bn_ulb/12-2KI.usfm

1141 lines
290 KiB
Plaintext
Raw Permalink Blame History

This file contains ambiguous Unicode characters

This file contains Unicode characters that might be confused with other characters. If you think that this is intentional, you can safely ignore this warning. Use the Escape button to reveal them.

\id 2KI
\ide UTF-8
\sts - 2 Kings
\h দ্বিতীয় রাজাবলি।
\toc1 দ্বিতীয় রাজাবলি।
\toc2 দ্বিতীয় রাজাবলি।
\toc3 2ki
\mt1 দ্বিতীয় রাজাবলি।
\s5
\c 1
\s এলিয়ের সাহস ও স্বর্গে গমন।
\p
\v 1 আহাবের মৃত্যুর পর মোয়াব ইস্রায়েলের অধীনে আর থাকলো না।
\v 2 আর অহসিয় শমরিয়াতে তাঁর বাড়ির উপরের কুঠরীর সিঁড়ির ফটক দিয়ে নীচে পড়ে গিয়ে অসুস্থ হলেন; তাতে তিনি কয়েকজন দূতকে বলে পাঠালেন, “যাও, ইক্রোণের দেবতা বাল্‌-সবূবের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা কর যে, এই অসুস্থতা থেকে আমি সুস্থ হব কি না?”
\s5
\v 3 কিন্তু সদাপ্রভুর দূত তিশ্‌বীয় এলিয়কে বললেন, “তুমি গিয়ে শমরিয়ার রাজার দূতেদের সঙ্গে দেখা করে তাদের বল, ‘ইস্রায়েলের মধ্যে কি ঈশ্বর নেই যে, তোমরা ইক্রোণের দেবতা বাল্‌-সবূবের কাছে জিজ্ঞাসা করতে যাচ্ছ?
\v 4 তাই সদাপ্রভু বলছেন, ‘তুমি যে খাটে উঠে শুয়েছ, তা থেকে তুমি আর নামবে না, তুমি নিশ্চয়ই মারা যাবে’।” এই বলে এলিয় চলে গেলেন।
\s5
\v 5 আর সেই দূতেরা রাজার কাছে ফিরে আসলে তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কেন ফিরে আসলে?”
\v 6 তারা বলল, “একজন ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে দেখা করে বললেন, ‘যে রাজা তোমাদের পাঠিয়েছেন, তোমরা তাঁর কাছে ফিরে গিয়ে বল যে’, সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘ইস্রায়েলের মধ্যে কি ঈশ্বর নেই যে, তুমি ইক্রোণের দেবতা বাল্‌ সবূবের কাছে জিজ্ঞাসা করতে লোক পাঠিয়েছ? অতএব তুমি যে খাটে উঠে শুয়েছ সেখান থেকে আর নামবে না; তুমি নিশ্চয়ই মারা যাবে’।”
\s5
\v 7 রাজা তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “যে লোকটা তোমাদের সঙ্গে দেখা করে এই কথা বলেছে সে দেখতে কেমন?”
\v 8 উত্তরে তারা বলল, “তার গা লোমে ভরা ছিল এবং তাঁর কোমরে ছিল চামড়ার কোমর-বন্ধনি।” রাজা বললেন, “সে তিশ্‌বীয় এলিয়।”
\s5
\v 9 এরপর রাজা একজন সেনাপতি ও তাঁর পঞ্চাশজন সৈন্যকে এলিয়ের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, এলিয় তখন একটা পাহাড়ের উপরে বসে ছিলেন। সেই সেনাপতি এলিয়ের কাছে উঠে গিয়ে বললেন, “হে ঈশ্বরের লোক, রাজা আপনাকে নেমে আসতে বলেছেন।”
\v 10 উত্তরে এলিয় সেই সেনাপতিকে বললেন, “আমি যদি ঈশ্বরেরই লোক হই, তবে আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে তোমাকে ও তোমার পঞ্চাশজন লোককে পুড়িয়ে ফেলুক।” তখন আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে সেই সেনাপতি ও তার পঞ্চাশজন সৈন্যকে পুড়িয়ে ফেলল।
\s5
\v 11 পরে রাজা আবার একজন সেনাপতি ও তাঁর পঞ্চাশজন সৈন্যকে এলিয়ের কাছে পাঠালেন। সেই সেনাপতি এলিয়কে বললেন, “হে ঈশ্বরের লোক, রাজা আপনাকে এখনই নেমে আসতে বলেছেন।”
\v 12 উত্তরে এলিয় বললেন, “আমি যদি ঈশ্বরেরই লোক হই তবে আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে তোমাকে ও তোমার পঞ্চাশজন সৈন্যকে পুড়িয়ে ফেলুক।” তখন আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে তাকে ও তার পঞ্চাশজন সৈন্যকে পুড়িয়ে ফেলল।
\s5
\v 13 পরে রাজা তৃতীয় বার একজন সেনাপতি ও তাঁর পঞ্চাশজন সৈন্যকে পাঠালেন। এই তৃতীয় সেনাপতি উপরে উঠে গিয়ে এলিয়ের সামনে হাঁটু পেতে অনুরোধ করে বলল, “হে ঈশ্বরের লোক, আমি অনুরোধ করি, আমার ও আপনার এই পঞ্চাশজন দাসের প্রাণ রক্ষা করুন।
\v 14 দেখুন, আকাশ থেকে আগুন পড়ে এর আগে দুজন সেনাপতি ও তাদের পঞ্চাশ পঞ্চাশ জনকে পুড়িয়ে ফেলেছে। কিন্তু এবার আপনি আমার প্রাণ রক্ষা করুন।”
\s5
\v 15 তখন সদাপ্রভুর দূত এলিয়কে বললেন, “তুমি ওর সঙ্গে নেমে যাও, ওকে ভয় কোরো না।” তখন এলিয় তাঁর সঙ্গে নেমে রাজার কাছে গেলেন।
\v 16 তিনি রাজাকে বললেন, “সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘যে, তুমি ইক্রোণের দেবতা বাল্‌-সবূবের কাছে জিজ্ঞাসা করবার জন্য দূতদের পাঠিয়েছিলে; এর কারণ কি এই যে, ইস্রায়েলের মধ্যে ঈশ্বর নেই, যাঁর বাক্য জিজ্ঞাসা করা যায়? তাই তুমি যে বিছানায় শুয়ে আছ, তা থেকে আর নামবে না। তুমি নিশ্চয়ই মারা যাবে’।”
\s5
\v 17 আর এলিয়কে দিয়ে সদাপ্রভুর বলা বাক্য অনুযায়ী অহসিয় মারা গেলেন। অহসিয়ের কোন ছেলে ছিল না বলে তাঁর জায়গায় যিহোরাম রাজা হলেন। যিহূদার রাজা যিহোশাফটের ছেলে যিহোরামের রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে, রাজা হলেন।
\v 18 অহসিয়ের বাকি সমস্ত কাজের কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস বইতে কি লেখা নেই?
\s5
\c 2
\p
\v 1 পরে যখন সদাপ্রভু ঘুর্ণিঝড়ে এলিয়কে স্বর্গে তুলে নিতে চাইলেন তখন এলিয় ও ইলীশায় গিল্‌গল থেকে বের হলেন।
\v 2 আর এলিয় ইলীশায়কে বললেন, “অনুরোধ করি, তুমি এখানে থাক; কারণ সদাপ্রভু আমাকে বৈথেল পর্যন্ত পাঠালেন।” ইলীশায় বললেন, “যতদিন সদাপ্রভু আছেন ও আপনি আছেন, আমি আপনাকে ছাড়ব না।” কাজেই তাঁরা বৈথেলে নেমে গেলেন।
\s5
\v 3 তখন বৈথেলের ভাববাদীদের সন্তানেরা ইলীশায়ের কাছে গিয়ে বলল, “আপনি কি জানেন যে, সদাপ্রভু আপনার প্রভুকে আজ আপনার কাছ থেকে নিয়ে যাবেন?” উত্তরে ইলীশায় বললেন, “হ্যাঁ, আমি জানি। তোমরা চুপ করো।”
\v 4 এরপর এলিয় তাঁকে বললেন, “ইলীশায়, অনুরোধ করি, তুমি এখানে থাক; কারণ সদাপ্রভু আমাকে যিরীহোতে পাঠালেন।” ইলীশায় বললেন, “যতদিন সদাপ্রভু আছেন ও আপনি আছেন, আমি আপনাকে ছাড়ব না।” সুতরাং তাঁরা যিরীহোতে গেলেন।
\s5
\v 5 তখন যিরীহোর ভাববাদীদের সন্তানেরা ইলীশায়ের কাছে গিয়ে বললেন, “আপনি কি জানেন যে, সদাপ্রভু আপনার প্রভুকে আজ আপনার কাছ থেকে নিয়ে যাবেন?” উত্তরে ইলীশায় বললেন, “হ্যাঁ, আমি জানি। তোমরা চুপ করো।”
\v 6 এরপর এলিয় তাঁকে বললেন, “অনুরোধ করি, তুমি এখানে থাক; কারণ সদাপ্রভু আমাকে যর্দন নদীর পারে পাঠালেন।” উত্তরে তিনি বললেন, “যতদিন সদাপ্রভু আছেন ও আপনি আছেন, আমি আপনাকে ছাড়ব না।” সুতরাং তাঁরা দুজন চলতে লাগলেন।
\s5
\v 7 তখন পঞ্চাশজন ভাববাদীদের সন্তানেরা এসে তাঁদের সামনে দাঁড়ালো, আর যর্দন নদীর ধারে ঐ দুজন দাঁড়ালেন।
\v 8 পরে এলিয় তাঁর গায়ের চাদরটা গুটিয়ে নিয়ে তা দিয়ে জলের উপর আঘাত করলেন, তাতে জল দুদিকে ভাগ হয়ে গেল আর তাঁরা দুজনে শুকনো মাটির উপর দিয়ে পার হয়ে গেলেন।
\s5
\v 9 পার হয়ে এসে এলিয় ইলীশায়কে বললেন, “আমাকে বল, তোমার কাছ থেকে আমাকে তুলে নেবার আগে আমি তোমার জন্য কি করব?” উত্তরে ইলীশায় বললেন, “অনুরোধ করি, আপনার আত্মার দ্বিগুন শক্তি যেন আমি পাই।”
\v 10 তিনি বললেন, “তুমি একটি কঠিন জিনিস চেয়েছ; তোমার কাছ থেকে আমাকে নিয়ে যাবার সময় যদি তুমি আমাকে দেখতে পাও তবে তুমি তা পাবে; দেখতে না পেলে পাবে না।”
\s5
\v 11 পরে এইরকম ঘটল; তাঁরা যেতে যেতে কথা বলছেন, এমন সময় হঠাৎ একটা আগুনের রথ ও আগুনের কতগুলি ঘোড়া এসে তাঁদের দুজনকে আলাদা করে দিল এবং এলিয় একটা ঘূর্ণিঝড়ে স্বর্গে চলে গেলেন।
\v 12 আর ইলীশায় তা দেখে চিৎকার করে বললেন, “হে আমার পিতা, হে আমার পিতা, হে ইস্রায়েলের সমস্ত রথ ও তার ঘোড়াচালকরা।” পরে তিনি আর তাঁকে দেখতে পেলেন না; তখন তিনি নিজের কাপড় ধরে ছিঁড়ে দুভাগ করলেন।
\s5
\v 13 আর তিনি এলিয়ের গা থেকে পড়ে যাওয়া চাদরখানা তুলে নিলেন এবং ফিরে যর্দনের ধারে গিয়ে দাঁড়ালেন।
\v 14 পরে সেই চাদরখানা দিয়ে তিনি জলে আঘাত করে বললেন, “এলিয়ের ঈশ্বর সদাপ্রভু কোথায়?” আর তিনিও জলে আঘাত করলে জল দুদিকে ভাগ হয়ে গেল এবং ইলীশায় পার হয়ে গেলেন।
\s5
\v 15 তখন যিরীহোর যে ভাববাদীদের সন্তানেরা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল তারা বলল, “এলিয়ের আত্মা ইলীশায়ের উপর এসেছে।” পরে তারা তাঁর সঙ্গে দেখা করে তাঁর সামনে মাটিতে প্রণাম করল।
\v 16 আর তাঁকে বলল, “দেখুন, এখানে আপনার পঞ্চাশজন শক্তিশালী দাস আছে; অনুরোধ করি, তারা আপনার প্রভুকে খুঁজতে যাক; কি জানি, সদাপ্রভুর আত্মা তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে কোন পর্বতে কিংবা কোন উপত্যকায় ফেলে গেছেন।” তিনি বললেন, “পাঠিও না।”
\s5
\v 17 তবুও তারা তাঁকে পীড়াপীড়ি করলে তিনি লজ্জায় পড়ে বললেন, “পাঠাও।” অতএব তারা পঞ্চাশজন লোক পাঠালো; তারা তিন দিন ধরে খোঁজ করেও তাঁকে পেল না।
\v 18 পরে তারা ইলীশায়ের কাছে ফিরে এলো; ইলীশায় তখন যিরীহোতে ছিলেন। তিনি বললেন, “আমি তোমাদেরকে বলেছিলাম যে যেতে হবে না।”
\s ইলীশয়ের বর্ণনা।
\p
\s5
\v 19 পরে নগরের লোকেরা ইলীশায়কে বলল, “অনুরোধ করি, দেখুন, এই নগরের জায়গাটা চমৎকার ঠিকই, এটা তো প্রভু দেখছেন; কিন্তু এর জল ভাল নয় আর জমি ফলবান না।”
\v 20 তিনি বললেন, “আমার কাছে একটা নতুন ভাঁড় এনে তাতে লবণ রাখ।” পরে তাঁর কাছে তা আনল।
\s5
\v 21 তিনি বাইরে বেরিয়ে জলের উনুইর কাছে গিয়ে তার মধ্যে লবণ ফেলে দিয়ে বললেন, “সদাপ্রভু বলেন, ‘আমি এই জল ভাল করে দিলাম, আজ থেকে এটা আর মৃত্যু ঘটাবে না এবং ফলও নষ্ট হবে না’।”
\v 22 ইলীশায়ের সেই কথামত আজ পর্যন্ত সেই জল ভালই আছে।
\s5
\v 23 পরে তিনি সেখান থেকে বৈথেলে গেলেন; আর তিনি পথে যাওয়ার সময় নগর থেকে অনেকগুলো ছেলে এসে তাঁকে ঠাট্টা করে বলতে লাগল, “ও টাকপড়া, উঠে আয়; ও টাকপড়া, উঠে আয়।”
\v 24 তখন তিনি পিছনের দিকে মুখ ফিরিয়ে তাদেরকে দেখলেন এবং সদাপ্রভুর নামে তাদেরকে অভিশাপ দিলেন; আর বন থেকে দুটি ভাল্লূকী বেরিয়ে এসে তাদের মধ্য থেকে বিয়াল্লিশজন বালককে আহত করলো।
\v 25 এরপর তিনি সেখান থেকে কর্মিল পর্বতে গেলেন এবং সেখান থেকে শমরিয়াতে ফিরে আসলেন।
\s5
\c 3
\s ইস্রায়েলীয় ও যিহূদীয় সৈন্যদের রক্ষা।
\p
\v 1 যিহূদার রাজা যিহোশাফটের রাজত্বের আঠারো বছরে আহাবের ছেলে যিহোরাম শমরিয়ায় ইস্রায়েলের উপরে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং বারো বছর রাজত্ব করেন।
\v 2 সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ, তিনি তাই করতেন; তবে তাঁর বাবা মায়ের মত ছিলেন না; কারণ তাঁর বাবার তৈরী বাল দেবতার মূর্তি তিনি দূর করে দিলেন।
\v 3 কিন্তু নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন, তাঁর সেই সব পাপে তিনি মেতে থাকলেন, সেইসব থেকে ফিরলেন না।
\s5
\v 4 মোয়াবের রাজা মেশার অনেক ভেড়া ছিল; তিনি ইস্রায়েলের রাজাকে কর হিসাবে এক লক্ষ ভেড়ার বাচ্চা ও এক লক্ষ ভেড়ার লোম দিতেন।
\v 5 কিন্তু আহাবের মৃত্যুর পর মোয়াবের রাজা ইস্রায়েলের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন।
\v 6 তখন রাজা যিহোরাম শমরিয়া থেকে বের হয়ে সমস্ত ইস্রায়েলকে জড়ো করলেন।
\s5
\v 7 পরে তিনি যিহূদার রাজা যিহোশাফটের কাছে দূত পাঠিয়ে বললেন, “মোয়াবের রাজা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে, আপনি কি আমার সঙ্গে মোয়াবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন?” তিনি বললেন, “করবো, আমি ও আপনি, আমার লোক ও আপনার লোক, আমার ঘোড়া ও আপনার ঘোড়া, সবই এক।”
\v 8 তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “আমরা কোন্‌ পথ দিয়ে যাব?” যিহোরাম বললেন, “ইদোমের মরুভূমির পথ দিয়ে।”
\s5
\v 9 পরে যিহূদার রাজা ও ইদোমের রাজার সঙ্গে ইস্রায়েলের রাজা বের হলেন; তাঁরা সাত দিনের পথ ঘুরে গেলেন; তখন তাঁদের সৈন্যদলের ও তাদের সঙ্গে আসা পশুদের জন্য জল পাওয়া গেল না।
\v 10 ইস্রায়েলের রাজা বললেন, “হায়, হায়! সদাপ্রভু মোয়াবের হাতে তুলে দেবার জন্যই কি এই তিন রাজাকে একসঙ্গে ডেকেছেন?”
\s5
\v 11 কিন্তু যিহোশাফট বললেন, “এখানে কি সদাপ্রভুর কোনো ভাববাদী নেই যে, তাঁর মাধ্যমে আমরা সদাপ্রভুর খোঁজ করতে পারি?” ইস্রায়েলের রাজার একজন দাস উত্তরে বলল, “শাফটের ছেলে ইলীশায় যে এলিয়ের হাতের উপর জল ঢালতেন, তিনি এখানে আছেন।”
\v 12 যিহোশাফট বললেন, “সদাপ্রভুর বাক্য তাঁর কাছে আছে।” পরে ইস্রায়েলের রাজা, ইদোমের রাজা ও যিহোশাফট তাঁর কাছে নেমে গেলেন।
\s5
\v 13 তখন ইলীশায় ইস্রায়েলের রাজাকে বললেন, “আপনার সঙ্গে আমার কিসের সম্পর্ক? আপনি আপনার বাবা অথবা মায়ের ভাববাদীদের কাছে যান।” ইস্রায়েলের রাজা বললেন, “তা নয়, কারণ মোয়াবের হাতে তুলে দেবার জন্য সদাপ্রভু এই তিন রাজাকে একসঙ্গে ডেকেছেন।”
\v 14 ইলীশায় বললেন, “আমি যাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছি, সেই বাহিনীগনের জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি যদি, যিহূদার রাজা যিহোশাফটের মুখের দিকে না চাইতাম, তবে আমি আপনার দিকে চেয়েও দেখতাম না, খেয়ালও করতাম না।
\s5
\v 15 যাই হোক, এখন বীণা বাজায় এমন একজন লোককে আমার কাছে নিয়ে আসুন।” পরে লোকটি যখন বীণা বাজাচ্ছিল তখন সদাপ্রভুর হাত ইলীশায়ের উপর আসল।
\v 16 আর তিনি বললেন, “সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমরা এই উপত্যকায় অনেক খাদ তৈরী কর।
\v 17 কারণ সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমরা বাতাস কিংবা বৃষ্টি দেখতে না পেলেও এই উপত্যকা জলে ভরে যাবে; তাতে তোমরা, তোমাদের গৃহপালিতেরা ও অন্যান্য সব পশুও জল খাবে।
\s5
\v 18 আর সদাপ্রভুর চোখে এটা খুব ছোট বিষয়, তিনি মোয়াবকেও তোমাদের হাতে তুলে দেবেন।
\v 19 তখন তোমরা দেওয়াল ঘেরা নগর এবং প্রত্যেকটা ভালো নগরে আঘাত করবে, আর প্রত্যেকটা ভাল গাছ কেটে ফেলবে ও জলের সমস্ত উনুই বুজিয়ে দেবে এবং সব ভাল ক্ষেত পাথর দিয়ে নষ্ট করে দেবে।”
\s5
\v 20 পরে সকালবেলায় নৈবেদ্য উৎসর্গের সময় ইদোমের পথ দিয়ে জল বয়ে এসে দেশটা ভরে গেল।
\s5
\v 21 সমস্ত মোয়াবীয়েরা শুনতে পেল যে, সেই রাজারা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছেন, তখন যারা যুদ্ধসজ্জা পরতে পারত, তারা সবাই এবং তার থেকে বেশি বয়সের সবাই জড়ো হয়ে দেশের সীমানায় দাঁড়িয়ে থাকলো।
\v 22 পরে তারা খুব সকালে ঘুম থেকে উঠল, তখন সূর্য জলের উপর চক্‌মক্‌ করছিল, তাতে মোয়াবীয়রা তাদের সামনের জলকে লাল রক্তের মত দেখল।
\v 23 তখন তারা বলল, “এ যে রক্ত! সেই রাজারা নিশ্চয়ই ধ্বংস হয়েছে, আর লোকেরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে মারা গেছে; কাজেই হে মোয়াব, এখন লুট করতে চল।”
\s5
\v 24 পরে তারা ইস্রায়েলের শিবিরের কাছে গেল তখন ইস্রায়েলীয়েরা বের হয়ে মোয়াবীয়দের আক্রমণ করল, তাতে তারা তাদের সামনে থেকে পালিয়ে গেল এবং তারা মোয়াবীয়দের মারতে মারতে এগিয়ে গিয়ে তাদের দেশে ঢুকে পড়ল।
\v 25 তারা নগরগুলি ধ্বংস করল ও প্রত্যেকে পাথর ফেলে সমস্ত ভাল ক্ষেতগুলি ভর্তি করল এবং জলের সমস্ত উনুইগুলি বুজিয়ে দিল ও ভাল ভাল গাছপালা সব কেটে ফেলল, কেবল কীর্‌-হরাসতের সেখানকার পাথরগুলি বাকি রাখল, কিন্তু ফিঙ্গা হাতে সৈন্যেরা চারিদিকে ঘেরাও করে আঘাত করল।
\s5
\v 26 মোয়াবের রাজা যখন দেখলেন যে, তিনি যুদ্ধে হেরে যাচ্ছেন, তখন সৈন্যদলের মধ্য দিয়ে ইদোমের রাজার কাছে যাবার জন্য তাঁর সঙ্গে সাতশো তলোয়ারধারীকে নিলেন, কিন্তু তারা পারল না।
\v 27 পরে যে তাঁর জায়গায় রাজা হত, তাঁর সেই বড় ছেলেকে নিয়ে তিনি প্রাচীরের উপরে হোমবলি হিসাবে উৎসর্গ করলেন। আর ইস্রায়েলের উপর ভয়ংকর রাগ হল; পরে তারা তাঁর কাছ থেকে চলে গিয়ে নিজেদের দেশে ফিরে গেল।
\s5
\c 4
\s ইলীশায়ের করা নানা অলৌকিক কাজ।
\p
\v 1 একদিন ভাববাদীদের সন্তানদের মধ্যে একজনের স্ত্রী কেঁদে ইলীশায়কে বলল, “আপনার দাস আমার স্বামী মারা গেছেন; আপনি জানেন, আপনার দাস সদাপ্রভুকে ভয় করতেন; এখন মহাজন আমার দুই ছেলেকে তার দাস বানাবার জন্য নিয়ে যেতে এসেছে।”
\v 2 ইলীশায় তাকে বললেন, “আমি তোমার জন্য কি করতে পারি? বল দেখি, তোমার ঘরে কি আছে?” সে বলল, “একবাটি তেল ছাড়া আপনার দাসীর আর কিছু নেই।”
\s5
\v 3 তখন তিনি বললেন, “যাও, তুমি বাইরে গিয়ে তোমার সমস্ত প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খালি পাত্র চেয়ে আন, মাত্র অল্প কয়েকটি আনবে না।
\v 4 তারপর তুমি ও তোমার ছেলেরা ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেবে এবং সেই পাত্রতে তেল ঢালবে; আর একটা করে পাত্র ভর্তি হলে পর সেটা সরিয়ে রাখবে।”
\s5
\v 5 পরে সেই স্ত্রীলোকটি তাঁর কাছ থেকে চলে গেল, আর সে ও তার ছেলেরা গৃহে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল; তারা বার বার পাত্র আনতে লাগল এবং সে তেল ঢালতেই থাকল।
\v 6 সব পাত্র ভরে গেলে পর সে তার ছেলেকে বলল, “আরো পাত্র নিয়ে এস।” ছেলেটি বলল, “আর পাত্র নেই।” তখন তেল পড়া বন্ধ হয়ে গেল।
\s5
\v 7 পরে সে গিয়ে ঈশ্বরের লোককে খবর দিল। তিনি বললেন, “যাও, সেই তেল বিক্রি করে তোমার দেনা শোধ করে দাও এবং যা বাকী থাকবে তা দিয়ে তুমি ও তোমার ছেলেরা দিন কাটাও”।
\s5
\v 8 একদিন ইলিশায় শূনেমে যান, সেখানে একজন ধনী মহিলা ছিলেন; তিনি তাঁকে আগ্রহ সহকারে খাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ করলেন। পরে যতবার তিনি সেই পথ দিয়ে যেতেন, ততবারই সেই বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করবার জন্য যেতেন।
\v 9 আর সেই মহিলা তাঁর স্বামীকে বললেন, “দেখ, আমি বুঝতে পেরেছি যে, এই যে ব্যক্তি আমাদের কাছ দিয়ে যখন তখন যাতাযাত করেন, তিনি ঈশ্বরের একজন পবিত্র লোক।
\s5
\v 10 অনুরোধ করি, এস, আমরা ছাদের উপরে একটা ছোট ঘর তৈরী করি এবং তার মধ্যে তাঁর জন্য একটা খাট, একটা টেবিল, একটা চেয়ার ও একটা বাতিদান রাখি; তাহলে তিনি আমাদের কাছে আসলে ওখানে থাকতে পারবেন।”
\v 11 একদিন ইলীশায় সেখানে এসে সেই উপরের কুঠুরীতে গিয়ে শুয়ে থাকলেন।
\s5
\v 12 পরে তিনি তাঁর চাকর গেহসিকে বললেন, “তুমি ঐ শূনেমীয় স্ত্রীলোকটিকে ডাক।” সে তাঁকে ডাকলে স্ত্রীলোকটি এসে তাঁর সামনে দাঁড়ালেন।
\v 13 তখন ইলীশায় গেহসিকে বললেন, “ওঁনাকে বল, ‘দেখুন, আমাদের জন্য এত চিন্তা করলেন, এখন আমরা আপনার জন্য কি করতে পারি? রাজা বা সেনাপতির কাছে আপনার কি কোনো অনুরোধ আছে’?” উত্তরে তিনি বললেন, “আমি আমার নিজের লোকদের মধ্যে বসবাস করছি।”
\s5
\v 14 পরে ইলীশায় বললেন, “তবে তাঁর জন্য কি করতে হবে?” গেহসি বলল, “নিশ্চয়ই তাঁর কোন ছেলে নেই, স্বামীও বুড়ো হয়ে গেছেন।”
\v 15 ইলীশায় বললেন, “তাঁকে ডাক,” পরে তাঁকে ডাকলে তিনি এসে দরজার কাছে দাঁড়ালেন।
\v 16 তখন ইলীশায় বললেন, “আগামী বছরের এই সময়ে আপনার কোলে একটা ছেলে থাকবে।” কিন্তু তিনি বললেন, “না; হে প্রভু, হে ঈশ্বরের লোক, আপনার দাসীকে মিথ্যা কথা বলবেন না।”
\s5
\v 17 পরে ইলীশায়ের বাক্য অনুসারে সেই স্ত্রীলোকটি গর্ভবতী হয়ে সেই একই সময় উপস্থিত হলে তিনি ছেলের জন্ম দিলেন।
\v 18 ছেলেটি বড় হওয়ার পর একদিন তার বাবা যখন ফসল কাটবার লোকদের সঙ্গে ছিলেন, তখন সে তার বাবার কাছে গেল।
\v 19 পরে সে বাবাকে বলল, “আমার মাথা, আমার মাথা।” তার বাবা একজন চাকরকে বললেন, “তুমি ওকে তুলে ওর মায়ের কাছে নিয়ে যাও।”
\v 20 পরে সে তাকে তুলে নিয়ে মায়ের কাছে আনলে ছেলেটি দুপুর পর্যন্ত মায়ের কোলে বসে থাকল, তারপর মারা গেল।
\s5
\v 21 তখন মা উপরে গিয়ে ঈশ্বরের লোকের বিছানায় তাকে শুইয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে এলেন।
\v 22 তারপর তাঁর স্বামীকে ডেকে বললেন, “অনুরোধ করি, তুমি একজন চাকর ও একটা গর্দ্দভী আমার কাছে পাঠিয়ে দাও, আমি তাড়াতাড়ি ঈশ্বরের লোকের কাছে গিয়ে ফিরে আসব।”
\s5
\v 23 তিনি বললেন, “তাঁর কাছে আজকে যাবে কেন? আজকে তো অমাবস্যাও নয়, বিশ্রামবারও নয়।” মহিলাটি বললেন, “মঙ্গল হবে।”
\v 24 তারপর তিনি গর্দ্দভী সাজিয়ে তাঁর চাকরকে বললেন, “গর্দ্দভী চালিয়ে চল, আমি না বললে আস্তে চালাবে না।”
\s5
\v 25 পরে তিনি কর্মিল পর্বতে ঈশ্বরের লোকের কাছে চললেন। তখন তাঁকে দূর থেকে দেখে ঈশ্বরের লোক তাঁর চাকর গেহসিকে বললেন, “দেখ, সেই শূনেমীয়া।
\v 26 তুমি দৌড়ে তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে জিজ্ঞাসা কর যে, ‘আপনি, আপনার স্বামী ও আপনার ছেলে সবাই ঠিক আছেন’?” উত্তরে তিনি বললেন, “সবাই ভাল আছে।”
\s5
\v 27 পরে পর্বতে ঈশ্বরের লোকের কাছে উপস্থিত হয়ে তিনি তাঁর পা জড়িয়ে ধরলেন; তাতে গেহসি তাঁকে সরিয়ে দেবার জন্য কাছে আসলে ঈশ্বরের লোক বললেন, “ওঁনাকে থাকতে দাও। ওঁনার মনে খুব কষ্ট হয়েছে, আর সদাপ্রভু আমার কাছ থেকে তা লুকিয়ে রেখেছেন, আমাকে জানান নি।”
\s5
\v 28 তখন স্ত্রীলোকটি বললেন, “আমার প্রভুর কাছে আমি কি ছেলে চেয়েছিলাম? আমি কি আপনাকে বলি নি যে, আমার সাথে ছলনা করবেন না?”
\v 29 তখন ইলীশায় গেহসিকে বললেন, “কোমর বেঁধে নাও, আমার এই লাঠিটি হাতে নিয়ে যাও; কারও সঙ্গে দেখা হলে তাকে শুভেচ্ছা জানাবে না এবং কেউ শুভেচ্ছা জানালে তার উত্তরও দেবে না; পরে আমার এই লাঠিটি ছেলেটির মুখের উপর রেখে দিয়ো।”
\s5
\v 30 তখন ছেলেটির মা বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর ও আপনার প্রাণের দিব্যি, আমি আপনাকে ছাড়ব না।” কাজেই ইলীশায় উঠে তাঁর পিছনে পিছনে চললেন।
\v 31 ইতিমধ্যে গেহসি তাঁদের আগে গিয়ে ছেলেটির মুখের উপর লাঠিটি রাখল, কিন্তু কোনো শব্দ হল না, কোনো সাড়াও পাওয়া গেল না। তাই গেহসি ইলীশায়ের সঙ্গে দেখা করবার জন্য ফিরে গিয়ে তাঁকে বলল, “ছেলেটি জাগে নি।”
\s5
\v 32 পরে ইলীশায় সেই গৃহে এসে দেখলেন তাঁরই বিছানার উপর মৃত ছেলেটি শোয়ানো রয়েছে।
\v 33 তখন তিনি গৃহে ঢুকলেন এবং তাদের দুজনকে বাইরে রেখে দরজা বন্ধ করে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন।
\v 34 তারপর তিনি বিছানার উপর উঠে ছেলেটির উপরে শুলেন; তিনি তার মুখের উপরে নিজের মুখ, চোখের উপরে চোখ এবং হাতের উপরে হাত রেখে তার উপর নিজে লম্বা হয়ে শুলেন; তাতে ছেলেটির গা গরম হয়ে উঠল।
\s5
\v 35 তারপর তিনি ফিরে এসে ঘরের মধ্যে পায়চারি করতে লাগলেন, আবার উঠে তার উপর লম্বা হয়ে শুলেন; তাতে ছেলেটি সাতবার হাঁচি দিয়ে চোখ খুলল।
\v 36 তখন তিনি গেহসিকে ডেকে বললেন, “ঐ শূনেমীয়াকে ডাক।” সে তাঁকে ডাকলে স্ত্রীলোকটি তাঁর কাছে আসলেন। ইলীশায় বললেন, “আপনার ছেলেকে তুলে নিন।”
\v 37 তখন সেই স্ত্রীলোকটি কাছে গিয়ে তাঁর পায়ে পড়ে মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন এবং তাঁর ছেলেকে তুলে নিয়ে তিনি বেরিয়ে গেলেন।
\s5
\v 38 ইলীশায় আবার গিল্‌গলে ফিরে গেলেন। তখন দেশে দুর্ভিক্ষ চলছিল। তখন ভাববাদীদের সন্তানেরা তাঁর সঙ্গে বসে ছিল; তিনি তাঁর চাকরকে আদেশ দিলেন, “বড় হাঁড়ি চাপিয়ে এদের জন্য কিছু তরকারি রান্না কর।”
\v 39 তখন তাদের একজন তরকারী সংগ্রহ করতে মাঠে গিয়ে বুনো শসার লতা দেখতে পেয়ে তার বুনো ফল কাপড় ভর্তি করে এনে তা কেটে তরকারির হাঁড়িতে দিল; কিন্তু সেগুলো কি তা কারোর জানা ছিল না।
\s5
\v 40 পরে লোকদের খেতে দেওয়ার জন্য ঢালা হলে তারা সেই তরকারী খেতে গিয়ে চিৎকার করে বলল, “হে ঈশ্বরের লোক, হাঁড়ির মধ্যে মৃত্যু!” তারা তা খেতে পারল না।
\v 41 তখন তিনি বললেন, “কিছু ময়দা নিয়ে এস।” তখন তিনি হাঁড়ির মধ্যে তা ফেলে দিয়ে বললেন, “লোকেদের জন্য ঢেলে দাও, তারা খেয়ে দেখুক।” এতে খারাপ কিছু হাঁড়ির মধ্যে থাকলো না।
\s5
\v 42 আর বাল্‌-শালিশা থেকে একজন লোক ঈশ্বরের লোকের জন্য প্রথমে কাটা ফসল থেকে কুড়িটা যবের রুটি সেঁকে নিয়ে আসল, আর তার সঙ্গে নিয়ে আসল কিছু নতুন শস্যের শীষ। আর তিনি বললেন, “এগুলো লোকদের খেতে দাও।”
\v 43 তখন তাঁর পরিচারক বলল, “আমি কি একশো জন লোককে এটি পরিবেশন করব?” কিন্তু ইলীশায় বললেন, “এই লোকদের খেতে দাও; কারণ সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘তারা খাবে ও কিছু বাকীও থাকবে’।”
\v 44 অতএব তার দাস তাদের সামনে তা রাখল, আর সদাপ্রভুর বাক্য অনুযায়ী তারা খেল আবার কিছু বাকীও রেখে দিল।
\s5
\c 5
\s কুষ্ঠী নামানের সুস্থতা।
\p
\v 1 অরামের রাজার সেনাপতি নামান ছিলেন তাঁর মনিবের চোখে একজন মহান ও সম্মানিত লোক, কারণ তাঁরই মাধ্যমে সদাপ্রভু অরামকে জয়ী করেছিলেন; আর তিনি ছিলেন বলবান বীর, কিন্তু কুষ্ঠরোগী ছিলেন।
\v 2 এক সময়ে অরামীয়েরা দলে দলে গিয়েছিল; তারা ইস্রায়েল দেশ থেকে একটি ছোট মেয়েকে বন্দী করে আনলে সে নামানের স্ত্রীর দাসী হয়েছিল।
\s5
\v 3 সে তার কর্ত্রীকে বলল, “আমার মনিব যদি শমরিয়ার ভাববাদীর সঙ্গে দেখা করতে পারতেন, তাহলে তিনি তাঁকে কুষ্ঠরোগ থেকে উদ্ধার করতেন।”
\v 4 পরে নামান গিয়ে তাঁর মনিবকে বললেন, ইস্রায়েল দেশ থেকে আনা সেই মেয়েটি এই কথা বলছে।
\s5
\v 5 অরামের রাজা বললেন, “সেখানে তুমি যাও, আমি ইস্রায়েলের রাজার কাছে চিঠি পাঠাই।” তখন তিনি নিজের সঙ্গে দশ তালন্ত রুপো, ছয় হাজার সোনার মুদ্রা ও দশ জোড়া কাপড় নিয়ে চলে গেলেন।
\v 6 আর তিনি ইস্রায়েলের রাজার কাছে চিঠিটি নিয়ে গেলেন, চিঠিতে লেখা ছিল, “এই চিঠি যখন আপনার কাছে পৌঁছাবে, তখন দেখুন, আমি আমার দাস নামানকে আপনার কাছে পাঠালাম, আপনি তাকে কুষ্ঠরোগ থেকে উদ্ধার করবেন।”
\s5
\v 7 যখন ইস্রায়েলের রাজা সেই চিঠি পড়লেন তিনি তাঁর কাপড় ছিঁড়ে বললেন, “মারবার ও বাঁচাবার ঈশ্বর কি আমি যে, এই ব্যক্তি একজন মানুষকে কুষ্ঠ হতে উদ্ধার করার জন্য আমার কাছে পাঠাচ্ছে? অনুরোধ করি, তোমরা বিচার করে দেখ, সে আমার বিরুদ্ধে তর্কের জন্য সূত্র খোঁজ করছে।”
\s5
\v 8 পরে ইস্রায়েলের রাজা কাপড় ছিঁড়েছেন এই কথা শুনে ঈশ্বরের লোক ইলীশায় রাজার কাছে এই কথা বলে পাঠালেন, “কেন আপনি কাপড় ছিঁড়েছেন? সে ব্যক্তি আমার কাছে আসুক; তাতে জানতে পারবে যে, ইস্রায়েলের মধ্যে একজন ভাববাদী আছে।”
\v 9 কাজেই নামান তাঁর সব রথ ও ঘোড়া নিয়ে এসে ইলীশায়ের বাড়ীর দরজার কাছে গিয়ে উপস্থিত হলেন।
\v 10 তখন ইলীশায় তাঁর কাছে একজন লোক পাঠিয়ে বললেন, “আপনি গিয়ে সাতবার যর্দনে স্নান করুন, আপনার নতুন মাংস হবে ও আপনি শুচি হবেন।”
\s5
\v 11 তখন নামান ভীষণ রেগে চলে গেলেন, আর বললেন, “দেখ, আমি ভেবেছিলাম, তিনি নিশ্চয়ই বের হয়ে আমার কাছে আসবেন এবং দাঁড়িয়ে তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ডাকবেন, আর কুষ্ঠরোগের উপরে হাত বুলিয়ে কুষ্ঠীকে সুস্থ করবেন।
\v 12 ইস্রায়েলের সমস্ত জলাশয় থেকে দম্মেশকের অবানা ও পর্পর নদী কি ভাল নয়? সেখানে স্নান করে কি আমি শুচি হতে পারি না?” আর তিনি মুখ ফিরিয়ে রেগে গিয়ে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 13 কিন্তু তাঁর দাসেরা কাছে গিয়ে অনুরোধ করে বলল, “বাবা, ঐ ভাববাদী যদি আপনাকে কোনো কঠিন কাজ করতে আদেশ দিতেন, তাহলে কি আপনি তা করতেন না? তবে ‘স্নান করে শুচি হন’ তাঁর এই আদেশটি কি মানবেন না?”
\v 14 তখন তিনি ঈশ্বরের লোকের আদেশ অনুযায়ী নেমে গিয়ে যর্দনে সাতবার ডুব দিলেন, তাতে ছোট ছেলের মত তাঁর নতুন মাংস হল ও তিনি শুচি হলেন।
\s5
\v 15 পরে তিনি তাঁর সঙ্গীদের জনগনের সঙ্গে ঈশ্বরের লোকের কাছে ফিরে এসে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “দেখুন, আমি এখন জানতে পারলাম যে, একমাত্র ইস্রায়েলের ঈশ্বর ছাড়া সারা পৃথিবীতে আর কোন ঈশ্বর নেই; অতএব অনুরোধ করি, আপনার দাসের কাছ থেকে উপহার নিন।”
\v 16 কিন্তু তিনি বললেন, “আমি যাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছি, সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি যে, আমি কোনো কিছু নেব না।” নামান জোর করলেও তিনি রাজী হলেন না।
\s5
\v 17 পরে নামান বললেন, “তা যদি না হয়, তবে অনুরোধ করি, দুটো খচ্চরে বয়ে নিয়ে যেতে পারে এমন মাটি আপনার দাসকে দিন; কারণ আজ থেকে আপনার এই দাস সদাপ্রভু ছাড়া অন্য কোন দেবতার উদ্দেশ্যে হোম কিংবা বলিদান করবে না।
\v 18 শুধু এই বিষয়ে সদাপ্রভু তাঁর দাসকে ক্ষমা করুন; আমার মনিব উপাসনা করার জন্য যখন রিম্মোণের মন্দিরে ঢুকে আমার হাতের উপর ভর দেন, তখন যদি আমি রিম্মোণের মন্দিরে প্রনাম করি, তবে সদাপ্রভু যেন এই ব্যাপারে আমাকে ক্ষমা করেন।”
\v 19 ইলীশায় তাঁকে বললেন, “শান্ত ভাবে চলে যান। পরে তিনি তাঁর সামনে থেকে কিছু দূর এগিয়ে গেলেন।”
\s5
\v 20 তখন ঈশ্বরের লোক ইলীশায়ের চাকর গেহসি নিজের মনে বলল, “দেখ, আমার মনিব ঐ অরামীয় নামানকে এমনিই ছেড়ে দিলেন, যা এনেছিলেন তা নিলেন না, জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, আমি তাঁর পিছনে পিছনে দৌড়ে গিয়ে তাঁর কাছ থেকে কিছু নেব।”
\v 21 পরে গেহসি নামানের অনুসরণ করে দৌড়ে গেল; তাতে নামান তাঁর পিছনে দৌড়ে আসতে দেখে তার সঙ্গে দেখা করবার জন্য রথ থেকে নেমে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সব খবর ভালো তো?”
\v 22 সে বলল, “সব ঠিক আছে। আমার মনিব এই কথা বলবার জন্য আমাকে পাঠিয়েছেন যে, দেখুন, ইফ্রয়িমের পর্বতময় এলাকা থেকে ভাববাদীদের সন্তানদের মধ্যে দুজন যুবক এসেছে; অনুরোধ করি, তাদের জন্য এক তালন্ত রুপো ও দুই জোড়া পোশাক দিন।”
\s5
\v 23 নামান বললেন, “দয়া করে দুই তালন্ত নাও।” পরে তিনি আগ্রহের সঙ্গে দুই তালন্ত রুপো দুটি থলিতে বেঁধে দুই জোড়া কাপড় তাঁর দুজন দাসকে দিলে তারা তার আগে আগে বয়ে নিয়ে যেতে লাগল।
\v 24 পরে পাহাড়ে এসে গেহসি তাদের কাছ থেকে সেগুলি নিয়ে গৃহের মধ্যে রাখল এবং তাদের বিদায় করে দিলে তারা চলে গেল।
\v 25 পরে সে ভিতরে গিয়ে তার মনিবের সামনে দাঁড়াল। তখন ইলীশায় তাকে বললেন, “গেহসি, তুমি কোথায় গিয়েছিলে?” এবং সে বলল, “আপনার দাস কোথাও যায় নি।”
\s5
\v 26 তখন তিনি তাকে বললেন, “সেই লোকটি যখন তোমার সঙ্গে দেখা করবার জন্য রথ থেকে নামলেন, তখন আমার মন কি তোমার সাথে যায় নি? রুপো, পোশাক, জিতবৃক্ষের বাগান, আঙ্গুর ক্ষেত, গরু, ভেড়া, দাস ও দাসী নেবার এটাই কি সময়?
\v 27 অতএব নামানের কুষ্ঠরোগ তোমার ও তোমার বংশের মধ্যে চিরকাল লেগে থাকবে।” তখন গেহসি তুষারের মত সাদা কুষ্ঠগ্রস্ত হয়ে তাঁর সামনে থেকে চলে গেল।
\s5
\c 6
\s ইলীশায়ের করা আরও নানা কাজ।
\p
\v 1 একসময়ে ভাববাদীদের সন্তানেরা ইলীশায়কে বলল, “দেখুন, যে জায়গায় আমরা আপনার সঙ্গে বাস করছি, সেটা আমাদের জন্য খুবই ছোট।
\v 2 অনুমতি দিন, আমরা যর্দনের কাছে গিয়ে প্রত্যেকে সেখান থেকে একটি করে কাঠ নিয়ে আমাদের জন্য সেখানে একটা থাকবার জায়গা তৈরী করি।” তিনি বললেন, “যাও।”
\v 3 আর একজন বলল, “আপনি দয়া করে আপনার দাসদের সঙ্গে চলুন।” তিনি বললেন, “যাব।”
\s5
\v 4 অতএব তিনি তাদের সঙ্গে গেলেন; পরে যর্দনের কাছে গিয়ে তারা কাঠ কাটতে লাগল।
\v 5 কিন্তু একজন যখন কাঠ কাটছিল, তখন তার কুড়ালের ফলাটি জলে পড়ে গেল; তাতে সে চিৎকার করে বলল, “হায়, হায়! প্রভু, আমি তো ওটা ধার করে এনেছিলাম।”
\s5
\v 6 তখন ঈশ্বরের লোক জিজ্ঞাসা করলেন, “ওটা কোথায় পড়েছে?” সে তাঁকে সেই জায়গাটা দেখিয়ে দিল, তখন ইলীশায় একটি কাঠ কেটে নিয়ে সেখানে ছুঁড়ে ফেলে লোহার ফলাটিকে ভাসিয়ে তুললেন।
\v 7 আর তিনি বললেন, “ওটা তুলে নাও।” তাতে সে হাত বাড়িয়ে সেটা তুলে নিল।
\s5
\v 8 এক সময় অরামের রাজা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন; আর যখন তিনি তাঁর দাসেদের সঙ্গে পরামর্শ করে বলতেন, “ঐ ঐ জায়গায় আমি শিবির করব,”
\v 9 তখন ঈশ্বরের লোক ইস্রায়েলের রাজাকে বলে পাঠাতেন, “সাবধান, ঐ জায়গায় যাবেন না, কারণ অরামীয়েরা সেখানে নেমে আসছে।”
\s5
\v 10 তাতে ঈশ্বরের লোক যে জায়গাটার বিষয়ে তাঁকে সাবধান করে দিতেন, সেখানে ইস্রায়েলের রাজা সৈন্য পাঠিয়ে বারবার নিজেকে রক্ষা করতেন।
\v 11 এই বিষয়ের জন্য অরামের রাজার হৃদয় বিচলিত হল, তিনি তাঁর দাসেদের ডেকে বললেন, “আমাদের মধ্যে কে ইস্রায়েলের রাজার পক্ষে রয়েছে, তা কি তোমরা আমাকে বলবে না?”
\s5
\v 12 তখন তাঁর দাসেদের মধ্যে একজন বলল, “হে আমার প্রভু মহারাজ, কেউ না; কিন্তু আপনি আপনার শোবার গৃহে যে সব কথা বলেন, সেই সব কথা ইস্রায়েলের ভাববাদী ইলীশায় ইস্রায়েলের রাজাকে জানান।”
\v 13 তখন তিনি বললেন, “সে কোথায় আছে তোমরা গিয়ে তা খুঁজে বের কর, আমি লোক পাঠিয়ে তাকে আনব।” পরে কেউ তাঁকে এই খবর দিল, “দেখুন, তিনি দোথনে আছেন।”
\s5
\v 14 তাতে তিনি অনেক ঘোড়া, রথ ও একটি বড় সৈন্যদল সেখানে পাঠালেন। তারা রাতের বেলায় গিয়ে নগরটি ঘিরে ধরল।
\v 15 আর ভোরে ঈশ্বরের লোকের চাকর উঠে যখন বাইরে গেল, তখন সে দেখতে পেল অনেক ঘোড়া ও রথ নিয়ে একদল সৈন্য নগর ঘিরে রেখেছে। তাঁর চাকর তখন তাঁকে বলল, “হায়, হায়! হে প্রভু, আমরা কি করব?”
\v 16 তিনি বললেন, “ভয় কোরো না, যারা আমাদের সঙ্গে আছে তারা ওদের চেয়ে সংখ্যায় বেশী।”
\s5
\v 17 তারপর ইলীশায় প্রার্থনা করে বললেন, “হে সদাপ্রভু, অনুরোধ করি, এর চোখ খুলে দাও, যেন এ দেখতে পায়।” তখন সদাপ্রভু সেই চাকরের চোখ খুলে দিলেন এবং সে দেখতে পেল, ইলীশায়ের চারপাশে ঘোড়া ও আগুনের রথে পর্বতে ভরা ছিল।
\v 18 পরে সেই সৈন্যরা তাঁর কাছে আসলে ইলীশায় সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, “অনুরোধ করি, এই লোকগুলিকে তুমি অন্ধ করে দাও।” ইলীশায়ের প্রার্থনা অনুসারে সদাপ্রভু তাদের অন্ধ করে দিলেন।
\v 19 পরে ইলীশায় তাদেরকে বললেন, “এটা সেই রাস্তাও নয় আর সেই নগরও নয়; তোমরা আমার পিছনে পিছনে এস; যে লোকের খোঁজ তোমরা করছ আমি তার কাছে তোমাদের নিয়ে যাব।” আর তিনি তাদের শমরিয়াতে নিয়ে গেলেন।
\s5
\v 20 তারা শমরিয়াতে ঢুকবার পর ইলীশায় বললেন, “হে সদাপ্রভু, এবার ওদের চোখ খুলে দাও, যেন ওরা দেখতে পায়।” তখন সদাপ্রভু তাদের চোখ খুলে দিলেন এবং তারা দেখল যে, তারা শমরিয়ার গিয়ে উপস্থিত হয়েছে।
\v 21 আর ইস্রায়েলের রাজা তাদের দেখে ইলীশায়কে বললেন, “হে, পিতা, ওদের কি মেরে ফেলব?”
\s5
\v 22 ইলীশায় বললেন, “ওদের মেরো না। তুমি যাদের তরোয়াল ও ধনুক দিয়ে বন্দী কর, তাদের কি মেরে ফেল? ওদের রুটি ও জল দাও, ওরা খেয়ে তাদের মনিবের কাছে ফিরে যাক।”
\v 23 তখন তিনি তাদের জন্য বড় ভোজের আয়োজন করলেন এবং তারা খাওয়া-দাওয়া করলে, তিনি তাদের বিদায় দিলেন; তারা তাদের মনিবের কাছে ফিরে গেল। পরে অরামের সৈন্যদল ইস্রায়েল দেশে আর এল না।
\s5
\v 24 তার পরে অরামের রাজা বিন্‌হদদ তাঁর সমস্ত সৈন্যদল জড়ো করলেন এবং শমরিয়া আক্রমণ করে ঘেরাও করলেন।
\v 25 তাতে শমরিয়ায় খুব দুর্ভিক্ষ দেখা দিল; আর দেখ, তারা ঘেরাও করে থাকলে শেষে একটি গাধার মাথা আশিটি রুপোর টাকা ও এক কাবের চার ভাগের এক ভাগ পায়রার মল পাঁচটি রুপোর টাকা দাম হল।
\v 26 ইস্রায়েলের রাজা একদিন নগরের দেয়ালের উপর দিয়ে যাচ্ছিলেন, এমন সময় একজন স্ত্রীলোক কাঁদতে কাঁদতে তাঁকে বলল, “হে আমার প্রভু মহারাজ, আমাকে রক্ষা করুন।”
\s5
\v 27 রাজা বললেন, “সদাপ্রভু যদি না রক্ষা করেন, আমি কোথা থেকে তোমাকে রক্ষা করব? খামার থেকে, না আঙ্গুর মাড়াইয়ের যন্ত্র থেকে?”
\v 28 রাজা আরও বললেন, “তোমার কি হয়েছে?” উত্তরে সে বলল, “এই স্ত্রীলোকটি আমাকে বলেছিল, ‘তোমার ছেলেটিকে দাও, আজ আমরা তাকে খাই, কাল আমার ছেলেটিকে খাব।’
\v 29 তখন আমরা আমার ছেলেটিকে রান্না করে খেলাম। পরের দিন আমি তাকে বললাম, ‘তোমার ছেলেটিকে দাও, আমরা খাই, কিন্তু এ তার ছেলেকে লুকিয়ে রেখেছে।”
\s5
\v 30 স্ত্রীলোকটির এই কথা শুনে রাজা তাঁর পোশাক ছিঁড়লেন; তখনও তিনি দেওয়ালের উপর দিয়ে হাঁটছিলেন; তাতে লোকেরা দেখতে পেল যে, পোশাকের নিচে তাঁর গায়ে চট বাঁধা।
\v 31 পরে তিনি বললেন, “আজ যদি শাফটের ছেলে ইলীশায়ের মাথা তার কাঁধে থাকে, তবে ঈশ্বর যেন আমাকে ঐ রকম ও তার থেকে বেশি শাস্তি দেন।”
\s5
\v 32 ইলীশায় তখন তাঁর গৃহে বসে ছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে প্রাচীনেরা বসেছিলেন; ইতিমধ্যে রাজা তাঁর সামনে থেকে একজন লোক পাঠালেন। কিন্তু সেই দূতটি সেখানে পৌঁছাবার আগেই ইলীশায় প্রাচীনদের বললেন, “তোমরা কি দেখতে পাচ্ছ, সেই খুনীর ছেলে আমার মাথা কেটে ফেলবার জন্য লোক পাঠিয়েছে? দেখ, সেই দূত এলে দরজা বন্ধ কোরো এবং তার সামনেই দরজাটি বন্ধ করবে; তার মালিকের পায়ের শব্দ কি তার পিছু পিছু শোনা যাচ্ছে না?”
\v 33 তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলছেন, এমন সময়ে দেখ, দূতটি তাঁর কাছে এল; তারপর রাজা বললেন, “দেখ, এই বিপদ সদাপ্রভুর কাছ থেকেই হল, তবে আমি কেন সদাপ্রভুর অপেক্ষা করব?”
\s5
\c 7
\p
\v 1 ইলীশায় বললেন, “তোমরা সদাপ্রভুর বাক্য শোনো। তিনি এই কথা বলেন, ‘আগামী কাল এই সময়ে শমরিয়ার ফটকে শেকলে এক পসুরী সূজী ও শেকলে দুই পসুরী যব বিক্রি হবে’।”
\v 2 তখন রাজা যে সেনাপতির ওপর নির্ভর করেছিলেন, তিনি উত্তরে ঈশ্বরের লোককে বললেন, “দেখ, সদাপ্রভু যদি আকাশের জানালাও খুলে দেন, তবুও কি এটা হতে পারে?” ইলীশায় উত্তর দিলেন, “তুমি নিজের চোখেই তা দেখতে পাবে, কিন্তু তার কিছুই তুমি খেতে পারবে না।”
\s5
\v 3 তখন নগরের ফটকে ঢোকার পথে চারজন কুষ্ঠরোগী ছিল। তারা একে অন্যকে বলল, “আমরা এখানে বসে থেকে কেন মরব?
\v 4 যদি বলি, নগরে যাব, তবে নগরের মধ্যে দুর্ভিক্ষ আছে, সেখানে মরব; আর যদি এখানে বসে থাকি তবুও মরব। এখন এস, আমরা অরামীয়দের শিবিরে যাই, যদি তারা আমাদের বাঁচায় তো বাঁচব, মেরে ফেলে তো মরব।”
\s5
\v 5 তখন তারা অরামীয়দের শিবিরে যাবার জন্য সন্ধ্যার সময় উঠল; যখন তারা অরামীয়দের শিবিরের শেষ প্রান্তে গিয়ে উপস্থিত হল, তখন সেখানে কেউ ছিল না।
\v 6 কারণ প্রভু অরামীয়দের সৈন্যদলকে রথ, ঘোড়া, ও মস্ত বড় সৈন্যের আওয়াজ শুনিয়েছিলেন; তাতে তারা একে অন্যকে বলেছিল, “দেখ, ইস্রায়েলের রাজা হিত্তীয় ও মিসরীয় রাজাদের টাকা দিয়েছে, যেন তারা আমাদের আক্রমণ করে।”
\s5
\v 7 তাই তারা সন্ধ্যাবেলা উঠে পালিয়েছিল; তাদের শিবির, ঘোড়া, গাধা সব যেমন ছিল, তেমনি ফেলে রেখে নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্য পালিয়ে গিয়েছিল।
\v 8 পরে ঐ কুষ্ঠীরোগীরা শিবিরের শেষ প্রান্তে এসে একটি তাঁবুর ভিতরে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করল এবং সেখান থেকে রুপো, সোনা ও পোশাক নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখল; পরে আবার এসে আর একটি তাঁবুতে মধ্যে ঢুকে সেখান থেকে জিনিসপত্র নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখল।
\s5
\v 9 পরে তারা একে অন্যকে বলল, “আমাদের এই কাজটি করা ভাল নয়; আজ সুখবরের দিন, কিন্তু আমরা চুপ করে আছি; যদি সকাল পর্যন্ত দেরি করি, তবে শাস্তি আমাদের উপর নেমে আসবে। এখন এস, আমরা গিয়ে রাজবাড়ীতে খবরটা দিই।”
\v 10 পরে তারা গিয়ে নগরের ফটকের পাহারাদারদের ডেকে তাদেরকে খবর দিল যে, “আমরা অরামীয়দের শিবিরে গিয়েছিলাম; আর দেখ, সেখানে কেউ নেই, মানুষের শব্দও নেই, কেবল ঘোড়াগুলি আর গাধাগুলি বাঁধা, আর তাঁবুগুলি যেমন ছিল, তেমনি আছে।”
\v 11 তাতে পাহারাদারদের ডাকা হলে তারা ভিতরে রাজবাড়ীতে খবর দিল।
\s5
\v 12 পরে রাজা রাতের বেলা উঠে তাঁর দাসেদের বললেন, “অরামীয়েরা আমাদের প্রতি যা করেছে, তা আমি তোমাদের বলি; তারা জানে, আমরা যে না খেয়ে আছি, তাই তারা মাঠে গিয়ে লুকিয়ে থাকার জন্য শিবির থেকে বাইরে গেছে, আর বলেছে, ‘ওরা যখন নগর থেকে বাইরে আসবে, তখন আমরা তাদের জীবিত ধরব ও নগরের মধ্যে ঢুকব’।”
\v 13 তখন তাঁর দাসেদের মধ্যে একজন দাস উত্তর দিয়ে বলল, “তবে অনুরোধ করি, কয়েকজন লোক শহরে যে ঘোড়াগুলি অবশিষ্ট আছে তার মধ্য থেকে পাঁচটা ঘোড়া নিয়ে দেখুক যে, তারা এবং নগরের বাকি সব ইস্রায়েলের অবশিষ্ট লোকের সমান, অনেকে তো এখন মৃত, কাজেই আমরা তাদের একবার পাঠিয়ে দেখি।”
\s5
\v 14 পরে তারা ঘোড়া সুদ্ধ দুটি রথ বেছে নিল; রাজা অরামীয় সৈন্যদের খোঁজে তাদের পাঠিয়ে বললেন, “যাও, গিয়ে দেখ।”
\v 15 তাতে তারা যর্দন পর্যন্ত তাদের পিছু পিছু গেল, আর দেখল অরামীয়েরা তাড়াতাড়িতে যা যা ফেলে গেছে, সেই সব পোশাক ও পাত্রে সমস্ত রাস্তা ভর্তি। তখন দূতেরা ফিরে এসে রাজাকে সব খবর দিল।
\s5
\v 16 আর লোকেরা বাইরে গিয়ে অরামীয়দের শিবির লুট করল; তাতে সদাপ্রভুর বাক্য অনুসারে শেকলে এক পসুরী সূজী এবং শেকলে দুই পসুরী যব বিক্রি হল।
\v 17 আর রাজা যে সেনাপতির ওপর নির্ভর করেছিলেন, তাঁকে তিনি নগরের ফটকের অধ্যক্ষ করে দিলেন; কিন্তু লোকেরা ফটকের কাছে তাদের পায়ের তলায় চাপা দিয়ে তাকে মেরে ফেলল; ঈশ্বরের লোকের কাছে রাজা যখন গিয়েছিলেন, তখন ঈশ্বরের লোক যা বলেছিলেন, তাই সফল হল।
\s5
\v 18 ঈশ্বরের লোক রাজাকে বলেছিলেন, “আগামী কাল এই সময়ে শমরিয়ার ফটকে শেকলে দুই পসুরী যব এবং শেকলে এক পসুরী সূজী বিক্রি হবে।”
\v 19 আর ঐ সেনাপতি উত্তরে ঈশ্বরের লোককে বলেছিলেন, “দেখ, সদাপ্রভু যদি আকাশের জানালাও খুলে দেন তবুও কি এটা হতে পারে?” ইলীশায় বলেছিলেন, “তুমি নিজের চোখেই তা দেখতে পাবে, কিন্তু তার কিছুই তুমি খেতে পারবে না।”
\v 20 তাঁর, সেই দশা ঘটল, কারণ ফটকে লোকদের পায়ের তলায় চাপা পড়ার ফলে তিনি মারা গেলেন৷
\s5
\c 8
\s আরও দুটি ঘটনা।
\p
\v 1 ইলীশায় যে স্ত্রীলোকটির ছেলেকে জীবিত করে তুলেছিলেন, তাঁকে বলেছিলেন, “তুমি তোমার পরিবার নিয়ে যেখানে পার সেখানে গিয়ে বাস কর; কারণ সদাপ্রভু দুর্ভিক্ষ পাঠাবেন, আর তা সাত বছর পর্যন্ত এই দেশে থাকবে।”
\v 2 তাতে সেই স্ত্রীলোকটি উঠে ঈশ্বরের লোকের বাক্য অনুসারে কাজ করলেন; তিনি ও তাঁর পরিবার সেখান থেকে গিয়ে সাত বছর পলেষ্টীয়দের দেশে বাস করলেন।
\s5
\v 3 সাত বছরের শেষে সেই স্ত্রীলোকটি পলেষ্টীয়দের দেশ থেকে ফিরে এসে তাঁর বাড়ী ও জমি ফেরৎ চাওয়ার জন্য রাজার কাছে কাঁদতে গেল।
\v 4 ঐ সময় রাজা ঈশ্বরের লোকের চাকর গেহসির সঙ্গে কথা বলছিলেন; তিনি বললেন, “ইলীশায় যে সব মহান কাজ করেছেন, সেই সব ঘটনা আমাকে বল।”
\s5
\v 5 তাতে ইলীশায় কিভাবে মৃতকে জীবিত করেছিলেন, রাজাকে তার বর্ণনা দিচ্ছিলেন, তখন যাঁর ছেলেকে তিনি জীবিত করেছিলেন, সেই স্ত্রীলোকটি রাজার কাছে তাঁর বাড়ী ও জমির জন্য এসে কাঁদতে লাগলেন। গেহসি তখন বলল, “হে আমার প্রভু মহারাজ, এই সেই স্ত্রীলোক এবং এই তাঁর ছেলে, যাকে ইলীশায় বাঁচিয়ে তুলেছিলেন।”
\v 6 আর রাজা স্ত্রীলোকটিকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি তাঁকে সব কথা বললেন। আর রাজা তাঁর পক্ষে একজন কর্মচারীকে নিযুক্ত করে বললেন, “তার সব কিছু এবং এ যে দিন থেকে দেশ ছেড়েছে, সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত তার জমিতে যা ফসল উত্পন্ন হয়েছে তা ফিরিয়ে দাও।”
\s5
\v 7 এক সময় ইলীশায় দম্মেশকে উপস্থিত হলেন। তখন অরামের রাজা বিন্‌হদদ অসুস্থ ছিলেন; তিনি খবর পেলেন যে, “ঈশ্বরের লোকটি এখানে এসেছেন।”
\v 8 রাজা তখন হসায়েলকে বললেন, “তুমি একটা উপহার নিয়ে ঈশ্বরের লোকের সঙ্গে দেখা করতে যাও এবং তাঁর মধ্যে দিয়ে সদাপ্রভুকে জিজ্ঞাসা কর, আমি কি এই অসুখে বাঁচব?”
\v 9 পরে হসায়েল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। তিনি উপহার সঙ্গে নিয়ে, এমন কি, দম্মেশকের সবচেয়ে ভাল ভাল জিনিস চল্লিশটি উটের পিঠে বোঝাই করে নিয়ে এসে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “আপনার ছেলে অরামের রাজা বিন্‌হদদ আপনার কাছে আমাকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘আমি কি এই অসুখে বাঁচব’?”
\s5
\v 10 ইলীশায় তাঁকে বললেন, “আপনি গিয়ে তাঁকে বলুন যে, আপনি অবশ্যই সুস্থ হবেন; কিন্তু সদাপ্রভু আমার কাছে প্রকাশ করেছেন যে, তিনি অবশ্যই মারা যাবেন।”
\v 11 আর হসায়েল লজ্জা না পাওয়া পর্যন্ত তিনি তার দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকলেন; তারপর ঈশ্বরের লোক কাঁদতে লাগলেন।
\v 12 হসায়েল জিজ্ঞাসা করলেন, “আমার প্রভু কেন কাঁদছেন?” উত্তরে তিনি বললেন, “কারণ আপনি ইস্রায়েল সন্তানদের কি ক্ষতি করবেন তা আমি জানি; আপনি তাদের মজবুত দুর্গগুলি আগুনে পোড়াবেন, তরোয়ালের ঘায়ে তাদের যুবকদের মেরে ফেলবেন, তাদের শিশুদেরকে ধরে আছাড় মারবেন এবং তাদের গর্ভবতী স্ত্রীলোকদের পেট চিরে দেবেন।”
\s5
\v 13 হসায়েল বললেন, “আপনার এই কুকুরের মত দাস কে যে, এমন বড় কাজ করবে?” ইলীশায় বললেন, “সদাপ্রভু আমাকে দেখিয়েছেন যে, আপনি অরামের রাজা হবেন।”
\v 14 তখন তিনি ইলীশায়ের কাছ থেকে তাঁর মনিবের কাছে চলে গেলেন; রাজা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “ইলীশায় তোমাকে কি বলেছেন?” হসায়েল বললেন, “তিনি আমাকে বলেছেন, আপনি নিশ্চয়ই সুস্থ হবেন।”
\v 15 কিন্তু তার পরের দিন হসায়েল কম্বল জলে ডুবিয়ে রাজার মুখের উপর চাপা দিলেন, তাতে রাজা মারা গেলেন এবং হসায়েল তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s যিহূদার যিহোরাম ও অহসিয় রাজার বর্ণনা।
\p
\s5
\v 16 ইস্রায়েলের রাজা আহাবের ছেলে যোরামের রাজত্বের পঞ্চম বছরে যখন যিহোশাফট যিহূদার রাজা ছিলেন, তখন যিহূদার রাজা যিহোশাফটের ছেলে যিহোরাম রাজত্ব করতে শুরু করেন।
\v 17 যিহোরাম বত্রিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করে আট বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেন।
\s5
\v 18 আহাবের বংশের লোকদের মতই তিনি ইস্রায়েলের রাজাদের পথে চলতেন, কারণ তিনি আহাবের মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন; ফলে সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ, তিনি তাই করতেন।
\v 19 তবুও সদাপ্রভু নিজের দাস দায়ূদের কথা মনে করে যিহূদাকে ধ্বংস করতে চাইলেন না, তিনি তো দায়ূদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, তাঁকে তাঁর সন্তানদের জন্য চিরকাল একটি প্রদীপ দেবেন।
\s5
\v 20 তাঁর সময়ে ইদোম যিহূদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নিজেদের জন্য একজন রাজা ঠিক করল।
\v 21 তাই যোরাম তাঁর সব রথ সঙ্গে নিয়ে সায়ীরে গেলেন; আর রাতের বেলায় উঠে, যারা তাঁকে ঘিরে ছিল, সেই ইদোমীয়দেরকে ও তাদের রথের সেনাপতিদেরকে আঘাত করলেন, আর সেই লোকেরা নিজেদের তাঁবুতে পালিয়ে গেল।
\s5
\v 22 এইভাবে ইদোম আজও যিহূদার বিদ্রোহী হয়ে আছে। আর ঐ একই সময়ে লিব্‌নাও বিদ্রোহ করল।
\v 23 যোরামের বাকি সমস্ত কাজের কথা যিহূদার রাজাদের ইতিহাস বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 24 পরে যোরাম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রাগত হলেন এবং তাঁকে দায়ূদ নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে অহসিয় তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\v 25 ইস্রায়েলের রাজা আহাবের ছেলে যোরামের রাজত্বের বারো বছরের সময় যিহূদার রাজা যিহোরামের ছেলে অহসিয় রাজত্ব করতে শুরু করেন।
\v 26 অহসিয় বাইশ বছর বয়সে রাজত্ব শুরু করে এক বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেন। তাঁর মা অথলিয়া, তিনি ইস্রায়েলের রাজা অম্রির নাতনী।
\v 27 অহসিয় আহাবের বংশের লোকেদের পথে চলতেন, সদাপ্রভুর চোখে যা খারাপ, আহাবের বংশের মত তাই করতেন, কারণ তিনি আহাবের বংশের জামাই ছিলেন।
\s5
\v 28 তিনি আহাবের ছেলে যোরামের সঙ্গে অরামের রাজা হসায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য রামোৎ-গিলিয়দে গেলেন; তাতে অরামীয়েরা যোরামকে আঘাত করল।
\v 29 অতএব যোরাম রাজা অরামের রাজা হসায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময়ে রামাতে অরামীয়েরা তাঁকে যে সব আঘাত করে, তা থেকে ভাল হবার জন্য যিষ্রিয়েলে ফিরে গেলেন; আর আহাবের ছেলে যোরাম আঘাত পেয়েছিলেন বলে যিহূদার রাজা যিহোরামের ছেলে অহসিয় তাঁকে দেখতে যিষ্রিয়েলে নেমে গেলেন।
\s5
\c 9
\s যেহূর বর্ণনা। আহাব বংশের বিনাশ।
\p
\v 1 তখন ইলীশায় ভাববাদী ভাববাদীদের সন্তানদের একজন শিষ্য ভাববাদীকে ডেকে বললেন, “তুমি কোমর বেঁধে নাও এবং এই তেলের শিশিটি নিয়ে রামোৎ-গিলিয়দে যাও।
\v 2 সেখানে গিয়ে নিম্‌শির নাতি যিহোশাফটের ছেলে যেহূর খোঁজ কর এবং কাছে গিয়ে তাঁকে তাঁর ভাইদের মধ্যে থেকে উঠিয়ে একটি ভিতরের কুঠরীতে নিয়ে যাও।
\v 3 তারপর তেলের শিশিটি নিয়ে তাঁর মাথায় তেল ঢেলে দিয়ে বল, সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘ইস্রায়েলের উপরে আমি তোমাকে রাজা হিসাবে অভিষেক করলাম।’ পরে তুমি দরজা খুলে পালিয়ে যাবে, দেরি করবে না।”
\s5
\v 4 তখন সেই যুবক, সেই যুবক ভাববাদী, রামোৎ-গিলিয়দে গেল।
\v 5 সে সেখানে পৌঁছে দেখল, সেনাপতিরা এক জায়গায় বসে ছিলেন। সে বলল, “সেনাপতি, আপনার জন্য আমার কিছু খবর আছে।” যেহূ বললেন, “আমাদের সকলের মধ্যে কার জন্য?” সে বলল, “সেনাপতি, আপনার জন্য।”
\v 6 তখন যেহূ উঠে গৃহে র মধ্যে গেলেন। তাতে সে তাঁর মাথায় তেল ঢেলে তাঁকে বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘আমি সদাপ্রভুর প্রজাদের উপরে, ইস্রায়েলের উপরে, তোমাকে রাজা হিসাবে অভিষেক করলাম।
\s5
\v 7 তুমি তোমার মনিব আহাবের বংশকে ধ্বংস করবে এবং আমি আমার ভাববাদীদের রক্তের প্রতিশোধ ও সদাপ্রভুর সব দাসদের রক্তের প্রতিশোধ ঈষেবলের হাত থেকে নেব।
\v 8 কারণ আহাবের বংশের সবাই ধ্বংস হবে; আহাবের বংশের প্রত্যেকটি পুরুষকে, ইস্রায়েলের মধ্যে দাস বা স্বাধীন লোককে, আমি উচ্ছেদ করব।
\s5
\v 9 আর আহাবের বংশকে নবাটের ছেলে যারবিয়ামের বংশের ও অহিয়ের ছেলে বাশার বংশের সমান করব।
\v 10 আর কুকুরেরা ঈষেবলকে যিষ্রিয়েলের জমিতে খাবে, তাকে কেউ কবর দেবে না’।” পরে সেই যুবক দরজা খুলে পালিয়ে গেল।
\s5
\v 11 তখন যেহূ তাঁর মনিবের দাসেদের কাছে বাইরে এলে একজন তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “সব কিছু ভাল তো? ঐ পাগলটা তোমার কাছে কেন এসেছিল?” তিনি বললেন, “তোমরা তো তাকে চেন, সে কি রকম কথা বলে তাও জান।”
\v 12 তারা বলল, “এই কথা মিথ্যা, আমাদের সত্যি বল।” তখন তিনি বললেন, “সে আমাকে বলল, সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে আমি তোমাকে অভিষেক করলাম’।”
\v 13 তখন তারা তাড়াতাড়ি করে তাদের গায়ের কাপড় খুলে সিঁড়ির উপর তাঁর পায়ের নীচে পেতে দিল এবং তূরী বাজিয়ে বলল, “যেহূ রাজা হলেন।”
\s5
\v 14 এইভাবে নিম্‌শির নাতি যিহোশাফটের ছেলে যেহূ যোরামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। সেই সময় যোরাম ও সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা অরামের রাজা হসায়েলের থেকে রামোৎ-গিলিয়দ রক্ষা করেছিলেন;
\v 15 কিন্তু অরামের রাজা হসায়েলের সঙ্গে যোরামের রাজার যুদ্ধের সময় অরামীয়েরা তাঁকে যেসব আঘাত করেছিল, তা থেকে সুস্থ হয়ে উঠার জন্য তিনি যিষ্রিয়েলে ফিরে গিয়েছিলেন। পরে যেহূ যোরামের দাসেদের বললেন, “যদি তোমরা একমত হও, তবে যিষ্রিয়েলে খবর দেবার জন্য কাউকে পালিয়ে এই নগর থেকে বেরতে দিও না।”
\v 16 তারপর যেহূ রথে চড়ে যিষ্রিয়েলে গেলেন, কারণ যোরাম সেখানে বিছানায় শুয়ে ছিলেন। আর যিহূদার রাজা অহসিয় যোরামকে দেখতে নেমে গিয়েছিলেন।
\s5
\v 17 তখন যিষ্রিয়েলের দুর্গের উপর পাহারাদার দাঁড়িয়েছিল; যেহূর আসার সময়ে সে তাঁর দলকে দেখে বলল, “আমি একটি দল দেখছি।” যোরাম বললেন, “তাদের সঙ্গে দেখা করতে একজন ঘোড়াচালককে পাঠিয়ে দাও, সে গিয়ে জিজ্ঞাসা করুক, ‘সব কিছু ঠিক আছে তো’?”
\v 18 পরে একজন ঘোড়াচালক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বলল, “রাজা জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘সব কিছু ঠিক আছে তো’?” যেহূ বললেন, “মঙ্গল নিয়ে তোমার দরকার কি? তুমি আমার পিছনে পিছনে এস।” পরে পাহারাদার এই খবর দিল, “সেই দূত তাদের কাছে গেল ঠিকই, কিন্তু ফিরে এলো না।”
\s5
\v 19 তখন রাজা আর একজনকে ঘোড়ায় করে পাঠালেন; সে তাদের কাছে গিয়ে বলল, “রাজা জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘সব কিছু ঠিক আছে তো’?” যেহূ বললেন, “মঙ্গল নিয়ে তোমার দরকার কি? তুমি আমার পিছনে পিছনে এস।”
\v 20 সেই পাহারদারটি খবর দিল, “এই লোকটি তাদের কাছে গেল, কিন্তু সেও এলো না; আর রথ চালানো দেখে মনে হচ্ছে নিম্‌শির নাতি যেহূ, কারণ সে পাগলের মতই রথ চালায়।”
\s5
\v 21 তখন যোরাম বললেন, “রথ সাজাও।” তখন তারা তাঁর রথ সাজাল। তারপর ইস্রায়েলের রাজা যোরাম ও যিহূদার রাজা অহসিয় নিজের নিজের রথে চড়ে যেহূর সঙ্গে দেখা করবার জন্য বের হলেন। যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের জমিতে তাঁর দেখা পেলেন।
\v 22 যোরাম যেহূকে দেখেই জিজ্ঞাসা করলেন, “যেহূ, সব কিছু ঠিক আছে তো?” উত্তরে তিনি বললেন, “যতক্ষণ তোমার মা ঈষেবলের ব্যভিচার ও যাদুবিদ্যা থাকে, সে পর্যন্ত মঙ্গল কি করে হতে পারে?”
\s5
\v 23 তখন যোরাম ঘুরে পালাবার সময় অহসিয়কে ডেকে বললেন, “হে অহসিয়, বিশ্বাসঘাতকতা।”
\v 24 পরে যেহূ তাঁর সমস্ত শক্তি দিয়ে ধনুকে টান দিয়ে যোরামের দুই কাঁধের মাঝখানে তীর ছুঁড়লেন, আর তির গিয়ে তাঁর হৃদপিণ্ডে বিঁধল, তাতে তিনি তাঁর রথের মধ্যে নিচু হয়ে পড়ে গেলেন।
\s5
\v 25 তখন যেহূ তাঁর সেনাপতি বিদ্‌করকে বললেন, “তুমি ওকে তুলে নিয়ে যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের জমিতে ফেলে দাও; কারণ মনে করে দেখ, আমি আর তুমি তাঁর বাবা আহাবের পিছনে ঘোড়ায় করে যখন যাচ্ছিলাম, তখন সদাপ্রভু তাঁর বিরুদ্ধে এই ভাববাণী বলেছিলেন,
\v 26 ‘গতকাল আমি নাবোত ও তার ছেলেদের রক্ত দেখেছি, এটাই সদাপ্রভু বলেন, আর সদাপ্রভু বলেন, ‘এই জমিতে তোমার আমি প্রতিশোধ নেব।’ অতএব, তুমি এখন সদাপ্রভুর কথা অনুসারে ওকে তুলে নিয়ে ঐ জমিতে ফেলে দাও।”
\s5
\v 27 তখন যিহূদার রাজা অহসিয় তা দেখে বাগানবাড়ির পথ ধরে পালিয়ে গেলেন; আর যেহূ তাঁর পিছনে যেতে যেতে বললেন, “ওকেও রথের মধ্যে আঘাত কর,” তখন তারা যিব্‌লিয়মের কাছে গূরের নামে উঠবার পথে তাঁকে আঘাত করল; পরে তিনি মগিদ্দোতে পালিয়ে গিয়ে সেখানে মারা গেলেন।
\v 28 আর তাঁর দাসেরা তাঁকে রথে করে যিরূশালেমে নিয়ে গিয়ে দায়ূদ নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁর কবরে তাঁকে কবর দিল।
\s5
\v 29 আহাবের ছেলে অহসিয় যিহোরামের রাজত্বের এগারো বছরে যিহূদার রাজত্ব শুরু করেছিলেন।
\s5
\v 30 পরে যেহূ যিষ্রিয়েলে গেলেন; ঈষেবল সেই কথা শুনে চোখে কাজল দিয়ে সুন্দর করে চুল বেঁধে জানলা দিয়ে দেখছিল
\v 31 এবং যেহূ ফটক দিয়ে ঢুকলে সে তাঁকে বলল, “ওহে সিম্রি! নিজের মনিবের হত্যাকারী! মঙ্গল তো?”
\v 32 যেহূ তখন উপরে জানলার দিকে তাকিয়ে বললেন, “আমার পক্ষে কে? কে?” তখন দুই তিনজন নপুংসক তাঁর দিকে চেয়ে দেখল।
\s5
\v 33 আর তিনি আদেশ দিলেন, “ওকে নীচে ফেলে দাও।” তারা ঈষেবলকে নীচে ফেলে দিল, আর তাঁর রক্ত ছিট্‌কে গিয়ে দেয়ালে আর ঘোড়ার গায়ে ছিটকে পড়ল; যেহূ তাকে পা দিয়ে মাড়িয়ে গেলেন।
\v 34 তারপর যেহূ ভিতরে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করলেন; আর বললেন, “তোমরা ঐ অভিশপ্তাকে কবর দাও, কারণ সে একজন রাজকন্যা।”
\s5
\v 35 এতে লোকেরা তাকে কবর দিতে গেল, কিন্তু তার মাথার খুলি, হাত ও পা ছাড়া আর কিছুই পেল না।
\v 36 কাজেই তারা ফিরে গিয়ে তাঁকে খবর দিলে তিনি বললেন, “এটা সদাপ্রভুর বাক্য অনুসারে হল, তিনি তাঁর দাস তিশ্‌বীয় এলিয়ের মধ্যে দিয়ে এই কথা বলেছিলেন, ‘যিষ্রিয়েলের জমিতে কুকুরেরা ঈষেবলের মাংস খাবে
\v 37 এবং যিষ্রিয়েলের জমিতে ঈষেবলের মৃতদেহ এমন সারের মত পড়ে থাকবে যে, কেউ বলতে পারবে না যে, এটাই ঈষেবল’।”
\s5
\c 10
\p
\v 1 শমরিয়াতে আহাবের সত্তরজন ছেলে ছিল। যেহূ চিঠি লিখে শমরিয়াতে যিষ্রিয়েলের শাসনকর্তাদের অর্থাৎ প্রাচীনদের কাছে এবং আহাবের ছেলেদের অভিভাবকদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি লিখলেন,
\v 2 “তোমাদের মনিবের ছেলেরা তোমাদের কাছে আছে এবং কতকগুলি রথ, ঘোড়া, একটি সুরক্ষিত নগর এবং অস্ত্রশস্ত্রও আছে।
\v 3 তাই তোমাদের কাছে এই চিঠি পৌঁছানো মাত্রই তোমাদের মনিবের সব চেয়ে সৎ ও যোগ্য ছেলেকে বেছে তার বাবার সিংহাসনে বসাও এবং নিজের মনিবের বংশের জন্য যুদ্ধ কর।”
\s5
\v 4 কিন্তু তারা ভীষণ ভয় পেয়ে বলল, “দেখ, দুজন রাজা যাঁর সামনে দাঁড়াতে পারলেন না, তাঁর সামনে আমরা কি করে দাঁড়াবো?”
\v 5 কাজেই রাজবাড়ীর শাসনকর্তা, নগরের শাসনকর্তা, প্রাচীনেরা ও অভিভাবকেরা যেহূকে এই কথা বলে পাঠাল, “আমরা আপনার দাস, আপনি আমাদের যা বলবেন, সে সবই করব, কাউকেই রাজা করব না; আপনি যা ভাল মনে করেন তাই করুন।”
\s5
\v 6 পরে তিনি তাদের কাছে এই বলে দ্বিতীয় চিঠি লিখলেন, “তোমরা যদি আমার পক্ষে হও ও আমার কথা শোনো, তবে তোমাদের মনিবের ছেলেদের মাথাগুলি নিয়ে আগামীকাল এই সময়ে যিষ্রিয়েলে আমার কাছে চলে এস।” সেই রাজকুমারের সত্তরজন, তারা তাদের নগরের প্রধান লোকদের কাছে ছিল, যারা তাদের দেখাশোনা করত।
\v 7 আর চিঠিটি তাদের কাছে পৌঁছালে তারা সেই সত্তরজন রাজকুমারকে হত্যা করল এবং কতগুলি ঝুড়িতে করে তাদের মাথাগুলি যিষ্রিয়েলে তাঁর কাছে পাঠিয়ে দিল।
\s5
\v 8 পরে একজন দূত এসে তাঁকে খবর দিয়ে বলল, “রাজকুমারদের মাথা আনা হয়েছে।” তিনি বললেন, “ওগুলি দুটি স্তরে গাদা করে ফটকে ঢুকবার পথে সকাল পর্যন্ত রেখে দাও।”
\v 9 পরে সকালে তিনি বাইরে গিয়ে দাঁড়ালেন ও সবাইকে বললেন, “তোমরা নির্দোষ ব্যক্তি; দেখ, আমি আমার মনিবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাঁকে মেরে ফেলেছি; কিন্তু এদের কে হত্যা করল?
\s5
\v 10 তোমরা জেনে রাখ, সদাপ্রভু আহাবের বংশের বিরুদ্ধে যা কিছু বলেছেন, সদাপ্রভুর বলা একটা কথাও মাটিতে পরার নয়; কারণ সদাপ্রভু তাঁর দাস এলিয়ের মাধ্যমে যা কিছু বলেছেন, তাই করলেন।”
\v 11 পরে যিষ্রিয়েলে আহাবের বংশের যত লোক বাকী ছিল, যেহূ তাঁদেরকে, তাঁর সমস্ত গণ্যমান্য লোককে, তাঁর বিশেষ বন্ধুদেরকে ও তাঁর যাজকদেরকে হত্যা করলেন। তাঁদের নিকটতম কেউ বেঁচে ছিল না।
\s5
\v 12 পরে তিনি উঠে চলে গেলেন, শমরিয়ার গেলেন। পথে মেষপালকদের মেষের লোম কাটার গৃহে গেলে, যিহূদার রাজা অহসিয়ের ভাইদের সঙ্গে যেহূর দেখা হল।
\v 13 তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কারা?” তারা বলল, “আমরা অহসিয়ের ভাই; আমরা রাজা ও রাণী ঈষেবলের সন্তানদেরকে শুভেচ্ছা জানাতে যাচ্ছি।”
\v 14 তখন তিনি বললেন, “ওদের জীবন্ত ধর।” তাতে লোকেরা তাদের জীবন্ত ধরে মেষের লোম কাটার গৃহে র কূয়ার কাছে তাদের হত্যা করল, বিয়াল্লিশজনের মধ্যে একজনকেও তিনি বাকি রাখলেন না।
\s5
\v 15 যেহূ সেখান থেকে চলে গেলে রেখবের ছেলে যিহোনাদবের সঙ্গে তাঁর দেখা হল; তিনি তাঁরই কাছে আসছিলেন। যেহূ তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বললেন, “তোমার প্রতি আমার মন যেমন, তেমনি কি তোমার মন সরল?” যিহোনাদব বললেন, “সরল।” যেহূ বললেন, “যদি তাই হয়, তবে তোমার হাত দাও।” পরে যিহোনাদব তাঁকে হাত দিলে যেহূ তাঁকে নিজের কাছে রথে তুলে নিলেন।
\v 16 আর যেহূ বললেন, “আমার সঙ্গে চল, সদাপ্রভুর জন্য আমার যে আগ্রহ, তা দেখ;” এইভাবে তাঁকে তাঁর রথে করে নিয়ে চললেন।
\v 17 পরে যেহূ শমরিয়াতে এসে আহাবের বংশের বাকী সব লোকদের হত্যা করলেন, যে পর্যন্ত না আহাবের বংশকে একেবারে ধ্বংস করলেন; সদাপ্রভু এলিয়কে যেমন বলেছিলেন, সেই অনুসারেই করলেন।
\s5
\v 18 তারপর যেহূ সমস্ত লোকদের জড়ো করে তাদের বললেন, “আহাব বাল দেবতার সেবা সামান্যই করতেন, কিন্তু যেহূ তাঁর সেবা অনেক বেশী করবে।
\v 19 তাই এখন বাল দেবতার সব ভাববাদী, তাঁর সমস্ত পূজারী ও যাজকদের আমার কাছে তোমরা ডেকে আন, যেন কেউ বাদ না পড়ে; কারণ বাল দেবতার উদ্দেশ্যে আমাকে বড় যজ্ঞ করতে হবে। যে কেউ যদি আসবে না, সে বাঁচবে না।” কিন্তু আসলে যেহূ বাল দেবতার পূজাকারীদের ধ্বংস করবার জন্যই এই ছলনা করেছিলেন।
\v 20 পরে যেহূ বললেন, “বাল দেবতার উদ্দেশ্যে একটা সভা ডাক।” তারা পর্ব ঘোষণা করে দিল।
\s5
\v 21 আর যেহূ ইস্রায়েলের সব জায়গায় লোক পাঠালে বাল দেবতার সমস্ত পূজাকারীরা এসে হাজির হল, কেউই অনুপস্থিত থাকলো না। তারা বাল দেবতার মন্দিরে ঢুকলে মন্দিরের এপাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত লোকে ভরে গেল।
\v 22 তখন তিনি পোশাক রক্ষককে বললেন, “বাল দেবতার পূজাকারী সকলের জন্য পোশাক নিয়ে এস।” তাতে সে তাদের জন্য পোশাক বের করে আনল।
\s5
\v 23 তারপর যেহূ ও রেখবের ছেলে যিহোনাদব বাল দেবতার মন্দিরে ঢুকলেন; তিনি বাল দেবতার পূজাকারীদের বললেন, “তোমরা ভাল করে খুঁজে দেখ, যাতে সদাপ্রভুর দাসদের মধ্যে কেউ এখানে না থাকে, শুধু বাল দেবতার পূজাকারীরাই থাকবে।”
\v 24 তখন তারা বলিদান ও হোম করতে ভেতরে গেলেন। এদিকে যেহূ আশিজন লোককে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে বলেছিলেন, “আমি তোমাদের হাতে ঐ যাদের ভার দিলাম, তাদের একজনও যদি পালিয়ে বাঁচে, তবে যে তাকে ছেড়ে দেবে তার প্রাণের বদলে তার প্রাণ যাবে।”
\s5
\v 25 পরে হোমের কাজ শেষ হলে যেহূ পাহারাদার ও সেনাপতিদের বললেন, “ভিতরে যাও, ওদের হত্যা কর, একজনকেও বাইরে আসতে দিও না।” তখন তারা তরোয়াল দিয়ে তাদের আঘাত করল; পরে পাহারাদার ও সেনাপতিরা তাদের বাইরে ফেলে দিল; পরে তারা বাল মন্দিরের ভিতরের গৃহে গেল।
\v 26 এবং বাল দেবতার মন্দির থেকে পাথরের পবিত্র থামগুলি তারা বের করে এনে পুড়িয়ে ফেলল।
\v 27 তারপর তারা বাল দেবতার থামটি ভেঙ্গে দিল এবং মন্দিরটা ভেঙ্গে ফেলল এবং সেখানে একটি পায়খানা তৈরী করলো। তা আজও আছে।
\v 28 এইভাবে যেহূ ইস্রায়েল বাল দেবতাকে ধংস করলেন এবং ইস্রায়েল থেকে এর পূজা বন্ধ করে দিলেন।
\s5
\v 29 কিন্তু নবাটের ছেলে যে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন অর্থাৎ বৈথেল ও দানের সোনার বাছুরের পূজা করার মত পাপ থেকে তিনি সরে আসেন নি।
\v 30 সুতরাং সদাপ্রভু যেহূকে বললেন, যেহেতু “আমার চোখে যা ঠিক তা তুমি করে ভাল করেছ এবং আহাবের বংশের প্রতি আমার যে ইচ্ছা ছিল তাও তুমি করেছ, সেইজন্য তোমার বংশধরেরা চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবে।”
\v 31 তবুও যেহূ সমস্ত হৃদয় দিয়ে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ব্যবস্থা মেনে চলবার জন্য সতর্ক হলেন না। যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন তা থেকে তিনি মন ফেরালেন না।
\s5
\v 32 সেই সময়ে সদাপ্রভু ইস্রায়েল দেশের সীমা কেটে ছোট করতে শুরু করলেন। হসায়েল ইস্রায়েলীয়দের আঘাত করে ইস্রায়েলের সীমানায় তাদের হারিয়ে দিলেন।
\v 33 সেই জায়গাগুলি হল যর্দনের পূর্ব দিকের অর্ণোন উপত্যকার পাশে অরোয়ের থেকে সমস্ত গিলিয়দ ও বাশন দেশ। এটা ছিল গাদ, রূবেণ ও মনঃশির এলাকা।
\s5
\v 34 যেহূর অন্যান্য সমস্ত অবশিষ্ট কাজের কথা এবং তাঁর জয়ের কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 35 পরে যেহূ তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তারা তাঁকে শমরিয়াতে কবর দিল। তখন তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে যিহোয়াহস রাজা হলেন।
\v 36 যেহূ শমরিয়াতে আটাশ বছর ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করেছিলেন।
\s5
\c 11
\s অথলিয়া রাণীর নিষ্ঠুরতা ও তার ফলাফল।
\p
\v 1 ইতিমধ্যে অহসিয়ের মা অথলিয়া যখন দেখল যে, তার ছেলে মারা গেছে, তখন সে উঠে সমস্ত রাজবংশকে ধ্বংস করল।
\v 2 কিন্তু রাজা যোরামের মেয়ে, অহসিয়ের বোন যিহোশেবা, অহসিয়ের ছেলে যোয়াশকে নিয়ে, নিহত রাজপুত্রদের মধ্য থেকে চুরি করে নিয়ে তাঁর ধাত্রীর সঙ্গে একটি শোবার গৃহে রাখলেন; তাঁরা অথলিয়ার কাছ থেকে তাঁকে লুকিয়ে রাখলেন, তাই তিনি মারা যান নি।
\v 3 আর তিনি তাঁর সঙ্গে ছয় বছর সদাপ্রভুর গৃহে লুকানো অবস্থায় ছিলেন; তখন দেশে অথলিয়া রাজত্ব করছিল।
\s5
\v 4 পরে সপ্তম বছরে যিহোয়াদা লোক পাঠিয়ে রক্ষীদলের ও পাহারাদারদের শতপতিদের ডেকে সদাপ্রভুর গৃহে তাদের কাছে আনলেন এবং তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করে সদাপ্রভুর গৃহে তাদেরকে শপথ করিয়ে রাজপুত্রকে দেখালেন।
\v 5 আর তিনি তাদের আদেশ দিয়ে বললেন, “তোমাদের যা করতে হবে তা এই, তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্রামবারে আসবে, তাদের তিন ভাগের এক ভাগ রাজবাড়ী পাহারা দেবে;
\v 6 এক ভাগ সূর ফটকে থাকবে এবং এক ভাগ পাহারাদারদের পিছনের ফটকে থাকবে। এইভাবে তোমরা আক্রমনের হাত থেকে বাঁচার জন্য গৃহে পাহারা দেবে।
\s5
\v 7 আর তোমাদের সবার, দুই দল রাজার সামনে সদাপ্রভুর গৃহে বিশ্রামবারে পাহারা দেবে।
\v 8 তোমরা প্রত্যেকে নিজের অস্ত্র হাতে নিয়ে রাজার চারপাশ ঘিরে থাকবে; আর যে কেউ সারির ভিতরে আসে, সে নিহত হবে এবং রাজা যখন বাইরে যান বা ভিতরে আসেন, তখন তোমরা তাঁর সঙ্গে থাকবে।”
\s5
\v 9 পরে যিহোয়াদা যাজক যা আদেশ করলেন, শতপতিরা তাই করল। তার ফলে তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের লোকদের নিয়ে, যারা বিশ্রামবারে ভিতরে যাওয়া আসা করে, তাদের নিয়ে যিহোয়াদা যাজকের কাছে আসল।
\v 10 পরে দায়ূদ রাজার যে সব বর্শা ও ঢাল সদাপ্রভুর গৃহে ছিল, সেগুলি যাজক নিয়ে শতপতিদের হাতে দিলেন।
\s5
\v 11 আর গৃহের ডান দিক থেকে বাম দিক পর্যন্ত যজ্ঞবেদীর ও গৃহের কাছে পাহারাদার সৈন্যরা প্রত্যেকে নিজের অস্ত্র হাতে রাজার চারিদিকে দাঁড়াল।
\v 12 পরে তিনি রাজপুত্রকে বের করে এনে তাঁর মাথায় মুকুট পরিয়ে দিয়ে তাঁর হাতে ব্যবস্থার বইটি দিলেন এবং তাঁরা তাঁকে রাজা হিসাবে অভিষেক করলেন; আর হাততালি দিয়ে বললেন, “রাজা চিরজীবী হোন।”
\s5
\v 13 তখন পাহারাদার ও লোকদের চিৎকার শুনে অথলিয়া সদাপ্রভুর গৃহে লোকদের কাছে এল;
\v 14 আর দেখল যে, নিয়ম অনুসারে রাজা মঞ্চের উপরে দাঁড়িয়ে আছেন। সেনাপতিরা ও তূরী বাদকেরা রাজার পাশে রয়েছে এবং দেশের সব লোক আনন্দ করছে ও তূরী বাজাচ্ছে। তখন অথলিয়া তার পোশাক ছিঁড়ে চিৎকার করে বলল, “বিশ্বাসঘাতকতা! বিশ্বাসঘাতকতা!”
\s5
\v 15 কিন্তু যিহোয়াদা যাজক যাদের উপর সৈন্যদলের ভার ছিল সেই শতপতিদের এই আদেশ দিলেন, “ওকে বের করে দুই সারির মাঝখান দিয়ে নিয়ে যাও; আর যে ওর পিছনে পিছনে যাবে, তাকে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করবে,” কারণ যাজক বলেছিলেন, সদাপ্রভুর গৃহের মধ্যে তাকে যেন হত্যা না করা হয়।
\v 16 পরে লোকেরা তার জন্য দুই সারি হয়ে পথ ছাড়লে সে ঘোড়া ফটকের পথ দিয়ে রাজবাড়ীতে ঢুকল এবং সেখানে হত হল।
\s5
\v 17 আর যিহোয়াদা সদাপ্রভুর এবং রাজার ও লোকদের মধ্যে এক চুক্তি করলেন, যেন তারা সদাপ্রভুর প্রজা হয়; রাজা ও লোকদের মধ্যেও একটি চুক্তি করলেন।
\v 18 তারপর দেশের সমস্ত লোক বাল দেবতার মন্দিরে গিয়ে সেটা ভেঙ্গে ফেলল এবং তার যজ্ঞবেদী ও মূর্তিগুলি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে ফেলল; আর বেদীগুলির সামনে বাল দেবতার যাজক মত্তনকে মেরে ফেলল। পরে যাজক সদাপ্রভুর গৃহে পাহারাদার নিযুক্ত করলেন।
\s5
\v 19 আর তিনি শতপতিদের, রক্ষীদের, পাহারাদারদের এবং দেশের সব লোকদের সঙ্গে নিলেন; তারা সদাপ্রভুর গৃহ থেকে রাজাকে নিয়ে পাহারাদারদের ফটকের পথ দিয়ে রাজবাড়ীতে এল; আর তিনি সিংহাসনে বসলেন।
\v 20 তখন দেশের সব লোক আনন্দ করল এবং নগরটি শান্ত হল; আর অথলিয়াকে তারা রাজবাড়ীতে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করেছিল।
\s5
\v 21 যিহোয়াশ সাত বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেন।
\s5
\c 12
\p
\v 1 যেহূর সপ্তম বছরে যিহোয়াশ রাজত্ব করতে শুরু করে যিরূশালেমে চল্লিশ বছর রাজত্ব করেন। তাঁর মায়ের নাম সিবিয়া, তিনি বের্‌-শেবা নগরের মেয়ে।
\v 2 যিহোয়াদা যাজক যতদিন যিহোয়াশকে পরামর্শ দিতেন, ততদিন যিহোয়াশ সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তাই করতেন।
\v 3 তবুও উপাসনার উঁচু স্থানগুলো ধ্বংস করা হল না, লোকেরা তখনও সেখানে বলিদান করত ও ধূপ জ্বালাত।
\s5
\v 4 পরে যিহোয়াশ যাজকদের বললেন, “সদাপ্রভুর গৃহে পবিত্র দান হিসাবে যে টাকা আনা হয়, তা হলো করের টাকা, প্রত্যেকের হিসাব অনুযায়ী প্রাণীর মূল্য স্বরূপ নির্ধারিত টাকা ও মানুষের মনের ইচ্ছা পূরণের জন্য আনা রুপো,
\v 5 এই সমস্ত টাকা যাজকেরা নিজের পরিচিত লোকের হাত থেকে গ্রহণ করুক এবং সেগুলি দিয়ে গৃহটি সারাই করুক, যেখানে মেরামতের প্রয়োজন।”
\s5
\v 6 কিন্তু যিহোয়াশ রাজার তেইশ বছর পর্যন্ত যাজকেরা সেই গৃহের ভাঙ্গা জায়গাগুলি মেরামত করেন নি।
\v 7 তাতে রাজা যিহোয়াশ যাজক যিহোয়াদা ও অন্যান্য যাজকদের ডেকে বললেন, “তোমরা গৃহের ভাঙ্গা জায়গাগুলি মেরামত করছ না কেন? তাই এখন তোমরা পরিচিত লোকদের কাছ থেকে আর টাকা নেবে না, কিন্তু তা গৃহের ভাঙ্গা জায়গাগুলি মেরামতের কাজে তা দিয়ে দেবে।”
\v 8 তখন যাজকেরা রাজী হলেন যে, তারা লোকদের কাছ থেকে আর টাকা নেবে না এবং গৃহের ভাঙ্গা জায়গা মেরামতের কাজও করবেন না।
\s5
\v 9 কিন্তু যিহোয়াদা যাজক একটি সিন্দুক নিলেন ও তার দালাতে একটি ছিদ্র করে যজ্ঞবেদীর কাছে সদাপ্রভুর গৃহের ঢোকার জায়গার ডান দিকে রাখলেন; আর ফটকের পাহারায় নিযুক্ত যাজকেরা সদাপ্রভুর গৃহে আনা সব টাকা তার মধ্যে রাখত।
\v 10 পরে যখন তারা দেখতে পেল সেই সিন্দুকে অনেক টাকা জমা হয়েছে, তখন রাজার লেখক ও মহাযাজক এসে সদাপ্রভুর গৃহে আনা ঐ টাকাগুলি থলিতে করে গুনে রাখতেন।
\s5
\v 11 পরে তাঁরা সেই পরিমাপের টাকা কর্মকারীদের হাতে, সদাপ্রভুর গৃহের তদারকের জন্য নিযুক্ত করা লোকদের হাতে দিতেন, আর তাঁরা সদাপ্রভুর গৃহের ছুতোর মিস্ত্রি ও ঘর তৈরী করবার মিস্ত্রি,
\v 12 এবং রাজমিস্ত্রি ও পাথর কাটবার মিস্ত্রিদের দিতেন। এছাড়া সদাপ্রভুর গৃহের ভাঙ্গা জায়গা মেরামতের জন্য কাঠ ও কাটা পাথর কেনার জন্য এবং গৃহ সারাইয়ের জন্য যা যা লাগত, সেই সবকিছুর জন্য খরচ করতেন।
\s5
\v 13 কিন্তু সদাপ্রভুর গৃহের জন্য রুপোর পেয়ালা, বাতি পরিষ্কার করবার চিম্‌টা, বাটি, তূরী, কোনো সোনার বা রুপোর পাত্র সদাপ্রভুর গৃহে আনা সেই রুপো দিয়ে করা হল না;
\v 14 কারণ তাঁরা কর্মকারীদেরকেই সেই টাকা দিতেন এবং তাঁরা তা নিয়ে সদাপ্রভুর গৃহ সারালেন।
\s5
\v 15 কিন্তু তাঁরা কর্মকারীদেরকে দেবার জন্য যাঁদের হাতে টাকা দিতেন, তাঁদের সঙ্গে হিসাব করতেন না, কারণ তাঁরা সম্পূর্ণ বিশ্বস্তভাবে কাজ করতেন।
\v 16 দোষার্থক ও পাপার্থক বলির যে টাকা, তা সদাপ্রভুর গৃহে আনা হত না; সেগুলি যাজকদেরই হত।
\s5
\v 17 ঐ সময়ে অরামের রাজা হসায়েল গিয়ে গাৎ আক্রমণ করে তা অধিকার করে নিলেন; তারপর তিনি যিরূশালেম আক্রমণ করবার জন্য এগিয়ে গেলেন।
\v 18 তাতে যিহূদার রাজা যিহোয়াশ তাঁর পূর্বপুরুষদের, অর্থাৎ যিহূদার রাজা যিহোশাফট, যিহোরাম ও অহসিয় রাজার ও তাঁর নিজের পবিত্র করা বস্তুগুলি এবং সদাপ্রভুর গৃহের ভাণ্ডারের ও রাজবাড়ীর ভাণ্ডারে যত সোনা পাওয়া গেল, সেই সব নিয়ে অরামের রাজা হসায়েলের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, তাতে তিনি যিরূশালেমের সামনে থেকে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 19 যোয়াশের বাকি সমস্ত কাজের কথা যিহূদার রাজাদের ইতিহাসের বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 20 পরে যোয়াশের দাসেরা উঠে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করল এবং সিল্লা যাবার পথে মিল্লো নামে বাড়িতে তাঁকে আঘাত করল।
\v 21 ফলে শিমিয়তের ছেলে যোষাখর ও শোমরের ছেলে যিহোষাবদ, তাঁর দুজন দাস, তাঁকে আঘাত করলে তিনি মারা গেলেন; পরে লোকেরা দায়ূদ নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁকে কবর দিল। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে অমৎসিয় রাজা হলেন।
\s5
\c 13
\s ইস্রায়েলীয় যিহোয়াহস ও যোয়াশের বর্ণনা। ইলীশায়ের মৃত্যু।
\p
\v 1 অহসিয়ের ছেলে যিহূদার রাজা যোয়াশের তেইশ বছরে যেহূর ছেলে যিহোয়াহস শমরিয়াতে ইস্রায়েলের রাজত্ব করতে আরম্ভ করেন এবং সতের বছর রাজত্ব করেন।
\v 2 সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ, তিনি তাই করতেন এবং নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন, তাঁর সেই পাপের পথ অনুসরন করলেন; তা থেকে তিনি ফিরলেন না।
\s5
\v 3 সেইজন্য ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর ক্রোধ জ্বলে উঠল, আর তিনি অরামের রাজা হসায়েল ও তাঁর ছেলে বিন্‌হদদের হাতে তাদের তুলে দিলেন, তারা যিহোয়াহসের সমস্ত রাজত্ব কালে তাঁদের উপরে থাকলো।
\v 4 পরে যিহোয়াহস সদাপ্রভুর কাছে মিনতি করলেন, আর সদাপ্রভু তাঁর কথা শুনলেন, কারণ অরামের রাজা ইস্রায়েলের উপর যে অত্যাচার করতেন, সেই অত্যাচার তিনি দেখলেন।
\v 5 তখন সদাপ্রভু ইস্রায়েলকে একজন উদ্ধারকর্তা দিলেন, তাতে ইস্রায়েলীয়েরা অরামের হাত থেকে উদ্ধার পেল এবং ইস্রায়েল সন্তানরা আগের মতই নিজেদের তাঁবুতে বাস করতে লাগল।
\s5
\v 6 তবুও যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন, তাঁর বংশের সেই সব পাপ থেকে তারা ফিরল না, সেই পথেই চলত। এছাড়া আশেরা মূর্তি তখনও শমরিয়াতে থাকলো।
\v 7 ফলে অরামের রাজা কেবল পঞ্চাশজন ঘোড়াচালক, দশটি রথ ও দশ হাজার পদাতিক সৈন্য ছাড়া যিহোয়াহসের সৈন্যদলে আর কেউকে রাখেন নি, তিনি তাদের ধ্বংস করে দিয়েছিলেন, মাটির মতই পায়ে মাড়িয়েছিলেন।
\s5
\v 8 যিহোয়াহসের বাকি সমস্ত কাজের কথা ও তাঁর জয়ের কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 9 পরে যিহোয়াহস তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রাগত হলেন, আর শমরিয়াতে তাঁকে কবর দেওয়া হল এবং তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে যোয়াশ রাজা হলেন।
\s5
\v 10 যিহূদার রাজা যোয়াশের সাঁইত্রিশ বছরে যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশ শমরিয়াতে ইস্রায়েলের রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং ষোল বছর রাজত্ব করেন।
\v 11 সদাপ্রভুর চোখে যা খারাপ তিনি তাই করতেন; নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন, তাঁর সেই সব পাপ থেকে ফিরলেন না, সেই পথেই চলতেন।
\s5
\v 12 যোয়াশের বাকি সমস্ত কাজের কথা এবং যে শক্তি দিয়ে তিনি যিহূদার রাজা অমৎসিয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন, সেই সমস্ত কথা কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে লেখা নেই?
\v 13 পরে যোয়াশ তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে নিদ্রাগত হলেন; আর যারবিয়াম তাঁর সিংহাসনে বসলেন এবং শমরিয়াতে ইস্রায়েলের রাজাদের সঙ্গে যোয়াশকে কবর দেওয়া হয়েছিল।
\s5
\v 14 ইলীশায় অসুস্থ হলেন, সেই অসুখেই তাঁর মৃত্যু হয়। ইস্রায়েলের রাজা যোয়াশ তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর মুখের উপরে নিচু হয়ে কেঁদে বললেন, “হে আমার পিতা, হে আমার পিতা, ইস্রায়েলের রথ ও ঘোড়াচালক।”
\v 15 তখন ইলীশায় তাঁকে বললেন, “আপনি তীর-ধনুক নিন।” তিনি তীর-ধনুক নিলেন।
\v 16 পরে তিনি ইস্রায়েলের রাজাকে বললেন, “ধনুকের উপরে হাত রাখুন।” তিনি হাত রাখলেন। পরে ইলীশায় রাজার হাতের উপর তাঁর হাত রেখে বললেন,
\s5
\v 17 “পূর্ব দিকের জানলাটা খুলে দিন।” তিনি খুললেন। তারপর ইলীশায় বললেন, “তীর ছুঁড়ুন।” তিনি তীর ছুঁড়লেন। তখন ইলীশায় বললেন, “এটা হল সদাপ্রভুর জয়লাভের তীর, অরামের বিপক্ষে জয়লাভের তীর, কারণ আপনি অফেকে অরামীয়দের আঘাত করে তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে নিঃশেষ করে দেবেন।”
\v 18 পরে তিনি বললেন, “ঐ সব তীরগুলি নিন।” রাজা সেগুলি হাতে নিলে তিনি বললেন, “মাটিতে আঘাত করুন,” রাজা তিনবার আঘাত করে থেমে গেলেন।
\v 19 তখন ঈশ্বরের লোক তাঁর ওপর রাগ করে বললেন, “পাঁচ ছয়বার আঘাত করলে অরামীয়দের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করতে পারতেন, কিন্তু এখন আপনি মাত্র তিনবার অরামকে আঘাত করবেন।”
\s5
\v 20 পরে ইলীশায় মারা গেলেন এবং লোকেরা তাঁর কবর দিল। তখন মোয়াবীয় লুটকারী সৈন্যদল বছরের শুরুতে দেশে ঢুকল।
\v 21 আর লোকেরা একজনকে কবর দিচ্ছিল, আর একদল লুটকারী সৈন্যদল দেখে তারা মৃতদেহটি ইলীশায়ের কবরে ফেলে দিল; তখন লোকটির মৃতদেহ ইলীশায়ের হাড়গুলিতে ছোঁওয়া মাত্রই বেঁচে উঠে পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াল।
\s5
\v 22 যিহোয়াহসের সময় অরামের রাজা হসায়েল ইস্রায়েলের উপর অত্যাচার করতেন।
\v 23 কিন্তু সদাপ্রভু অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের সঙ্গে যে ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলেন, সেইজন্য তিনি তাদের উপর দয়া ও করুণা করলেন, তাদের পক্ষে থাকলেন, তাদের ধ্বংস করতে চাননি, তখনও তাঁর সামনে থেকে দূর করে দিতে চাইলেন না।
\v 24 পরে অরামের রাজা হসায়েল মারা গেলে তাঁর ছেলে বিন্‌হদদ তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\v 25 যিহোয়াশের বাবা যিহোয়াহসের হাত দিয়ে হসায়েল সেই সব নগরগুলি আবার দখল করে নিলেন, যেগুলি হসায়েলের ছেলে বিন্‌হদদ তাঁর বাবা যিহোয়াহসের কাছ থেকে যুদ্ধে জয় করে নিয়েছিলেন। যোয়াশ তিনবার তাঁকে আঘাত করে ইস্রায়েলীয় নগরগুলি উদ্ধার করলেন।
\s5
\c 14
\s যিহূদার রাজা অমৎসিয়ের বিবরণ।
\p
\v 1 ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশের রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে যিহূদার রাজা যোয়াশের ছেলে অমৎসিয় রাজত্ব করতে শুরু করলেন।
\v 2 তাঁর বয়স যখন পঁচিশ বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেন। তিনি যিরূশালেমে ঊনত্রিশ বছর রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল যিহোয়দ্দিন; তিনি যিরূশালেমের বাসিন্দা ছিলেন।
\v 3 তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা ঠিক অমৎসিয় তাই করতেন, তবে তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মত করতেন না। তিনি তাঁর বাবা যোয়াশ যেমন করতেন তিনি সেই মতই সমস্ত কাজ করতেন।
\s5
\v 4 কিন্তু উঁচু স্থানগুলো তিনি ধ্বংস করলেন না; লোকেরা তখনও সেই উঁচুস্থানে বলি দিত এবং ধূপ জ্বালাত।
\v 5 পরে রাজ্য তাঁর হাতে এসে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর, যে দাসেরা রাজাকে, অর্থাৎ তাঁর বাবাকে মেরে ফেলেছিল, তিনি তাদেরকে হত্যা করলেন।
\s5
\v 6 কিন্তু মোশির ব্যবস্থার বইতে যা লেখা আছে সেইমত তিনি তাদের সন্তানদের হত্যা করলেন না। সেই ব্যবস্থার বইতে সদাপ্রভুর এই আদেশ লেখা ছিল, “সন্তানদের জন্য বাবাকে কিম্বা বাবার কারণে সন্তানদের হত্যা করা চলবে না, তবে প্রত্যেককেই তার নিজের নিজের পাপের জন্য মরতে হবে।”
\v 7 তিনি লবণ উপত্যকায় দশ হাজার ইদোমীয় লোককে হত্যা করলেন এবং যুদ্ধ করে সেলা দখল করে তার নাম যক্তেল রাখলেন; আজও সেই নাম আছে।
\s5
\v 8 তখন অমৎসিয় দূত পাঠিয়ে যেহূর নাতি, অর্থাৎ যিহোয়াহসের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশকে বলে পাঠালেন, “আসুন, যুদ্ধ ক্ষেত্রে আমরা পরস্পরের মুখোমুখি হই।”
\v 9 কিন্তু যিহোয়াশ ইস্রায়েলের রাজা দূতের মাধ্যমে উত্তরে দিয়ে যিহূদার রাজা অমৎসিয়র কাছে লোক বা দূত পাঠিয়ে বললেন, “লেবাননের এক শিয়ালকাঁটা লেবাননেরই এরস গাছের কাছে বলে পাঠাল, ‘আমার ছেলের সঙ্গে আপনার মেয়ের বিয়ে দিন।’ কিন্তু লেবাননের একটা বন্য পশু এসে সেই শিয়ালকাঁটাকে পায়ে মাড়িয়ে দিল।
\v 10 তুমি ইদোমকে আক্রমণ করেছ এবং তোমার হৃদয় সত্যিই গর্বিত হয়েছে। নিজের জয়ের জন্য গর্ব কর, কিন্তু নিজের গৃহে থাকো। কারণ তুমি কেন নিজের বিপদের কারণ হবে? আর তার সঙ্গে ডেকে আনবে নিজের ও যিহূদার ধ্বংস?”
\s5
\v 11 কিন্তু অমৎসিয় সেই কথা শুনলেন না। তাই ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ আক্রমণ করলেন। তিনি ও যিহূদার রাজা অমৎসিয় যিহূদার বৈৎ-শেমশে একে অপরের মুখোমুখি হলেন।
\v 12 ইস্রায়েলের কাছে যিহূদা হেরে গেল এবং প্রত্যেকে নিজের বাড়িতে পালিয়ে গেল।
\s5
\v 13 ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ বৈৎ-শেমশে অহসিয়ের নাতি, অর্থাৎ যোয়াশের ছেলে যিহূদার রাজা অমৎসিয়কে ধরলেন। তারপর যিহোয়াশ যিরূশালেমে গিয়ে সেখানকার দেয়ালের ইফ্রয়িমের ফটক থেকে কোণের ফটক পর্যন্ত প্রায় চারশো হাত ভেঙ্গে দিলেন।
\v 14 তিনি সোনা ও রুপো এবং অন্যান্য জিনিসপত্র যা সদাপ্রভুর গৃহে পাওয়া গিয়েছিল এবং রাজবাড়ীর ধনভাণ্ডারে যে সব মূল্যবান জিনিস ছিল তা সবই নিয়ে গেলেন। তিনি জামিন হিসাবে কতগুলো লোককে নিয়ে শমরিয়াতে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 15 যিহোয়াশের করা অবশিষ্ট অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা, যুদ্ধে তাঁর জয়ের কথা এবং যিহূদার রাজা কেমন করে অমৎসিয়ের বিরুদ্ধে তিনি যুদ্ধ করেছিলেন সেই সব ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 16 পরে যিহোয়াশ তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁকে শমরিয়াতে ইস্রায়েলের রাজাদের সঙ্গে কবর দেওয়া হল এবং তাঁর ছেলে যারবিয়াম তাঁর পদে রাজা হলেন।
\s5
\v 17 ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশের মৃত্যুর পর যিহূদার রাজা যোয়াশের ছেলে অমৎসিয় আরও পনেরো বছর বেঁচে ছিলেন।
\v 18 অমৎসিয়ের অন্যান্য সমস্ত অবশিষ্ট কাজের কথা যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 19 যিরূশালেমে অমৎসিয়ের বিরুদ্ধে তারা ষড়যন্ত্র করলো এবং তিনি লাখীশে পালিয়ে গেলেন, কিন্তু তারা তার পিছনে পিছনে লাখীশে লোক পাঠালো এবং সেখানে তাঁকে হত্যা করলো।
\s5
\v 20 তাঁর দেহটা তারা ঘোড়ার পিঠে করে যিরূশালেমে ফিরিয়ে আনল এবং তাঁকে দায়ূদ-শহরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দিল।
\v 21 তারপর যিহূদার সমস্ত লোক অসরিয়কে যার বয়স ষোলো বছর ছিল তাঁকে নিয়ে তাঁর বাবা অমৎসিয়ের জায়গায় রাজা করল।
\v 22 অমৎসিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় যাবার পর পরে অসরিয় এলৎ শহরটি পুনরায় তৈরী করলেন এবং তা যিহূদার অধীনে করলেন।
\s ইস্রায়েলের ছয় জন রাজার বিবরণ।
\p
\s5
\v 23 যিহূদার রাজা যোয়াশের ছেলে অমৎসিয়ের রাজত্বের পনেরো বছরের সময় ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশের ছেলে যারবিয়াম শমরিয়াতে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং তিনি একচল্লিশ বছর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 24 সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তিনি তাই করতেন এবং নবাটের ছেলে যারবিয়াম যে সব পাপ ইস্রায়েলকে দিয়ে করিয়েছিলেন তিনি সেই সব পাপ করতে ছাড়লেন না।
\v 25 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর দাস গাৎ-হেফরের অমিত্তয়ের ছেলে যোনা ভাববাদীর মধ্য দিয়ে যে কথা বলেছিলেন সেই কথা অনুযায়ী যারবিয়াম হমাৎ এলাকা থেকে অরাবার সমুদ্র পর্যন্ত আগে ইস্রায়েলের রাজ্যের যে সীমা ছিল তা পুনরায় নিজের হাতে ফিরিয়ে এনেছিলেন।
\s5
\v 26 কারণ, সদাপ্রভু দেখেছিলেন যে ইস্রায়েলের স্বাধীন মানুষ কিম্বা দাস সবাই ভীষণভাবে কষ্ট পাচ্ছে; কেউ তাদের সাহায্য করবার মত ছিল না।
\v 27 ফলে সদাপ্রভু বললেন যে তিনি আকাশের নীচ থেকে ইস্রায়েলের নাম মুছে ফেলবেন না। সেইজন্য তিনি যিহোয়াশের ছেলে যারবিয়ামের মধ্য দিয়ে তাদের উদ্ধার করলেন।
\s5
\v 28 যারবিয়ামের অন্যান্য সমস্ত অবশিষ্টের কাজের কথা, যুদ্ধে তাঁর জয়ের কথা এবং এক সময় যিহূদার অধিকারে থাকা দম্মেশক ও হমাৎ কিভাবে তিনি ইস্রায়েলের জন্য আবার অধিকার করে নিয়েছিলেন সেই কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 29 পরে যারবিয়াম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলে, ইস্রায়েলের রাজাদের কাছে চলে গেলেন এবং তাঁর ছেলে সখরিয় তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 15
\p
\v 1 ইস্রায়েলের রাজা যারবিয়ামের রাজত্বের সাতাশ বছরের সময় কালে যিহূদার রাজা অমৎসিয়ের ছেলে অসরিয় রাজত্ব করতে শুরু করলেন।
\v 2 অসরিয়ের ষোল বছর বয়সে যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন এবং তিনি বাহান্ন বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল যিথলিয়া; তিনি যিরূশালেমের বাসিন্দা ছিলেন।
\v 3 অসরিয় তাঁর বাবা অমৎসিয়ের অনুসরণ করে তাঁর মতই সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু ঠিক তাই করতেন।
\s5
\v 4 যদিও উপাসনার উঁচু স্থানগুলো ধ্বংস করা হয় নি; তখনো লোকেরা সেখানে বলিদান করত এবং ধূপ জ্বালাত।
\v 5 পরে সদাপ্রভু রাজাকে আঘাত করলেন ফলে তিনি মৃত্যু পর্যন্ত কুষ্ঠরোগে ভুগেছিলেন এবং তিনি আলাদা গৃহে বাস করতেন। রাজার ছেলে যোথম রাজবাড়ীর কর্তা হলেন এবং দেশের লোকদের শাসন করতে লাগলেন।
\s5
\v 6 অসরিয়ের অন্যান্য সমস্ত ঘটনা ও যা কিছু তিনি করেছিলেন যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 7 পরে অসরিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁকে দায়ূদের শহরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দেওয়া হল। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে যোথম রাজা হলেন।
\s5
\v 8 যিহূদার রাজা অসরিয়ের আটত্রিশ বছরে সময় কালে যারবিয়ামের ছেলে সখরিয় শমরিয়াতে ইস্রায়েলের উপর ছয় মাস রাজত্ব করেছিলেন।
\v 9 তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের মতই সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করতেন। নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন তিনি তাঁর সেই সমস্ত পাপ ত্যাগ করলেন না।
\s5
\v 10 যাবেশের ছেলে শল্লুম সখরিয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন ও লোকদের সামনেই তাঁকে আক্রমণ করে হত্যা করলেন এবং তাঁর জায়গায় তিনি রাজা হলেন।
\v 11 সখরিয়ের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে লেখা আছে।
\v 12 সদাপ্রভু যেহূকে এই সব কথা বলেছিলেন, “তোমার বংশের চার পুরুষ পর্যন্ত ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবে,” এবং তাই হল।
\s5
\v 13 যিহূদার রাজা উষিয়ের রাজত্বের ঊনচল্লিশ বছরের সময় যাবেশের ছেলে শল্লুম রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং শমরিয়াতে এক মাস রাজত্ব করেছিলেন।
\v 14 তারপর গাদির ছেলে মনহেম তির্সা থেকে উঠে শমরিয়াতে গেলেন। সেখানে তিনি যাবেশের ছেলে শল্লুমকে আক্রমণ করে তাঁকে হত্যা করলেন এবং তাঁর জায়গায় তিনি রাজা হলেন।
\s5
\v 15 শল্লুমের অন্যান্য সমস্ত অবশিষ্ট কাজের কথা এবং তাঁর ষড়যন্ত্রের কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে লেখা আছে।
\v 16 তখন মনহেম তির্সা থেকে বের হয়ে তিপ্‌সহ এবং সেখানকার সব বাসিন্দা ও তার আশেপাশের এলাকার সবাইকে আক্রমণ করলেন, কারণ তারা তাদের শহরের ফটক খুলে দিতে রাজী হয় নি। সেইজন্য তিনি তিপ্‌সহ আঘাত করলেন এবং সমস্ত গর্ভবতী স্ত্রীলোকদের পেট চিরে দিলেন।
\s5
\v 17 যিহূদার রাজা অসরিয়ের রাজত্বের ঊনচল্লিশ বছরের সময় গাদির ছেলে মনহেম ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করতে শুরু করেন। তিনি শমরিয়াতে দশ বছর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 18 সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তিনি তাই করতেন। তাঁর গোটা রাজত্বকালে তিনি সেই সব পাপ করতে থাকলেন যা নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে করিয়েছিলেন।
\s5
\v 19 এর পর অশূর রাজা পূল দেশের বিরুদ্ধে আক্রমণ করলেন। তখন মনহেম পূলের সাহায্যে দেশে তাঁর রাজত্ব স্থির রাখবার জন্য তাঁকে এক হাজার তালন্ত রুপো দিলেন।
\v 20 মনহেম এই টাকা ইস্রায়েলের সমস্ত ধনবান লোকদের কাছ থেকে আদায় করলেন। অশূরের রাজাকে দেবার জন্য প্রত্যেক ধনী লোক পঞ্চাশ শেকল রুপো করলে কেমন হয় দিল। তখন অশূরের রাজা ফিরে গেলেন এবং সেই দেশ আর থাকলেন না।
\s5
\v 21 মনহেমের অন্যান্য অবশিষ্ট সমস্ত কাজের কথা এবং যে সব কাজ তিনি করেছিলেন, ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে সেগুলি কি লেখা নেই?
\v 22 পরে মনহেম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং পকহিয় তাঁর ছেলে তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\v 23 যিহূদার রাজা অসরিয়ের পঞ্চাশ বছরের সময় মনহেমের ছেলে পকহিয় শমরিয়াতে ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব শুরু করেছিলেন; তিনি দুই বছর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 24 সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ পকহিয় তাই করতেন। নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন পকহিয় তিনি তাঁর সেই সমস্ত পাপ ত্যাগ করলেন না।
\s5
\v 25 রমলিয়ের ছেলে পেকহ নামে তাঁর একজন সেনাপতি পকহিয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। পেকহ গিলিয়দের পঞ্চাশজন লোককে সঙ্গে নিয়ে শমরিয়ার রাজবাড়ীর দুর্গে পকহিয় এবং তাঁর সঙ্গে অর্গোব ও অরিয়িকে হত্যা করলেন। তিনি তাঁকে হত্যা করে তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\v 26 পকহিয়ের অন্যান্য অবশিষ্ট সমস্ত কাজের কথা, যেসব তিনি করেছিলেন ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে লেখা আছে।
\s5
\v 27 যিহূদার রাজা অসরিয়ের রাজত্বের বাহান্ন বছরের সময়ে রমলিয়ের ছেলে পেকহ শমরিয়াতে ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করতে শুরু করলেন। তিনি কুড়ি বছর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 28 তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তাই করতেন। নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন পেকহ সেই সব পাপ থেকে ফিরলেন না।
\s5
\v 29 ইস্রায়েলের রাজা পেকহের সময়ে অশূর রাজা তিগ্লৎ পিলেষর আসলেন এবং ইয়োন, আবেলবৈৎমাখা, যানোহ, কেদশ, হাৎসোর, গিলিয়দ, গালীল ও নপ্তালির সমস্ত জায়গা দখল করলেন। আর সেখান থেকে তিনি সমস্ত লোকদের বন্দী করে অশূরে নিয়ে গেলেন।
\v 30 পরে উষিয়ের ছেলে যোথমের রাজত্বের কুড়ি বছরের সময় কালে, এলার ছেলে হোশেয় রমলিয়ের ছেলে পেকহের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। তিনি তাঁকে আক্রমণ করলেন এবং হত্যা করে তাঁর জায়গায় তিনি রাজা হলেন।
\v 31 পেকহের অন্যান্য সমস্ত অবশিষ্ট কাজের কথা, তিনি যা করেছিলেন ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে লেখা আছে।
\s যিহূদার রাজা যোথম ও আহস রাজার বিবরণ।
\p
\s5
\v 32 রমলিয়ের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা পেকহের দ্বিতীয় বছরে যিহূদার রাজা উষিয়ের ছেলে যোথম রাজত্ব করতে শুরু করলেন।
\v 33 তিনি পঁচিশ বছর বয়সের ছিলেন যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন; তিনি ষোল বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেন। তাঁর মায়ের নাম যিরূশা ছিল; তিনি সাদোকের মেয়ে ছিলেন।
\s5
\v 34 যোথম সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু ঠিক তাই করতেন। তিনি তাঁর বাবা উষিয়ের কাজ অনুসরণ করেন সমস্ত কাজ করতেন।
\v 35 উঁচু স্থানগুলিকে তখনও ধ্বংস করা হয়নি। লোকেরা তখনও সেই উচুঁ জায়গায় বলিদান করত ও ধূপ জ্বালাত। যোথম সদাপ্রভুর গৃহে উঁচু দরজা তৈরী করেছিলেন।
\v 36 যোথমের অবশিষ্ট কাজের কথা ও সমস্ত কাজের বিবরণ যিহূদার রাজাদের ইতিহাসের বইতে কি লেখা নেই?
\v 37 সদাপ্রভু সেই সময় থেকেই অরামের রাজা রৎসীন এবং রমলিয়ের ছেলে পেকহকে যিহূদার বিরুদ্ধে পাঠাতে শুরু করলেন।
\v 38 পরে যোথম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের শহরে তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দেওয়া হয়েছিল। তখন তাঁর ছেলে আহস তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 16
\p
\v 1 রমলিয়ের ছেলে পেকহের সতেরো বছরের সময় যিহূদার রাজা যোথমের ছেলে আহস রাজত্ব করতে শুরু করেন।
\v 2 আহস কুড়ি বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং তিনি ষোল বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। আহস তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদ যেমন তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তাই করতেন, তিনি তেমন করতেন না।
\s5
\v 3 তার পরিবর্তে তিনি ইস্রায়েলের রাজাদের মতই চলতেন; এমন কি, সদাপ্রভু যে সব জাতিকে ইস্রায়েলের মানুষদের সামনে থেকে দূর করে দিয়েছিলেন তাদের মত তিনিও তাঁর নিজের ছেলেকে আগুনে ফেলে দিয়ে হোম উৎসর্গ করলেন।
\v 4 তিনি উঁচু জায়গাগুলিতে, পাহাড়ের উপরে ও প্রত্যেকটি সবুজ গাছের নীচে বলিদান উৎসর্গ করতেন ও ধূপ জ্বালাতেন।
\s5
\v 5 অরামের রাজা রৎসীন ও রমলিয়ের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা পেকহ যিরূশালেমে এসে আহস সুদ্ধ শহরটা ঘেরাও করলেন, কিন্তু তাঁরা আহসকে জয় করতে পারলেন না।
\v 6 সেই সময় অরামের রাজা রৎসীন এলৎ শহর আবার অরামের অধীনে নিয়ে আসলেন এবং এলৎশহর থেকে যিহূদার লোকদের তাড়িয়ে দিলেন। তারপর অরামীয়েরা এলতে গেলো, যেখানে আজও তারা বাস করছে।
\s5
\v 7 পরে আহস অশূরের রাজা তিগ্লৎ-পিলেষরের কাছে এই কথা বলতে লোক পাঠিয়ে দিলেন, “আমি আপনার দাস এবং আপনার ছেলে। আপনি আসুন এবং অরামের রাজার হাত থেকে এবং ইস্রায়েলের রাজার হাত থেকে আমাকে রক্ষা করুন, যারা আমাকে আক্রমণ করেছে।”
\v 8 আহস সদাপ্রভুর গৃহে গিয়েছিলেন ও রাজবাড়ীর ভাণ্ডার থেকে সোনা ও রুপো নিলেন এবং উপহার হিসাবে অশূরের রাজার কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
\v 9 তখন অশূরের রাজা তাঁর কথা শুনলেন এবং দম্মেশকের বিরুদ্ধে আক্রমণ করে তা দখল করলেন এবং তিনি সেখানকার লোকদের বন্দী করে কীরে নিয়ে গেলেন এবং অরামের রাজা রৎসীনকেও মেরে ফেললেন।
\s5
\v 10 তখন রাজা আহস দম্মেশকে অশূরের রাজা তিগ্লৎ-পিলেষরের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। তিনি সেখানকার বেদীটা দেখে তাঁর আকার, শিল্পকার্য্য, নকশা ও সেটা তৈরী করবার পুরো পদ্ধতি ঊরিয় যাজকের কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
\v 11 দম্মেশক থেকে রাজা আহসের পাঠানো সব পরিকল্পনা মতই যাজক ঊরিয় একটা বেদী তৈরী করলেন এবং রাজা আহস দম্মেশক থেকে ফিরে আসবার আগেই তা শেষ করলেন।
\v 12 দম্মেশক থেকে ফিরে এসে রাজা সেই বেদীটা দেখলেন এবং সেই বেদীর কাছে গিয়ে তার উপর বলি উৎসর্গ করলেন।
\s5
\v 13 তিনি সেখানে তাঁর হোমবলি উৎসর্গ, শস্য উৎসর্গ ও পানীয় উৎসর্গ করলেন এবং তাঁর মঙ্গলার্থক উৎসর্গের রক্তও ছিটিয়ে দিলেন।
\v 14 তিনি সদাপ্রভুর সামনে রাখা ব্রোঞ্জের বেদীটা সদাপ্রভুর ঘর ও তাঁর নতুন বেদীর মাঝখান থেকে সরিয়ে এনে নিজের নতুন বেদীর উত্তর ধারে রাখলেন।
\s5
\v 15 তখন পরে রাজা আহস যাজক ঊরিয়কে এই সব আদেশ দিলেন, “ঐ বড় বেদীটার উপর সকালবেলার হোমবলি ও সন্ধায় শস্য উৎসর্গ এবং তার উপর রাজার হোমবলি ও শস্য উৎসর্গ এবং দেশের সব লোকদের হোমবলি ও তাদের শস্য উৎসর্গ আর পানীয় উৎসর্গ অনুষ্ঠান করবেন। সমস্ত হোমবলি ও অন্যান্য পশু উৎসর্গের রক্ত নিজেই সেই বেদীর উপর ছিটিয়ে দেবেন। কিন্তু ঈশ্বরের সাহায্য পাওয়ার জন্য আমি ঐ ব্রোঞ্জের বেদীটা ব্যবহার করব।”
\v 16 যাজক ঊরিয় রাজা আহস যেমন আদেশ দিয়েছিলেন ঠিক সেই মতই সব করলেন।
\s5
\v 17 রাজা আহস গামলা বসাবার ব্রোঞ্জের আসনগুলোর পাশের সব পাত খুলে ফেললেন এবং সেখান থেকে জলাধারগুলো খুলে ফেললেন। ব্রোঞ্জের গরুগুলোর উপর যে জলাধারটি বসানো ছিল সেটা তিনি খুলে নিয়ে একটা পাথর দিয়ে বাঁধানো এমন জায়গায় বসালেন।
\v 18 সদাপ্রভুর গৃহে বিশ্রামবারের উদ্দেশ্যে যে চাঁদোয়া তৈরী করা হয়েছিল অশূরের রাজার ভয়ে আহস সেটা খুলে অন্য জায়গায় রাখলেন এবং সদাপ্রভুর গৃহে র বাইরের দিকে রাজার ঢুকবার জন্য যে বিশেষ পথ তৈরী করা হয়েছিল তাও সরিয়ে অন্য জায়গায় রাখলেন।
\s5
\v 19 আহসের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে লেখা নেই?
\v 20 পরে আহস নিজের পূর্বপুরুষদের কাছে চলে গেলেন এবং দায়ূদ শহরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁকে কবর দেওয়া হল। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে হিষ্কিয় রাজা হলেন।
\s5
\c 17
\s ইস্রায়েল রাজ্যের বিনাশ।
\p
\v 1 যিহূদার রাজা আহসের রাজত্বের বারো বছরের সময় এলার ছেলে হোশেয় রাজত্ব করতে শুরু করেন। তিনি নয় বছর শমরিয়াতে ইস্রায়েলের ওপর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 2 সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তিনি তাই করতেন, কিন্তু তাঁর আগে ইস্রায়েলে যে সব রাজারা ছিলেন, তাদের মত নয়।
\v 3 অশূর রাজা শল্‌মনেষর হোশেয়কে আক্রমণ করতে আসলেন। তার ফলে হোশেয় তাঁর দাস হলেন এবং তাঁকে উপঢৌকন দিতে লাগলেন।
\s5
\v 4 কিন্তু অশূরের রাজা জানতে পারলেন যে, হোশেয় তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে, কারণ তিনি মিসরের সো রাজার কাছে দূত পাঠিয়েছিলেন এবং অশূরের রাজাকে প্রতি বছরে যে উপঢৌকন দিতেন তা আর পাঠালেন না। সুতরাং শল্‌মনেষর হোশেয়কে বন্দী করে জেলে দিলেন।
\v 5 অশূরের রাজা সমস্ত দেশটা আক্রমণ করে শমরিয়াতে গেলেন এবং তিন বছর ধরে সেটা ঘেরাও করে রাখলেন।
\v 6 হোশেয়ের রাজত্বের নয় বছর কালীন অশূরের রাজা শমরিয়াকে দখল করলেন এবং ইস্রায়েলীয়দের বন্দী করে অশূরে নিয়ে গেলেন। তাদের তিনি হলহে, গোষণের হাবোর নদীর ধারে এবং মাদীয়দের শহরগুলোতে বাস করতে দিলেন।
\s5
\v 7 এই সব ঘটনা ঘটেছিল, কারণ যিনি মিসর থেকে, মিসরের রাজা ফরৌণের শাসন থেকে তাদের বের করে এনেছিলেন ইস্রায়েলীয়েরা তাদের সেই ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছিল। সেই লোকেরা অন্য দেব দেবতার পূজা করত
\v 8 এবং যাদেরকে সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের সামনে থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাদের মতই চলাফেরা করত। এছাড়া ইস্রায়েলের রাজাদের রীতিনীতি অনুসারে তারা চলত।
\s5
\v 9 ইস্রায়েলীয়েরা গোপনে সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে যা কিছু ঠিক নয় সেই সব খারাপ কাজ করত। তারা প্রহরীদের উঁচু ঘর থেকে বড় দেওয়ালে ঘেরা শহর পর্যন্ত সব জায়গায় নিজেদের জন্য পূজার উঁচু স্থান তৈরী করে নিয়েছিল।
\v 10 তারা প্রত্যেকটা উঁচু পাহাড়ের উপরে এবং প্রত্যেকটা সবুজ গাছের নীচে পূজার পাথর ও আশেরা মূর্তি স্থাপন করেছিল।
\s5
\v 11 যে সব জাতিকে সদাপ্রভু তাদের সামনে থেকে বের করে দিয়েছিলেন তাদের মত তারাও প্রত্যেকটি উঁচু স্থানে ধূপ জ্বালাত। এছাড়া ইস্রায়েলীয়রা আরও খারাপ কাজ করে সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করত।
\v 12 তারা মূর্তি পূজা করত, যার বিষয়ে সদাপ্রভু তাদের বলেছিলেন “তোমরা এই কাজগুলি করবে না।”
\s5
\v 13 যদিও সদাপ্রভু তাঁর সমস্ত ভাববাদী ও দর্শকদের মধ্য দিয়ে ইস্রায়েল ও যিহূদাকে সাবধান করে বলেছিলেন, “তোমরা তোমাদের খারাপ পথ থেকে ফেরো এবং সমস্ত আইন কানুন যা আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের পালনের জন্য দিয়েছিলাম আর আমার দাসদের অর্থাৎ ভাববাদীদের মধ্য দিয়ে তোমাদের জানিয়েছিলাম তোমরা সেই অনুযায়ী আমার সব আদেশ ও নিয়ম পালন কর।”
\s5
\v 14 কিন্তু তারা সেই কথা শোনেনি; তার পরিবর্তে তারা তাদের পূর্বপুরুষেরা যারা নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপর নির্ভর করত না, তাদের মতই তারা চলত।
\v 15 তারা তাঁর সব নিয়ম, তাদের পূর্বপুরুষদের জন্য স্থাপন করা তাঁর ব্যবস্থা এবং তাদের কাছে তাঁর দেওয়া সমস্ত সাক্ষ্য মানতে অস্বীকার করেছিল। তারা অসার বস্তুর অনুগামী হয়ে নিজেরাও অসার অকেজো হয়ে পড়েছিল। আর সদাপ্রভু যাদের মত চলতে তাদেরকে নিষেধ করেছিলেন তারা তাদের চারদিকের সেই জাতিগুলোরই অনুসরণ করে চলত।
\s5
\v 16 তারা নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সমস্ত আদেশ ত্যাগ করে নিজেদের জন্য ছাঁচ দিয়ে বানানো ধাতু দিয়ে দুইটি বাছুরের মূর্তি তৈরী করে পূজা করত। একটা আশেরা মূর্তিও তৈরী করেছিল এবং তারা আকাশের সমস্ত বাহিনীরপূজো করত এবং বাল দেবতার পূজা করত।
\v 17 তারা নিজেদের ছেলেমেয়েদের আগুনে পুড়িয়ে হোমবলি হিসাবে উৎসর্গ করত। তারা মন্ত্র ও মায়াজালের ব্যবহার করত এবং সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ সেই সব কাজ করবার জন্য নিজেদের বিক্রি করে দিয়েছিল এবং এইরূপে সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করেছিল।
\v 18 সেই জন্য ইস্রায়েলের লোকদের উপর সদাপ্রভু ভীষণ রেগে গিয়ে তাঁর সামনে থেকে তাঁদের দূরে সরিয়ে দিলেন। সেখানে কেবল যিহূদা গোষ্ঠী ছাড়া আর কেউ ছিল না।
\s5
\v 19 এমনকি যিহূদা গোষ্ঠীও তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ পালন করলো না কিন্তু তার পরিবর্তে ইস্রায়েল যা করত সেই বিধি অনুযায়ী চলতে লাগল।
\v 20 সে কারণে সদাপ্রভু সমস্ত ইস্রায়েলের বংশকে বাতিল করে দিলেন। তিনি তাদের কষ্ট দিলেন এবং লুটেরাদের হাতে তুলে দিলেন এবং শেষে নিজের সামনে থেকে তাদের দূরে সরিয়ে দিলেন।
\s5
\v 21 সদাপ্রভু দায়ূদের বংশ থেকে যখন ইস্রায়েলকে ছিঁড়ে আলাদা করলেন, তখন তারা নবাটের ছেলে যারবিয়ামকে তাদের রাজা করেছিল। যারবিয়াম ইস্রায়েলকে সদাপ্রভুর পথ থেকে সরিয়ে নিয়ে তাদের দিয়ে মহাপাপ করিয়েছিলেন।
\v 22 ইস্রায়েলের লোকেরা যারবিয়ামের সমস্ত পাপের পথ অনুসরণ করেছিল। তারা সেসব থেকে ফিরে আসে নি।
\v 23 শেষে সদাপ্রভু তাঁর সমস্ত দাসদের অর্থাৎ ভাববাদীদের মধ্য দিয়ে যেমন বলেছিলেন সেই অনুসারে তাঁর সামনে থেকে ইস্রায়েলকে দূরে ফেলে দিলেন। সেকারণে ইস্রায়েলের লোকদের তাদের নিজেদের দেশ থেকে বন্দী করে অশূর দেশে নিয়ে যাওয়া হল এবং আজও তারা সেই জায়গায় আছে।
\p
\s5
\v 24 অশূরের রাজা ইস্রায়েলের লোকদের বদলে বাবিল, কূথা, অব্বা, হমাৎ ও সফর্বয়িম থেকে লোক নিয়ে এসে শমরিয়ার নগরগুলিতে বসিয়ে দিলেন। তারা শমরিয়া অধিকার করে সেই সব জায়গায় বসবাস করতে লাগল।
\v 25 সেখানে তারা বসবাস করবার প্রথম দিকের সময়ে তারা সদাপ্রভুর সম্মান করত না, তাই সদাপ্রভু তাদের মধ্যে সিংহ পাঠিয়ে দিলেন, যেগুলি তাদের কিছু লোককে মেরে ফেলল।
\v 26 তখন তারা অশূরের রাজার কাছে গিয়ে এইরকম বলল, “যে সমস্ত জাতিদের আপনি বন্দী করে শমরিয়ায় সব জায়গায় বাস করবার জন্য বসিয়ে দিয়েছেন, তারা সেই দেশের ঈশ্বরের নিয়ম জানে না সেই দেশের ঈশ্বরকে কিভাবে সন্তুষ্ট করতে হয়। সে কারণে ঈশ্বর তাদের মধ্যে সিংহ পাঠিয়ে দিয়েছেন, আর দেখো, সিংহগুলি তাদের মেরে ফেলছে কারণ তারা সেই দেশের ঈশ্বরের বিধি জানে না।”
\s5
\v 27 তখন অশূরের রাজা এই বলে আদেশ দিলেন, “যে সব যাজকদের আপনারা এনেছিলেন তাদের মধ্য থেকে একজনকে আপনারা সেখানে পাঠিয়ে দিন যাতে সে সেখানে গিয়ে বাস করে এবং সেই দেশের ঈশ্বরের নিয়ম কানুন সম্পর্কে তাদের শিক্ষা দেয়।”
\v 28 সুতরাং শমরিয়া থেকে নিয়ে যাওয়া যাজকদের মধ্য থেকে একজনকে নিয়ে বৈথেলে গেলেন এবং সেখানে বাস করতে লাগলেন এবং তিনিই তাদের শিক্ষা দিলেন কিভাবে সদাপ্রভুর উপাসনা করতে হয়।
\s5
\v 29 তবুও প্রত্যেক জাতির লোকেরা নিজের নিজের দেবতা তৈরী করে নিল এবং শহরে যেখানে তারা বাস করত সেখানে শমরিয়েরা উঁচু স্থানগুলিতে যে সমস্ত ঘর তৈরী করেছিল, তার মধ্যে প্রত্যেক জাতি তাদের নগরে তাদের দেবতাকে স্থাপন করলেন।
\v 30 এইভাবে বাবিলের লোকেরা তৈরী করল সুক্কোৎ-বনোৎ, কূথের লোকেরা নের্গল তৈরী করলেন, হমাতের লোকেরা অশীমার মূর্তি তৈরী করলেন,
\v 31 আর অব্বীয়েরা তৈরী করল নিভস ও তর্ত্তক আর সফর্বীয়েরা অদ্রম্মেলক ও অনম্মেলকের উদ্দেশ্যে তাদের নিজেদের ছেলেমেয়েদের আগুনে পুড়িয়ে হোম উৎসর্গ করল।
\s5
\v 32 তারা সদাপ্রভুকে ভয় করত এবং উঁচু স্থানগুলিতে যাজকদের কাজ করবার জন্য নিজেদের মধ্য থেকে লোক নিযুক্ত করত এবং তারাই তাদের জন্য উচ্চ স্থানের গৃহে বলি উত্সর্গ করত।
\v 33 তারা সদাপ্রভুকে ভয় করত এবং সেই সঙ্গে যে সব দেশ থেকে তাদের নিয়ে আসা হয়েছিল সেই সব দেশের নিয়ম অনুসারে তারা তাদের দেবতাদেরও পূজা করত।
\s5
\v 34 আজ পর্যন্ত তারা সেই পুরানো নিয়ম মেনে চলছে। তারা আসলে সদাপ্রভুর উপাসনা করে না, এমন কি সদাপ্রভু যে যাকোবের নাম ইস্রায়েল রেখেছিলেন সেই যাকোবের লোকদের কাছে সদাপ্রভুর দেওয়া ব্যবস্থা, আদেশ অনুযায়ী চলে না।
\v 35 এবং তাদের সঙ্গে ব্যবস্থা স্থাপন করবার সময় এই আদেশ দিয়েছিলেন, “তোমরা অন্য কোন দেব দেবতার ভয় করবে না কিম্বা তাদের কাছে মাথা নীচু করবে না এবং তাদের সেবা করবে না বা তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলিদান করবে না।
\s5
\v 36 কিন্তু সদাপ্রভু, যিনি মহাশক্তিতে মিসর থেকে তোমাদের বের করে এনেছেন তোমরা সেই একজনকেই সম্মান করবে, তাঁর কাছেই মাথা নীচু করবে ও তাঁর উদ্দেশ্যেই সব বলিদান দেবে।
\v 37 তিনি যে সব বিধি, নির্দেশ, ব্যবস্থা ও আদেশ তোমাদের জন্য লিখে দিয়েছিলেন তা যত্নের সঙ্গে পালন করবে। তোমরা অন্য দেব দেবতার ভয় করবে না।
\v 38 এবং তোমাদের সঙ্গে যে ব্যবস্থা আমি তৈরী করেছি তোমরা তা ভুলে যাবে না; না অন্য কোন দেব দেবতাকেভয় করবে না।
\s5
\v 39 কিন্তু সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বরকেই সম্মান করবে। তিনিই তোমাদের সব শত্রুদের হাত থেকে তোমাদের উদ্ধার করবেন।”
\v 40 তবুও তারা সেই কথা শুনলো না, কারণ তারা আগে যা করেছিল সেই মতই চলতে লাগল।
\v 41 এইভাবে সেই জাতিরা সদাপ্রভুর ভয়ও করত আবার তাদের খোদাই করা মূর্তির পূজাও করত। আজও তাদের ছেলেমেয়ে ও নাতিপুতিরা তাদের পূর্বপুরুষরা যা করেছিল সেই মতই করছে।
\s5
\c 18
\s যিহূদার হিষ্কিয় রাজার বিবরণ। অশূরীয়দের হস্ত হইতে রক্ষা।
\p
\v 1 এলার ছেলে ইস্রায়েলের রাজা হোশেয়ের রাজত্বের তিন বছরের মাথায় যিহূদার রাজা আহসের ছেলে হিষ্কিয় রাজত্ব করতে শুরু করলেন।
\v 2 তিনি পঁচিশ বছর বয়সী ছিলেন যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন এবং তিনি ঊনত্রিশ বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল অবী, তিনি সখরিয়ের মেয়ে ছিলেন।
\v 3 হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের সব কাজের মতই সদাপ্রভুর চোখে যা ঠিক তিনি তাই করতেন।
\s5
\v 4 তিনি উঁচু জায়গাগুলো ধ্বংস করলেন, পাথরের স্তম্ভগুলো নষ্ট করে দিলেন এবং আশেরা মূর্তিগুলি কেটে ফেললেন। মোশি যে পিতল সাপটা তৈরী করেছিলেন তিনি সেটি ভেঙ্গে ফেললেন, কারণ ইস্রায়েলের লোকেরা সেই সময় পর্যন্তও সেই সাপের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালাচ্ছিল। তিনি ব্রোঞ্জের সাপটার নাম দিলেন নহুষ্টন (পিত্তলের টুকরো)।
\v 5 হিষ্কিয় ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপর নির্ভর করতেন। সুতরাং তাঁর পরে যিহূদার রাজাদের মধ্যে তাঁর মত আর কেউ ছিলেন না, তাঁর আগেও ছিল না।
\s5
\v 6 সেজন্য তিনি সদাপ্রভুকে আঁকড়ে ধরে রেখেছিলেন। তাঁর পথ থেকে তিনি ফিরলেন না বরং সদাপ্রভু মোশিকে যে সব আদেশ দিয়েছিলেন সেগুলি সব তিনি পালন করতেন।
\v 7 আর সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে সঙ্গে থাকতেন এবং তিনি যে কোন জায়গায় যেতেন তাতে সফল হতেন। অশূরের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন এবং তিনি তাঁর অধীনতা অস্বীকার করলেন।
\v 8 তিনি ঘসা (গাজা) ও তার সীমানা, চৌকি দেওয়ার উঁচু ঘর থেকে উঁচু দেওয়াল বিশিষ্ট শহর পর্যন্ত এবং পলেষ্টীয়দের তিনি আক্রমণ করলেন।
\s5
\v 9 রাজা হিষ্কিয়ের চতুর্থ বছরে, অর্থাৎ ইস্রায়েলের রাজা এলার ছেলে হোশেয়ের রাজত্বের সপ্তম বছরে অশূরের রাজা শল্‌মনেষর শমরিয়ার বিরুদ্ধে এসে শহরটা ঘেরাও করলেন।
\v 10 এবং তিন বছর পরে অশূরের লোকেরা তা অধিকার করল, হিষ্কিয়ের রাজত্বের ষষ্ঠ বছরে আর ইস্রায়েলের রাজা হোশেয়ের নবম বছরে শমরীয়কে দখল বা অধিকার করে নেওয়া হয়।
\s5
\v 11 পরে অশূরের রাজা ইস্রায়েলের লোকদের বন্দী করে অশূরিয়াতে নিয়ে গেলেন এবং হলহে, হাবোর নদীর ধারে গোষণ এলাকায় এবং মাদীয়দের বিভিন্ন শহরে তাদের বসবাস করতে দিলেন।
\v 12 তিনি এই সব করেছিলেন, কারণ তাদের নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বাক্য তারা মেনে চলে নি, বরং তাঁর ব্যবস্থা, অর্থাৎ সদাপ্রভুর দাস মোশির সমস্ত আদেশ তারা অমান্য করত। সেই সব আদেশের কথা তারা শুনতও না এবং তা পালন করতে অস্বীকার করেছিল।
\s5
\v 13 পরে রাজা হিষ্কিয়ের চৌদ্দ বছরে রাজত্বের সময় অশূরের রাজা সন্‌হেরীব যিহূদার সমস্ত দেয়ালে ঘেরা শহরগুলো আক্রমণ করে তাদের দখল করে নিলেন।
\v 14 তখন যিহূদার রাজা হিষ্কিয় লাখীশে অশূরের রাজাকে এই কথা বলে পাঠালেন, “আমি তোমার বিরুদ্ধে অন্যায় করেছি। আপনি ফিরে যান। আপনি আমাকে যা ভার দেবেন আমি তা বহন করব।” এতে অশূরের রাজা যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের কাছে প্রায় বারো টন রুপো এবং প্রায় এক টনের মত সোনা দাবি করেছিলেন।
\v 15 ফলে হিষ্কিয় সদাপ্রভুর গৃহে যত রুপো পেয়েছিলেন এবং রাজবাড়ীর ভাণ্ডারগুলোতে যত রুপো ছিল সবই তাঁকে দিলেন।
\s5
\v 16 যিহূদার রাজা হিষ্কিয় সদাপ্রভুর গৃহে র দরজা ও দরজার চৌকাঠ যে সোনা দিয়ে মুড়িয়েছিলেন সেগুলি কেটে নিয়ে অশূরের রাজাকে দিলেন।
\v 17 পরে অশূরের রাজা লাখীশ থেকে তর্ত্তনকে, রব্‌সারীসকে ও রব্‌শাকিকে মস্ত বড় এক দল সৈন্য দিয়ে যিরূশালেমে রাজা হিষ্কিয়ের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। তাঁরা যাত্রা করে যিরূশালেমে এসে ধোপার মাঠের রাস্তার ধারে উঁচু জায়গার পুকুরের সঙ্গে লাগানো জলের নালার কাছে পৌঁছালেন।
\v 18 যখন তাঁরা রাজাকে ডাকলেন তখন রাজবাড়ীর পরিচালক হিল্কিয়ের ছেলে ইলিয়াকীম, রাজার লেখক শিব্‌ন এবং ইতিহাস লেখক আসফের ছেলে যোয়াহ বের হয়ে তাঁদের কাছে দেখা করতে গেলেন।
\s5
\v 19 তখন রব্‌শাকি তাঁদের বললেন, “আপনারা হিষ্কিয়কে এই কথা বলুন যে, সেই মহান রাজা, অশূরের রাজা বলেছেন, ‘তোমার সাহসের উত্স কি?
\v 20 তুমি বলেছ তোমার যুদ্ধ করবার বুদ্ধি ও শক্তি আছে, কিন্তু সেগুলো শুধু মুখের কথা মাত্র। বল দেখি, তুমি কার উপর নির্ভর করছ? কে তোমাকে সাহস দিয়েছে আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে?
\v 21 দেখো, তুমি তো নির্ভর করছ সেই থেঁৎলে যাওয়া নলের মত দণ্ডে, অর্থাৎ মিসরের উপর। কিন্তু যে কেউ সেই নলের উপর নির্ভর করবে তা তার হাতে ফুটে বিদ্ধ করবে। মিসরের রাজা ফরৌণের উপর যারা নির্ভর করে তাদের প্রতি সে সেইরূপ করে।’
\s5
\v 22 কিন্তু তোমরা যদি আমাকে বল যে, আমরা নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপরে নির্ভর করেছি, তাহলে কি তিনি সেই নন যাঁর উঁচু স্থান ও বেদীগুলো হিষ্কিয় দূর করে দিয়েছেন এবং যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের বলেছে তোমরা যিরূশালেমের এই বেদীর সামনে উপাসনা করবে?
\v 23 অশূররে এখন তুমি আমার হয়ে তোমাদের রাজাকে একবার বল, ‘তুমি যদি পার তবে আমার মালিক অশূরের রাজার সঙ্গে এই প্রতিজ্ঞা কর যে, আমি তোমাকে দুই হাজার ঘোড়া দেব যদি তুমি তাতে চড়বার জন্য লোক দিতে পার।
\s5
\v 24 যদি তাই না পার তবে আমার মালিকের কর্মচারীদের মধ্যে সব থেকে যে ছোট তাকেই বা তুমি কেমন করে বাধা দেবে? তুমিতো মিসরের রথ আর ঘোড়সওয়ারের উপর নির্ভর করেছ!
\v 25 আমি কি সদাপ্রভুর কাছ থেকে অনুমতি না নিয়েই এই জায়গা আক্রমণ ও ধ্বংস করতে এসেছি? সদাপ্রভুই আমাকে বলেছেন, এই দেশের বিরুদ্ধে আক্রমণ করে তা ধ্বংস করে দিতে’।”
\s5
\v 26 তখন হিল্কিয়ের ছেলে ইলীয়াকীম, শিব্‌ন ও যোয়াহ রব্‌শাকিকে বললেন, “অনুরোধ করি আপনার দাসদের কাছে আপনি অরামীয় ভাষায় কথা বলুন, কারণ আমরা এটা বুঝতে পারি। দেয়ালের উপরকার লোকদের সামনে আপনি আমাদের সঙ্গে ইব্রীয় ভাষায় কথা বলবেন না।”
\v 27 কিন্তু রব্‌শাকি উত্তর দিয়ে তাদের বললেন, “আমার মালিক কি কেবল তোমাদের মালিক ও তোমাদের কাছে এই সব কথা বলতে আমাকে পাঠিয়েছেন? যারা দেয়ালের উপরে বসা ঐ সব লোকেদের কাছে, যারা তোমার মত নিজের নিজের পায়খানা ও প্রস্রাব খেতে হবে তাদের কাছেও কি বলে পাঠান নি?”
\s5
\v 28 তারপর রব্‌শাকি দাঁড়িয়ে জোরে জোরে ইব্রীয় ভাষায় বললেন, “তোমরা মহান রাজা অশূর রাজার কথা শোন।
\v 29 রাজা বলছেন যে, হিষ্কিয় যেন তোমাদের না ঠকায়। কারণ সে তাঁর শক্তি থেকে তোমাদের রক্ষা করতে পারবে না।
\v 30 আর হিষ্কিয় যেন এই কথা বলে সদাপ্রভুর উপর তোমাদের বিশ্বাস না জন্মায় যে, ‘সদাপ্রভু অবশ্যই আমাদের উদ্ধার করবেন; এই শহর অশূর রাজার হাতে তুলে দেবেন না।’
\s5
\v 31 তোমরা হিষ্কিয়ের কথা শুনো না। কারণ অশূরের রাজা এই কথা বলেছেন যে, ‘আমার সঙ্গে তোমরা সন্ধি কর এবং বের হয়ে আমার কাছে এস। তখন তোমরা প্রত্যেকে তার নিজের আঙুর ও ডুমুর গাছের ফল খেতে পারবে এবং নিজের কূয়া থেকে জল পান করতে পারবে।
\v 32 তারপর আমি এসে তোমাদের নিজের দেশের মত আর এক দেশে তোমাদের নিয়ে যাব। সেই দেশ হল শস্য ও নতুন আঙুর রসের দেশ, রুটি ও আঙুর ক্ষেতের দেশ, জিতবৃক্ষের ও মধুর দেশ। তাতে তোমরা মরবে না বরং বাঁচবে। কিন্তু হিষ্কিয়ের কথা শুনো না যখন তোমাদের বলবে এবং ভুলাবে যে, সদাপ্রভু আমাদের উদ্ধার করবেন।
\s5
\v 33 অন্যান্য জাতির কোন দেবতারা কি অশূর রাজার শক্তি থেকে নিজের নিজের দেশ রক্ষা করতে পেরেছে?
\v 34 হমাৎ ও অর্পদের দেবতারা কোথায়? সফর্বয়িম, হেনা ও ইব্বার দেবতারা কোথায়? তারা কি আমার হাত থেকে শমরিয়াকে রক্ষা করতে পেরেছে?
\v 35 এই সব দেশের সমস্ত দেব দেবতাদের মধ্যে কে আমার হাত থেকে নিজের দেশকে রক্ষা করেছে? তবে কেমন করে সদাপ্রভু আমার হাত থেকে যিরূশালেমকে রক্ষা করবেন’?”
\s5
\v 36 কিন্তু লোকেরা চুপ করে রইল, কোন উত্তর দিল না, কারণ রাজা কোন উত্তর না দেওয়ার তাদের আদেশ করেছিলেন।
\v 37 তার পরে রাজবাড়ীর পরিচালক হিল্কিয়ের ছেলে ইলীয়াকীম, রাজার লেখক শিব্‌ন এবং ইতিহাস লেখক আসফের ছেলে যোয়াহ তাঁদের নিজের কাপড় ছিঁড়ে হিষ্কিয়ের কাছে গেলেন এবং রব্‌শাকির সমস্ত কথা তাঁকে জানালেন।
\s5
\c 19
\p
\v 1 রাজা হিষ্কিয় এই কথা শোনার পর নিজের কাপড় ছিঁড়লেন আর চটের পোশাক পরলেন এবং সদাপ্রভুর গৃহে গেলেন।
\v 2 তিনি রাজবাড়ীর পরিচালক ইলিয়াকীম, রাজার লেখক শিব্‌ন ও যাজকদের প্রাচীনদের চট পরিয়ে আমোসের ছেলে যিশাইয় ভাববাদীর কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
\s5
\v 3 তাঁরা যিশাইয়কে বললেন, “হিষ্কিয় বলছেন যে, আজকের দিনটা হল কষ্টের, তিরস্কার হওয়ার ও অসম্মানের দিন। কারণ যেন সন্তানেরা জন্ম হবার মুখে এসেছে কিন্তু তাদের জন্ম দেবার শক্তি নেই।
\v 4 অশূরের রাজা যিনি জীবন্ত ঈশ্বরকে ঠাট্টা বিদ্রূপ করতে রব্‌শাকিকে পাঠিয়েছেন কিন্তু আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু হয়তো সেই সব কথা শুনে তাকে ধমক দেবেন। তাই যারা এখনও বেঁচে আছে তাদের জন্য আপনি প্রার্থনা করুন।”
\s5
\v 5 তখন রাজা হিষ্কিয়ের কর্মচারীরা যিশাইয়ের কাছে আসলেন,
\v 6 এবং যিশাইয় তাঁদের বললেন “তোমাদের মালিককে বল যে, সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘তুমি যা শুনেছ, অর্থাৎ অশূরের রাজার কর্মচারীরা আমার বিরুদ্ধে যে সব অপমানের কথা বলেছে তাতে তুমি ভয় পেয়ো না।
\v 7 দেখো, আমি তার মধ্যে এমন একটা আত্মা দেব যার ফলে সে একটা সংবাদ শুনতে পাবে এবং নিজের দেশে ফিরে যাবে। আমি তাকে তার নিজের দেশে তলোয়ারের দ্বারা শেষ করে দেব’।”
\p
\s5
\v 8 পরে রব্‌শাকি ফিরে গেলেন এবং দেখলেন যে, অশূরের রাজা লিব্‌নার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। কারণ তিনি লাখীশ থেকে চলে গিয়েছিলেন একথা রব্‌শাকি শুনেছিলেন।
\v 9 অশূরের রাজা সন্‌হেরীব শুনতে পেলেন যে, কূশ দেশের রাজা তির্হকঃ তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য বের হয়েছেন। তাই তিনি আবার দূতদের দিয়ে হিষ্কিয়ের কাছে খবর পাঠালেন,
\s5
\v 10 “তোমরা যিহূদার রাজা হিষ্কিয়কে বলবে, তুমি যাঁকে বিশ্বাস কর সেই ঈশ্বর এইরকম বলে তোমাদের প্রতারণা না করুক যে, রাজা অশূরের হাতে যিরূশালেমকে দেওয়া হবে না।
\v 11 দেখো, অশূরের রাজারা কিভাবে অন্য সব দেশগুলি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছেন তা তুমি নিশ্চয়ই শুনেছ; তাহলে তুমি কি রক্ষা পাবে?
\s5
\v 12 আমার পূর্বপুরুষেরা যে সব জাতিকে ধ্বংস করেছেন তাদের দেবতারা, অর্থাৎ গোষণ, হারণ, রেৎসফ এবং তলঃসরে বাসকারী এদনের লোকদের দেবতারা কি তাদের রক্ষা করেছে?
\v 13 হমাতের রাজা, অর্পদের রাজা, সফর্বয়িম শহরের রাজা অথবা হেনা ও ইব্বার রাজা কোথায়?”
\p
\s5
\v 14 হিষ্কিয় দূতদের কাছ থেকে চিঠিখানা নিলেন এবং সেটি পড়লেন। পরে তিনি সদাপ্রভুর গৃহে গেলেন এবং তাঁর সামনে চিঠিটা মেলে দিলেন।
\v 15 হিষ্কিয় সদাপ্রভুর কাছে এই প্রার্থনা করলেন এবং বললেন, “বাহিনীগনের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, করূবের মাঝে অবস্থিত হে সদাপ্রভু, তুমিই একমাত্র পৃথিবীর সমস্ত রাজ্যের ঈশ্বর। তুমি মহাকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছ।
\s5
\v 16 হে সদাপ্রভু, কান ফিরাও এবং শোন; তোমার চোখ খোল সদাপ্রভু এবং দেখ, সন্‌হেরীবের কথা শোন যা জীবন্ত ঈশ্বরকে অপমান করবার জন্য বলে পাঠিয়েছে।
\v 17 সত্য, হে সদাপ্রভু, যে অশূরের রাজারা সব জাতিকে এবং তাদের দেশ ধ্বংস করেছে।
\v 18 তারা তাদের দেবতাদের আগুনে ফেলে দিয়েছে। কারণ সেগুলো তো ঈশ্বর ছিল না কিন্তু শুধুমাত্র মানুষের হাতে তৈরী কেবল কাঠ আর পাথর; সেইজন্য অশূরেরা তাদের ধ্বংস করে দিয়েছে।
\s5
\v 19 এখন হে সদাপ্রভু আমাদের ঈশ্বর, অশূরের রাজার হাত থেকে তুমি আমাদের রক্ষা কর, যাতে পৃথিবীর সমস্ত রাজ্য জানতে পারে যে, হে সদাপ্রভু, তুমি, একমাত্র তুমিই ঈশ্বর।”
\p
\s5
\v 20 তখন আমোসের ছেলে যিশাইয় হিষ্কিয়ের কাছে একটি খবর পাঠালেন, “সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলছেন যে, অশূরের রাজা সন্‌হেরীব সম্বন্ধে আপনার প্রার্থনা আমি শুনেছি।
\v 21 তার বিষয়ে সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘সিয়োন কুমারী মেয়ে তোমাকে তুচ্ছ করছে এবং হাসাহাসি করছে। যিরূশালেমের মেয়েরা তোমার দিকে মাথা নাড়ছে।
\v 22 তুমি কাকে তুচ্ছ করেছ? কার বিরুদ্ধে অপমানের কথা বলেছ? তুমি কার বিরুদ্ধে চিৎকার করেছ এবং গর্ব সহকারে চোখ তুলে তাকিয়েছ? তুমি ইস্রায়েলের পবিত্রতমের বিরুদ্ধেই এই সব করেছ।
\s5
\v 23 তোমার লোকদের দিয়ে তুমি প্রভুকে অপমান করে বলেছ যে, আমি সব রথ দিয়ে পাহাড়গুলোর চূড়ায় উঠেছি, লেবাননের সবচেয়ে উঁচু চূড়ায় উঠেছি। আমি তার সবচেয়ে লম্বা লম্বা এরস গাছ আর ভাল ভাল দেবদারু গাছ কেটে ফেলব। আমি তার বনের শেষপ্রান্ত, সুন্দর ফলবান জায়গায় ঢুকব।
\v 24 আমি বিদেশের মাটিতে কূয়া খুঁড়েছি এবং সেখানকার জল খেয়েছি। আমি নিজের পা দিয়ে মিসরের সব নদীগুলো শুকনো করব।
\s5
\v 25 তুমি কি শোন নি যে, বহুদিন পূর্বেই আমি তা ঠিক করে রেখেছিলাম? বহুকাল আগেই আমি তার পরিকল্পনা করেছিলাম? আর এখন আমি তা করলাম। তোমার মাধ্যমে দেয়াল দিয়ে ঘেরা শহরগুলো ধ্বংস করে পাথরের ঢিবি করতে পেরেছি।
\v 26 সেখানকার লোকেরা শক্তিহীন হয়েছে এবং ভীষণ ভয় ও লজ্জা পেয়েছে। তারা ক্ষেতের চারার মত, গজিয়ে ওঠা সবুজ ঘাসের মত, ছাদের উপরে গজানো ঘাসের মত যা বেড়ে উঠবার আগেই শুকিয়ে যাবে সেরকম হলো।
\s5
\v 27 কিন্তু তোমার মধ্যে বসে থাকা আর কখন বাইরে যাওয়া বা ভিতরে আসা এবং কেমন করে আমার বিরুদ্ধে রেগে ওঠ আমি তা জানি।
\v 28 কারণ আমার বিরুদ্ধে তুমি রেগে উঠেছ এবং তোমার গর্বের কথা আমার কানে এসেছে বলে আমি আমার কড়া তোমার নাকে লাগাব এবং তোমার মুখে আমার বল্‌গা লাগাব; আর যে পথ দিয়ে তুমি এসেছ সেই পথেই তোমাকে ফিরিয়ে দেব
\s5
\v 29 আর হে হিষ্কিয়, তোমার জন্য চিহ্ন হবে এই, এই বছরে নিজের থেকেই যা জন্মাবে তোমরা তাই খাবে এবং দ্বিতীয় বছরে তা থেকে যা জন্মাবে তা খাবে। কিন্তু তৃতীয় বছরে তোমরা অবশ্যই বীজ বুনবে ও ফসল কাটবে আর আঙুর গাছ লাগিয়ে তার ফল খাবে।
\v 30 যিহূদা গোষ্ঠীর যে লোকেরা তখনও বেঁচে থাকবে তারা আবার গাছের মত নীচে শিকড় বসাবে আর উপরে ফল দেবে।
\v 31 যিরূশালেম থেকে অবশিষ্ট লোকেরা আসবে, আর সিয়োন পাহাড় থেকে আসবে বেঁচে যাওয়া লোক। বাহিনীগনের সদাপ্রভুর আগ্রহেই এই সব করবে।
\s5
\v 32 সেজন্য অশূরের রাজার সম্পর্কে সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘সে এই শহরে আসবে না কিম্বা এখানে একটা তীরও ছুড়বে না। সে ঢাল নিয়ে এর সামনে আসবে না কিম্বা ওঠা নামা করবার জন্য কিছু তৈরী করবে না।
\v 33 সে যে পথ দিয়ে এসেছে সেই পথ দিয়েই ফিরে যাবে; এই শহরে সে প্রবেশ করবে না। এটাই হলো সদাপ্রভুর ঘোষণা।
\v 34 কারণ আমি আমার ও আমার দাস দায়ূদের জন্য এই শহরটা রক্ষা করব ও তার ঢাল হয়ে থাকব’।”
\s5
\v 35 সেই রাতে সদাপ্রভুর দূত বের হয়ে অশূরীয়দের শিবির আক্রমণ করলেন এবং এক লক্ষ পঁচাশি হাজার সৈন্যকে মেরে ফেললেন। পরদিন ভোরবেলায় লোকেরা যখন উঠল তখন দেখতে পেল সব জায়গায় শুধু মৃতদেহ।
\v 36 সেজন্য অশূর রাজা সন্‌হেরীব তাঁর সৈন্যদল নিয়ে ইস্রায়েল থেকে চলে গেলেন এবং নীনবীতে ফিরে গিয়ে সেখানে থাকতে লাগলেন।
\v 37 পরে, সন্‌হেরীব যেমন তাঁর দেবতা নিষ্রোকের মন্দিরে পূজা করছিলেন, তাঁর ছেলেরা অদ্রম্মেলক ও শরেৎসর তাঁকে তলোয়ার দিয়ে মেরে ফেলে তারা অরারট দেশে পালিয়ে গেল। তখন সন্‌হেরীবের জায়গায় তাঁর ছেলে এসরহদ্দোন রাজা হলেন।
\s5
\c 20
\s হিষ্কিয়ের অসুস্থতার বর্ণনা।
\p
\v 1 সেই সময়ে হিষ্কিয় খুব অসুস্থ হয়েছিলেন। তখন আমোসের ছেলে যিশাইয় ভাববাদী তাঁর কাছে গেলেন এবং তাঁকে বললেন, “সদাপ্রভু বলছেন যে, ‘তুমি তোমার বাড়ির ব্যবস্থা করে রাখ, কারণ তোমার মৃত্যু হবে, বাঁচবে না’।”
\v 2 তখন হিষ্কিয় দেয়ালের দিকে মুখ ফিরালেন এবং সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন,
\v 3 “হে সদাপ্রভু, তুমি স্মরণ করে দেখ আমি তোমার সামনে কেমন বিশ্বস্তভাবে ও সমস্ত হৃদয় দিয়ে চলেছি এবং তোমার চোখে যা কিছু ভালো তাই করেছি।” এবং হিষ্কিয় খুব কাঁদলেন।
\s5
\v 4 যিশাইয় বের হয়ে রাজবাড়ীর মাঝখানের উঠান পার হয়ে যাওয়ার আগেই সদাপ্রভুর বাক্য তাঁর কাছে প্রকাশিত হল, বললেন,
\v 5 “তুমি ফিরে যাও এবং আমার লোকদের নেতা হিষ্কিয়কে বল যে, তার পূর্বপুরুষ দায়ূদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন, ‘আমি তোমার প্রার্থনা শুনেছি ও তোমার চোখের জল দেখেছি। আমি তোমাকে তৃতীয় দিনে সুস্থ করব এবং তুমি সদাপ্রভুর গৃহে যাবে।
\s5
\v 6 আমি তোমার আয়ু আরও পনেরো বছর বাড়িয়ে দেব এবং আমি অশূর রাজার হাত থেকে তোমাকে এবং এই শহরকে উদ্ধার করব। আমার জন্য ও আমার দাস দায়ূদের জন্য আমি এই শহরকে রক্ষা করব’।”
\v 7 ফলে যিশাইয় বললেন, “ডুমুর ফলের একটা চাক নিয়ে এস।” লোকেরা তা এনে হিষ্কিয়ের ফোড়ার উপরে দিল এবং তিনি সুস্থ হলেন।
\s5
\v 8 হিষ্কিয় যিশাইয়কে বলেছিলেন যে, “সদাপ্রভু আমাকে সুস্থ করবেন এবং এখন থেকে তৃতীয় দিনে আমি যে সদাপ্রভুর গৃহে যাব তার চিহ্ন কি?”
\v 9 যিশাইয় উত্তর দিয়ে বলেছিলেন, “সদাপ্রভু যে তাঁর প্রতিজ্ঞা রক্ষা করবেন তার জন্য তিনি আপনাকে জন্য একটি চিহ্ন দেবেন। ছায়া কি দশ ধাপ এগিয়ে যাবে, না দশ ধাপ পিছিয়ে যাবে?”
\s5
\v 10 হিষ্কিয় উত্তর দিয়ে বলেছিলেন, “ছায়াটি দশ ধাপ এগিয়ে যাওয়াটাই সহজ ব্যাপার। না, ছায়াটি দশ ধাপ পিছিয়ে যাক।”
\v 11 তখন যিশাইয় ভাববাদী সদাপ্রভুকে চীত্কার করে ডাকলেন। এবং তাতে আহসের সিঁড়ি থেকে ছায়াটা যেখানে ছিল সেখান থেকে দশ ধাপ পিছিয়ে পড়েছিল।
\s5
\v 12 সেই সময়ে বলদনের ছেলে বাবিলের রাজা বরোদক্‌বলদন্‌ হিষ্কিয়ের কাছে চিঠি ও উপহার পাঠিয়ে দিলেন, কারণ তিনি শুনেছিলেন যে হিষ্কিয় অসুস্থ ছিলেন।
\v 13 হিষ্কিয় সেই চিঠিগুলি গ্রহণ করলেন এবং তাঁর সব ভাণ্ডারগুলোতে যা মূল্যবান বস্তু ছিল, অর্থাৎ সোনা, রুপো, সুগন্ধি মশলা, দামী তেল এবং তাঁর অস্ত্রশস্ত্রের ভাণ্ডার ও ধনভাণ্ডারে যা কিছু ছিল সব সেই দূতদের দেখালেন। হিষ্কিয়ের রাজবাড়ীতে কিম্বা তাঁর সারা রাজ্যে এমন কিছু ছিল না যা তিনি তাদের দেখান নি।
\s5
\v 14 তখন যিশাইয় ভাববাদী রাজা হিষ্কিয়ের কাছে আসলেন এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এই লোকগুলি আপনাকে কি বলল? কোথা থেকেই বা তারা আপনার কাছে এসেছিল?” হিষ্কিয় বললেন, “ওরা দূর দেশ থেকে, বাবিল থেকে এসেছিল।”
\v 15 যিশাইয় জিজ্ঞাসা করলেন, “তারা আপনার রাজবাড়ীর মধ্যে কি কি দেখেছে?” হিষ্কিয় উত্তর দিয়ে বললেন, “তারা আমার রাজবাড়ীর সব কিছুই দেখেছে। আমার ধনভাণ্ডারের এমন কিছু মূল্যবান জিনিস নেই যা আমি তাদের দেখায়নি।”
\s5
\v 16 অতএব যিশাইয় হিষ্কিয়কে বললেন, “সদাপ্রভুর বাক্য শুনুন।
\v 17 দেখো, এমন দিন আসছে যে, যখন আপনার রাজবাড়ীর সব কিছু এবং আপনার পূর্বপুরুষরা যা কিছু আজ পর্যন্ত জমিয়ে রেখেছে সবই বাবিলে নিয়ে যাওয়া হবে, কিছুই পড়ে থাকবে না, এটি সদাপ্রভু বলেন।
\v 18 এবং আপনার নিজের সন্তান, কয়েকজন বংশধর, যাদের আপনি জন্ম দিয়েছেন তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে নিয়ে যাওয়া হবে এবং তারা বাবিলের রাজাবাড়ীতে নপুংসক হয়ে থাকবে।”
\s5
\v 19 তখন উত্তর দিয়ে হিষ্কিয় যিশাইয়কে বললেন, “সদাপ্রভুর কথা যা আপনি বললেন, তা ভাল।” কারণ তিনি ভেবেছিলেন যে, যদি আমার সময়ে শান্তি ও সত্য হয়, তবে সেটা কি ভাল নয়?
\v 20 হিষ্কিয়ের অন্যান্য বাকি সমস্ত কাজের কথা এবং সব শক্তি এবং কেমন করে তিনি পুকুর ও সুড়ঙ্গ কেটেছিলেন ও শহরে জল নিয়ে এসেছিলেন সেগুলি কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে লেখা নেই?
\v 21 হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রাগত হলেন এবং তাঁর ছেলে মনঃশি তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 21
\s মনঃশি ও আমন রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 মনঃশির বারো বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন এবং তিনি পঞ্চান্ন বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম হিফ্‌সীবা।
\v 2 সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয় সন্তানদের সামনে থেকে যে সব জাতিদেরকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন, ঠিক তাদের মত জঘন্য কাজ করে মনঃশি সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তিনি তাই করতেন।
\v 3 কারণ তাঁর বাবা হিষ্কিয় যে সব উঁচু স্থান ধ্বংস করেছিলেন এবং সেগুলো তিনি আবার তৈরী করেছিলেন। ইস্রায়েলের রাজা আহাব যেমন করেছিলেন তেমনি তিনিও বাল দেবতার জন্য কতগুলো যজ্ঞবেদী ও একটা আশেরা মূর্তি তৈরী করলেন। তিনি আকাশের সমস্ত বাহিনীদের কাছে মাথা নিচু করে তাদের সেবা করতেন।
\s5
\v 4 সদাপ্রভু যে গৃহে র বিষয় বলেছিলেন, “আমি যিরূশালেমে আমার নাম স্থাপন করব,” সদাপ্রভুর সেই গৃহে র মধ্যে মনঃশি কতগুলো যজ্ঞবেদী তৈরী করলেন।
\v 5 সদাপ্রভুর গৃহে র দুইটি উঠানেই তিনি আকাশের সমস্ত বাহিনীদের জন্য কতগুলো যজ্ঞবেদী তৈরী করলেন।
\v 6 তিনি নিজের ছেলেকে আগুনে হোমবলি উৎসর্গ করলেন। তিনি মায়াবিদ্যা ব্যবহার করতেন ও ভবিষ্যতবাণী করতেন এবং যারা ভূতের মাধ্যম হয় এবং মন্দ আত্মাদের সঙ্গে সম্বন্ধ রেখে তিনি তাদের সঙ্গে শলা পরামর্শ করতেন। তিনি সদাপ্রভুর চোখে অনেক মন্দ কাজ করে তাঁকে অসন্তুষ্ট করলেন।
\s5
\v 7 তিনি যে আশেরা মূর্তি তৈরী করেছিলেন সেটা সদাপ্রভুর গৃহে রেখেছিলেন। এটি সেই গৃহ যার সম্বন্ধে সদাপ্রভু দায়ূদ ও তাঁর ছেলে শলোমনকে বলেছিলেন, “এই গৃহে এবং ইস্রায়েলের সমস্ত গোষ্ঠীর মধ্য থেকে আমার বেছে নেওয়া এই যিরূশালেমে আমি চিরকালের জন্য আমার নাম স্থাপন করব।
\v 8 ইস্রায়েলীয়েরা যদি কেবল আমার সব আদেশ যত্নের সঙ্গে পালন করে এবং আমার দাস মোশি তাদের যে ব্যবস্থা দিয়েছে সেই মত চলে তবে আমি তাদের পূর্বপুরুষদের যে দেশ দিয়েছি সেই ইস্রায়েল দেশ থেকে তাদের পা আর নাড়াতে দেব না।”
\v 9 কিন্তু লোকেরা সেই কথা শোনেনি। যে সব জাতিকে সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয় লোকদের সামনে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন তাদের থেকেও তারা আরও বেশি খারাপ কাজ করার জন্য মনঃশি তাদের পরিচালিত করলো।
\s5
\v 10 তাই সদাপ্রভু তাঁর দাস ভাববাদীদের মধ্য দিয়ে এই কথা বললেন,
\v 11 “যিহূদার রাজা মনঃশি এই সব জঘন্য পাপ করেছে। তার আগে যে ইমোরীয়েরা ছিল তাদের থেকেও সে আরও বেশি ঘৃণার কাজ করেছে এবং নিজের প্রতিমাগুলো দিয়ে যিহূদাকেও পাপের কাজ করিয়েছে।
\v 12 সুতরাং সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন যে, দেখো, আমি যিরূশালেম ও যিহূদার উপর এমন বিপদ আনব যে, যে কেউ সেই কথা শুনবে তাদের সকলের কান শিউরে উঠবে।
\s5
\v 13 শমরিয়ার উপর যে দড়ি এবং আহাবের পরিবারের উপর যে ওলন দড়ি ব্যবহার করা হয়েছিল তা আমি যিরূশালেমের উপর ব্যবহার করব। যেমন একজন থালা মুছে নিয়ে উপুড় করে রাখে তেমনি করে আমি যিরূশালেমকে মুছে ফেলব।
\v 14 আমার নিজের বংশধিকারের বাকী অংশকে আমি ত্যাগ করব এবং তাদের শত্রুদের হাতে তাদেরকে তুলে দেব। তাদের নিজের সমস্ত শত্রুদের কাছে শিকারের জিনিস এবং লুঠের জিনিসের মত হবে।
\v 15 কারণ তারা আমার চোখে যা মন্দ তাই করেছে এবং যেদিন তাদের পূর্বপুরুষেরা মিসর থেকে বের হয়ে এসেছিল সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত তারা আমাকে অসন্তুষ্ট করে আসছে।”
\s5
\v 16 আবার, মনঃশি নির্দোষ লোকদের রক্তপাত করেছিলেন যে, সেই রক্তে যিরূশালেমের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত পূর্ণ করেছিলেন। তিনি যিহূদার লোকদের দিয়ে পাপ করিয়েছিলেন যার ফলে তারা সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করেছিল।
\v 17 মনঃশির অন্যান্য সমস্ত কাজের বিবরণ এবং তাঁর পাপের কথা যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 18 পরে মনঃশি নিজের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁকে নিজের রাজবাড়ীর বাগানে, উষের বাগানে কবর দেওয়া হল। আমোন, তাঁর ছেলে তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\v 19 আমোন বাইশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন; তিনি দুই বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল মশুল্লেমৎ; তিনি যট্‌বা হারুষের মেয়ে ছিলেন।
\v 20 আমোন তাঁর বাবা মনঃশি যেমন করেছিলেন তেমনই তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করতেন।
\s5
\v 21 আমোন তাঁর বাবা যে সব পথে চলেছিলেন তিনিও সেই সব পথ অনুসরণ করলেন; তাঁর বাবা যে সব প্রতিমার পূজা করেছিলেন তিনিও সেগুলোকে পূজা করতেন এবং তাদের সামনে মাথা নত করে প্রণাম করতেন।
\v 22 তিনি সদাপ্রভু তাঁর পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরকে ত্যাগ করেছিলেন এবং সদাপ্রভুর পথে চলতেন না।
\v 23 আমোনের দাসেরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাঁর নিজের রাজবাড়ীতেই তাঁকে হত্যা করল।
\s5
\v 24 কিন্তু রাজা আমোনের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করেছিল দেশের লোকেরা তাদের সবাইকে মেরে ফেলল এবং তারা যোশিয়কে, তাঁর ছেলে, তাঁর জায়গায় রাজা করল।
\v 25 আমোনের অন্যান্য সব কাজের বিষয়ের অবশিষ্ট কথা যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 26 উষের বাগানে তাঁর নিজের জন্য করা কবরে তাঁকে কবর দেওয়া হল এবং যোশিয়, তাঁর ছেলে তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 22
\s যোশিয় রাজার বিবরণ। ধর্মসংশোধন।
\p
\v 1 যোশিয় আট বছর বয়সে তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন এবং তিনি একত্রিশ বছর পর্যন্ত যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল যিদীদা; তিনি বস্কতীয় অদায়ার মেয়ে ছিলেন।
\v 2 যোশিয় সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তাই করতেন। তিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের পথে চলতেন এবং তিনি সেই পথ থেকে ডান দিকে কিম্বা বাঁদিকে ফিরতেন না।
\s5
\v 3 যোশিয় রাজার আঠারো বছরে তিনি মশুল্লমের নাতি, অর্থাৎ অৎসলিয়ের ছেলে লেখক শাফনকে এই কথা বলে সদাপ্রভুর গৃহে পাঠিয়ে দিলেন,
\v 4 “আপনি মহাযাজক হিল্কিয়ের কাছে যান এবং তাঁকে বলুন, যেন তিনি সদাপ্রভুর গৃহে নিয়ে আসা সেই সমস্ত টাকা পয়সা, যা মন্দিরের দারোয়ানেরা লোকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে তার হিসাব তৈরী করে রাখেন।
\v 5 সদাপ্রভুর উপাসনা গৃহের কাজ তদারক করবার জন্য যে লোকদের নিযুক্ত করা হয়েছে তিনি যেন সেই টাকা তাদের হাতে দেন এবং তদারককারীরা যেন সেই টাকা সদাপ্রভুর গৃহের ভাঙ্গা জায়গা সারাই করবার জন্য তাদের হাতে দেন।
\s5
\v 6 সেই টাকা দিয়ে যেন ছুতোর মিস্ত্রিদের, ঘর তৈরীর মিস্ত্রিদের এবং রাজমিস্ত্রিদের মজুরি দেয় এবং এছাড়াও মন্দির সারাই করার জন্য যেন তারা কাঠ ও সুন্দর করে কাটা পাথর কেনে।
\v 7 কিন্তু তাদের হাতে যে টাকা দেওয়া হল তার কোনো হিসাব তাদের আর দিতে হবে না, কারণ তারা বিশ্বস্তভাবেই কাজ করেছে।”
\s5
\v 8 তখন রাজার লেখক শাফনকে হিল্কিয় মহাযাজক বললেন, “আমি সদাপ্রভুর গৃহে র মধ্যে ব্যবস্থার বইটি পেয়েছি।” তখন হিল্কিয় সেই বইটি শাফনকে দিলেন এবং তিনি সেটি পড়লেন।
\v 9 পরে শাফন লেখক সেই বইটি রাজার কাছে নিয়ে গেলেন এবং তাঁকে খবর দিয়ে বললেন, “সদাপ্রভুর গৃহে যে টাকা পাওয়া গিয়েছিল তা আপনার দাসেরা বের করে খরচ করেছে এবং সদাপ্রভুর গৃহে র কাজের তদারককারীদের হাতে দিয়েছে।”
\v 10 তখন শাফন লেখক এই কথা রাজাকে বললেন, “হিল্কিয় যাজক আমাকে একটি বই দিয়েছেন।” আর তখন শাফন সেটি রাজার সামনে পড়ে শোনালেন।
\s5
\v 11 যখন রাজা ব্যবস্থার বইতে লেখা বাক্যগুলি শুনলেন, তিনি নিজের পোশাক ছিঁড়লেন।
\v 12 তিনি হিল্কিয় যাজককে, শাফনের ছেলে অহীকাম, মীখায়ের ছেলে অক্‌বোর, শাফন লেখক এবং রাজার নিজের দাস অসায়কে আদেশ দিয়ে বললেন,
\v 13 “যাও এবং এই যে বইটি পাওয়া গেছে তার মধ্যে যে সমস্ত ব্যবস্থার কথা লেখা আছে সেই সব কথা সম্বন্ধে তোমরা গিয়ে আমার জন্য এবং এখানকার ও সমস্ত যিহূদার লোকদের জন্য সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা কর। সদাপ্রভু আমাদের বিরুদ্ধে ক্রোধের আগুনে জ্বলে উঠেছেন, কারণ আমাদের পালন করার জন্য যে সব ব্যবস্থার কথা লেখা আছে আমাদের পূর্বপুরুষেরা সে সব শোনেন নি এবং পালন করবার জন্য যে সব কথা সেখানে লেখা আছে সেই অনুসারে তাঁরা কাজ করেন নি।”
\s5
\v 14 এই কথা শোনার পর হিল্কিয় যাজক, অহীকাম, অক্‌বোর, শাফন ও অসায় হুল্‌দা ভাববাদিনীর কাছে গিয়ে কথাবার্তা বললেন। হুল্‌দা ছিলেন বস্ত্র রক্ষাকারী শল্লুমের স্ত্রী। শল্লূম ছিলেন হর্হসের নাতি, অর্থাৎ তিক্‌বের ছেলে। হুল্‌দা যিরূশালেমের দ্বিতীয় অংশে বাস করতেন।
\v 15 তিনি তাঁদের বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা বলেন যে, আমার কাছে যিনি আপনাদেরকে পাঠিয়েছেন তাঁকে গিয়ে বলুন,”
\v 16 “সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন, ‘দেখো, আমি এই জায়গার উপর ও তার লোকদের উপর যিহূদার রাজা বইটিতে লেখা যা কিছু পড়া হয়েছে আমি সেই মতই প্রত্যেকটা বিপদ নিয়ে আসব।
\s5
\v 17 কারণ তারা আমাকে ত্যাগ করেছে এবং অন্য দেবতাদের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালিয়েছে, সুতরাং এইভাবে তাদের কাজের মাধ্যমে তারা আমাকে অসন্তুষ্ট করেছে; সেইজন্য এই জায়গার বিরুদ্ধে আমার ক্রোধের আগুন জ্বলে উঠবে এবং সেটি কখনো নিভানো যাবে না’।”
\v 18 কিন্তু সদাপ্রভুর ইচ্ছা জানবার জন্য যিনি আপনাদের পাঠিয়েছেন সেই যিহূদার রাজাকে আপনারা গিয়ে এই কথা বলবেন যে, “সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথা বলেছেন, ‘আপনারা যে সব কথা শুনেছেন,
\v 19 কারণ তোমার হৃদয় কোমল হয়েছে এবং তুমি নিজেকে সদাপ্রভুর সামনে নত করেছ, সেই কারণে যখন আমি এই জায়গা ও তার লোকদের বিরুদ্ধে যে অভিশাপ ও ধ্বংসের কথা বলেছি তা শুনেছ এবং তোমার নিজের পোশাক ছিঁড়েছ এবং আমার সামনে কেঁদেছ। তুমি এই সব করেছ বলে আমি সদাপ্রভু তোমার প্রার্থনা শুনেছি’। এটিই হলো সদাপ্রভুর ঘোষণা।
\s5
\v 20 অতএব দেখ, আমি তোমাকে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে নিয়ে যাব এবং তুমি শান্তিতে নিজের কবরে কবর প্রাপ্ত হবে। এই জায়গা ও লোকদের উপর আমি যে সব দুর্ঘটনা নিয়ে আসব সে সব তোমার চোখ দেখতে পাবে না।” তখন তাঁরা হুল্‌দার বাক্য নিয়ে রাজার কাছে ফিরে গেলেন।
\s5
\c 23
\p
\v 1 পরে রাজা লোক পাঠিয়ে যিহূদা ও যিরূশালেমের সমস্ত প্রাচীন নেতাদের ডেকে তাঁর কাছে জড়ো করলেন।
\v 2 তখন রাজা যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের, যাজকদের, ভাববাদীদের এবং ছোট ও মহান সমস্ত লোকদের তাঁর সঙ্গে নিয়ে সদাপ্রভুর গৃহে গেলেন। তখন তিনি সদাপ্রভুর গৃহে ব্যবস্থার যে বইটি পাওয়া গিয়েছিল তার সমস্ত কথা তিনি তাদের শুনিয়ে পড়লেন।
\s5
\v 3 রাজা মঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে সদাপ্রভুর পথে চলবার জন্য এবং সমস্ত মন প্রাণ দিয়ে তাঁর সব আদেশ, নিয়ম ও নির্দেশ মেনে চলবার জন্য, অর্থাৎ এই বইয়ের মধ্যে লেখা ব্যবস্থার সমস্ত কথা পালন করবার জন্য সদাপ্রভুর সামনে প্রতিজ্ঞা করলেন এবং সমস্ত লোকেরাও রাজার সঙ্গে একই প্রতিজ্ঞায় সম্মতি দিল।
\s5
\v 4 রাজা তখন বাল দেবতা ও আশেরা এবং আকাশের সমস্ত তারাগুলোর পূজার জন্য তৈরী সব জিনিসপত্র সদাপ্রভুর ঘর থেকে বের করে ফেলবার জন্য মহাযাজক হিল্কিয়কে, দ্বিতীয় শ্রেণীর যাজককে এবং দারোয়ানদের আদেশ দিলেন। তিনি সেগুলো যিরূশালেমের বাইরে কিদ্রোণ উপত্যকার মাঠে পুড়িয়ে দিলেন এবং ছাইগুলো বৈথেলে নিয়ে গেলেন।
\v 5 তিনি যিহূদার শহরগুলোর এবং যিরূশালেমের চারপাশের উঁচু স্থানগুলোতে ধূপ জ্বালাবার জন্য যিহূদার রাজারা যে সব প্রতিমাপূজাকারী যাজকদের নিযুক্ত করেছিলেন, অর্থাৎ যারা বাল দেবতা, চাঁদ, সূর্য, গ্রহদের এবং আকাশের সমস্ত বাহিনীদের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালাত তাদের তিনি দূর করে দিলেন।
\s5
\v 6 তিনি সদাপ্রভুর ঘর থেকে আশেরার মূর্তির খুঁটিটা বার করে নিয়ে এসে যিরূশালেমের বাইরে কিদ্রোণ উপত্যকাতে সেটা নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দিলেন। তারপর সেটা গুঁড়া করলেন এবং তার ধুলো সাধারণ লোকদের কবরের উপরে ছড়িয়ে দিলেন।
\v 7 পুরুষ বেশ্যাদের যে কামরাগুলো সদাপ্রভুর গৃহে ছিল যেখানে স্ত্রীলোকেরা আশেরার জন্য কাপড় বুনত তিনি সেগুলো ভেঙ্গে পরিষ্কার করে দিলেন।
\s5
\v 8 যোশিয় যিহূদার শহর ও গ্রামগুলো থেকে সমস্ত যাজকদের বাইরে আনালেন এবং গেবা থেকে বের্‌শেবা পর্যন্ত যে সব পূজার উঁচু স্থানগুলোতে সেই যাজকদেরা ধূপ জ্বালাত সেগুলো অশূচি করে দিলেন। তিনি শাসনকর্তা যিহোশূয়ের ফটকে ঢোকার পথে যে সব পূজার উঁচু স্থান ছিল সেগুলো ভেঙ্গে ফেললেন। এই ফটকদ্বার শহরের প্রধান ফটকে প্রবেশকারীর বাঁদিকে ছিল।
\v 9 সেই উঁচুস্থানগুলোর যাজকদের যিরূশালেমে সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদীতে বলিদান করতে অনুমতি ছিল না, কিন্তু তারা অন্যান্য যাজক ভাইদের সঙ্গে খামি ছাড়া রুটি খেতে পারত।
\s5
\v 10 অন্য কেউ যাতে মোলক দেবতার উদ্দেশ্যে নিজের ছেলে বা মেয়েকে আগুনে পুড়িয়ে হোমবলি উৎসর্গ করতে না পারে সেইজন্য যোশিয় বেন্‌হিন্নোম উপত্যকার তোফৎ নামে জায়গাটা অশূচি করলেন।
\v 11 যিহূদার রাজারা যে সব রথ ও ঘোড়াগুলো সূর্যের উদ্দেশ্যে দিয়েছিলেন যোশিয় সেই ঘোড়াগুলো দূর করে দিয়ে রথগুলো পুড়িয়ে দিলেন। সদাপ্রভুর গৃহে ঢোকবার পথের পাশে, উঠানের মধ্যে, নথন-মেলক নামে একজন রাজকর্মচারীর কামরার কাছে ঘোড়াগুলো রাখা হত।
\s5
\v 12 রাজা আহসের উপরের কামরার ছাদের উপরে যিহূদার রাজারা যে সব যজ্ঞবেদী তৈরী করেছিলেন এবং সদাপ্রভুর গৃহের দুটি উঠানে মনঃশি যে সব যজ্ঞবেদী তৈরী করেছিলেন যোশিয় সেগুলো ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে কিদ্রোণ উপত্যকায় ফেলে দিলেন।
\v 13 যিরূশালেমের পূর্ব দিকে ধ্বংসের পাহাড়ের দক্ষিণে যে সব উঁচু স্থান ছিল সেগুলো তিনি অশূচি করলেন। ইস্রায়েলের রাজা শলোমন সীদোনীয়দের জঘন্য দেবী অষ্টোরতের জন্য, মোয়াবের জঘন্য দেবতা কমোশের জন্য এবং অম্মোনের লোকদের জঘন্য দেবতা মিল্কমের জন্য এই সব উঁচু স্থান তৈরী করেছিলেন। সে সকলই তিনি অশূচি করলেন।
\v 14 যোশিয় রাজা পবিত্র পাথরগুলো ভেঙ্গে ফেললেন এবং আশেরার মূর্তিগুলিও কেটে ফেললেন আর সেই জায়গাগুলো মানুষের হাড়ে পূরণ করে দিলেন।
\s5
\v 15 নবাটের ছেলে যারবিয়াম যিনি ইস্রায়েলকে দিয়ে পাপ করিয়েছিলেন তিনি বৈথেলে যে যজ্ঞবেদী ও উঁচু স্থান তৈরী করেছিলেন সেটি যোশিয় ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। যোশিয় সেই উঁচু স্থানটা আগুনে পুড়িয়ে দিলেন ও পিষে গুড়ো করলেন।
\v 16 তারপর তিনি চারপাশে তাকিয়ে দেখলেন এবং পাহাড়ের কাছে কিছু কবর দেখতে পেলেন। তিনি তাঁর লোক পাঠিয়ে সেই কবর থেকে হাড় আনিয়ে সেগুলো যজ্ঞবেদীর উপর পোড়ালেন এবং সেটি অশূচি করলেন। সদাপ্রভুর সেই কথা অনুযায়ী সবই হয়েছিল যা ঈশ্বরের লোক সব ঘটনার কথা আগে ঘোষণা করেছিলেন।
\s5
\v 17 তখন তিনি বললেন, “আমি ওটা কোন স্তম্ভ দেখতে পাচ্ছি?” শহরের লোকেরা তাঁকে বলল, “ঈশ্বরের যে লোক যিহূদা থেকে এসে বৈথেলের যজ্ঞবেদীর বিরুদ্ধে আপনার এই সমস্ত কাজের কথা প্রচার করেছিলেন, এটি তাঁরই কবর।”
\v 18 তখন যোশিয় বললেন, “ওটা থাকুক; কেউ যেন তাঁর হাড়গুলো না সরিয়ে দেয়।” সুতরাং লোকেরা তাঁর হাড়গোড় এবং যে ভাববাদী শমরিয়া থেকে এসেছিলেন তাঁর হাড়গোড় তেমনই থাকতে দিল।
\s5
\v 19 শমরিয়ার শহর ইস্রায়েলের রাজারা উঁচু স্থানে যে সব মন্দির তৈরী করে সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করেছিলেন, যোশিয় সেগুলো দূর করে দিলেন এবং সেগুলির অবস্থা বৈথেলে যেমন করেছিলেন ঠিক সেই রকম করলেন।
\v 20 তিনি সেই সব যজ্ঞবেদীর উপরে সেখানকার যাজকদের বলিদান করলেন এবং সেগুলির উপর মানুষের হাড় পোড়ালেন। তারপরে তিনি যিরূশালেমে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 21 তখন রাজা সব লোকদের আদেশ দিয়ে বললেন, “ব্যবস্থার বইয়ে যেমন লেখা আছে তেমনি করে আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিস্তারপর্ব পালন করুন।”
\v 22 ইস্রায়েলীয়দের শাসনকালে বিচারকদের আমলে কিম্বা ইস্রায়েল ও যিহূদার রাজাদের আমলে এই ধরনের নিস্তারপর্ব কখনো পালন করা হয় নি।
\v 23 যদিও যোশিয় রাজার রাজত্বকালে আঠারো বছরের সময়ে যিরূশালেমে সদাপ্রভুর জন্য এই নিস্তারপর্ব পালন করা হয়েছিল।
\s5
\v 24 এছাড়া যারা মৃতদের সঙ্গে এবং যারা মন্দ আত্মার সঙ্গে কথা বলতেন যোশিয় তাদের তাড়িয়ে দিলেন। তিনি পারিবারিক দেবতার মূর্তি, প্রতিমা এবং যিহূদা ও যিরূশালেমে যে সব ঘৃণার জিনিসপত্র দেখতে পেলেন সেগুলোও সব দূর করে দিলেন। হিল্কিয় যাজক সদাপ্রভুর গৃহে যে ব্যবস্থার কথা লেখা বই খুঁজে পেয়েছিলেন তার সব বাক্য যেন সঠিকভাবে মান্য করা হয় সেইজন্য যোশিয় এই সব কাজ করেছিলেন।
\v 25 যোশিয় রাজার আগে আর কোনো রাজাই তাঁর মত ছিলেন না যিনি তাঁর মত সমস্ত মন, প্রাণ ও শক্তি দিয়ে মোশির সমস্ত ব্যবস্থা অনুযায়ী সদাপ্রভুর পথে চলতেন। না কোনো রাজা যোশিয় রাজার মত পরে উঠেছিলেন।
\s5
\v 26 তবুও, যিহূদার বিরুদ্ধে যে ভয়ংকর ক্রোধে সদাপ্রভু প্রজ্বলিতি হয়ে উঠেছিলেন তা থেকে তিনি ফিরলেন না, যেমন মনঃশির অসন্তোষ জনক কাজের ফলে সদাপ্রভু অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন।
\v 27 সেইজন্য সদাপ্রভু বললেন, “আমি আমার চোখের সামনে থেকে যেমন করে আমি ইস্রায়েলকে দূর করেছি তেমনি করে যিহূদাকেও দূর করব, আর যে শহরকে আমি বেছে নিয়েছিলাম সেই যিরূশালেমকে এবং যার সম্বন্ধে আমি বলেছিলাম, ‘আমার নাম সেখানে থাকবে’ সেই ঘরকেও আমি অগ্রাহ্য করব।”
\s5
\v 28 যোশিয়ের অন্যান্য সমস্ত অবশিষ্ট কাজের কথা যা কিছু তিনি করেছিলেন যিহূদার রাজাদের ইতিহাস বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 29 তাঁর রাজত্বের সময়ে মিসরের রাজা ফরৌণ নখো অশূর রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ইউফ্রেটিস নদীর দিকে গেলেন। তখন যোশিয় রাজা নখোর সঙ্গে যুদ্ধ করবার জন্য বের হলেন এবং ফরৌণ নখো যুদ্ধ করে তাঁকে মগিদ্দোতে মেরে ফেললেন।
\v 30 যোশিয়ের দাসেরা তাঁর মৃত দেহ রথে করে মগিদ্দো থেকে যিরূশালেমে নিয়ে আসলো এবং তাঁর নিজের কবরে তাঁকে কবর দিল। পরে দেশের লোকেরা যোশিয়ের ছেলে যিহোয়াহসকে অভিষেক করে তাঁর বাবার জায়গায় তাঁকে রাজা করল।
\s যিহোয়াহস ও চারজন রাজার বিবরণ। যিরূশালেম ও যিহুদা রাজ্যের ধ্বংস।
\p
\s5
\v 31 যিহোয়াহস তেইশ বছর বয়সে ছিলেন যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেছিলেন এবং তিনি তিন মাস যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল হমূটল; তিনি লিব্‌নার বাসিন্দা যিরমিয়ের মেয়ে ছিলেন।
\v 32 যিহোয়াহস তাঁর পূর্বপুরুষরা যেমন করেছিলেন, তেমনই তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করতেন।
\v 33 ফরৌণ নখো তাঁকে হমাৎ দেশের রিব্‌লাতে আটক করে রাখলেন যেন তিনি যিরূশালেমে রাজত্ব করতে না পারেন। তখন নখো একশো তালন্ত রূপো (প্রায় চার টন রূপো) ও এক তালন্ত সোনা (ঊনচল্লিশ কেজি সোনা) যিহূদা দেশের উপর জরিমানা করলেন।
\s5
\v 34 পরে ফরৌণ নখো যোশিয়ের অন্য ছেলে ইলিয়াকীমকে তাঁর বাবা যোশিয়ের জায়গায় রাজা করলেন এবং ইলিয়াকীমের নাম বদল করে যিহোয়াকীম রাখলেন। কিন্তু ফরৌণ নখো যিহোয়াহসকে মিসরে নিয়ে গেলেন এবং সেখানে যিহোয়াহস মারা গেলেন।
\v 35 যিহোয়াকীম ফরৌণকে সেই সোনা ও রুপো দিলেন। ফরৌণের আদেশ অনুসারে তা দেওয়ার জন্য তিনি দেশের লোকদের উপর কর চাপালেন। দেশের প্রত্যেকে মানুষের উপর কর ধার্য্য করে সেই সোনা ও রুপো তিনি ফরৌণ নখোকে দেবার জন্য দেশের লোকদের কাছ থেকে আদায় করলেন।
\s5
\v 36 যিহোয়াকীমের বয়স পঁচিশ বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করলেন। তিনি এগারো বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল সবীদা; তিনি ছিলেন রূমায় বাসিন্দা পদায়ের মেয়ে।
\v 37 যিহোয়াকীম তাঁর পূর্বপুরুষের যেমন করেছিলেন তেমনই সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তাই করতেন।
\s5
\c 24
\p
\v 1 যিহোয়াকীমের সময়ে বাবিলের রাজা নবূখদ্‌নিৎসর যিহূদা দেশ আক্রমণ করলেন। যিহোয়াকীম তিন বছর পর্যন্ত তাঁর দাস ছিলেন। পরে তিনি ফিরলেন এবং নবূখদ্‌নিৎসরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন।
\v 2 সদাপ্রভু যিহোয়াকীমের বিরুদ্ধে বাবিলোনীয়, অরামীয়, মোয়াবীয় ও অম্মোনীয় লুটেরাদের পাঠিয়ে দিলেন। তাঁর দাস ভাববাদীদের মধ্য দিয়ে যে কথা বলেছিলেন সেই অনুযায়ী যিহূদা দেশকে ধ্বংস করবার জন্য তিনি তাদের পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
\s5
\v 3 বস্তুত সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারেই যিহূদার প্রতি এই সব ঘটেছিল যাতে তিনি নিজের চোখের সামনে থেকে তাদের দূর করে দিতে পারেন। কারণ এই সব ঘটেছিল মনঃশির সমস্ত পাপের জন্য,
\v 4 এবং নির্দোষ লোকদের রক্তপাতের জন্য, কারণ তিনি তাদের রক্তে যিরূশালেম পূর্ণ করেছিলেন, আর সদাপ্রভু তা ক্ষমা করতে রাজী হলেন না।
\s5
\v 5 যিহোয়াকীমের অন্যান্য অবশিষ্ট সমস্ত কাজের বিবরণ যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 6 পরে তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রাগত হলেন এবং তাঁর ছেলে যিহোয়াখীন তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\v 7 মিসরের রাজা আক্রমণ করবার জন্য তাঁর রাজ্য থেকে আর বের হন নি, কারণ বাবিলের রাজা মিসরের রাজার যতটা রাজ্য ছিল মিসরের ছোট নদী থেকে ইউফ্রেটিস নদী পর্যন্ত সমস্ত রাজ্যটা দখল করে নিয়েছিলেন।
\s5
\v 8 যিহোয়াখীন যখন রাজত্ব শুরু করেন তখন তাঁর বয়স আঠারো বছর ছিল এবং তিনি তিন মাস রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল নহুষ্টা; তিনি যিরূশালেমের বাসিন্দা ইল্‌নাথনের মেয়ে ছিলেন।
\v 9 যিহোয়াখীন সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তাই করতেন, তিনি তাঁর বাবার যা করেছিলেন তেমনই করলেন।
\s5
\v 10 সেই সময়ে বাবিলের রাজা নবূখদ্‌নিৎসরের সৈন্যেরা যিরূশালেম আক্রমণ করলো এবং সেই শহর অবরোধ করল।
\v 11 তাঁর সৈন্যেরা যখন শহর অবরোধ করছিল তখন নবূখদ্‌নিৎসর নিজে শহরে গিয়েছিলেন।
\v 12 এবং যিহূদার রাজা যিহোয়াখীন, তাঁর মা, তাঁর সাহায্যকারীরা, তাঁর সেনাপতিরা ও তাঁর কর্মচারীরা সবাই বাবিলের রাজার হাতে নিজেদের তুলে দিলেন। আর বাবিলের রাজা রাজত্বের আট বছরের সময় তিনি যিহোয়াখীনকে বন্দী করে নিয়ে গেলেন।
\s5
\v 13 যেমন সদাপ্রভু বলেছিলেন তেমনি করে নবূখদ্‌নিৎসর সদাপ্রভুর ঘর ও রাজবাড়ী থেকে সব ধনরত্ন নিয়ে গেলেন এবং ইস্রায়েলের রাজা শলোমন সদাপ্রভুর গৃহের জন্য সোনা দিয়ে যে সব জিনিস তৈরী করেছিলেন তা তিনি কেটে টুকরা টুকরা করলেন।
\v 14 তিনি যিরূশালেমের সবাইকে, অর্থাৎ সমস্ত নেতাবর্গ ও সমস্ত যোদ্ধা বীর, সমস্ত শিল্পকার ও কর্মকারদের মোট দশ হাজার লোককে বন্দী করে নিয়ে গেলেন। দেশে গরীব লোক ছাড়া আর কাউকে অবশিষ্ট রাখলেন না।
\s5
\v 15 নবূখদ্‌নিৎসর যিহোয়াখীনকে বন্দী করে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি যিরূশালেম থেকে রাজার মাকে, তাঁর স্ত্রীদের, তাঁর কর্মচারীদের এবং দেশের গণ্যমান্য লোকদেরও বন্দী করে তিনি বাবিলে নিয়ে গেলেন।
\v 16 বাবিলের রাজা সমস্ত যুদ্ধের জন্য উপযুক্ত ও শক্তিশালী সাত হাজার যোদ্ধার পুরো সৈন্যদল এবং এক হাজার শিল্পকার এবং কামারদের বন্দী করে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলেন।
\v 17 বাবিলের রাজা যিহোয়াখীনের বাবার ভাই মত্তনিয়কে তাঁর জায়গায় রাজা করলেন এবং তাঁর নাম বদ্‌ল করে সিদিকিয় রাখলেন।
\s5
\v 18 সিদিকিয় একুশ বছর বয়সে ছিলেন যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন। তিনি যিরূশালেমে এগারো বছর রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল হমূটল; তিনি ছিলেন লিব্‌নার বাসিন্দা যিরমিয়ের মেয়ে।
\v 19 সিদিকিয় সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করতেন, যিহোয়াকীম যা করেছিলেন তিনি তা সবই করতেন।
\v 20 সদাপ্রভুর ক্রোধের কারণে এবং যতক্ষণ না তিনি তাঁর সামনে থেকে তাদের দূর করে দিলেন, যিরূশালেম ও যিহূদায় এই সব ঘটনা ঘটেছিল। তখন সিদিকিয় বাবিলের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন।
\s5
\c 25
\p
\v 1 সিদিকিয়ের রাজত্বের নবম বছরের দশম মাসের দশ দিনের দিন নবূখদ্‌নিৎসর বাবিলের রাজা তাঁর সব সৈন্যদল নিয়ে যিরূশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এলেন। তিনি শহরের বাইরে শিবির তৈরী করলেন এবং শহরের চারপাশে ঘিরে উঁচু দেয়াল তৈরী করলেন।
\v 2 রাজা সিদিকিয়ের রাজত্বের এগারো বছর পর্যন্ত শহরটা অবরোধ করে রাখা হয়েছিল।
\v 3 সেই বছরে চতুর্থ মাসের নয় দিনের দিন শহরে দুর্ভিক্ষের অবস্থা এমন বেশি হল যে, দেশের লোকদের জন্য কিছুই খাদ্য ছিল না।
\s5
\v 4 পরে শহরের একটা জায়গা ভেঙ্গে গেল এবং রাতের বেলা যিহূদার সমস্ত সৈন্য রাজার বাগানের কাছে দুই দেয়ালের মাঝখানের ফটক দিয়ে পালিয়ে গেল। যদিও কলদীয়েরা তখনও শহরটা চারিদিকে ঘেরাও করে ছিল। আর রাজা অরাবার রাস্তার দিকে চলে গেলেন।
\v 5 কিন্তু কলদীয় সৈন্যদল সিদিকিয় রাজার পিছনে তাড়া করে যিরীহোর উপত্যকাতে তাঁকে ধরে ফেলল। তাঁর সমস্ত সৈন্য তাঁর কাছ থেকে আলাদা হয়ে গিয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল।
\s5
\v 6 তাঁরা রাজাকে বন্দী করে রিব্‌লাতে বাবিলের রাজার কাছে নিয়ে গেল। সেখানে তারা তাঁর উপর শাস্তির আদেশ দিল।
\v 7 সৈন্যেরা সিদিকিয়ের চোখের সামনেই তাঁর ছেলেদের হত্যা করলো। তারপর তাঁর চোখ দুটি তুলে ফেলে তাঁকে ব্রোঞ্জের শিকল দিয়ে বাঁধলো এবং তাঁকে বাবিলে নিয়ে গেল।
\s5
\v 8 পরে বাবিলের রাজা নবূখদ্‌নিৎসরের রাজত্বের ঊনিশ বছরের পঞ্চম মাসের সপ্তম দিনে বাবিল রাজার দাস নবূষরদন নামে রক্ষীদলের সেনাপতি যিরূশালেমে আসলেন।
\v 9 তিনি সদাপ্রভুর গৃহে, রাজবাড়ীতে এবং যিরূশালেমের সমস্ত বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিলেন। শহরের সমস্ত প্রধান বাড়িগুলিও তিনি পুড়িয়ে দিলেন।
\v 10 রাজার রক্ষীদলের সেনাপতির অধীনে সমস্ত বাবিলীয় সৈন্যদল যিরূশালেমের চারিদিকের দেয়াল ভেঙ্গে ফেলল।
\s5
\v 11 শহরের বাকী লোকরা যারা থেকে গেছিল এবং যারা দুরে নির্জন জায়গায় বাবিলের রাজার পক্ষে গিয়েছিল তাদের সবাইকে রক্ষীদলের সেনাপতি নবূষরদন বন্দী করে নিয়ে গেলেন,
\v 12 কিন্তু আঙুর ক্ষেত দেখাশোনা ও জমি চাষ করবার জন্য কিছু গরীব লোককে রক্ষীদলের সেনাপতি দেশে রেখে গেলেন।
\s5
\v 13 কলদীয়েরা সদাপ্রভুর গৃহের ব্রোঞ্জের যে দুটি থাম ছিল এবং গামলা বসাবার ব্রোঞ্জের দানিগুলি এবং পিতলের বিরাট পাত্রটি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে বাবিলে নিয়ে গেলন।
\v 14 এছাড়া সব পাত্র, বেল্‌চা, সল্‌তে চিম্‌টা, হাতা এবং উপাসনা গৃহে সেবা কাজের জন্য অন্যান্য সমস্ত ব্রোঞ্জের জিনিস কলদীয়েরা নিয়ে গেল।
\v 15 আর আগুন রাখার পাত্র এবং গামলা যে গুলি সোনা ও রুপো র তৈরী, সে সমস্ত জিনিসও রাজার রক্ষীদলের সেনাপতি নিয়ে গেলেন।
\s5
\v 16 সদাপ্রভুর গৃহে র জন্য শলোমন যে দুটি থাম, বড় জলপাত্র এবং আসনগুলো তৈরী করিয়েছিলেন সেগুলিতে এতো ব্রোঞ্জ ছিল যে ওজন করা অসম্ভব ছিল।
\v 17 প্রত্যেকটা থাম ছিল আঠারো হাত উঁচু ও তার উপরে মাথা ছিল যার উচ্চতা ছিল তিন হাত উঁচু। মাথাটার চারপাশ ব্রোঞ্জের শিকল ও ব্রোঞ্জের ডালিম দিয়ে সাজানো ছিল। দ্বিতীয় থামটিও প্রথমটির মতই তৈরী ছিল।
\s5
\v 18 প্রধান যাজক সরায়, দ্বিতীয় যাজক সফনিয় ও তিনজন দারোয়ানকে রক্ষীদলের সেনাপতি বন্দী করে নিয়ে গেলেন।
\v 19 যারা তখনও শহরে ছিল তাদের মধ্য থেকে তিনি যোদ্ধাদের উপরে নিযুক্ত একজন কর্মচারী ও রাজার পাঁচজন উপদেশদাতাকে ধরলেন। এছাড়া সেনাপতির লেখক যিনি সৈন্যদলে লোক সংগ্রহ করতেন তাঁকে এবং যারা শহরের মধ্যে ছিলেন তাদের মধ্যে আরও ষাটজন গুরুত্বপূর্ণ লোককেও ধরলেন।
\s5
\v 20 রক্ষীদলের সেনাপতি নবূষরদন তাদের সবাইকে রিব্‌লাতে বাবিলের রাজার কাছে বন্দী করে নিয়ে গেলেন।
\v 21 বাবিলের রাজা হমাৎ দেশের রিব্‌লাতে এই সব লোকদের হত্যা করলেন। এইভাবে যিহূদার লোকদের বন্দী করে নিজের দেশ থেকে নিয়ে যাওয়া হল।
\s5
\v 22 বাবিলের রাজা নবূখদ্‌নিৎসর যে সব লোকদের যিহূদা দেশে অবশিষ্ট রেখে গিয়েছিলেন তাদের উপরে তিনি শাফনের নাতি, অর্থাৎ অহীকামের ছেলে গদলিয়কে শাসনকর্তা হিসাবে নিযুক্ত করলেন।
\v 23 বাবিলের রাজা গদলিয়কে শাসনকর্তা করে নিযুক্ত করেছেন শুনে যিহূদার কিছু সেনাপতি ও তাঁদের লোকেরা, অর্থাৎ এই লোকেরা ছিল নথনিয়ের ছেলে ইশ্মায়েল, কারেয়ের ছেলে যোহানন, নটোফাতীয় তন্‌হূমতের ছেলে সরায় ও মাখাথীয়ের ছেলে যাসনিয় এবং তাদের লোকেরা মিসপাতে গদলিয়ের কাছে আসলেন।
\v 24 গদলিয় তাদের কাছে এবং তাদের লোকদের কাছে এক শপথ করলেন এবং তাদের বললেন, “আপনারা কলদীয় দাসেদের ভয় করবেন না। আপনারা দেশে বাস করুন এবং বাবিলের রাজার সেবা করুন, তাতে আপনাদের মঙ্গল হবে।”
\s5
\v 25 কিন্তু সাত মাসের সময়ে ইলীশামার নাতি, অর্থাৎ নথনিয়ের ছেলে রাজবংশীয় ইশ্মায়েল দশজন লোক সঙ্গে করে নিয়ে এসে গদলিয়কে আক্রমণ করলেন। যিহূদার যে সব লোকেরা ও বাবিলীয়েরা মিসপাতে তাঁর সঙ্গে ছিল তাদের সবার সঙ্গে গদলিয়কে হত্যা করলেন।
\v 26 তখন ছোট বড় সব লোক ও সেনাপতিরা উঠে মিসরে চলে গেল। কারণ তারা বাবিলীয়দের ভয় পেয়েছিল।
\s5
\v 27 পরে যিহূদার রাজা যিহোয়াখীনের বন্দীত্বের সাঁইত্রিশ বছরের সময় ইবিল মরোদক বাবিলের রাজা হলেন। যে বছরে তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন সেই বছরের বারোতম মাসের সাতাশ দিনের দিন যিহোয়াখীনকে জেলখানা থেকে ছেড়ে দিলেন।
\s5
\v 28 তিনি যিহোয়াখীনের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কথা বললেন এবং বাবিলে তাঁর সঙ্গে আর যে সব রাজারা ছিলেন তাঁদের সকলের আসন থেকেও তাঁকে আরও সম্মানের আসন দিলেন।
\v 29 ইবিল মরোদক যিহোয়াখীনের জেলখানার পোষাক খুলে দিলেন এবং জীবনের বাকী দিনগুলো নিয়মিতভাবে রাজার সঙ্গে একই টেবিলে খাওয়া দাওয়া করে কাটিয়ে দিলেন।
\v 30 তাঁর অবশিষ্ট সমস্ত জীবন ধরে রাজা নিয়মিতভাবে তাঁকে প্রতিদিনের জন্য একটা ভাতা দিতেন ও উপযুক্ত জিনিসপত্র দিতেন।