\v 4 সেই ভাবে যোহন হাজির হলেন ও প্রান্তরে বাপ্তিষ্ম দিতে লাগলেন এবং পাপের ক্ষমা, মন পরিবর্তন এবং বাপ্তিষ্মের বিষয় প্রচার করতে লাগলেন।
\p
\v 5 তাতে সব যিহূদিয়া দেশ ও যিরূশালেমে বসবাসকারী সবাই বের হয়ে তাঁর কাছে যেতে লাগল; আর নিজ নিজ পাপ স্বীকার করে যর্দ্দন নদীতে তাঁর মাধ্যমে বাপ্তিষ্ম নিতে লাগলো।
\p
\v 6 সেই যোহন উটের লোমের কাপড় পরতেন, তাঁর কোমরে চামড়ার কোমরবন্দ (বেল্ট) ছিল, এবং তিনি পঙ্গপাল ও বনমধু খেতেন ।
\v 12-13 আর সেইমুহূর্তে আত্মা তাঁকে প্রান্তরে পাঠিয়ে দিলেন, সেই প্রান্তরে তিনি চল্লিশ দিন থেকে শয়তানের মাধ্যমে পরীক্ষিত হলেন; আর তিনি বন্য পশুদের সঙ্গে থাকলেন এবং স্বর্গীয় দূতগণ তাঁর সেবা যত্ন করতেন।
\v 27 এতে সবাই আশ্চর্য্য হলো, এমন কি, তারা একে অপরকে বলতে লাগলো, আ! এটা কি? এ কেমন নতুন উপদেশ! উনি ক্ষমতার সঙ্গে মন্দ আত্মাদেরকেও আদেশ দেন, আর তারা ওনার আদেশ মানে।
\p
\v 28 তাঁর কথা খুব তাড়াতাড়ি গালীল প্রদেশের সবদিকে ছড়িয়ে পড়ল।
\v 32 পরে সন্ধ্যার সময়, সূর্য্য ডুবে যাওয়ার পর মানুষেরা সব অসুস্থ লোককে এবং ভূতগ্রস্তদের তাঁর কাছে অানল।
\p
\v 33 আর শহরের সমস্ত লোক দরজার কাছে জড়ো হল।
\p
\v 34 তাতে তিনি নানা প্রকার রোগে অসুস্থ অনেক লোককে সুস্থ করলেন এবং অনেক ভূত ছাড়ালেন আর তিনি ভূতদের কথা বলতে দিলেন না, কারণ তারা তাঁকে চিনত যে, তিনি কে।
\v 43 তিনি তাকে কঠোর আদেশ দিয়ে তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দিলেন,
\p
\v 44 যীশু তাকে বললেন, কাউকেও কিছু বলো না; কিন্তু যাজকের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও, এবং লোকদের কাছে তোমার শুদ্ধ হওয়ার জন্য মোশির দেওয়া আদেশ মত সাক্ষ্য দাও ।
\v 45 কিন্তু সে বাইরে গিয়ে সেকথা এমন অধিক ভাবে প্রচার করতে ও চারদিকে বলতে লাগল যে, যীশু আর স্বাধীন ভাবে কোন শহরে ঢুকতে পারলেন না, কিন্তু তাঁকে বাইরে নির্জন জায়গায় থাকতে হলো; আর লোকেরা সব দিক থেকে তাঁর কাছে আসতে লাগল।
\s5
\c 2
\s প্রভু যীশু পাপ ক্ষমাও করতে পারেন।
\p
\v 1 কয়েক দিন পরে তিনি আবার কফরনাহূমে চলে আসলে, সেখানকার মানুষেরা শুনতে পেল যে, তিনি ঘরে আছেন।
\p
\v 2 আর এত লোক তাঁর কাছে জড়ো হলো যে, দরজার কাছেও আর জায়গা ছিল না। আর তিনি তাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য শিক্ষা দিতে লাগলেন।
\v 3 তখন চারজন লোক এক জন পক্ষাঘাতী রোগীকে বয়ে তাঁর কাছে নিয়ে যাচ্ছিল।
\p
\v 4 কিন্তু সেখানে ভিড় থাকায় তাঁর কাছে আসতে না পেরে, তিনি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন, সেই জায়গায় ছাদ খুলে ফেলে এবং ছিদ্র করে যে খাটে পক্ষাঘাতী রুগী শুয়েছিল সে খাটটাকে নামিয়ে দিল।
\v 12 তাতে সে উঠে দাঁড়াল ও সেই মুহূর্তে খাট তুলে নিয়ে সবার সামনে দিয়ে বাইরে চলে গেল; এতে সবাই খুব অবাক হল, আর এই বলে ঈশ্বরের গৌরব করতে লাগল যে, এরকম কখনও দেখেনি ।
\s প্রভু যীশুর নানাবিধ অলৌকিক কাজ ও শিক্ষা । লেবীর আহ্বান ও সেই সমন্ধে যীশুর শিক্ষা।
\v 13 পরে তিনি আবার বের হয়ে সমুদ্র-তীরে চলে গেলেন এবং সব লোক তাঁর কাছে আসলো, আর তিনি তাদের শিক্ষা দিতে লাগলেন ।
\p
\v 14 পরে তিনি যেতে যেতে দেখলেন, আলফেয়েরের ছেলে লেবী কর আদায় করবার জায়গায় বসে আছেন; তিনি তাঁকে বললেন, আমার সঙ্গে এস; তাতে তিনি উঠে তাঁর সঙ্গে চলে গেলেন।
\v 15 পরে তিনি যখন তাঁর ঘরের মধ্যে খাবার খেতে বসলেন, আর অনেক কর আদায়কারী ও পাপী মানুষ যীশুর ও তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে খাবার খেতে বসলো; কারণ অনেক লোক যীশুর সঙ্গে সঙ্গে যাছিল।
\p
\v 16 কিন্তু তিনি পাপী ও কর আদায়কারীদের সঙ্গে খাবার খাচ্ছেন দেখে ফরীশীদের ধর্ম শিক্ষকেরা তাঁর শিষ্যদেরকে বললেন উনি কেন কর আদায়কারী ও পাপীদের সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করেন ?
\v 17 যীশু তা শুনে তাদেরকে বললেন, সুস্থ লোকদের ডাক্তার দেখাবার দরকার নেই, কিন্তু অসুস্থদের প্রয়োজন আছে; আমি ধার্ম্মিকদেরকে নয়, কিন্তু পাপীদেরই ডাকতে এসেছি।
\v 18 আর যোহনের শিষ্যেরা ও ফরীশীরা উপবাস করছিল। তারা যীশুর কাছে এসে তাঁকে বলল, যোহনের শিষ্যেরা ও ফরীশীদের শিষ্যেরা উপবাস করে, কিন্তু আপনার শিষ্যেরা উপবাস করে না, এর কারণ কি ?
\p
\v 19 যীশু তাদের বললেন, বর সঙ্গে থাকতে কি বরের সঙ্গে থাকা লোকেরা কি উপবাস করতে পারে ? যতদিন তাদের সঙ্গে বর থাকে, ততদিন তারা উপবাস করতে পারে না।
\v 25 তিনি তাদের বললেন, দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীরা খাবারের অভাবে যখন তাদের খিদে পেল তিনি যা করেছিলেন, তা কি তোমরা কখনও পড়নি ?
\p
\v 26 দায়ুদ অবিয়াথর প্রধান যাজকের সময় ঈশ্বরের ঘরের ভিতর ঢুকে যে, দর্শনরুটী যাজকরা ছাড়া আর অন্য কারও খাওয়া উচিত ছিল না, তাই খেয়েছিলেন এবং সঙ্গীদেরকেও দিয়েছিলেন।
\v 5 কিন্তু তারা চুপ করে থাকলো। তখন তিনি তাদের মনের কঠিনতার জন্য খুব দুঃখ পেয়ে চারদিক দেখে রাগের সঙ্গে তাদের দিকে তাকিয়ে সেই লোকটীকে বললেন, তোমার হাত বাড়িয়ে দাও; সে তার হাত বাড়িয়ে দিল এবং যীশু তার হাত আগের মতন ভালো করে দিল।
\p
\v 6 পরে ফরীশীরা বের হয়ে হেরোদ রাজার লোকদের সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে লাগল, কিভাবে তাঁকে মেরে ফেলা যায়।
\v 7 তখন যীশু তার নিজের শিষ্যদের সঙ্গে সমুদ্রের ধারে চলে গেলেন; তাতে গালীল থেকে একদল মানুষ তার পেছন পেছন গেল।
\p
\v 8 আর যিহূদীয়া, যিরূশালেম, ইদোম, যর্দ্দন নদীর অপর পারের দেশ থেকে এবং সোর ও সীদোনের চারদিক থেকে অনেক লোক, তিনি যে সব মহৎ মহৎ কাজ করছিলেন, তা শুনে তাঁর কাছে আসল।
\v 33 তিনি উত্তরে তাদের বললেন, আমার মা কে? আমার ভায়েরাই বা কারা?
\p
\v 34 পরে যারা তাঁর চারপাশে বসেছিল, তিনি তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, এই দেখ, আমার মা ও আমার ভাইরা;
\p
\v 35 কারণ যে কেউ ঈশ্বরের ইচ্ছা মেনে চলে, সেই আমার ভাই ও বোন ও মা।
\s5
\c 4
\s যীশুর কয়েকটী দৃষ্টান্ত।
\p
\v 1 পরে তিনি আবার সমুদ্রের কিনারায় শিক্ষা দিতে লাগলেন; তাতে তাঁর কাছে এত লোক জড়ো হল যে, তিনি সমুদ্রের মধ্যে একটি নৌকায় উঠে বসলেন এবং জনসাধারনেরা সবাই সমুদ্রের তীরে ডাঙায় থাকল।
\p
\v 2 তখন তিনি গল্পের মাধ্যমে তাদেরকে অনেক শিক্ষা দিতে লাগলেন। শিক্ষার মধ্যে তিনি তাদেরকে বললেন,
\v 10 যখন তিনি একা ছিলেন, তাঁর সঙ্গীরা সেই বারো জনের সঙ্গে তাঁকে গল্পের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন।
\p
\v 11 তিনি তাঁদেরকে বললেন, ঈশ্বরের রাজ্যের গুপ্ত সত্য তোমাদেরকে দেওয়া হয়েছে; কিন্তু ঐ বাইরের লোকদের কাছে সবই গল্পের মাধ্যমে বলা হয়ে থাকে;
\p
\v 12 সুতরাং তারা যখন দেখে, তারা দেখুক কিন্তু যেন বুঝতে না করতে পারে এবং যখন শুনে, শুনুক কিন্তু যেন না বোঝে, পাছে তারা ফিরে আসে ও ঈশ্বর তাদেরকে ক্ষমা করেন।
\v 13 পরে তিনি তাদেরকে বললেন, এই গল্প যখন তোমরা বুঝতে পার না ? তবে কেমন করে বাকি সব গল্প বুঝতে পারবে ?
\p
\v 14 সেই বীজবপক ঈশ্বরের বাক্য বুনেছিল।
\p
\v 15 পথের ধারে পড়া বীজ দিয়ে বোঝানো হয়েছে, তারা এমন লোক যাদের মধ্যে বাক্য-বীজ বোনা যায়; আর যখন তারা শোনে তখুনি শয়তান এসে, তাদের মধ্যে যা বোনা হয়েছিল, সেই বাক্য ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
\v 24 আর তিনি তাদেরকে বললেন, তোমরা যা শুনছ তার দিকে মনোযোগ দাও; তোমরা যে ভাবে মেপে দেবে, ঠিক সেইভাবে তোমাদের জন্যও মেপে দেওয়া যাবে, এবং তোমাদেরকে আরও দেওয়া যাবে।
\p
\v 25 কারণ যার আছে তাকে আরও দেওয়া হবে; আর যার নেই, তার যা আছে, সেটাও তার কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হবে।
\v 11 সেই জায়গায় পাহাড়ের পাশে এক শুকরের পাল চরছিল।
\p
\v 12 আর তারা মিনতি করে বলল, ঐ শুকর পালের মধ্যে ঢুকতে দিন এবং আমাদেরকে পাঠিয়ে দিন।
\p
\v 13 তিনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন। তখন সেই মন্দ আত্মারা বের হয়ে শুকরের পালের মধ্যে ঢুকলো; তাতে সেই শুকরপাল খুব জোরে দৌড়িয়ে ঢালু পাড় দিয়ে সমুদ্রে গিয়ে পড়ে ডুবে মরল। সেই পালে কমবেশি দুই হাজার শুকর ছিল।
\v 18 পরে তিনি যখন নৌকোয় উঠেছেন, এমন সময় যাকে মন্দ আত্মায় পেয়েছিল, সে এসে তাঁকে অনুরোধ করল, যেন তাঁর সঙ্গে যেতে পারে।
\p
\v 19 কিন্তু তিনি তাকে অনুমতি দিলেন না, বরং বললেন, তুমি বাড়ীতে তোমার আত্মীয়দের কাছে যাও এবং ঈশ্বর তোমার জন্য যে যে মহৎ কাজ করেছেন ও তোমার জন্য যে করুণা করেছেন, তা তাদেরকে গিয়ে বল।
\p
\v 20 তখন সে চলে গেল, যীশু তার জন্য যে কত বড় কাজ করেছিলেন, তা দিকাপলিতে প্রচার করতে লাগল; তাতে সবাই আশ্চর্য্য হয়ে গেল ।
\s যীশু একটী স্ত্রীলোককে সুস্থ করেন ও একটী মৃত মেয়েকে জীবন দেন।
\v 41 পরে তিনি মেয়েটির হাত ধরে তাকে বললেন, টালিথা কুমী; অনুবাদ করলে এর মানে হয়, খুকুমনি, তোমাকে বলছি, ওঠ।
\p
\v 42 সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটি তখনি উঠে বেড়াতে লাগল, কারণ তার বয়স বারো বছর ছিল। এতে তারা খুব অবাক ও বিস্মিত হল।
\p
\v 43 পরে তিনি তাদেরকে কড়া আদেশ দিলেন, যেন কেউ এটা জানতে না পারে, আর তিনি মেয়েটিকে কিছু খাবার দেবার জন্য বললেন।
\s5
\c 6
\s যীশুর দেশীয়রা তাঁকে অস্বীকার করে।
\p
\v 1 পরে যীশু সেখান থেকে চলে গেলেন এবং নিজের দেশে আসলেন, আর তাঁর শিষ্যরা তাঁর পেছন পেছন গেল।
\p
\v 2 বিশ্রামবার এলে তিনি সমাজ-ঘরে শিক্ষা দিতে লাগলেন; তাতে অনেক লোক তার কথা শুনে অবাক হয়ে বললো, এই লোক এ সব শিক্ষা কোথা থেকে পেয়েছে? এ কি জ্ঞান তাকে ঈশ্বর দিয়েছে? এই লোকটির হাত দিয়ে যে সব অলৌকিক কাজ হচ্ছে, এটাই বা কি?
\p
\v 3 এ কি সেই ছুতার মিস্ত্রি, মরিয়মের সেই পুত্র এবং যাকোব, যোষি, যিহূদা ও শিমোনের ভাই নয়? এবং এর বোন কি এখানে আমাদের মধ্যে নেই? এইভাবে তারা যীশুকে নিয়ে বাধা পেতে লাগল।
\v 10 তিনি তাঁদেরকে আরও বললেন, তোমরা যখন কোন বাড়ীতে ঢুকবে, সেখান থেকে অন্য কোথাও যাওয়া পর্য্যন্ত সেই বাড়ীতে থেকো।
\p
\v 11 আর যদি কোন জায়গার লোক তোমাদেরকে গ্রহণ না করে এবং তোমাদের কথা না শোনে, সেখান থেকে যাওয়ার সময় তাদের উদ্দেশ্যে সাক্ষ্যের জন্য নিজ নিজ পায়ের থেকে ধুলো ঝেড়ে ফেলো।
\v 14 আর হেরোদ রাজা তাঁর কথা শুনতে পেলেন, কারণ যীশু খুব সুনাম ছিল। তখন তিনি বললেন, যোহন বাপ্তাইজক মৃতদের মধ্য থেকে উঠেছেন, আর সেই জন্য এই সব আশ্চর্য্য কাজ করছেন।
\p
\v 15 কিন্তুু কেউ কেউ বলল, উনি এলিয় এবং কেউ কেউ বলল, উনি একজন ভবিষ্যত বক্তা, ভবিষ্যৎ বক্তাদের মধ্যে কোন একজনের মত।
\v 18 যোহন হেরোদকে বলেছিলেন, ভাইয়ের স্ত্রীকে বিয়ে করা আপনার ঠিক হয়নি।
\p
\v 19 আর হেরোদিয়া তাঁর ওপর রেগে গিয়ে তাঁকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল, কিন্তু পেরে ওঠেনি।
\p
\v 20 কারণ হেরোদ যোহনকে ধার্ম্মিক ও পবিত্র লোক বলে ভয় করতেন ও তাঁকে রক্ষা করতেন। আর তাঁর কথা শুনে তিনি খুব অস্বস্তি বোধ করতেন এবং তাঁর কথা শুনতে ভাল বাসতেন।
\v 21 পরে হেরোদিয়ার কাছে এক সুযোগ এল, যখন হেরোদ নিজের জন্মদিনে বড় বড় লোকদের, সেনাপতিদের এবং গালীলের প্রধান লোকদের জন্য এক রাত্রিভোজ আয়োজন করলেন;
\p
\v 22 আর হেরোদিয়ার মেয়ে সেই ভোজ সভায় নেচে হেরোদ এবং যাঁরা তাঁর সঙ্গে ভোজে বসেছিলেন, তাঁদের সন্তুুষ্ট করলো। তাতে রাজা সেই মেয়েকে বললেন, তোমার যা ইচ্ছা হয়, আমার কাছে চাও, আমি তোমাকে দেব।
\v 33 কিন্তু লোকে তাঁদেরকে যেতে দেখল এবং অনেকে তাঁদেরকে চিনতে পারল, তাই সব শহর থেকে মানুষেরা দৌড়ে গিয়ে তাঁদের আগে সেখানে গেল।
\p
\v 34 তখন যীশু নৌকো থেকে বের হয়ে বহু লোক দেখে তাদের জন্য দয়াবান হলেন, কারণ তারা পালক-হীন মেষপালের মত ছিল; আর তিনি তাদেরকে অনেক বিষয় শিক্ষা দিতে লাগলেন।
\v 39 তখন তিনি সবাইকে সবুজ ঘাসের ওপরে দলে দলে বসিয়ে দিতে আদেশ দিলেন।
\p
\v 40 তারা কোনো সারিতে একশত জন ও কোনো সারিতে পঞ্চাশ জন করে বসে গেল।
\p
\v 41 পরে তিনি সেই পাঁচটি রুটী ও দুটী মাছ নিয়ে স্বর্গের দিকে তাকিয়ে ধন্যবাদ দিলেন এবং সেই রুটী কয়টি ভেঙ্গে লোকদের দেবার জন্য শিষ্যদের হাতে দিলেন; আর সেই দুটী মাছও সবাইকে ভাগ করে দিলেন।
\v 48 পরে যীশু দেখতে পেলেন শিষ্যরা নৌকায় যেতে খুব কষ্ট করছিল কারণ হাওয়া তাদের সামনের দিক থেকে আসছিল। প্রায় চার প্রহর রাত্রে সমুদ্রের উপর দিয়ে যীশু হেঁটে তাঁদের কাছে আসলেন এবং তাঁদেরকে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছিলেন।
\p
\v 49 কিন্তু সমুদ্রের উপর দিয়ে তাঁকে হাঁটতে দেখে তাঁরা ভূত মনে করে চেঁচিয়ে উঠলেন,
\p
\v 50 কারণ সবাই তাঁকে দেখেছিলেন ও ভয় পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সঙ্গে কথা বললেন, তাঁদেরকে বললেন, সাহস কর, এখানে আমি, ভয় করো না।
\v 56 আর গ্রামে, কি শহরে, কি দেশে, যে কোনো জায়গায় তিনি গেলেন, সেই জায়গায় তারা অসুস্থদেরকে বাজারে বসাল; এবং তাঁকে মিনতি করল, যেন ওরা তাঁর পোশাকের একটি অংশ যেন ছুঁতে পারে, আর যত লোক তাঁকে ছুঁলো, সবাই সুস্থ হল।
\s5
\c 7
\s অশুচিতা-বিষয়ক উপদেশ।
\p
\v 1 আর ফরীশীরা ও কয়েক জন ধর্মীয় শিক্ষক যিরুশালেম থেকে এসে তাঁর কাছে জড়ো হল।
\v 5 পরে ফরীশীরা ও ধর্মীয় শিক্ষকেরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, তোমার শিষ্যেরা পূর্বপুরুষদের দেওয়া যে নিয়ম চলে আসছে সে নিয়ম মেনে চলে না কেন তারা তো হাত না ধুয়েই খায় ?
\v 6 তিনি তাদেরকে বললেন, আপনারা ভন্ড, যিশাইয় তোমাদের বিষয়ে ঠিক কথা বলেছেন, তিনি লিখেছেন, “এই লোকেরা শুধুই মুখে আমার সম্মান করে, কিন্তু এদের মন আমার থেকে অনেক দূরে থাকে।
\p
\v 7 এরা শুধুমাত্র আমার উপাসনা করে, তাদের দেওয়া শিক্ষা মানুষের কতকগুলো নিয়ম মাত্র।”
\v 24 পরে তিনি উঠে সে জায়গা থেকে সোর ও সিদোন অঞ্চলে চলে গেলেন। আর তিনি এক বাড়িতে ঢুকলেন তিনি চাইলেন যেন কেউ জানতে না পারে; কিন্তু তিনি লুকিয়ে থাকতে পারলেন না।
\p
\v 25 কারণ তখন একটী স্ত্রীলোক, যার একটী মেয়ে ছিল, আর তাকে মন্দ আত্মায় পেয়েছিল, যীশুর কথা শুনতে পেয়ে স্ত্রীলোকটি এসে তাঁর পায়ের ওপর পড়ল।
\p
\v 26 স্ত্রীলোকটী গ্রীক, জাতিতে সুর-ফৈনীকী। সে তাঁকে কাকুতি মিনতি করতে লাগল, যেন তিনি তার মেয়ের ভিতর থেকে ভূত তাড়িয়ে দেন।
\v 5 তিনি তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের কাছে কয়টা রুটি আছে? তারা বললেন সাতটি।
\p
\v 6 পরে তিনি লোকদের জমিতে বসতে আদেশ দিলেন এবং সেই সাতখানি রুটি নিয়ে ধন্যবাদ দিয়ে ভেঙ্গে লোকদের দেবার জন্য শিষ্যদের দিতে লাগলেন; আর শিষ্যরা লোকদের দিলেন ।
\v 27 পরে যীশু ও তাঁর শিষ্যরা সেখানে গিয়ে কৈসরিয়া-ফিলিপী শহরে আসে পাশের গ্রামে গেলেন। আর পথে তিনি নিজের শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করিলেন, "আমি কে, এ বিষয়ে লোকে কি বলে"?
\p
\v 28 তাঁরা তাঁকে বললেন, অনেকে বলে, আপনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন; আবার কেউ কেউ বলে, আপনি এলিয়; আবার কেউ কেউ বলে, আপনি ভাববাদীদের মধ্যে একজন।
\v 31 পরে তিনি শিষ্যদেরকে এই বলে শিক্ষা দিতে শুরু করলেন যে, মানবপুত্রকে অনেক দুঃখ ভোগ করতে হবে। বৃদ্ধ নেতারা, প্রধান যাজকরা ও ধর্ম শিক্ষকেরা অগ্রাহ্য করবেন, তাকে মেরে ফেলা হবে, আর তিন দিন পরে আবার বেঁচে উঠবেন।
\p
\v 32 এই কথা তিনি পরিস্কারভাবে বললেন। তাতে পিতর যীশুকে একপাশে নিয়ে গিয়ে বকাবকি করতে লাগলেন।
\v 33 কিন্তু তিনি মুখ ফিরিয়ে নিজের শিষ্যদের দিকে তাকিয়ে পিতরকে ধমক দিলেন এবং বললেন, আমার সামনে থেকে দূর হও শয়তান; কারণ যা ঈশ্বরের, তা নয়, কিন্তু যা মানুষের তাই তুমি ভাবছ।
\p
\v 34 পরে তিনি নিজ শিষ্যদের সঙ্গে লোকদেরকেও ডেকে বললেন, কেউ যদি আমার সঙ্গে আসতে চায়, সে নিজের ইচ্ছা ভুলে যাক, নিজের ক্রুশ তুলে নিক এবং আমার সঙ্গে সঙ্গে আসুক।
\v 38 কারণ যে কেউ এই কালের ব্যভিচারী ও পাপী লোকদের মধ্যে আমাকে ও আমার বাক্যকে লজ্জার বিষয় জ্ঞান করে, মানবপুত্র তাকে লজ্জার বিষয় জ্ঞান করবেন, যখন তিনি পবিত্র দূতগণের সঙ্গে নিজের পিতার মহিমায় আসবেন।
\s5
\c 9
\p
\v 1 আর তিনি তাদের বললেন, আমি তোমাদেরকে সত্যি কথা বলছি , যারা এখানে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের মধ্য কয়েক জন আছে, যারা কোন মতে মৃত্যুর স্বাদ পাবেনা, যে পর্যন্ত্য ঈশ্বরের রাজ্য পরাক্রমের সঙ্গে আসতে না দেখে।
\s যীশুর রূপান্তর।
\p
\v 2 ছয় দিন পরে যীশু কেবল পিতর, যাকোব ও যোহনকে সঙ্গে করে চোখের আড়ালে এক উঁচু পর্ব্বতে নিয়ে গেলেন, আর তিনি তাদের সামনে চেহারা পাল্টালেন ।
\p
\v 3 আর তাঁর জামাকাপড় চকচকে এবং অনেক বেশী সাদা হলো, পৃথিবীর কোন ধোপা সেইরকম সাদা করতে পারে না।
\v 11 পরে শিষ্যরা প্রভুকে জিজ্ঞাসা করলেন, ব্যবস্থা শিক্ষকেরা বলেন, প্রথমে এলিয়কে আসতে হবে ।
\p
\v 12 প্রভু তাদেরকে বললেন, এলিয় প্রথমে এসে সবকিছু আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনবেন আর মানবপুত্রের বিষয়ে কিভাবেই লেখা আছে যে, তাঁকে অনেক কষ্ট পেতে হবে ও লোকে তাঁকে ঘৃণা করবে।
\p
\v 13 কিন্তু আমি তোমাদেরকে বলছি, এলিয়ের বিষয়ে যেরকম লেখা আছে, সেইভাবে তিনি এসে গেছেন এবং লোকেরা তাঁর উপর যা ইচ্ছা, তাই করেছে। যীশুর নানারকম কাজ ও শিক্ষা অনুসারে।
\v 17 তাদের লোকদের মধ্যে এক জন উত্তর করলো, হে গুরুদেব, আমার ছেলেটিকে আপনার কাছে এনেছিলাম তাকে বোবা আত্মায় ধরেছে সে কথা বলতে পারছে না;
\p
\v 18 সেই অপদেবতা যেখানে তাকে ধরে, সেখানে আছাড় মারে, আর তার মুখে ফেনা ওঠে এবং সে দাঁত কিড়মিড় করে, আর শক্ত কাঠ হয়ে যায়; আমি আপনার শিষ্যদেরকে তা ছাড়াতে বলেছিলাম, কিন্তু তারা পারল না।
\p
\v 19 যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, হে অবিশ্বাসীর বংশ, আমি কত দিন তোমাদের কাছে থাকবো? কত দিন ধৈর্য্য ধরবো? ছেলেটিকে আমার কাছে আন।
\v 20 শিষ্যরা ছেলেটিকে যীশুর কাছে আনলো তাঁকে দেখে সেই অপদেবতা ছেলেটিকে জোরে মুচড়িয়ে ধরলো, আর সে মাটিতে পড়ে গেলো এবং মুখ দিয়ে ফেনা বেরোতে লাগলো।
\p
\v 21 তখন যীশু তার বাবাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ছেলেটি কত দিন ধরে এই অসুখে ভুগছে ?
\p
\v 22 ছেলেটির বাবা বললেন, ছোটোবেলা থেকে; এই আত্মা তাকে মেরে ফেলার জন্য অনেক বার আগুনে ও অনেক বার জলে ফেলে দিয়েছে; দয়া করে আপনি যদি ছেলেটিকে সুস্থ করতে পারেন, তবে আমাদের উপকার হয় ।
\v 23 যীশু তাকে বললেন, তোমার যদি বিশ্বাস থাকে তবে সবই হতে পারে।
\p
\v 24 তখনই সেই ছেলেটির বাবা চিত্কার করে কেঁদে বলে উঠলেন ,আমি বিশ্বাস করি, আমাকে অবিশ্বাস করবেন না।
\p
\v 25 পরে লোকেরা একসঙ্গে দৌড়ে আসছে দেখে যীশু সেই অপদেবতাকে ধমক দিয়ে বললেন, হে বোবা আত্মা, আমি তোমাকে আদেশ করছি, এই ছেলের শরীর থেকে বেরিয়ে যাও, আর কখনও এর শরীরের মধ্যে আসবে না।
\v 30 সেই জায়গা থেকে যীশু গালীলের মধ্য দিয়ে চলে গেলেন, আর তাঁর ইচ্ছা ছিল না যে, কেউ তা জানতে পারে।
\p
\v 31 কারণ তিনি নিজের শিষ্যদেরকে উপদেশ দিয়ে বলতেন, মানবপুত্রকে মানুষদের হাতে সমর্পণ করা হবে; তারা তাঁকে মেরে ফেলবে। কারণ তিনি মারা যাবার তিন দিন পর তিনি আবার বেঁচে উঠবেন।
\p
\v 32 কিন্তু তারা সে কথা বুঝতে পারল না এবং যীশুকে কিছু জিজ্ঞাসা করতে শিষ্যরা ভয় পেল ।
\s প্রকৃত ভাবে শ্রেষ্ঠ কে এবং ধর্ম্ম পথে বাধা দানের ফল কি, এ বিষয়ে শিক্ষা।
\v 36 পরে তিনি একটী শিশুকে নিয়ে তাদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে দিলেন এবং তাকে কোলে করে তাদেরকে বললেন ,
\p
\v 37 যে আমার নামে এই রকম কোন শিশুকে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে; আর যে আমাকে গ্রহণ করে, সে আমাকে না, কিন্তু যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তাঁকেই গ্রহণ করে।
\v 50 লবণ সব জিনিসকে স্বাদযুক্ত করে কিন্তু, লবণ যদি তার নোনতা স্বাদ হারায়, তবে সেই লবণকে কিভাবে স্বাদযুক্ত করা যাবে? তোমরা লবণের মতো হও নিজেদের মনে ভালবাসা রাখো এবং নিজেরা শান্তিতে থাক।
\p
\s5
\c 10
\s স্ত্রী পরিত্যাগ বিষয়ে শিক্ষা।
\p
\v 1 যীশু সেই জায়গা ছেড়ে যিহূদিয়াতে ও যর্দ্দন নদীর অন্য পারে এলেন ; এবং তাঁর কাছে আবার লোক আসতে লাগলো এবং তিনি নিজের নিয়ম অনুসারে আবার তাদেরকে শিক্ষা দিতে লাগলেন ।
\p
\v 2 তখন ফরীশীরা পরীক্ষা করার জন্য তাঁর কাছে এসে যীশুকে জিজ্ঞাসা করলো একজন স্বামী তার স্ত্রীকে ছেড়ে দিতে পারে?
\p
\v 3 তিনি তাদের উত্তর দিলেন , মোশি তোমাদেরকে কি আদেশ দিয়েছেন ?
\p
\v 4 তারা বললো, ছাড়পত্র লিখে নিজের স্ত্রীকে ছেড়ে দেবার অনুমতি মোশি দিয়েছেন ।
\v 17 পরে যখন তিনি আবার বের হয়ে পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন, একজন লোক দৌড়ে এসে তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে বিনীত ভাবে জিজ্ঞাসা করলেন হে সৎগুরু, স্বর্গে যেতে হোলে আমাকে কী কী করতে হবে?
\p
\v 18 যীশু তাকে বললেন, আমাকে সৎ কেন বলছো ? ঈশ্বর ছাড়া আর কেউ সৎ নয়।
\p
\v 19 তুমি আদেশগুলি জান, “মানুষ খুন করো না , ব্যভিচার করো না, চুরি করো না, মিথ্যা বোলে প্রতারণা কোর না, ঠকিও না, তোমার বাবা মাকে সন্মান করো”।
\v 20 সেই লোকটি তাঁকে বললো, হে গুরুদ, ছোট্ট বয়স থেকে এই সব নিয়ম আমি মেনে আসছি ।
\p
\v 21 যীশু তার দিকে ভালোবেসে তাকালেন এবং বললেন, একটি বিষয়ে তোমার অভাব আছে, যাও, তোমার যা কিছু আছে, বিক্রি করে গরীবদের দান কর, তাতে স্বর্গে তুমি ধন পাবে; আর এস, আমাকে অনুসরণ করো ।
\p
\v 22 এই কথায় লোকটি দুঃখ পেয়ে চলে গেলো, কারণ তার অনেক ধন ছিল।
\v 23 তারপর যীশু চারিদিকে তাকিয়ে নিজের শিষ্যদের বললেন, যারা ধনী তাদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে ঢোকা অনেক কঠিন !
\p
\v 24 তাঁর কথা শুনে শিষ্যরা অবাক হয়ে গেলো; কিন্তু যীশু আবার তাদের বললেন, সন্তানেরা যারা ধন সম্পত্তিতে নির্ভর করে, তাদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে ঢোকা ভীষণ কঠিন !
\p
\v 25 ঈশ্বরের রাজ্যে ধনী মানুষের ঢোকার থেকে সুচের ছিদ্র দিয়ে উটের যাওয়া সোজা ।
\v 29 যীশু বললেন, আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এমন কেউ নেই, যে আমার জন্য ও আমার শুভবার্তা প্রচারের জন্য তার ঘরবাড়ি, ভাইবোনদের, মা-বাবাকে, ছেলে-মেয়েকে, জমিজায়গা ছেড়েছে কিন্তু এই পৃথিবীতে থাকাকালীন সে তার শতগুণ কি ফিরে পাবে না;
\p
\v 30 সে তার ঘরবাড়ি, ভাই, বোন, মা, ছেলেমেয়ে ও জমিজমা, সবই ফিরে পাবে এবং আগামী দিনে অমর জীবন পাবে।
\p
\v 31 কিন্তু যারা প্রথম, এমন অনেক লোক শেষের দিকে যাবে, ও যারা শেষের, তারা প্রথম হবে । যীশু তৃতীয় বার নিজের মৃত্যুর বিষয়ে বললেন ।
\v 32 একসময়ে তারা, যিরূশালেমের পথে যাচ্ছিলেন এবং যীশু তাদের আগে আগে যাচ্ছিলেন, তখন শিষ্যরা অবাক হয়ে গেল; আর যারা পিছনে আসছিল, তারা ভয় পেলো। পরে তিনি আবার সেই বারো জনকে নিয়ে নিজের ওপর যা যা ঘটনা ঘটবে, তা তাদের বোলতে লাগলেন।
\p
\v 33 তিনি বললেন, দেখ, আমরা যিরূশালেমে যাচ্ছি, আর মনুষ্য সন্তানকে প্রধান যাজক ও ব্যবস্থা শিক্ষকদের হাতে ধরিয়ে দেবে এবং এরা বিচারে আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেবে, এবং অন্যজাতীর হাতে তাঁকে তুলে দেবে ।
\v 34 আর তারা তাঁকে ঠাট্টা করবে, তাঁর মুখে থুথু দেবে, তাঁকে চাবুক মারবে ও মেরে ফেলবে; আর তিন দিন পরে তিনি আবার বেঁচে উঠবেন l
\v 38 যীশু তাদের বললেন , তোমরা কি চাইছ তোমরা তা জানো না । আমি যে পাত্রে পান করি, তাতে কি তোমরা পান করতে পার, এবং আমি যে বাপ্তিস্মে বাপ্তাইজিত হই, তাতে কি তোমরা বাপ্তাইজিত হতে পার?
\p
\v 39 তারা বললো পারি। যীশু তাদেরকে বললেন , আমি যে পেয়ালায় পান করি, তাতে তোমরা পান করবে এবং আমি যে বাপ্তিস্মে বাপ্তাইজিত হই, তাতে তোমরাও বাপ্তাইজিত হবে;
\p
\v 40 কিন্তু যাদের জন্য জায়গা তৈরী করা হয়েছে, তাদের ছাড়া আর কাউকেও আমার ডান পাশে কি বাম পাশে বসতে দেওয়ার আমার অধিকার নেই ।
\v 41 এই কথা শুনে অন্য দশ জন যাকোব ও যোহনের উপর রেগে যেতে লাগলো ।
\p
\v 42 কিন্তু যীশু তাদেরকে কাছে ডেকে বললেন, তোমরা জান, জাতিদিগের ভিতরে যারা শাসনকর্ত্তা বলে পরিচিত , তারা তাদের মনিব হয় এবং তাদের ভেতরে যারা মহান, তারা তাদের ওপর ক্ষমতাগিরি করে।
\v 46 পরে তাঁরা যিরীহোতে এলেন । আর তিনি যখন নিজের শিষ্যদের ও অনেক লোকের সঙ্গে যিরীহো থেকে বের হয়ে যাচ্ছিলেন , তখন তীময়ের ছেলে বরতীময় নামে এক জন অন্ধ ভিখারী পথের পাশে বসেছিলো ।
\p
\v 47 সে যখন নাসরতীয় যীশুর কথা শুনতে পেলো , তখন চেঁচিয়ে বলতে লাগলো হে যীশু, দায়ূদ-সন্তান, আমার ওপর দয়া করুন।
\p
\v 48 তখন অনেক লোক চুপ করো চুপ করো বলে তাকে বকা দিল; কিন্তু সে আরও জোরে চেঁচাতে লাগলো , হে দায়ূদ-সন্তান, আমার ওপর দয়া করুন।
\v 51 যীশু তাকে বললেন , তুমি কি চাও? আমি তোমার জন্য কি করবো ? অন্ধ তাঁকে বললো, হে গুরুদেব, আমি যেন দেখতে পাই।
\p
\v 52 যীশু তাকে বললেন, চলে যাও, তোমার বিশ্বাস তোমাকে চোখে দেখতে সাহায্য করল। তখনই সে দেখতে পেলো এবং পথ দিয়ে তাঁর পেছনে পেছনে চলতে লাগলো ।
\s5
\c 11
\s যীশুর যিরূশালেমে প্রবেশ
\p
\v 1 পরে যখন তাঁরা যিরূশালেমের কাছাকাছি জৈতুন পর্ব্বতে বৈৎফগী ও বৈথনিয়া গ্রামে এলেন , তখন তিনি নিজের শিষ্যদের মধ্য দুই জনকে পাঠিয়ে দিলেন,
\p
\v 2 তাদেরকে বললেন, "তোমাদের সামনে ঐ গ্রামে যাও; গ্রামে ঢোকা মাত্রই মুখে দেখবে একটি গাধার বাচ্চা বাঁধা আছে , যার ওপরে কোন মানুষ কখনও বসে নি; সেটাকে খুলে আন।"
\p
\v 3 আর যদি কেউ তোমাদেরকে বলে, এ কাজ কেন করছ ? তবে বল, এটাকে আমাদের প্রভুর দরকার আছে; সে তখনই গাধাটাকে এখানে পাঠিয়ে দেবে ।
\v 13 কিছু দূর থেকে পাতায় ভরা একটা ডুমুরগাছ তিনি দেখতে পেলেন, যখন তিনি গাছটা দেখতে এগিয়ে গেলেন তখন দেখলেন শুধু পাতা ছাড়া আর কোনো ফল নেই ; কারণ তখন ডুমুর ফলের সময় ছিল না।
\p
\v 14 তিনি গাছটির দিকে তাকিয়ে বললেন , এখন থেকে আর কেউ কখনও তোমার ফল খাবে না । এ কথা তাঁর শিষ্যরা শুনতে পেলো ।
\v 15 পরে তাঁরা যিরূশালেমে এলেন , আর তিনি মন্দিরের ভেতরে গিয়ে, যারা মন্দিরের ভেতরে কেনা বেচা করছিল, তাদেরকে বের করে দিতে লাগলেন , এবং টাকা বদলকারীদের টেবিল উল্টে দিলেন, ও যারা পায়রা বিক্রী করছিলো , তাদের সব আসন উল্টে ফেললেন ।
\v 17 আর তিনি শিষ্যদের শিক্ষা দিলেন এবং বললেন, এটা কি লেখা নেই , “আমার ঘরকে সব জাতির প্রার্থনার -ঘর বলা যাবে”? কিন্তু তোমরা এটাকে "ডাকাতদের গুহায় পরিনত করেছো" ।
\p
\v 18 এ কথা শুনে প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে কিভাবে মেরে ফেলবে, তারই চেষ্টা করতে লাগলো ; কারণ তারা তাঁকে ভয় করতো , কারণ তাঁর শিক্ষায় সব লোক অবাক হয়েছিল ।
\v 23 আমি তোমাদের সত্যি কথা বলছি যে কেউ এই পর্ব্বতকে বলে ‘সরে সমুদ্রে গিয়ে পড়,’ এবং মনে মনে সন্দেহ না করে, কিন্তু বিশ্বাস করে যে, যা বলবে তা ঘটবে , তবে তার জন্য তাই হবে।
\v 31 তখন তারা নিজেদের ভেতরে আলোচনা কোরে বললো, আমরা যদি বলি ইশ্বরের কাছ থেকে, তাহলে সে বলবে, তবে তোমরা তাঁকে বিশ্বাস কর নি কেন?
\p
\v 32 আবার যদি বলি,মানুষের কাছ থেকে তবে? তাঁরা লোকদের ভয় করতেন, কারণ সবাই যোহনকে সত্যি একজন নবী বোলে মনে করতো।
\p
\v 33 তখন তারা যীশুকে বললেন, আমরা জানি না। তখন যীশু তাদের বললেন, তাহলে আমিও তোমাদের বলব না আমি কোন অধিকারে এসব করছি ।
\s5
\c 12
\s গৃহস্থ ও কৃষকদের দৃষ্টান্ত।
\p
\v 1 পরে তিনি নীতি গল্প দিয়ে তাদের কাছে কথা বলতে লাগলেন । একজন লোক আঙুর খেত চাষ করে তার চারপাশে বেড়া দিলেন, আঙুর পেশার জন্য গর্ত খুঁড়লেন, এবং একটি উঁচুবাড়ি তৈরী করলেন ; আর চাষিদের হাতে তা জমা দিয়ে বিদেশে চলে গেলেন।
\p
\v 2 পরে চাষিদের কাছে আঙুর খেতের ফলের ভাগ নেবার জন্য, ফল পাকার সঠিক সময়ে এক চাকরকে তাদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন;
\p
\v 3 চাষিরা তার সেবককে মার ধোর করে খালি হাতে পাঠিয়ে দিল।
\v 6 মালিকের কাছে তাঁর একমাত্র ছেলে ছাড়া এরপর পাঠানোর মতো আর কেউ ছিল না শেষে তিনি তাঁর আদরের ছেলেকে চাষিদের কাছে পাঠালেন , আর তারা ভাবলেন আমার ছেলেকে অন্তত সম্মান করবে ।
\p
\v 7 কিন্তু চাষিরা নিজেদের ভেতরে আলোচনা করে বলল,বাবার পরে এই ত মালিক হবে, এস আমরা ছেলেটিকে মেরে ফেলি, ছেলেটিকে মেরে ফেললে আঙুর খেতটি আমাদেরই হবে।
\v 10 তোমরা কি পবিত্র বাক্যে এই কথাও পড় নি, “যে পাথরটাকে মিস্ত্রীরা বাদ দিয়েছিলো, সেই পাথরটাই কোণের প্রধান পাথর হোয়ে উঠলো ;
\p
\v 11 প্রভু ঈশ্বরই এই কাজ করেছেন , আর এটা আমাদের চোখে সত্যিই খুব আশ্চর্য্য কাজ”?
\p
\v 12 এই উপমাটি বলার জন্য তারা যীশুকে ধরতে চেয়েছিল , -কিন্তু তারা জনগণকে ভয় পেলো , -কারণ তারা বুঝেছিল যে, যীশু তাদেরই বিষয়ে এই নীতি গল্পটা বলেছেন; পরে তারা তাঁকে ছেড়ে চলে গেলো ।
\v 13 তারপর তারা কয়েক জন ফারীশী ও হেরোদীয়কে যীশুর কাছে পাঠিয়ে দিল, যেন তারা তাঁর কথার ফাঁদে ফেলে তাঁকে ধরতে পারে।
\p
\v 14 তারা এসে তাঁকে বললো, গুরু যাই হোক না কেনো আপনি সত্যি কথা বলতে কখনো ভয় পান না; কারণ লোকের মতামত আপনার উপর প্রভাব খাটাতে পারেনা, কিন্তু লোকেদের আপনি ঈশ্বরের সত্য পথের বিষয় শিক্ষা দেন;
\p
\v 15 আচ্ছা বলুন তো কৈসরকে কর দেওয়া উচিত কি না? আমরা কর দেবো না কি দেব না ? যীশু তাদের চালাকি বুঝতে পেরে বললেন, আমার পরীক্ষা করছ কেন? আমাকে একটা টাকা এনে দাও আমি টাকাটা দেখি।
\v 18 তারপর সদ্দুকিরা যীশুর কাছে এল এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো যারা বলত মানুষ কখনো মৃত্যু থেকে বেঁচে ওঠে না।
\p
\v 19 তারা যীশুর কাছে এসে বলল "গুরু মোশি আমাদেরকে লিখেছেন, কারোর ভাই যদি বউ রেখে মারা যায় , আর তার যদি ছেলেমেয়ে না থাকে, তবে তার ভাই তার বউকে বিয়ে করে নিজের ভাইয়ের বংশ রক্ষা করবে।"
\pi
\s5
\v 20 ভালকথা, কোনো একটি পরিবারে সাতটী ভাই ছিল; বড় ভাই বিয়ে করে, ছেলেমেয়ে না রেখে মরে গেল।
\p
\v 21 পরে দ্বিতীয় ভাই সেই বউটিকে বিয়ে করল , কিন্তু সেও ছেলেমেয়ে না রেখে মরে গেলো ; তৃতীয় ভাইও সেই রকম অবস্থায় মরে গেলো ।
\p
\v 22 এইভাবে সাত ভাই বিয়ে করে কোন ছেলেমেয়ে না রেখে মরে যায় ; সবার শেষে সেই বউটি ও মরে গেলো ।
\p
\v 23 শেষ দিনে মৃত্যু থেকে যখন তারা সাত ভাই উঠবে , সেই বউটি কার বউ হবে ? তারা সাত ভাই ত তাকে বিয়ে করেছিল।
\v 26 মৃত্যু থেকে জীবিত হবার বিষয়ে বলব, এই বিষয়ে মোশির বইতে ঝোপের বিবরণ পড় নি? ঈশ্বর তাঁকে কিভাবে বলেছিলেন , “আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসহাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর।”
\v 28 আর তাদের এক জন শাস্ত্রগুরু কাছে এসে তাদের তর্ক বিতর্ক করতে শুনলেন এবং যীশু তাদের ঠিকঠিক উত্তর দিচ্ছেন শুনে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, সব আদেশের ভেতরে কোনটী প্রথম?
\p
\v 29 যীশু উত্তর করলেন, প্রথমটি এই, “হে ইস্রায়েল, শোন ; আমাদের ঈশ্বর প্রভু একমাত্র প্রভু ;
\p
\v 30 আর তুমি সেই ইশ্বরকে তোমার সব মনপ্রাণ , তোমার সব অন্তর ও তোমার সব শক্তি দিয়ে তোমার ঈশ্বর প্রভুকে ভালবাসবে ।”
\p
\v 31 দ্বিতীয়টি এই, “তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসবে ” এই দুইটি আদেশের থেকে বড় আর কোন আদেশ নেই ।
\v 32 ব্যবস্থাগুরু তাঁকে বললেন, ভালোগুরু , আপনি সত্যি বলছেন যে, তিনি এক, এবং তিনি ছাড়া অপর কেউ নেই ;
\p
\v 33 আর সব মনপ্রাণ , সব বুদ্ধি ও শক্তি দিয়ে ইশ্বরকে ভালবাসা এবং প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসা সব হোম ও বলিদান থেকে ভালো ।
\p
\v 34 তখন সে বুদ্ধিমানের মতো উত্তর দিয়েছে শুনে যীশু তাকে বললেন ,তুমি ঈশ্বরের রাজ্যের খুব কাছাকাছি আছ ।এর পরে তাঁকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করতে আর কারোর কোনো সাহস হলো না।
\v 35 আর মন্দিরে শিক্ষা দেবার সময়ে যীশু উত্তর করে বললেন , ব্যবস্থার শিক্ষকরা কি ভাবে বলে যে, খ্রীষ্ট দায়ূদের সন্তান?
\p
\v 36 কারণ দায়ূদ নিজে পবিত্র আত্মার প্রেরণাতেই তিনি এই কথা বলেছিলেন , “প্রভু আমার প্রভুকে বলেছিলেন যতক্ষণ না তোমার শত্রুকে তোমার পায়ের নীচে নিয়ে আসি , ততক্ষণ তুমি আমার ডানপাশে বসে থাকবে ।”
\p
\v 37 যখন দায়ূদ নিজেই তাঁকে প্রভু বলেন, তবে তিনি কিভাবে তাঁর ছেলে হলেন? আর সাধারণ লোকে আনন্দের সাথে তাঁর কথা শুনতো ।
\v 9 তোমরা নিজেদের বিষয়ে সাবধান হও। লোকে তোমাদের বিচার-সভার লোকেদের হাতে ধরিয়ে দেবে এবং সমাজ-ঘরে তোমাদের মারা হবে; আর আমার জন্য তোমাদের দেশের শাসনকর্তা ও রাজাদের সামনে সাক্ষী দেবার জন্য দাঁড়াতে হবে।
\p
\v 10 কিন্তু তার আগে সব জাতির কাছে সুসমাচার প্রচার করতে হবে।
\v 11 কিন্তু লোকে যখন তোমাদের ধরে বিচারের জন্য নিয়ে যাবে , তখন কি বলতে হবে তা নিয়ে ভেবো না ; সেই সময় যে কথা তোমাদের বলে দেওয়া হবে, তোমরা তাই বলবে ; কারণ তোমরাই যে কথা বলবে তা নয়, কিন্তু পবিত্র আত্মাই কথা বলবেন ।
\p
\v 12 তখন ভাই ভাইকে ও বাবা ছেলেকে মেরে ফেলবার জন্য ধরিয়ে দেবে ; এবং ছেলেমেয়েরা নিজের নিজের বাবামায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে তাদের খুন করবে।
\p
\v 13 আর আমার জন্য সবাই তোমাদের ঘৃনা করবে ; কিন্তু যে শেষ পর্য্যন্ত আমার নামে দাঁড়িয়ে থাকবে, সে রক্ষা পাবে ।
\v 14 যখন তোমরা দেখবে , সব শেষ করার সেই ঘৃণার জিনিস যেখানে থাকবার নয়, সেখানে রয়েছে - যে পড়ে , সে বুঝুক, -তখন যারা যিহূদিয়াতে থাকবে তারা পাহাড়ি জায়গায় পালিয়ে যাক;
\p
\v 15 যে ছাদের ওপরে থাকবে, সে ঘর থেকে কিছু নেবার জন্য নীচে যেন না নামে;
\p
\v 16 এবং যে জমিতে থাকে, সে নিজের কাপড় নেবার জন্য পিছনে ফিরে যেন না যায় ।
\v 17 সেই সময়ে যারা গর্ব্ভবতী এবং যারা সন্তানকে বুকের দুধ পান করায় সেই মহিলাদের অবস্থা কী খারাপই না হবে !
\p
\v 18 প্রার্থনা কর, যেন এসব শীতকালে না ঘটে।
\p
\v 19 কারণ সেই সময় এমন কষ্ট হবে যা জগতের শুরু থেকে এই পর্য্যন্ত হয় নি, আর কখন হবে না।
\p
\v 20 আর প্রভু যদি সেই দিনগুলির সংখা কমিয়ে না দিতেন, তবে কোন প্রাণীই বাঁচত না; কিন্তু ঈশ্বর যাদেরকে বেছে নিয়েছেন সেই লোকদের জন্য ঈশ্বর দিনগুলি কমিয়ে দিয়েছেন ।
\v 33 সাবধান হও, জেগে থাক ও প্রার্থনা করো ; কারণ সেই সময় কখন আসবে তা তোমরা জান না।
\p
\v 34 একজন লোক যেন নিজের বাড়ি ছেড়ে বিদেশে গিয়ে বাস করছেন ; আর তিনি নিজের চাকরদের কাজ বুঝিয়ে দিলেন এবং দারোয়ানকে জেগে থাকতে বললেন, এই ভাবে সেই দিন আসবে।
\v 3 যীশু তখন বৈথনিয়াতে কুষ্ঠরোগী শিমোনের বাড়িতে ছিলেন, তিনি যখন খাচ্ছিলেন তখন একজন মহিলা সাদা পাথরের বাটিতে করে খুব দামী ও খাঁটি আতর আনল ; বাটিটি ভেঙে সে তাঁর মাথায় ঢেলে দিল ।
\p
\v 4 সেখানে যারা হাজির ছিল তাদের ভেতরে কয়েকজন বিরক্ত হয়ে একে অপরকে বলতে লাগলো এই ভাবে আতরটা নষ্ট করা হল কেন?
\p
\v 5 এই আতরটা বিক্রি করলে তিনশো সিকিরও বেশী পাওয়া যেত এবং তা গরীবদের দেওয়া যেত । আর এই বলে তারা সেই মহিলাটিকে বকাবকি করতে লাগলো ।
\v 12 তাড়ীশুন্য রুটীর পর্বের প্রথম দিনে, নিস্তারপর্ব্বের ভেড়ার বাচ্চা বলি দেওয়া হতো, সেই দিন তাঁর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, আমরা কোথায় গিয়ে আপনার জন্য নিস্তারপর্ব্বের ভোজ তৈরী করব বলুন ?
\p
\v 13 তখন যীশু তাঁর দুই জন শিষ্যকে এই বলে পাঠিয়ে দিলেন, তোমরা নগরে যাও, সেখানে এমন একজন লোকের দেখা পাবে, যে একটা কলসিতে করে জল নিয়ে যাচ্ছে ;তোমরা তার পেছনে পেছনে যেও;
\p
\v 14 সে যে বাড়িতে ঢুকবে, সেই বাড়ির মালিককে বোলো, গুরু বলেছেন, যেখানে আমি আমার শিষ্যদের সঙ্গে নিস্তারপর্ব্বের ভোজ খেতে পারি, আমার সেই অতিথিশালা কোথায় ?
\v 20 যীশু তাদেরকে বললেন, এই বারো জনের ভেতরে এক জন, যে আমার সঙ্গে এখন ভোজন করছে।
\p
\v 21 কারণ মানবপুত্রের বিষয়ে সেরকম লেখা আছে, সে রকম ভাবেই তিনি মারা যাবেন কিন্তু ধিক সেই লোকটিকে, যে যীশুকে ধরিয়ে দেবে । সেই লোকটি যদি না জন্মাত তবে লোকটির পক্ষে ভালো হতো ।
\v 22 যখন খাওয়া দাওয়া চলছিল , সেই সময়ে যীশু রুটি হাতে নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে রুটি ভাঙলেন এবং শিষ্যদের কে দিলেন এবং বললেন তোমরা নাও , এটাই আমার শরীর।
\p
\v 23 খাওয়ার পরে যীশু পানপাত্র নিয়ে ইশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে শিষ্যদের দিলেন এবং তারা সকলেই তা থেকে পান করলো।
\p
\v 24 যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন , এটাই আমার রক্ত, যা অনেকের জন্য ঢেলে দেওয়া হলো, এই দিয়ে মানুষের সঙ্গে ইশ্বরের নতুন নিয়ম প্রতিষ্ঠিত হল ।
\p
\v 25 আমি তোমাদের সত্য কথা বলছি, যে দিন আমি ঈশ্বরের রাজ্যে এটা নতুন ভাবে পান করব , সেই দিন থেকে আমি আঙুর ফলের রস আর কখনও পান করব না।
\v 35 কিছু দুরে এগিয়ে গিয়ে যীশু মাটিতে পড়ে এই প্রার্থনা করলেন , যদি সম্ভব হয় তবে যেন সেই সময় তাঁর কাছ থেকে চলে যায়।
\p
\v 36 যীশু বললেন , আব্বা, পিতা তোমার কাছে তো সবই সম্ভব ; এই দুঃখের পেয়ালা তুমি আমার কাছ থেকে সরিয়ে নাও ; তবুও আমার ইচ্ছামত না হয় ,কিন্তু তোমার ইচ্ছামত হয় ।
\v 40 পরে তিনি আবার এসে দেখলেন , তারা ঘুমিয়ে পড়েছে কারণ তাদের চোখ ঘুমে ভারী হয়ে ছিল, তারা যীশুকে কি উত্তর দেবে , তা তারা বুঝতে পারল না।
\p
\v 41 পরে তিনি তৃতীয় বার এসে তাদেরকে বললেন , এখন তোমরা ঘুমাও , বিশ্রাম কর; যথেষ্ট হয়েছে ; সময় এসেছে , দেখ, মনুষ্যপুত্রকে পাপীদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ।
\v 42 উঠ, আমরা যাই; এই দেখ, যে লোক আমাকে ধরিয়ে দেবে , সে কাছে এসেছে । যীশুকে শত্রুদের হাতে ধরিয়ে দেয় ।
\v 43 আর তিনি যখন কথা বলছিলেন, সেই সময় যিহূদা, সেই বারো জনের এক জন এল এবং তার সঙ্গে অনেক লোক তরওয়াল ও লাঠি নিয়ে প্রধান যাজকদের, ব্যবস্থা শিক্ষকদের ও প্রাচীনদের কাছ থেকে এল ।
\p
\v 44 যে যীশুকে ধরিয়ে দিচ্ছিল , সে আগে থেকে তাদের এই চিহ্ন এর কথা বলেছিল , আমি যাকে চুম্বন করবো , সেই ঐ লোক , তোমরা তাকে ধরে সাবধানে নিয়ে যাবে।
\p
\v 45 সে তখনি তাঁর কাছে গিয়ে বললো , গুরু ; এই বলে তাঁকে উত্সাহের সঙ্গে চুম্বন করলো ।
\v 63 তখন মহাযাজক নিজের কাপড় ছিঁড়ে বললেন , আর সাক্ষীতে আমাদের কি দরকার ?
\p
\v 64 তোমরা ত ঈশ্বর-নিন্দা শুনলে তোমাদের মতামত কি ? তারা সবাই তাঁকে দোষী করে বলল , একে মেরে ফেলা উচিত ।
\p
\v 65 তখন কেউ কেউ তাঁর গায়ে থুথু দিতে লাগলো এবং তাঁর মুখ ঢেকে তাঁকে ঘুষি মারতে লাগলো , আর বলতে লাগলো , ঈশ্বরের বাক্য বল না? পরে পাহারাদাররা মারতে মারতে তাঁকে নিয়ে গেলো ।
\v 71 পিতর নিজেকে অভিশাপের সঙ্গে এই শপথ নিয়ে বলতে লাগলেন, তোমরা যে লোকের কথা বলছো, তাকে আমি চিনি না।
\p
\v 72 তখনি দ্বিতীয় বার মোরগ ডেকে উঠলো ; তাতে যীশু এই যে কথা বলেছিলেন , ‘মোরগ দুই বার ডাকবার আগে তুমি তিন বার আমাকে অস্বীকার করবে ,’ সেই কথা পিতরের মনে পড়ল এবং তিনি সেই বিষয়ে মনে কোরে কাঁদতে লাগলেন
\p
\s5
\c 15
\s দেশাধ্যক্ষের সম্মুখে যীশুর বিচার।
\p
\v 1 আর ভোর হতেই প্রধাণরা, ধর্মগুরুরা, প্রধান যাজকগণ এবং সব মহাসভা পরামর্শ করে যীশুকে বেঁধে নিয়ে পীলাতের কাছে ধরিয়ে দিলো ।
\p
\v 2 তখন পীলাত যীশুকে জিজ্ঞাসা করলেন , তুমি কি যিহূদীদের রাজা ? তিনি উত্তর কোরে তাঁকে বললেন, "তুমিই বললে।"
\p
\v 3 পরে প্রধান যাজকেরা তাঁর উপরে নানারকম অভিযোগ করতে লাগলো ।
\v 31 আর সেই রকম ভাবে প্রধান যাজকেরাও ধর্মগুরুদের সঙ্গে নিজেদের ভেতরে তাঁকে তাচ্ছিল্য করে বললো , ঐ লোকটি অপরকে বাঁচাত , এখন নিজেকে বাঁচাতে পারছে না;
\p
\v 32 খ্রীষ্ট, ইস্রায়েলের রাজা, এখন তুমি ক্রশ থেকে নেমে এস , এই দেখে আমরা তোমায় বিশ্বাস করবো। আর যারা তাঁর সঙ্গে ক্রুশে ঝুলেছে , তারাও তাঁকে অভিশাপ দিলো ।
\v 42 সেই দিন আয়োজনের দিন অর্থাৎ বিশ্রামবারের আগের দিন সন্ধ্যাবেলা,
\p
\v 43 অরিমাথিয়ার যোষেফ নামে একজন নামী সম্মানীয় লোক এলেন, তিনি নিজেও ঈশ্বরের রাজ্যের অপেক্ষা করতেন ; তিনি সাহস কোরে পীলাতের কাছে গিয়ে যীশুর দেহ চাইলেন ।
\p
\v 44 যীশু যে এত তাড়াতাড়ি মারা গেছেন , এতে পীলাত অবাক হয়ে গেলেন এবং সেই শতপতিকে ডেকে , তিনি এর ভেতরেই মরেছেন কি না, জিজ্ঞাসা করলেন ;
\v 5 তার পরে তাঁরা কবরের ভেতরে গিয়ে দেখলেন , ডান পাশে সাদা কাপড় পরে একজন যুবক বসে আছেন; তাতে তাঁরা খুব অবাক হলেন।
\p
\v 6 তিনি তাদেরকে বললেন , অবাক হওয়ার কিছু নেই , তোমরা যে নাসরতীয় যীশুকে খুঁজছো , যিনি ক্রুশে মারা গিয়েছিলেন; তিনি উঠেছেন , এখানে নেই ; দেখ এই জায়গায় তাঁকে রেখেছিল ;
\p
\v 7 কিন্তু তোমরা যাও তাঁর শিষ্যদের আর পিতরকে বল, তিনি তোমাদের আগে গালীলে যাচ্ছেন ; যে রকম তিনি তোমাদেরকে বলেছিলেন , সেই জায়গায় তোমরা তাঁকে দেখতে পাবে ।
\v 14 তারপরে সেই এগার জন খেতে বসলে তিনি তাঁদের আবার দেখা দিলেন এবং তাঁদের বিশ্বাসের অভাব ও মনের কঠিনতার জন্য তিনি তাদের বকলেন ; কেননা তিনি মৃত্যু থেকে জীবিত হওয়ার পর যাঁরা তাঁকে দেখেছিলেন তাঁদের কথায় তাঁরা বিশ্বাস করেন নি ।
\p
\v 15 যীশু সেই শিষ্যদের বললেন , তোমরা পৃথিবীর সব জায়গায় যাও, সব লোকেদের কাছে গিয়ে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার কর।
\p
\v 16 যে বিশ্বাস করে ও বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে , সে পাপ থেকে উদ্ধার পাবে ; কিন্তু যারা বিশ্বাস করবে না , তারা শাস্তি পাবে ।