিলেন।
\v 2 তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করতেন; সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের সামনে থেকে যে সব জাতিকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাদের মত জঘন্য কাজ করতেন।
\v 3 তাঁর বাবা হিষ্কিয় পূজার যে সব উঁচু জায়গা ধ্বংস করেছিলেন তিনি সেগুলো আবার তৈরী করালেন। এছাড়া তিনি বাল দেবতার উদ্দেশ্যে কতগুলো বেদী ও আশেরা মূর্তি তৈরী করলেন। তিনি আকাশের সব তারাগুলোর সামনে মাথা নত করে পূজা ও সেবা করলেন।
\s5
\v 4 যে ঘরের বিষয় সদাপ্রভু বলেছিলেন, “আমার নাম চিরকাল যিরূশালেমে থাকবে,” সদাপ্রভুর সেই ঘরের মধ্যে তিনি কতগুলো বেদী তৈরী করলেন।
\v 5 সদাপ্রভুর ঘরের দু’টা উঠানেই তিনি আকাশের সমস্ত তারাগুলোর উদ্দেশ্যে যজ্ঞবেদী তৈরী করলেন।
\v 6 বিন্‌-হিন্নোম উপত্যকায় তাঁর নিজের ছেলেদের তিনি আগুনে পুড়িয়ে উৎসর্গ করলেন। যারা গণনা করে ভবিষ্যতের কথা বলে, মায়াবিদ্যা ও যাদুবিদ্যা ব্যবহার করে এবং মৃতদের সঙ্গে কথা বলে আর মন্দ আত্মাদের সঙ্গে যারা কথা বলে তিনি তাদের সঙ্গে পরামর্শ করতেন। সদাপ্রভুর চোখে অনেক মন্দ কাজ করে তিনি তাঁকে অসন্তুষ্ট করেছেন।
\s5
\v 7 তিনি নিজে যে মূর্তিটি খোদাই করে তৈরী করেছিলেন সেটা নিয়ে ঈশ্বরের ঘরে রাখলেন। ঈশ্বর যে ঘর সম্পর্কে দায়ূদ ও তাঁর ছেলে শলোমনকে বলেছিলেন, “এই ঘর ও ইস্রায়েলের সমস্ত গোষ্ঠীর মধ্য থেকে আমার বেছে নেওয়া এই যিরূশালেমে আমি চিরকালের জন্য আমার নামের বসবাসের জায়গা করব।
\v 8 আমি ইস্রায়েলীয়দের যে সব আদেশ দিয়েছি, অর্থাৎ মোশির মধ্য দিয়ে যে সব ব্যবস্থা, নিয়ম ও নির্দেশ দিয়েছি যদি কেবল তারা যত্নের সঙ্গে তা পালন করে তবে যে দেশ আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছি সেখান থেকে তাদের আর দূর করে দেব না।”
\v 9 যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের মনঃশি বিপথে নিয়ে গেলেন; তার ফলে সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের সামনে থেকে যে সব জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন তাদের চেয়েও তারা আরও খারাপ কাজ করত।
\s5
\v 10 সদাপ্রভু মনঃশি ও তাঁর লোকদের কাছে কথা বলতেন কিন্তু তারা তাতে কান দিত না।
\v 11 কাজেই সদাপ্রভু তাদের বিরুদ্ধে অশুর রাজার সেনাপতিদের নিয়ে আসলেন। তারা মনঃশিকে বন্দী করে তাঁর হাতকড়ি পরিয়ে ব্রোঞ্জের শিকল দিয়ে বেঁধে তাঁকে বাবিলে নিয়ে গেল।
\s5
\v 12 যখন মনঃশি বিপদে পড়লেন, তিনি তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে দয়া ভিক্ষা করলেন এবং তাঁর পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের সামনে নিজেকে খুবই নত করলেন।
\v 13 এইভাবে তিনি প্রার্থনা করলে সদাপ্রভুর তাঁর প্রার্থনা গ্রাহ্য করলেন এবং তাঁর মিনতি শুনে তিনি তাঁকে যিরূশালেমে ও তাঁর রাজ্যে ফিরিয়ে আনলেন। তখন মনঃশি জানতে পারলেন যে, সদাপ্রভুই ঈশ্বর।
\s5
\v 14 পরে তিনি দায়ূদ শহরের বাইরের দেয়ালটা উপত্যকার মধ্যেকার গীহোন ফোয়ারা থেকে ওফল পাহাড় ঘিরে পশ্চিম দিকে মাছ দরজায় ঢুকবার পথ পর্যন্ত আরও উঁচু করে তৈরী করে শক্তিশালী করলেন। যিহূদার দেয়াল ঘেরা সমস্ত শহরগুলোতে তিনি সেনাপতিদের নিযুক্ত করলেন।
\v 15 তিনি সদাপ্রভুর ঘর থেকে বিজাতীয় দেবতাদের মূর্তিগুলোকে নিয়ে বাইরে ফেলে দিলেন। তিনি যিরূশালেমে এবং সদাপ্রভুর ঘরের পাহাড়ের উপরে যে সব বেদী তৈরী করেছিলেন সেগুলোও নিয়ে তিনি শহরের বাইরে ফেলে দিলেন।
\s5
\v 16 পরে তিনি সদাপ্রভুর বেদী পুনরায় ঠিক করলেন এবং তার উপরে মঙ্গলের জন্য বলি ও কৃতজ্ঞতা উৎসর্গের অনুষ্ঠান করলেন। তিনি যিহূদার লোকদের নির্দেশ দিলেন যেন তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা করে।
\v 17 অবশ্য লোকেরা তখনও পূজার উঁচু জায়গা গুলোতে যজ্ঞ করত, কিন্তু তারা শুধুমাত্র তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুরই উদ্দেশ্যেই করত।
\s5
\v 18 মনঃশির আরো অন্যান্য সব কাজের কথা, ঈশ্বরের কাছে তাঁর প্রার্থনা এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে দর্শকেরা তাঁকে যে কথা বলেছিল, দেখো, তা সবই “ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।
\v 19 তাঁর প্রার্থনার কথা, আর কেমন করে তাঁর মিনতি ঈশ্বরে গ্রাহ্য করলেন তার কথা, তাঁর সব পাপ ও অবিশ্বস্ততার কথা এবং তিনি নিজেকে ঈশ্বরের সামনে নত করবার আগে পূজার যে সব উঁচু জায়গা তৈরী করেছিলেন আর আশেরা মূর্তি ও খোদাই করা প্রতিমা স্থাপন করেছিলেন সেই সব কথা দর্শকদের বইয়ে লেখা আছে।
\v 20 পরে মনঃশি তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন। এবং তাঁর নিজের বাড়ীতেই তাঁকে লোকেরা কবর দিল। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে আমোন রাজা হলেন।
\s যিহূদার রাজা আমোন
\p
\s5
\v 21 আমোনের বয়স বাইশ বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেছিলেন এবং যিরূশালেমে দু’বছর কাল রাজত্ব করেছিলেন।
\v 22 তিনি তাঁর বাবা মনঃশির মতই তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তাই করতেন। মনঃশি যে সব প্রতিমা খোদাই করে তৈরী করেছিলেন আমোন তাদের পূজা করতেন ও তাদের কাছে পশু উৎসর্গ করতেন।
\v 23 আর তিনি তাঁর বাবা মনঃশির মত সদাপ্রভুর সামনে নিজেকে নত করেন নি; পরিবর্তে, তিনি পাপ করতেই থাকলেন।
\s5
\v 24 আমোনের দাসেরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাঁর নিজের বাড়ীতেই তাঁকে খুন করল।
\v 25 কিন্তু যারা রাজা আমোনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল দেশের লোকেরা তাদের সবাইকে মেরে ফেলল এবং তারা তাঁর ছেলে যোশিয়কে তাঁর জায়গায় রাজা করল।
\s5
\c 34
\s যোশিয় রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 যোশিয়ের বয়স আট বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেন এবং তিনি একত্রিশ বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন।
\v 2 সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু ভাল তিনি তাই করতেন এবং তাঁর নিজের পূর্বপুরুষ দায়ূদের পথে চলতেন; সেই পথ থেকে ডানদিকে বা বাঁদিকে যেতেন না।
\v 3 তাঁর রাজত্বের অষ্টম বছরে তাঁর বয়স কম থাকলেও তিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের ঈশ্বরের ইচ্ছামত চলবার জন্য মন স্থির করলেন। রাজত্বের বারো বছরের সময় তিনি পূজার সব উঁচু জায়গা , আশেরা মূর্তি, খোদাই করা প্রতিমা ও ছাঁচে ঢালা মূর্তি যিহূদা ও যিরূশালেম থেকে পরিষ্কার করতে লাগলেন।
\s5
\v 4 তাঁর উপস্থিতে লোকেরা বাল দেবতার বেদীগুলো ভেঙ্গে ফেলল; সেগুলোর উপরে যে সব ধূপদানী ছিল সেগুলো কেটে টুকরা টুকরা করল এবং আশেরা খুঁটি, খোদাই করা প্রতিমা ও ছাঁচে ঢালা মূর্তিগুলো ভেঙ্গে ধুলোয় পরিনত করল। যারা সেগুলোর কাছে পশু বলি দিত তাদের কবরের উপরে সেই ধুলাগুলি ছড়িয়ে দিল।
\v 5 তিনি বেদীগুলোর উপরে যাজকদের হাড় পোড়ালেন। এইভাবে তিনি যিহূদা ও যিরূশালেমকে শুচি করলেন।
\s5
\v 6 আর মনঃশি, ইফ্রয়িম ও শিমিয়োন এলাকার গ্রাম ও শহরগুলোতে এবং তার আশেপাশের ধ্বংসের জায়গা গুলোর মধ্যে, এমন কি, নপ্তালি এলাকা পর্যন্ত সব জায়গায় এইরকম করলেন।
\v 7 তিনি সমস্ত বেদী ও আশেরা খুঁটি ভেঙ্গে ফেললেন এবং খোদাই করা প্রতিমাগুলো ভেঙ্গে গুঁড়ো করে ফেললেন আর ইস্রায়েলের সমস্ত জায়গায় তিনি সব ধূপদানী কেটে টুকরা টুকরা করলেন। তারপর তিনি যিরূশালেমে ফিরে আসলেন।
\s5
\v 8 যোশিয়ের রাজত্বের আঠারো বছরের সময়ে তিনি দেশ ও উপাসনা ঘর শুচি করবার পর তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘর সারাই করবার জন্য অৎসলিয়ের ছেলে শাফনকে, শহরের শাসনকর্তা মাসেয়কে ও যোয়াহসের ছেলে যোয়াহকে যিনি ইতিহাস লেখক এদেরকে পাঠিয়ে দিলেন।
\v 9 তাঁরা মহাযাজক হিল্কিয়ের কাছে গেলেন এবং ঈশ্বরের ঘরে যে সব রুপো আনা হয়েছিল, অর্থাৎ যে সব রুপো রক্ষী লেবীয়েরা, মনঃশি ও ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর লোকদের এবং ইস্রায়েলের বাকী সমস্ত লোকদের কাছ থেকে এবং যিহূদা ও বিন্যামীন গোষ্ঠীর সমস্ত লোকদের ও যিরূশালেমের বাসিন্দাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিল তা মহাযাজকের কাছে রেখে দিলেন।
\s5
\v 10 তারপর সেই টাকা সদাপ্রভুর ঘরের কাজের দেখাশুনা করবার জন্য যে লোকদের নিযুক্ত করা হয়েছিল তাদের হাতে দেওয়া হয়েছিল। তদারককারীরা উপাসনা ঘরটি সারাই ও আবার ঠিকঠাক করবার জন্য মিস্ত্রিদের সেই টাকা দিল,
\v 11 অর্থাৎ যিহূদার রাজারা যেসব ঘরগুলো ধ্বংস করেছিলেন সেগুলোর জন্য তারা ছুতার মিস্ত্রি ও রাজমিস্ত্রিদের টাকা দিল যাতে তারা সুন্দর করে কাটা পাথর এবং ঘর সারাই করার জন্য ও কড়িকাঠের জন্য কাঠ কিনতে পারে।
\s5
\v 12 সেই মিস্ত্রিরা বিশ্বস্তভাবে কাজ করেছিল। তাদের তদারক করবার জন্য তাদের উপরে ছিল যহৎ ও ওবদিয় নামে মরারি বংশের দু’জন লেবীয় এবং কহাৎ বংশের সখরিয় ও মশুল্লম আর যে লেবীয়েরা ভাল বাজনা বাজাতে পারত তারা সকলে মিস্ত্রিদের পরিচালনা করেছিল।
\v 13 এরা বাড়ি তৈরির জিনিসপত্র বইবার লোকদের উপর নিযুক্ত ছিল এবং বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত কাজের লোকদের সকলের দেখাশুনা করত। লেবীয়দের মধ্যে কেউ কেউ ছিল লেখক, কর্মকর্তা ও রক্ষী।
\s5
\v 14 তাঁরা যখন সদাপ্রভুর ঘরে আনা টাকা বের করে আনছিলেন তখন যাজক হিল্কিয় মোশির দ্বারা দেওয়া সদাপ্রভুর ব্যবস্থার বইটি পেলেন।
\v 15 হিল্কিয় তখন রাজার লেখক শাফনকে বললেন, “সদাপ্রভুর ঘরে আমি এই ব্যবস্থার বইটি পেয়েছি।” এই বলে তিনি শাফনকে সেই বইটি দিলেন।
\v 16 শাফন সেই বইটি রাজার কাছে নিয়ে গিয়ে তাঁকে বললেন, “আপনার কর্মচারীদের উপর যে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁরা তা সবই করছেন।
\s5
\v 17 সদাপ্রভুর ঘরে যে টাকা পাওয়া গিয়েছিল তাঁরা তা বের করে তদারককারী ও কাজের লোকদের দিয়েছেন।”
\v 18 তখন লেখক শাফন রাজাকে জানালেন, “যাজক হিল্কিয় আমাকে একটি বই দিয়েছেন।” এই বলে শাফন তা রাজাকে পড়ে শোনালেন।
\v 19 রাজা ব্যবস্থার কথাগুলো যখন শুনলেন, তখন তিনি নিজের পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন।
\s5
\v 20 তিনি হিল্কিয়, শাফনের ছেলে অহীকাম, মীখায়ের ছেলে অব্দোন, শাফন ও রাজার সাহায্যকারী অসায়কে এই আদেশ দিলেন এবং বললেন,
\v 21 আপনারা যান, “যে বইটি পাওয়া গেছে তার মধ্যে কি লেখা রয়েছে তা আপনারা গিয়ে আমার এবং ইস্রায়েল ও যিহূদার বাকী লোকদের জন্য সদাপ্রভুকে জিজ্ঞাসা করুন। আমাদের পূর্বপুরুষেরা সদাপ্রভুর বাক্য পালন করেন নি এবং এই বইয়ে যা লেখা আছে সেই অনুসারে কাজ করেন নি বলে সদাপ্রভুর ভীষণ ক্রোধ আমাদের উপরে পড়েছে।”
\s5
\v 22 তখন হিল্কিয় এবং রাজা যাদের হিল্কিয়ের সঙ্গে পাঠিয়েছিলেন তাঁরা এই বিষয়ে কথা বলবার জন্য মহিলা ভাববাদীনী হুল্‌দার কাছে গেলেন। হুল্‌দা ছিলেন কাপড় চোপড় রক্ষাকারী শল্লুমের স্ত্রী। শল্লুম ছিলেন হস্রহের নাতি, অর্থাৎ তোখতের ছেলে। তিনি যিরূশালেমের দ্বিতীয় অংশে বাস করতেন।
\s5
\v 23 হুল্‌দা তাঁদের বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাকে বলতে বললেন যে, আমার কাছে যিনি আপনাদের পাঠিয়েছেন তাঁকে গিয়ে বলুন,
\v 24 “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু বলেছেন: দেখো, যিহূদার রাজার সামনে সেই বইয়ে লেখা যে সব অভিশাপের কথা পড়া হয়েছে সেই সব বিপদ আমি এই জায়গা ও সেখানে বসবাসকারী লোকদের উপরে আনব।
\v 25 কারণ তারা আমাকে ত্যাগ করেছে এবং অন্য দেব দেবতাদের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালিয়েছে এবং তাদের হাতের তৈরী সমস্ত প্রতিমার দ্বারা আমাকে অসন্তুষ্ট করেছে। সেইজন্য এই জায়গার উপর আমার ক্রোধ আমি ঢেলে দেব এবং ক্রোধের সেই আগুন নিভানো যাবে না।”
\s5
\v 26 সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করবার জন্য যিনি আপনাদের পাঠিয়েছেন সেই যিহূদার রাজাকে বলবেন যে, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই বলছেন: যে বাক্য সম্পর্কে যে আপনারা শুনেছেন:
\v 27 কারণ ‘এই জায়গা ও সেখানে বসবাসকারী লোকদের বিরুদ্ধে আমি যা বলেছি তা শুনে তোমার হৃদয় তাতে উত্তর দিয়েছে এবং আমার সামনে তুমি নিজেকে নত করেছ ও তোমার পোশাক ছিঁড়ে আমার কাছে কান্নাকাটি করেছ। তুমি এই সব করেছ বলে আমি সদাপ্রভু তোমার প্রার্থনা শুনেছি। এটি হল সদাপ্রভুর ঘোষণা।
\v 28 দেখো, আমি শীঘ্রই তোমাকে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে নিয়ে যাব এবং তুমি শান্তিতে কবর পাবে। এই জায়গার উপরে এবং যারা এখানে বাস করে তাদের উপরে আমি যে সব বিপদ নিয়ে আসব তোমার চোখ তা দেখবে না।’” তাঁরা হুল্‌দার এর উত্তর নিয়ে রাজার কাছে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 29 তখন রাজা বার্তাবাহক পাঠিয়ে যিহূদা ও যিরূশালেমের সমস্ত প্রাচীনদের ডেকে একত্র করলেন।
\v 30 তিনি যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের, যাজক ও লেবীয়দের এবং সাধারণ ও গণ্যমান্য সমস্ত লোকদের নিয়ে সদাপ্রভুর ঘরে গেলেন। সদাপ্রভুর ঘরে ব্যবস্থার যে বইটি পাওয়া গিয়েছিল তার সমস্ত কথা তিনি তাদের কাছে পড়ে শোনালেন।
\s5
\v 31 রাজা তাঁর নিজের জায়গায় দাঁড়ালেন এবং সদাপ্রভুর পথে চলবার জন্য এবং সমস্ত মন ও প্রাণ দিয়ে তাঁর সব আদেশ, নিয়ম ও নির্দেশ মেনে চলবার জন্য, অর্থাৎ এই বইয়ের মধ্যে লেখা ব্যবস্থার সমস্ত কথা পালন করবার জন্য সদাপ্রভুর সামনে প্রতিজ্ঞা করলেন।
\v 32 তারপর তিনি যিরূশালেম ও বিন্যামীনের উপস্থিত সমস্ত লোককে সেই একই প্রতিজ্ঞা করালেন। যিরূশালেমের লোকেরা ঈশ্বরের, তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করতে শুরু করল।
\s5
\v 33 যোশিয় ইস্রায়েলীয় লোকদের অধিকারে থাকা সমস্ত দেশ থেকে সব জঘন্য প্রতিমা দূর করে দিলেন এবং ইস্রায়েলে উপস্থিত সকলকে দিয়ে তিনি তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা করালেন। যতদিন তিনি বেঁচে ছিলেন ততদিন লোকেরা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর পথে চলেছিল।
\s5
\c 35
\p
\v 1 পরে যোশিয় যিরূশালেমে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিস্তারপর্ব পালন করলেন। এবং প্রথম মাসের চৌদ্দ দিনের দিন লোকেরা নিস্তারপর্বের মেষ বলি দিল।
\v 2 তিনি যাজকদের তাঁদের কাজে নিযুক্ত করলেন এবং সদাপ্রভুর ঘরের সেবা কাজে তাঁদের উৎসাহ করলেন।
\s5
\v 3 যে লেবীয়েরা, যাঁরা সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের শিক্ষা দিতেন এবং সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যাঁদের আলাদা করা হয়েছিল তাঁদের তিনি বললেন, “ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদের ছেলে শলোমন যে ঘর তৈরী করিয়েছিলেন সেখানে আপনারা পবিত্র সিন্দুকটি রাখুন। এটা আর আপনাদের কাঁধে করে বহন করতে হবে না। এখন আপনারা আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ও তাঁর লোক ইস্রায়েলীয়দের সেবা করুন।
\v 4 ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদ ও তাঁর ছেলে শলোমনের লেখা নির্দেশ মত, আপনাদের নিজের নিজের বংশ অনুসারে নির্দিষ্ট দলে সেবা কাজের জন্য আপনারা নিজেদের প্রস্তুত করুন।
\s5
\v 5 তোমাদের ভাইদের অর্থাৎ প্রজাদের পিতৃপুরুষদের প্রত্যেকটি ভাগের জন্য কয়েকজন লেবীয়কে তাঁদের বংশ অনুসারে সেই ভাগের লোকদের সঙ্গে নিয়ে পবিত্র ঘরের উঠানে গিয়ে দাঁড়ান।
\v 6 আপনারা নিস্তারপর্বের মেষগুলো বলি দেবেন বলে নিজেদের শুচি করুন এবং মোশির মধ্য দিয়ে দেওয়া সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে নিজেদের ভাইয়েরা যাতে নিস্তারপর্ব পালন করতে পারে তার ব্যবস্থা করুন।”
\s5
\v 7 তারপর যোশিয় সেখানে উপস্থিত সমস্ত লোকদের জন্য নিস্তারপর্বের উৎসর্গের উদ্দেশ্যে ত্রিশ হাজার ছাগল ও মেষ বাচ্চা এবং তিন হাজার ষাঁড় দিলেন। এবং এগুলো সবই রাজার নিজের সম্পত্তি থেকে দেওয়া হল।
\v 8 তাঁর কর্মচারীরাও নিজের ইচ্ছায় লোকদের, যাজকদের ও লেবীয়দের দান করলেন। হিল্কিয়, সখরিয় ও যিহীয়েল নামে ঈশ্বরের ঘরের নেতারা নিস্তারপর্বের উৎসর্গের জন্য দু’হাজার ছ’শো ছাগল ও ভেড়া এবং তিনশো ষাঁড় যাজকদের দিলেন।
\v 9 কনানিয় এবং তার ভাইয়ের শময়িয় ও নথনেল, হশবিয়, যীয়ীয়েল ও যোষাবদ লেবীয়দের এই নেতারা নিস্তারপর্বের উৎসর্গের জন্য পাঁচ হাজার ছাগল ও মেষ এবং পাঁচশো ষাঁড় লেবীয়দের দিলেন।
\s5
\v 10 এইভাবে সেবা কাজের আয়োজন করা হল এবং রাজার আদেশ মত যাজকেরা নিজের নিজের জায়গায় আর লেবীয়েরা তাদের বিভিন্ন দল অনুযায়ী দাঁড়ালেন।
\v 11 লেবীয়েরা নিস্তারপর্বের ছাগল ও মেষ বলি করল এবং যাজকেরা তাদের হাত থেকে রক্ত নিয়ে তা ছিটিয়ে দিলেন, আর লেবীয়েরা পশুগুলোর চামড়া ছাড়াল।
\v 12 মোশির বইয়ে লেখা আদেশ অনুযায়ী সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করবার জন্য তারা প্রত্যেক বংশের বিভিন্ন ভাগের লোকদের দেবার জন্য পোড়ানো উৎসর্গের জিনিস সরিয়ে রাখল। ষাঁড়ের বেলায়ও তারা তাই করল।
\s5
\v 13 নিয়ম অনুসারে তারা নিস্তারপর্বের মেষগুলি আগুনে ঝল্‌সে নিল এবং বলির মাংস ডেকচি, কড়াই ও হাঁড়িতে সিদ্ধ করল আর তাড়াতাড়ি করে লোকদের খেতে দিল।
\v 14 তারপর তারা নিজেদের ও যাজকদের জন্য আয়োজন করল, কারণ যাজকেরা, অর্থাৎ হারোণের বংশধরেরা উৎসর্গের জিনিস ও চর্বির অংশ পোড়ানোর জন্য রাত পর্যন্ত ব্যস্ত ছিল। সেইজন্য লেবীয়েরা নিজেদের ও হারোণ-বংশের যাজকদের জন্য ব্যবস্থা করল।
\s5
\v 15 দায়ূদ, আসফ, হেমন এদের ও রাজার দর্শক যিদূথূনের নির্দেশ অনুসারে আসফের বংশের গায়ক ও বাদকেরা নিজের নিজের জায়গায় ছিলেন। প্রত্যেকটি প্রবেশ দরজায় রক্ষী ছিল। তাদের কাজ ছেড়ে আসবার দরকার হয় নি, কারণ তাদের লেবীয় ভাইয়েরা তাদের জন্য আয়োজন করেছিল।
\s5
\v 16 এইভাবে রাজা যোশিয়ের আদেশ মত নিস্তারপর্ব পালনের জন্য এবং সদাপ্রভুর বেদীর উপরে হোমের অনুষ্ঠান করবার জন্য সেই দিন সদাপ্রভুর সমস্ত সেবা কাজের আয়োজন করা হল।
\v 17 যে সব ইস্রায়েলীয় উপস্থিত ছিল তারা সেই সময় নিস্তারপর্ব এবং সাত দিন ধরে খামির বিহীন রুটির পর্ব পালন করল।
\s5
\v 18 ভাববাদী শমূয়েলের পর থেকে আর কখনও ইস্রায়েলে এইভাবে নিস্তারপর্ব পালন করা হয়নি। যাজক, লেবীয় এবং যিরূশালেমের লোকদের সঙ্গে উপস্থিত যিহূদা ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের নিয়ে যোশিয় যেভাবে নিস্তারপর্ব পালন করেছিলেন ইস্রায়েলের রাজাদের মধ্যে আর কেউ তেমনভাবে পালন করেননি।
\v 19 যোশিয়ের রাজত্বের আঠারো বছরের সময় এই নিস্তারপর্ব পালন করা হয়েছিল।
\s যোশিয়ের মৃত্যু
\p
\s5
\v 20 যোশিয় মন্দিরের সব কাজ শেষ করবার পরে মিসরের রাজা নখো ফরাত (ইউফ্রেটিস) নদীর কাছে কর্কমীশে যুদ্ধ করতে গেলেন। তখন তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য যোশিয় বের হয়ে গেলেন।
\v 21 কিন্তু নখো রাজদূত পাঠিয়ে তাঁকে বললেন, “হে যিহূদার রাজা, আপনার সঙ্গে আমার কি করে হবে? আজ আমি যে আপনার সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসছি তা নয়, কিন্তু আক্রমণ করছি সেই লোকদের যাদের সঙ্গে আমার যুদ্ধ বেধেছে। ঈশ্বর আমাকে তাড়াতাড়ি করতে আদেশ করেছেন, সুতরাং ঈশ্বর যিনি আমার সঙ্গে আছেন আপনি তাঁকে বাধা দেবেন না, নাহলে তিনি আপনাকে ধ্বংস করবেন।”
\s5
\v 22 যদিও যোশিয় ফিরে যেতে অস্বীকার করলেন, বরং তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করবার জন্য ভিন্ন পোশাকে নিজেকে সাজালেন। ঈশ্বরের আদেশ মত নখো তাঁকে যা বললেন তাতে তিনি না শুনে মগিদ্দোর সমভূমিতে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন।
\s5
\v 23 তখন ধনুকধারীরা রাজা যোশিয়কে তীর মারলে তিনি তাঁর দাসদের বললেন, “আমাকে নিয়ে যাও, আমি অনেক আঘাত পেয়েছি।”
\v 24 আর তাঁর দাসেরা তাঁর রথ থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে তাঁর অন্য রথটিতে রেখে তাঁকে যিরূশালেমে নিয়ে আসল, যেখানে তিনি মারা গেলেন। তাঁর পূর্বপুরুষদের কবরে তাঁকে কবর দেওয়া হল, আর যিহূদা ও যিরূশালেমের সব লোক তাঁর জন্য দুঃখী হলো।
\s5
\v 25 যোশিয়ের জন্য যিরমিয় বিলাপের গান রচনা করলেন এবং আজও সমস্ত গায়ক গায়িকারা যোশিয়ের বিষয়ে বিলাপ গান করে। ইস্রায়েলে এটা একটা চল্‌তি নিয়ম হয়ে গেল এবং দেখো, বিলাপ গানের বইয়ে তা লেখা হল।
\v 26 যোশিয়ের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা এবং সদাপ্রভুর আইন-কানুন অনুসারে তাঁর
\v 27 ঈশ্বরভক্তির সব কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আজও “ইস্রায়েল ও যিহূদার রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।
\s5
\c 36
\s যিহোয়াহস প্রভৃতি চারি জন রাজার বিবরণ। যিরুশালেমের পতন।
\p
\v 1 পরে দেশের লোকেরা যোশিয়ের ছেলে যিহোয়াহসকে নিয়ে যিরূশালেমে তাঁর বাবার পরিবর্তে রাজা করল।
\v 2 যিহোয়াহস তেইশ বছর বয়সী ছিলেন যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেছিলেন এবং তিনি তিন মাস যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন।
\s5
\v 3 পরে মিসরের রাজা যিরূশালেমে তাঁকে সিংহাসন থেকে সরিয়ে দিয়ে যিহূদার উপরে প্রায় একশত রূপার তালন্ত ও এক তালন্ত সোনা জরিমানা করলেন।
\v 4 মিসরের রাজার এক ভাই ইলীয়াকীমকে যিহূদা ও যিরূশালেমের উপরে রাজা করলেন এবং ইলীয়াকীমের নাম বদলে যিহোয়াকীম রাখলেন। নখো তাঁর ভাই যিহোয়াহসকে ধরে মিসরে নিয়ে গেলেন।
\s যিহূদার রাজা যিহোয়াকীম
\p
\s5
\v 5 যিহোয়াকীমের পঁচিশ বছর বয়স ছিল যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেছিলেন এবং তিনি এগারো বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু খারাপ ছিল তিনি তা-ই করতেন।
\v 6 বাবিলের রাজা নবুখদ্‌নিৎসর তাঁকে আক্রমণ করে বাবিলে নিয়ে যাবার জন্য তাঁকে পিতলের শিকল দিয়ে বাঁধলেন।
\v 7 নবুখদ্‌নিৎসর সদাপ্রভুর ঘর থেকে কিছু জিনিসপত্রও বাবিলে নিয়ে গিয়ে এবং সেগুলি তাঁর প্রাসাদে রাখলেন।
\s5
\v 8 যিহোয়াকীমের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা এবং তিনি যে সব জঘন্য কাজ করেছিলেন ও তাঁর বিরুদ্ধে যা কিছু পাওয়া গিয়েছিল, দেখো, যে সব “ইস্রায়েল এবং যিহূদার রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে। তাঁর পরে তাঁর ছেলে যিহোয়াখীন তাঁর পরিবর্তে রাজা হলেন।
\s5
\v 9 যিহোয়াখীন আট বছর বয়সী ছিলেন যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন এবং তিনি তিন মাস দশ দিন যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু খারাপ তিনি তা-ই করতেন।
\v 10 বছরের শেষে রাজা নবূখদ্‌নিৎসর লোক পাঠিয়ে তাঁকে ও তাঁর সঙ্গে সদাপ্রভুর ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র বাবিলে নিয়ে গেলেন, আর যিহোয়াখীনের আত্মীয় সিদিকিয়কে যিহূদা ও যিরূশালেমের রাজা করলেন।
\s5
\v 11 সিদিকিয়র বয়স একুশ বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেছিলেন এবং এগারো বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন।
\v 12 তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তিনি তা-ই করেছিলেন। তিনি ভাববাদী যিরমিয়, যিনি সদাপ্রভুর বাক্য বলতেন, তাঁর সামনে নিজেকে নত করলেন না।
\s5
\v 13 সিদিকিয় রাজা নবূখদ্‌নিৎসর, যিনি ঈশ্বরের নামে তাঁকে শপথ করিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে তিনি বিদ্রোহ করলেন। কিন্তু সিদিকিয় একগুঁয়েমি করে এবং নিজের হৃদয় কঠিন করে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিকে ফিরলেন না।
\v 14 এছাড়া যাজকদের সব নেতারা ও লোকেরা অন্যান্য জাতির জঘন্য অভ্যাস মত চলে ভীষণ পাপ করল এবং সদাপ্রভু যিরূশালেমে তাঁর যে ঘরকে নিজের উদ্দেশ্যে আলাদা করেছিলেন তা অশুচি করল।
\s5
\v 15 ইস্রায়েলীয়দের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু বার বার লোক পাঠিয়ে তাদের সাবধান করতেন, কারণ তাঁর লোকদের ও তাঁর বসবাসের জায়গার প্রতি তাঁর সহানুভুতি ছিল।
\v 16 কিন্তু ঈশ্বরের পাঠানো লোকদের তারা উপহাস করত, তাঁর কথা তুচ্ছ করত এবং তাঁর ভাববাদীদের ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত যতক্ষণ না সদাপ্রভুর ক্রোধ তাঁর লোকদের বিরুদ্ধে জেগে উঠল এবং যতক্ষণ না তাদের রক্ষা পাওয়ার আর কোনো পথ থাকলো না।
\s5
\v 17 তাদের বিরুদ্ধে সদাপ্রভু কলদীয়দের রাজাকে নিয়ে আসলেন। সেই রাজা উপাসনা-ঘরে তাদের যুবকদের খড়গ দিয়ে মেরে ফেললেন এবং যুবক-যুবতী, বুড়ো বা বয়স্ক কাউকেই দয়া দেখালেন না। ঈশ্বর তাদের সবাইকে সেই রাজার হাতে তুলে দিলেন।
\s5
\v 18 তিনি ঈশ্বরের ঘরের ছোট-বড় সব জিনিস ও ধন-দৌলত এবং রাজা ও তাঁর কর্মচারীদের ধন-দৌলত বাবিলে নিয়ে গেলেন।
\v 19 তাঁর লোকেরা ঈশ্বরের ঘর পুড়িয়ে দিল এবং যিরূশালেমের দেয়াল ভেঙ্গে ফেলল। তারা সেখানকার সব বড় বড় বাড়ী পুড়িয়ে দিল ও সমস্ত দামী জিনিস নষ্ট করে ফেলল।
\s5
\v 20 যারা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল তাদের তিনি বাবিলে নিয়ে গেলেন, আর পারস্য-রাজ্য ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত তারা নবূখদ্‌নিৎসর ও তাঁর বংশধরদের দাস হয়ে থাকলো।
\v 21 এই সময় ইস্রায়েল দেশ তার বিশ্রাম-বছরের বিশ্রাম ভোগ করল। যিরমিয়ের মধ্য দিয়ে বলা সদাপ্রভুর বাক্যের সত্তর বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের দেশের সমস্ত জমি এমনি পড়ে থেকে বিশ্রাম ভোগ করল।
\s5
\v 22 যিরমিয়ের মধ্য দিয়ে বলা সদাপ্রভুর বাক্য পূর্ণ হবার জন্য পারস্যের রাজা কোরসের রাজত্বের প্রথম বছরে সদাপ্রভু কোরসের হৃদয়ে এমন ইচ্ছা করলেন যার জন্য তিনি তাঁর সমস্ত রাজ্যে লিখিতভাবে এই ঘোষণা দিলেন l তিনি বললেন
\v 23 “পারস্যের রাজা কোরস এই কথা বলছেন, স্বর্গের ঈশ্বর সদাপ্রভু পৃথিবীর সমস্ত রাজ্য আমাকে দিয়েছেন এবং যিহূদা দেশের যিরূশালেমে তাঁর জন্য একটা ঘর তৈরী করবার জন্য আমাকে নিযুক্ত করেছেন। তাঁর লোকদের মধ্যে, অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে যে চায় সে সেখানে যাক এবং তার ঈশ্বর সদাপ্রভু তার সঙ্গে থাকুন।”